হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (২৭)
, ৩০ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৬ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ০৩ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৮ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা:
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এতই বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও মর্যাদা-মর্তবার অধিকারী যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে জিহাদের ময়দানে সার্বিকভাবে সাহায্য করেছেন এবং কাফিরদের সর্বাঙ্গে প্রচ-ভাবে আঘাত করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “(আমার সম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) স্মরণ করুন, যখন মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আপনাদের স্বস্তি ও শান্তির জন্য আপনাদেরকে তন্দ্রাছন্ন করেন এবং আকাশ হতে আপনাদের জন্য বৃষ্টি বর্ষণ করেন। আর উক্ত বৃষ্টির পানি দ্বারা আপনাদেরকে পবিত্র করার জন্য এবং আপনাদের থেকে শয়তানের কুমন্ত্রণা অপসারণের জন্য, আপনাদের অন্তরকে সুদৃঢ় করার জন্য এবং আপনাদের পা স্থির রাখার জন্য। আর স্মরণ করুন, যখন আপনার রব তায়ালা তিনি ফেরেশতাদের প্রতি প্রত্যাদেশ করেন, আমি আপনাদের সাথে আছি। সুতরাং আপনারা মু’মিনদেরকে (অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে) অবিচল রাখুন। অতিসত্বর কাফিরদের অন্তরে আমি ভীতি সঞ্চার করবো। আপনারা তাদের (অর্থাৎ কাফিরদের) গর্দানে ও সর্বাঙ্গে প্রতি জোড়ায় জোড়ায় আঘাত করুন। ” (সূরা আনফাল: ১১-১২)
উপরোক্ত আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি যেসব নিয়ামত দান করা হয়েছে তার প্রথমটি হলোঃ জিহাদের ময়দানে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের উপস্থিত হওয়া।
দ্বিতীয় নিয়ামত হলোঃ হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাধ্যমে জিহাদের ময়দানে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে সাহায্য করার ওয়াদা।
তৃতীয় নিয়ামত হলোঃ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের দোয়া কবুল এবং সাহায্যের ওয়াদা পূরণ। আর তারই আলোচনা করে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “(আমার সম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) স্মরণ করুন, যখন আপনারা আপনাদের রব তায়ালা উনার নিকট বিনীতভাবে দোয়া করেছিলেন অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদের উক্ত দোয়াকে কবুল করেছিলেন এবং বলেছিলেন, আমি মহান আল্লাহ পাক আপনাদেরকে সাহায্য করবো এক হাজার ফেরেশতা দ্বারা যাঁরা একের পর এক আসবেন। ” (সূরা আনফাল-৯)
উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় “তাফসীরে মাযহারীতে” উল্লেখ আছে, “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বায়হাকী শরীফে বর্ণিত আছে, বদরের জিহাদে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য একটি তাঁবুর ব্যবস্থা করে দেয়া হলো, তাতে একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং নবীদের পরে শ্রেষ্ঠ মানুষ হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনারা দু’জনেই ছিলেন। উক্ত তাঁবুতে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তন্দ্রাছন্ন হয়ে পড়লেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তন্দ্রা ভেঙ্গে গেল। অতঃপর বললেন, হে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম! আপনি সুসংবাদ শ্রবণ করুন। গন্ধম রংয়ের পাগড়ী পরিহিত এবং ঘোড়ার উপর উপবিষ্ট হয়ে হযরত জিব্রীল আলাইহিস সালাম নেমে এসেছেন নিচে। অতঃপর বললেন, আয় মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার দোয়া কবুল হয়েছে এবং নেমে এসেছে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে যুদ্ধসাজে সজ্জিত এক হাজার ফেরেশতার সাহায্য। সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে যে কত নিয়ামত মুবারক দান করেছেন তা বলার অপেক্ষাই রাখেনা। যার বাস্তব প্রমাণ হলো যুদ্ধের মতো কঠিন মুহূর্তেও মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সাহায্যার্থে হাজার হাজার ফেরেশতা নাযিল করে বেমেছাল নিয়ামত দান করেছেন।
সুতরাং, এত বেমেছাল নিয়ামতপ্রাপ্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করা কি করে সম্ভব হতে পারে। (চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তাওয়াক্কুল তথা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ভরসা করার ফযীলত
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
“সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)