পাঠক কলাম:
দ্বীন ইসলামের ৪র্থ স্তম্ভ পবিত্র হজ্বের বিরুদ্ধে সৌদী ওহাবীদের ষড়যন্ত্র; মুসলমানদের পবিত্র হজ্জকে যেভাবে নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে (পর্ব ১)
, ০৬ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৫ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ১৩ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
দ্বীন ইসলাম উনার ৫টি স্তম্ভের একটি সম্মানিত হজ্জ। অথচ ইহুদী কর্তৃক লালিত-পালিত সৌদী ওহাবী সরকার প্রধানত ৩টি মাধ্যমে সারা বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানের হজ্বের মত এতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতটি নষ্ট করে দিচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! যে ৩টি মাধ্যমে সৌদী সরকার মুসলমানদের পবিত্র হজ্জকে নষ্ট করছে সে ৩টি মাধ্যম হচ্ছে-
১. ভুল তারিখে মাস গণনা ও শুরু
২. ছবি তোলা ও ভিডিও করা এবং
৩. বেপর্দা।
এই ৩টি বিষয় নিয়েই সংক্ষেপে আলোচনা করার চেষ্টা করব। ইনশাআল্লাহ! কারণ উক্ত বিষয় ৩টি অনুধাবন না করার কারণে একদিকে ওলামায়ে সূরা বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে, অন্যদিকে সাধারণ মুসলমানরাও তাদের দ্বারা বিপথগামী হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
১. সৌদী সরকার কর্তৃক ভুল তারিখে মাস গণনা ও শুরু করে যেভাবে হজ্জ, রোজা এবং অন্যান্য ইবাদত নষ্ট করছে:
ইসলামী শরীয়তে চাঁদ ও সূর্যের গুরুত্ব অনেক। কারণ চাঁদ মাস গণনার সাথে সম্পৃক্ত এবং সূর্য দিন-রাত ও সময় নিরূপনের সাথে সম্পৃক্ত। চাঁদ ও সূর্য উভয়ই মুসলমানদের ইবাদতের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় দ্বীন ইসলাম সতর্কতার সাথে চাঁদ তালাশ করে আরবী মাস শুরু এবং শেষ করে থাকেন এবং একই সাথে নামাজের ওয়াক্ত ও ছিয়াম-ক্বিয়াম সঠিকভাবে নির্ণয় করবার জন্যে সূর্যের অবস্থান ও উদয়-অস্তকে গুরুত্বের সাথে হিসেব করে থাকেন।
দ্বীন ইসলামে নির্ধারিত বিশেষ ইবাদতসমূহ অর্থাৎ বিশেষ বিশেষ দিবস ও রাত্রিসমূহ আরবী মাস অনুযায়ী হয়ে থাকে। এজন্য আরবী মাসের শুরু ও শেষ এবং মাস গণনায় চাঁদ দেখা বা না দেখা মূখ্য ভূমিকা পালন করে। কিন্তু সৌদি সরকার বছরের পর বছর যাবৎ আরবী মাস শুরু ও শেষ চাঁদ না দেখেই মনগড়াভাবে ঘোষণা করছে।
ফলে মুসলমানদের অজান্তেই সম্মানিত হজ্জ ও রোযাসহ অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! ভুল তারিখে মাস গণনা ও শুরু করলে হজ্জ ও রোযাসহ অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগী কীভাবে নষ্ট হয়ে যায় সেটা জানার জন্য নিচের উদাহরণটি মনোযোগসহ লক্ষ্য করুন।
কেউ যদি জুমুয়ার নামাজ ইয়াওমুল জুমুয়ায় না পড়ে ইয়াওমুস সাবত (শনিবার) অথবা ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) আদায় করে তাহলে কি জুমুয়ার নামাজ আদায় হবে? হবে না। ঠিক একইভাবে কেউ যদি চাঁদ না দেখে শাবান মাসের ৩০ তারিখে রমযানের রোযা শুরু করে তাহলে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস আগ-পিছ হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে তার রমযানের রোযা আদায় না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
আবার পহেলা শাওয়াল হচ্ছে ঈদুল ফিতর। এখন কেউ যদি ঈদুল ফিতরের দিন রোযা রাখে তাহলে সে শরীয়তের ২টি আহকাম অমান্য করল। প্রথমত ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম, অথচ সে ঈদের দিনে রোজা রেখে কঠিন গোনাহে গোনাহগার হল, দ্বিতীয়ত যেই দিন ঈদ পালন করার কথা (পহেলা শাওয়াল শরীফ) সেই দিন সে ঈদ উদযাপন না করে রোজা রেখে পরের দিন অর্থাৎ ২রা শাওয়াল শরীফে ঈদুল ফিতর উদযাপন করল। ফলে সে কঠিন কবিরা গোনাহ করে ফেলল।
এক কথায়- তার রোজাও হলো না এবং ঈদও হলো না। অন্যভাবে বললে- সে রোজা রেখেও গুনাহ করল এবং ঈদ করেও গুনাহ করল। নাউযুবিল্লাহ!!
বিষয়টি সহজভাবে বুঝার জন্য আরেকটু ব্যাখ্যা করছি; শরীয়তের ফতওয়া হচ্ছে- মাসকে আগে-পিছে করা কুফরী। এজন্য প্রতি আরবী মাসের ২৯ তারিখে চাঁদ তালাশ করতে হয়। ২৯ তারিখে চাঁদ দেখা না গেলে আরবী মাস ৩০ দিন পূর্ণ করতে হয়। এর ব্যতিক্রম করা হারাম, নাজাযিয ও কুফরী।
উদাহরণস্বরূপ শাবান মাসের ২৯ তারিখে চাঁদ তালাশ করা হল, কিন্তু দেখা গেল না। এদিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করা হল যে, চাঁদ দেখা গেছে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে জনগণ রমাদ্বান শরীফের রোজা শুরু করবে পরের দিন অর্থাৎ পহেলা রমাদ্বান থেকে।
কিন্তু ২৯শে শাবান আকাশে চাঁদ দৃশ্যমান না হওয়ায় পরের দিন কিন্তু ৩০শে শাবান শরীফ, পহেলা রমাদ্বান নয়। অথচ চাঁদ দেখা কমিটি যেহেতু ঘোষণা করেছে পরের দিন রমাদ্বান মাস শুরু সেহেতু জনগণ রমাদ্বান মাসের ১ম রোজা শুরু করল মূলত শাবান মসের ৩০ তারিখে। এখানে জনগণকে দুটো সমস্যায় পড়তে হল-
এক: শাবানের ৩০ তারিখে রমাদ্বানের রোজা রাখা নাযায়েয ও হারাম হবে (ক্ষেত্র বিশেষে কুফরীও হতে পারে),
দুই: রমাদ্বান মাস গণনায় ত্রুটি হবে, যেহেতু একদিন আগেই রমাদ্বান মাস গণনা শুরু করেছে।
নিয়মানুযায়ী উক্ত রমাদ্বান মাসটি যদি ৩০ দিনে পূর্ণ হয় তাহলে জনগণ তার একদিন আগেই ঈদ পালন করবে। অর্থাৎ চাঁদ দেখা কমিটি যেহেতু চাঁদ না দেখেই রোজা রাখার ঘোষণা দিয়েছিল সেহেতু জনগণ ২৮/২৯ রমাদ্বানে তাদের রোযা শেষ করে ২৯/৩০ রমাদ্বানে ঈদুল ফিতর পালন করবে। নাউযুবিল্লাহ!
তাহলে এখানে কিন্তু জনগণ ৪টি সমস্যায় পড়ল-
এক: ১/২দিন রমাদ্বান শরীফের রোযা কম রাখায় কবিরা গুনাহ করল,
দুই: রমাদ্বান শরীফ মাসের ২৯/৩০ তারিখে ঈদুল ফিতর পালন করে কবিরা গুনাহ করল,
তিন: পহেলা শাওয়ালে ঈদ পালন না করায় কবিরা গুনাহ করল, এবং
চার: শাওয়াল শরীফ মাস গণনাও ভুল তারিখে শুরু করল। নাউযুবিল্লাহ! (চলবে)
-মুহম্মদ জিয়াউল হক্ব, ঢাবি।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংশ্লিষ্ট মহাসম্মানিত দিন এবং রাত মুবারক-এ স্বয়ং রহমত মুবারক উনার মালিক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাছিল করা যায়
১১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিষিদ্ধ মহিলা জামায়াত নিয়ে ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ছু’দের বিভ্রান্তিকর ও জিহালতী বক্তব্যের জবাব (১)
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত নূরুর রবিয়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ বুখারী শরীফে বর্ণিত জাল হাদীছের খন্ডন (১)
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কুফরী আক্বীদা পরিহার না করলে চির জাহান্নামী হতে হবে
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যার-তার থেকে দ্বীনি ইলিম গ্রহণ করা যাবে না
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ মুবারক বাস্তবায়নে হযরত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের বেনযীর দৃষ্টান্ত
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যারা অনুসরণ করবেন উনারাও হাছিল করবেন সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি মুবারক
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইলমে তাসাউফ অর্জন করা ব্যতীত ইবাদত মূল্যহীন
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার স্মরণে এই উপমহাদেশের সরকারগুলোর উদ্যোগ কোথায়?
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উসীলায় এক কোটিরও বেশি বিধর্মী পবিত্র ঈমান লাভ করেন
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র সুন্নত যিন্দাকারী অর্থাৎ মুহ্ইউস সুন্নাহ
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)