হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বদ মাযহাব, বদ আক্বীদা ও বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (২২)
, ১৯ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৭ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ২৫ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ১০ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা:
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এতই বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও মর্যাদা-মর্তবার অধিকারী যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন সমালোচনা করা যাবে না। আর যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করবে তাদের সঙ্গে কোন সম্পর্ক রাখা যাবে না। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অতিসত্ত্বর এমন একটি দল বের হবে যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে গালি দিবে, নিন্দা করবে, তিরস্কার করবে, নাক্বেছ বা অসম্পূর্ণ মনে করবে, সমালোচনা করবে। সাবধান! তাদের সঙ্গে তোমরা উঠা-বসা করবে না, খাওয়া-দাওয়া করবে না, পানাহার করবে না, তাদের সঙ্গে কোন বৈবাহিক সম্পর্ক রাখবে না। তাদের মেয়েকে তোমরা বিবাহ করবে না, তাদের সঙ্গে তোমাদের মেয়েকে বিবাহ দিবে না, তাদের পিছনে নামায পড়বে না এবং তাদের জানাযায় শরীক হবে না। (কানযুল উম্মাল)
অতএব প্রমাণিত হলো যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন সমালোচনা করা সম্পূর্ণরূপেই হারাম-নাজায়িয। যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করবে তাদের সঙ্গে কোন ধরনের সম্পর্ক রাখাও হারাম।
আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেহেতু সত্যের মাপকাঠি বা মিয়ারে হক্ব সেহেতু ঈমান আক্বীদার ব্যাপারে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেভাবে ঈমান-আক্বীদা পোষণ করেছেন, ঈমান এনেছেন, ক্বিয়ামত পর্যন্ত পরবর্তী উম্মতকে সেভাবেই ঈমান আক্বীদা পোষণ করতে হবে, ঈমান আনতে হবে।
কেননা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হলেন প্রকৃত মু’মিন। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যাঁরা ঈমান এনেছেন, হিজরত করেছেন, মহান আল্লাহ পাক উনার পথে জিহাদ করেছেন এবং যাঁরা আশ্রয় দান করেছেন ও খিদমত করেছেন উনারাই প্রকৃত মু’মিন। উনাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিযিক। ” (পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৭৪)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, (“হে আমার সম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) যদি তারা (অর্থাৎ মুনাফিকরা) আপনাকে প্রতারিত করতে চায়, তবে আপনার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনিই যথেষ্ট, তিনি আপনাকে স্বীয় সাহায্য ও মু’মিনগণ দ্বারা (অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম দ্বারা) শক্তিশালী করেছেন। ” (পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৬২)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, সকল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হলেন প্রকৃত মু’মিন ও সত্যের মাপকাঠি বা মিয়ারে হক্ব। কারণ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নিজেদের জান-মাল দিয়ে সর্বোচ্চভাবে খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দিয়েছেন। সুতরাং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে সমালোচনা করার অর্থই হলো পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের বিরোধিতা করা। নাঊযুবিল্লাহ!
সুতরাং যে ব্যক্তি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের বিরোধিতা করবে সে কাট্টা কাফির হয়ে চিরজাহান্নামী হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে মুজাদ্দিদে আ’যম, হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার ছোহবত মুবারকের মাধ্যমে তাক্বওয়া তথা মহান আল্লাহ পাক উনার ভয় অন্তরে পয়দা করে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি মুহব্বত রাখা, উনাদের প্রতি সুধারণা পোষণ করার তাওফিক দান করুন। আমীন। (চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)