ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-১০
(বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)
, ২৬শে জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২২ সামিন, ১৩৯০ শামসী সন, ২০ই জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিছবত মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে যার যত গভীর তায়াল্লুক-নিছবত বা সম্পর্ক মুবারক তিনি তত বেশি মর্যাদা-মর্তবা, বুযুর্গী ও সম্মানের অধিকারী। ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে ছিলেন উনার গভীর ও বেমেছাল তায়াল্লুক-নিছবত মুবারক।
তাযকিরাতুল আউলিয়া ১/২০৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, একদিন মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, ইমামে আ’যম, সাইয়্যিদুনা ইমাম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র রওজা শরীফ উনার নিকট উপস্থিত হয়ে উনাকে সম্বোধন করে বললেন-
السلام عليكم يا سيد الـمرسلين صلى الله عليه وسلم
অর্থাৎ ইয়া সাইয়্যিদাল মুরসালীন ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার উপর সালাম বা শান্তি বর্ষিত হউক।
তখন পবিত্র রওজা শরীফ থেকে মুবারক জাওয়াব ভেসে আসলো-
وعليكم ا لسلام يا امام الـمسلمين
অর্থাৎ “হে মুসলমানগণের ইমাম! আপনার উপরও সালাম বা শান্তি বর্ষিত হোক।”
শায়খুল মাশায়িখ হযরত দাতা গঞ্জে বখশ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিখ্যাত কিতাব “কাশফুল মাহযুব” ১১২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন- ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনাদের ইমাম। তিনি সমস্ত ইমামগণের ইমাম, ফকীহগণের শিরোমণি এবং আলিমগণের মাথার তাজ বা মুকুট। তিনি আহলে তরীক্বতের বড় মর্যাদাসম্পন্ন বুযর্গ ছিলেন। তিনি সৃষ্টির নিকট সম্মান ও প্রভাব-প্রতিপত্তি পাওয়ার কোন আমলই করতেন না। প্রথম জীবনে তিনি নির্জনতা অবলম্বনের ইচ্ছা পোষন করেন। কিন্তু একদিন স্বপ্নে দেখলেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে খেতাব বা সম্বোধন করে বলছেন, “ওহে আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি! মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে আমার সুন্নাত জিন্দা করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। কাজেই, নির্জনতা অবলম্বন করা হতে বিরত থাকুন। (তাযকিরাতুল আউলিয়া-১/২১০, কাশফুল মাহযূব-১১২)
এক রাতে স্বপ্নে দেখেন যে, তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র রওযা শরীফ থেকে উনার পবিত্র হাড় মুবারক সংগ্রহ করছেন এবং একখানা আর একখানা থেকে পৃথক করছেন। এরূপ আশ্চর্যজনক স্বপ্ন দেখে তিনি ভয়ে অস্থির হয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠলেন। অত:পর স্বপ্নের বিখ্যাত তা’বীর বিশারদ (ব্যাখ্যাকার) আল্লামা ইমাম ইবনে সিরীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একজন মুরীদ বা ছাত্রের কাছে গিয়ে তার অর্থ জিজ্ঞাসা করলেন। জাওয়াবে তিনি বললেন, এ স্বপ্নের তা’বীর বা ব্যাখ্যা হচ্ছে, আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইলিম বা জ্ঞানরাজি তথা ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে হাদীছ শরীফ উনার এরূপ অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন যে, উক্ত বিষয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যাকার হিসেবে পরিগণিত হবেন। সত্যকে অসত্য হতে পৃথক করার ক্ষমতা মহান আল্লাহ পাক আপনাকে দান করবেন।” (তাযকিরাতুল আওলিয়া-১/২০৯, কাশফুল মাহযূব-১১২)
ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ফতওয়া দিলেন যে, চার রাকায়াত বিশিষ্ট ফরয নামায উনার দ্বিতীয় রাকাআতে তাশাহুদ পাঠ করার পর আর কিছু পাঠ করা যাবে না। তাশাহুদ পাঠ করার পর কেউ যদি দুরূদ শরীফ পাঠ করতে শুরু করে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক পাঠ করে, তাকে সাহু সিজদা করতে হবে। আর যদি নাম মুবারক পাঠ না করে দাঁড়িয়ে যায়, তাহলে তাকে সাহু সিজদা দিতে হবে না। এই ফতওয়া যেদিন তিনি দিলেন, সেই রাতে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ সাক্ষাত মুবারক লাভ করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি বললেন, আমার নাম মুবারক উচ্চারণ করলে সাহু সিজদা দিতে হবে, এটা কেমন কথা? তখন সাইয়্যিদুনা ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি চাইনা কেউ আপনার মহান নাম মুবারক গাফলতির সাথে স্মরণ করুক। উনার জাওয়াব শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যধিক খুশি হলেন। (আল বাইয়্যিনাত শরীফ-২২১/১০২ পৃ.)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (১)
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রচলিত হারাম রছম করুন বর্জন, পবিত্র দ্বীন পালনেই কামিয়াবী অর্জন
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযা শরীফ
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক ও শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট আরব মহিলাদের নিসবতে ‘আযীম শরীফের প্রস্তাব এবং উনার বেমেছাল পবিত্রতা মুবারক
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম উনার কর্তৃক সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মু’জিযাহ্ শরীফ দর্শন
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র লাইলাতুর রগায়িব শরীফ উনার মহত্ত্ব ও বড়ত্ব (২)
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)