আফসুস! পাঠ্যবইয়ে ‘স্বাস্থ্য শিক্ষার’ নামে শিশুদের লজ্জাহীনতার শিক্ষা দেয়া হচ্ছে!
, ৫রা রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৯ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ২১ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
বিগত বছরের পাঠ্যবইয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীতে শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বইয়ে বয়ঃসন্ধির শিক্ষার নাম দিয়ে শেখানো হচ্ছে বয়ঃসন্ধী কালে নারী-পুরুষের দেহের পরিবর্তন, নারী-পুরুষের শরীর থেকে কি নির্গত হয়, কিসের আকার পরিবর্তন হয়, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ, ভালো স্পর্শ, খারাপ স্পর্শ ইত্যাদি। প্রকাশ্যে ছাত্র-ছাত্র একসাথে এসব শিক্ষা প্রদান মোটেও শরীয়ত সম্মত নয়। সম্পূর্ণ হারাম।
উল্লেখ্য শরীয়তে পর্দা করা ফরয। তাই ছাত্র ও ছাত্রীদের একসাথে পাঠ দানের প্রশ্নই আসেনা। কারণ বেপর্দা হওয়া হারাম ও কবীরা গুনাহ। আর যে বা যারা হারামকে যায়েজ মনে করে বা বলে সে বা তারা কাট্টা কাফের হবে। তাহলে ছাত্র ও ছাত্রীরা কি করে একসাথে পড়াশুনা করতে পারে? এছাড়া পবিত্র হাদীছ শরীফে আছে, লজ্জা হচ্ছে ঈমানের অঙ্গ। যার লজ্জা নেই তার ঈমান নেই।
পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী শ্রেণীতে এসব পড়িয়ে মূলত বাচ্চাদের ঈমানহারা করা হচ্ছে।
কেউ কেউ বলে, এসব শিক্ষার অভাবে নাকি বাচ্চারা সমস্যায় পড়ে। নাঊযুবিল্লাহ! ধরা যাক, এসব শিক্ষা না নিলে বাচ্চাদের কিছু ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু এসব শিক্ষা লাভ করতে গিয়ে কোন ছাত্র বা ছাত্রী যদি চরিত্র নষ্ট করে ফেলে তখন তার কতটুকু ক্ষতি হবে? দুই ক্ষতির তুলনা করলে কোনটা বেশি ভয়াবহ?
আসলে ইহুদীদের চলমান সংস্কৃতি ধ্বংসকারী (কাউন্টার কালচার) ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে অনেক দেশেই বাচ্চাদের পাঠ্যবইয়ে যৌন শিক্ষা প্রবেশ করানো হয়েছে। যার প্রতিবাদে বিভিন্ন দেশের অভিভাবকরা ব্যাপক আন্দোলন-বিক্ষোভ করছে। কিন্তু এ দেশের পাঠ্যপুস্তকে এই শিক্ষা যৌন শিক্ষা নামে আসেনি, এসেছে স্বাস্থ্য শিক্ষার নামে।
বস্তুত মানুষ মাত্রই বড় হবে, বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছাবে এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। আজকে যারা মা-বাবা, দাদা-দাদী, নানা-নানীরা, খালা-মামারাও এক সময় এই বয়সে ছিলেন। উনারা সময়মত প্রয়োজনীয় সমাধানও পেয়েছেন। কিন্তু উনারা ঘোষণা দিয়ে বয়ঃসন্ধির শিক্ষা নেননি বলে উনাদের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে এমনটা নয়। বরং আজকের যুগে অভিভাবকরা আরো ভয়ের মধ্যে থাকেন, না জানি উনাদের সন্তান কি ভুল করে বসে। তার মধ্যে এই শিক্ষা অনেকটা নতুন প্রজন্মকে আরো উস্কে দেয়ার নামান্তর। বিশেষ করে, বয়ঃসন্ধীকালীন শিক্ষাটা নারী-পুরুষের জন্য পৃথক। সে জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের একজন অন্যজনেরটা জানার কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু পাঠ্যবই ও শ্রেণীতে একসাথে ছেলে-মেয়েদের তা শেখানো হচ্ছে। যা চরিত্র নষ্টের কারণ। তাই তা সম্পূর্ণ হারাম ও নাজায়েজ।
স্বাস্থ্য শিক্ষা মূলত দুই ধরনের হয়।
এক. যা জনসম্মুখে বলা ও প্রয়োগ করা যায়।
দুই. যা শেখা ও প্রয়োগের জন্য গোপনীয়তা দরকার।
বয়ঃসন্ধীকালীন শিক্ষার নাম দিয়ে যা শেখানো হচ্ছে, তা এক ধরণের গোপন শিক্ষা, যা শেখা ও প্রয়োগের জন্য গোপনীয়তা দরকার। এই শিক্ষার প্রয়োজন অবশ্যই আছে। কিন্তু সেটা জনসম্মুখে, ঘোষণা দিয়ে নয় বরং গোপনীয়তা রক্ষা করে শেখানো উচিত।
এখানে বিষয়টি বুঝতে হবে, একটা শিশুর যখন দাঁত জন্মায়, তখন সে কামড় বসিয়ে তার ব্যবহার করতে চায়। একটি শিশু যখন হাঁটার শক্তি পায়, তখন বার বার হেঁটে তার ব্যবহার করতে চায়। ঠিক তেমনি একটি শিশু বয়ঃসন্ধিকালে যে নতুন ক্ষমতা পায়, তারও যথেচ্ছ ব্যবহার সে করতে চাইতে পারে। এজন্য বয়ঃসন্ধিকাল একটি স্পর্শকাতর সময়। এর নিয়ন্ত্রণও সেভাবেই করা উচিত। বর্তমান পাঠ্যবইয়ে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে যে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে, তাতে শিশুটি ভুল বুঝে বেপরোয়াও হয়ে যেতে পারে, যা খুবই ভয়ঙ্কর বিষয়।
আসলে এসব শিক্ষা শালীনতার সাথে অভিভাবকরা যেন বাসাতেই দিতে পারেন, সেজন্য অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরী করা দরকার, প্রয়োজনে উনাদেরকে দিক নির্দেশনা সমৃদ্ধ বই দেয়া যেতে পারে। এছাড়া প্রতি শ্রেণীতে শিক্ষার্থীদের পরিচালনা করার জন্য একজন দায়িত্বশীল শিক্ষক থাকেন, যিনি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানে কাজ করেন। ঐ শিক্ষকের সাথে শিক্ষার্থীদের বন্ধুর মত সম্পর্ক থাকে, যেন তারা মন খুলে তাদের সমস্যাগুলো বলতে পারে। ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম পর্যন্ত শ্রেণীতে যদি পরিচালক শিক্ষকরা বিষয়টি একটু খেয়াল রাখেন, তবে কোন শিক্ষার্থী যদি বাসায় পর্যাপ্ত শিক্ষা নাও পায়, তবে পরিচালক শিক্ষক সেই শূণ্যতা পূরণ করে দিতে পারেন। অর্থাৎ পুরো বিষয়টির জন্য এত ঘোষণা দেয়ার প্রয়োজন নেই, বরং সুন্দর ও স্বাভাবিক নিয়মে শালীনতার সাথে শিক্ষাটি প্রদান করা সম্ভব।
আসলে বিশ্বজুড়ে বাচ্চাদের বইয়ে যারা এসব বিষয় প্রবেশ করিয়েছে, তাদের মূল উদ্দেশ্য বাচ্চাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নয়, বরং তাদের লজ্জাশীলতা ধ্বংস করে বেপরোয়া করা। এটা মূলত কাফেরদের বৈশ্বিক কার্যক্রম, যার মাধ্যমে কোন একটি দেশের সামাজিক নীতি, নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা হয়। যা মুসলমানদের ঈমান নষ্ট করে দ্বীন ইসলাম থেকে সরিয়ে দেয়।
কাজেই প্রত্যেক মুসলমান অভিভাবকদের জন্য ফরয হলো যে, তাদের সন্তানরা যেন দ্বীন ইসলাম বিরোধী শিক্ষা গ্রহন না করে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা।
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত ২৯৭তম সংখ্যা থেকে সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ মুবারক বাস্তবায়নে হযরত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের বেনযীর দৃষ্টান্ত
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যারা অনুসরণ করবেন উনারাও হাছিল করবেন সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি মুবারক
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইলমে তাসাউফ অর্জন করা ব্যতীত ইবাদত মূল্যহীন
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার স্মরণে এই উপমহাদেশের সরকারগুলোর উদ্যোগ কোথায়?
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উসীলায় এক কোটিরও বেশি বিধর্মী পবিত্র ঈমান লাভ করেন
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র সুন্নত যিন্দাকারী অর্থাৎ মুহ্ইউস সুন্নাহ
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত ‘মাহে রজব’ উনার মর্যাদা মর্তবার অন্যতম কারণ ‘পবিত্র লাইলাতুর রগায়িব শরীফ’
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত গায়িবী নিদা মুবারক
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘শীতকাল মু’মিনদের জন্য বসন্ত’
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র রজবুল হারাম মাসে রোযা রাখার ফযীলত
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নফসের অনুসরণকারী ধর্মব্যবসায়ীদের অনুসরণ করা জায়েজ নেই
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)