সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ
সুওয়াল-নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইন্তিকাল দিবস হচ্ছে দুঃখের দিন। আর দুঃখের দিনে খুশি প্রকাশ করাটা অন্যায়।” এ বক্তব্য কতটুকু পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফসম্মত? দয়া করে জানাবেন।
বিষয়: ১২ই শরীফ
, ০৮ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৬ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৯ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার শ্রেষ্ঠতম রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
حَيَاتِىْ خَيْرٌ لَّكُمْ وَمَمَاتِىْ خَيْرٌ لَّكُمْ.
অর্থ: “আমার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করা এবং পবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান মুবারক করা (ইহকাল ও পরকাল) সব অবস্থাই তোমাদের জন্য কল্যাণ ও খায়ের বরকতের কারণ।” (কানযুল উম্মাল শরীফ)
অর্থাৎ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার বরকতময় দিন উম্মতের জন্য দুঃখ প্রকাশের দিন নয়। কারণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেদিন বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন সেদিনেই যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখেছেন, তাই উনার সম্মানিত তাশরীফ মুবারক অর্থাৎ পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে মহান আল্লাহ পাক উনার আখাছ্ছুল খাছ নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা প্রত্যেক মাখলুক্বাত খাছ করে জ্বীন-ইনসানের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এরপরও মূল কথা হলো, তিনি হচ্ছেন হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধুমাত্র পর্দার আড়ালে অবস্থান মুবারক করবেন। কাজেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার দিনে দুঃখ প্রকাশ করার প্রশ্নই আসতে পারেনা। শুধুমাত্র যারা বদ আক্বীদা বিশিষ্ট, বিদয়াতী, গোমরাহ, বাতিল ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত তারাই উক্ত দিনে দুঃখ প্রকাশ করতে পারে বা দুঃখের দিন হিসেবে ঘোষণা করতে পারে।
এরপরও উক্ত বদ আক্বীদা বিশিষ্ট বিদয়াতী ও গোমরাহ লোকদের বলতে হয়, তারা যদি “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিন উনাকে দুঃখের দিন বলে উক্ত দিনে খুশি প্রকাশ না করে শোক পালন করতে চায় তথাপিও তারা সে দিনকে শোকের দিন হিসেবে সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে প্রমাণ করতে পারবেনা।
কারণ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
أُمْرِنَا أَنْ لَا نُحِدَّ عَلٰى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلَاثٍ إِلَّا الزَّوْجَ.
অর্থ: “আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন আমরা কারো ওফাতে তিন দিনের পর আর শোক প্রকাশ না করি। তবে স্বামীর জন্য স্ত্রী (৪ মাস ১০ দিন) শোক পালন করতে পারবে।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, নাসায়ী শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ্ শরীফ, দারিমী শরীফ, মুয়াত্তা ইমাম মালিক)
অতএব, সম্মানিত শরীয়ত উনার দলীল-আদিল্লাহ দ্বারা মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আসইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনাকে কোন মতেই শোকের দিন হিসেবে সাব্যস্ত করা সম্ভব নয়। কাজেই যেদিনটি শোকের দিন নয়, সেদিন কি করে শোক পালন করবে? তাই আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিনকে নিয়ামত মনে করে উক্ত দিন উপলক্ষে শুকরিয়াস্বরূপ খুশি প্রকাশ করা প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরয।
সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, সাধারণভাবে একই দিনে যদি শোক ও খুশির ঘটনাবলীর সমাবেশ ঘটে যায় তবে শোক প্রকাশের বৈধতা তিন দিন পরেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু খুশিকে স্মরণ করা ও সেটার আনন্দ উদযাপন করার বৈধতা সর্বদাই থেকে যায়। আর খাছভাবে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে ফতওয়া হলো, উনাদের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ ও পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশসহ প্রত্যেকটি বিষয়ই রহমত, বরকত ও সাকীনা ইত্যাদির কারণ। তাই উনাদের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ ও পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ যদি একই দিনে সংঘটিত হয় তবে সেদিন শোক প্রকাশ না করে খুশি প্রকাশ করা ও শুকরিয়া আদায় করা প্রত্যেক উম্মতের দায়িত্ব ও কর্তব্য অর্থাৎ ফরয উনার অন্তর্ভুক্ত।
অতএব, ইন্তিকালের দিনে শোকের বৈধতা অবান্তর। কিন্তু “সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” উনার খুশি ক্বিয়ামত পর্যন্তই বহাল থাকবে। তাই এদিনে শোক পালন করা বৈধ হবেনা। বরং শুকরিয়াস্বরূপ মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা দায়িত্ব ও কর্তব্য তথা ফরয।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
গোল্ডেন রাইস (২)
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে -১১
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০)
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৭)
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)