গণতন্ত্রে পাচ বৎসরের জন্য ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ইসলামী শব্দ ব্যবহারকারীরা সত্যিকারে ইসলামী আইন জারী করলে পাঁচ বৎসর পর ক্ষমতায় আসা অসম্ভব। সুতরাং গণতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় গিয়ে কুরআন শরীফের আইন বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলা একটা চরম মিথ্যা, ধোঁকা ও প্রতারণা (পর্ব ২)
, ১০ই শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ২৭ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ধরে নিলাম ইসলামী শব্দ ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট কয়েক বৎসরের জন্য ক্ষমতায় গিয়ে কয়েকটি সম্মানিত ইসলামী আইনজারী করলো: যেমন-
১। নামায না পড়লে তাকে সর্বনিম্ন শাস্তি দিলো, জেলে আটকে রাখলো।
২। যিনার জন্য ধরলাম বেত্রাঘাত করলো ও রজম মারলো অথবা দেশান্তর করলো।
৩। বেপর্দার জন্য কাউকে জরিমানা করলো, তারপর না মানলে তাকে জেলে প্রবেশ করানো হলো।
৪। চুরির জন্য হাত কাটা হলো। ইত্যাদি ইত্যাদি।
কয়েকটি সম্মানিত ইসলামী আইন জারী করার কথা যদি ধরেও নেয়া হয়, কিন্তু তা এক দিনের জন্যও টিকিয়ে রাখতে পারবে না। বরং এই সম্মানিত ইসলামী আইনের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন বের হবে। গণতন্ত্রের নিয়মানুযায়ী এই আন্দোলন হবে নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার। আর সম্মানিত ইসলামী আইন মোতাবেক হবে মুরতাদ বা কতলের হুকুম। কেননা, যে প্রকাশ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার কোন হুকুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে সে মুরতাদ হয়ে যায়। এভাবে দেশে-বিদেশে শুরু হবে গভীর ষড়যন্ত্র। বরং পাঁচ বৎসর অতিবাহিত হওয়া তো দূরের কথা, তার পূর্বেই ইহুদীদের ষড়যন্ত্র ও খৃষ্টান মিশনারীদের উসকানি ও হিন্দুদের চুলকানিতেই ক্ষমতা শেষ। বরং উল্টো জোরপূর্বক আন্তর্জাতিক ইহুদীচক্র দেশটাকে বিপর্যস্ত করে ছাড়বে বিভিন্ন অজুহাতে।
যদি এই কথার সত্যতা কেউ দেখতে চায়- তাহলে ১৯৯৬ সালে তুরস্ক ও আলজেরিয়ার ইসলামপন্থিদের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে তাদের অধঃপতনের চিত্র দেখাই যথেষ্ট। যার সংক্ষিপ্ত হল- ১৯৭৩ সালে আরবাকান তুরস্কে ইসলামী ধারার রাজনীতি প্রবর্তন করে এবং দীর্ঘ এই কুফরী নীতির পর ১৯৯৫ সালের নির্বাচনে সংখ্যা গরিষ্ঠ দল হিসেবে বিজয় লাভ করে চার বৎসরের জন্য ক্ষমতায় গেলে মাত্র এক বৎসর তিন মাস যেতে না যেতেই তার দেশের সেক্যুলার দল ও কাফির গোষ্টির বিরোধিতায় ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করে।
পাঁচ বৎসরের জন্য ক্ষমতায় গিয়ে তারা তো চিরস্থায়ী ক্ষমতা লাভ করবে না বরং পাঁচ বৎসর পর পুনরায় নির্বাচন করতে হবে, যা কথিত গণতন্ত্রের শপথ ও ওয়াদামূলক স্বাক্ষরিত বিষয়। যা ইহুদীসংঘের আন্তর্জাতিক ইঙ্গিতে চলে। যেখানে কাফির গোষ্টির প্রাধান্যতা ও মুসলিম বিদ্বেষী কার্যক্রমই চলে, ফলে ইসলামী আইনে পাঁচ বৎসরে যাদেরকে শাস্তি দেয়া হয়েছে, তারা ইসলামী দলকে ভোট বা সমর্থন করা তো দূরের কথা বরং ইসলাম বিরোধী শক্তিকেই সাহায্য করবে। কারণ যেখানে তারা নিজেরাই ইসলামী আইন মানতে পারে না বরং গণতন্ত্রের পদে পদে পাপ কাজের বন্যায় আছড়ে পড়ে মুহুর্তে মুহুর্তে, তারা যে অন্য লোকদেরকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম মানাবে তা সম্ভব নয়। বরং ক্ষমতাশীলরা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করবে, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নামে পেটতন্ত্র আর জুলুম বিস্তার করবে এবং যতটুকু দ্বীন ইসলাম পালনের স্বাধীনতা ছিল, ক্ষমতা হারানোর সাথে সাথে তাও অবশিষ্ট থাকবে না।
আসলে যারা সাড়ে তিন হাত দেহের মধ্যে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে পারে না, তারা যে একটা দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলে, এটা যেমন হাস্যকর, তেমনি মানুষের সাথে ধোঁকাবাজি করে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নামে শুরু হবে তখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া বা পেটতন্ত্র।
ক্ষমতা গ্রহণের পূর্বেই যাদের চরিত্রে ফাসেক্বী ও কুফরী এবং নেফাকী মিশ্রিত, তাহলে ক্ষমতা পেলে ক্ষমতার দাপটে তা নাস্তিকতায় রূপান্তর করবে- এটাই চির সত্য কথা। কারণ পৃথিবীতে যারাই ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়েছে, কেউ ন্যায় ও ইনসাফের উপর থাকতে পারে নাই, আরও নিকৃষ্ট স্বভাবের জালিম হয়েছে। চলবে.....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












