একমাত্র মহান আল্লাহ পাক ব্যতিত অন্য কারও অনুসরন করার বিষয়ে বাতিলপন্থীদের বিভ্রান্তির জাওয়াব
, ০৯ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৫ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ১৩ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহান আল্লাহ পাক উনার যিনি শ্রেষ্ঠতম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার যারা নায়িব বা ওয়ারিছ উলিল আমর, ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের অনুসরণের বিষয়টিকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!
অথচ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মতো কেউ চলতে পারবে না। কারণ বান্দার পক্ষে সরাসরি মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে কোনকিছু জানা ও মানা কখনোই সম্ভব নয়।
কাজেই, বান্দাকে মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক অনুযায়ী চলতে হলে মহান আল্লাহ পাক উনার যিনি শ্রেষ্ঠতম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ মুবারক অনুযায়ী চলতে হবে বা উনাকে আনুগত্য করতে হবে। উনাকে আনুগত্য করলেই মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করা হবে বা আদেশ মুবারক অনুযায়ী চলা হবে। যেমন এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ يُّطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ
অর্থ: “যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্বায়াত করলো বা উনার আনুগত্য করলো প্রকৃতপক্ষে সে মহান আল্লাহ পাক উনারই আনুগত্য করলো। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا اٰتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَـهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا ۚ وَاتَّقُوا اللهَ ۖ إِنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদের নিকট যা নিয়ে এসেছেন বা তোমাদেরকে যা করতে আদেশ করেন তা তোমরা পালন করো। আর তিনি তোমাদেরকে যা করতে নিষেধ করেছেন বা যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাকো। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক উনাকে তোমরা ভয় করো। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি কঠিন শাস্তিদাতা। ”
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُـحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِـيْ يُـحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ ۗ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ
অর্থ: “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলে দিন, তোমরা যদি মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত-সন্তুষ্টি মুবারক পেতে চাও, তাহলে তোমরা আমাকে অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মান্য করো। তবেই মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে মুহব্বত করবেন। তোমাদের গুনাহখতা ক্ষমা করবেন আর মহান আল্লাহ পাক তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু অর্থাৎ তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু হবেন। ”
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَإِنْ تُطِيْعُوْهُ تَـهْتَدُوْا
অর্থ: তোমরা যদি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুগত্য বা অনুসরণ করো, তবেই তোমরা হিদায়েত লাভ করবে। ”
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِـيْ رَسُوْلِ اللهِ اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
অর্থ: “অবশ্যই তোমাদের জন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যেই রয়েছে উত্তম আদর্শ মুবারক। ” সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ উনাদের দ্বারা প্রতিভাত হলো, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ-নির্দেশ মুবারক, উনার ইত্বায়াত বা অনুসরণ করাই হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক অনুযায়ী চলা।
আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর উনার যারা নায়িব বা স্থলাভিষিক্ত উনারাই উলিল আমর, ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম। উনাদেরও আনুগত্য-অনুসরণ মুবারক করতে হবে।
এ মর্মে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَاُولِـي الْأَمْرِ مِنْكُمْ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করো, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করো এবং তোমাদের মধ্যে উলিল আমরগণ উনাদের আনুগত্য করো। ”
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَنْ يُّشَاقِقِ الرَّسُوْلَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْـهُدٰى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيْلِ الْمُؤْمِنِيْنَ نُوَلِّهٖ مَا تَوَلّٰـى وَنُصْلِهٖ جَهَنَّمَ ۖ وَسَاءَتْ مَصِيْرًا
অর্থ: যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধাচরণ করে তার কাছে সঠিক পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং মু’মিনগণ উনাদের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐদিকে ফিরাবো যে দিকে সে ফিরেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবো। আর জাহান্নাম নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থল। ”
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে سَبِيْلِ الْـمُؤْمِنِيْنَ অর্থাৎ মু’মিনগণ উনাদের পথ বলতে প্রথমত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পথকে বুঝানো হয়েছে, অতঃপর তাবিয়ীন, তাবি তাবিয়ীন, ইমাম-মুজতাহিদ আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের পথকে বুঝানো হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاتَّبِعْ سَبِيْلَ مَنْ أَنَابَ اِلَـيَّ
অর্থ: ঐ ব্যক্তির পথ অনুসরণ করো যিনি আমার দিকে রুজু হয়েছেন অর্থাৎ যিনি আল্লাহওয়ালা হয়েছেন। ” সুবহানাল্লাহ!
এছাড়া উম্মুল কুরআন পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ উনার মধ্যেও বলা হয়েছে যে, তোমরা নিয়ামতপ্রাপ্ত বান্দাগণ উনাদের পথে চলার জন্য দোয়া করো, কারণ, উনাদের পথই হচ্ছে সঠিক পথ। আর উনারা হচ্ছেন নাবিয়্যীন, ছিদ্দীক্বীন, শুহাদা ও ছালিহীন বান্দা। সুবহানাল্লাহ!
প্রতিভাত হলো, মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ মুবারক মেনে চলতে বলেছেন। শুধু তাই নয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যারা নায়িব বা স্থলাভিষিক্ত অর্থাৎ উলিল আমর উনাদেরও আনুগত্য মুবারক করতে বলেছেন।
স্মরণীয় যে, পবিত্র কুরআন শরীফ মুতাবিক চলার অর্থ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক অনুযায়ী চলা। আর পবিত্র হাদীছ শরীফ মুতাবিক চলার অর্থ হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ মুবারক মুতাবিক চলা। আর পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস অনুযায়ী চলার অর্থ হচ্ছে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং হযরত ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের আদেশ মুবারক অনুযায়ী চলা।
অতএব, মুসলমান মাত্রই প্রত্যেককেই পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা’ শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ মুতাবিক চলতে হবে। অন্যথায় সে বাতিল, পথভ্রষ্ট ও জাহান্নামী ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত হবে। নাউযুবিল্লাহ! গবেষণা কেন্দ্র: মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ, রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)