খাদিমাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যাতুল হিজরাতাইন,
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক
, ০৩ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৯ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ০৭ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
মহাসম্মানিত নসব মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন হাবশার অধিবাসী। উনার মহাসম্মানিত নসব মুবারক হচ্ছেন-
وَهِىَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ بَرَكَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِنْتُ ثَعْلَبَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ حُصَيْنِ بْنِ مَالِكِ بْنِ سَلَمَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ النُّعْمَانِ الْـحَبَشِيَّةُ.
অর্থ: “তিনি হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত বারাকাহ্ আলাইহাস সালাম বিনতে ছা’লাবাহ্ ইবনে ‘আমর ইবনে হুছাইন ইবনে মালিক ইবনে সালামাহ্ ইবনে ‘আমর ইবনে নু’মান হাবাশিয়্যাহ। ” সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্, ইস্তী‘য়াব, আর রওদ্বুল উন্ফ, শারহুয যারক্বানী, উসদু গ¦বাহ্, আল ইছাবাহ্, তাহ্যীবুল কামাল, তাহ্যীবুত তাহযীব ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ১৪ বছর পূর্বে ২৮শে ছফর শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ হাবশায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসম বা নাম মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন “সাইয়্যিদাতুনা হযরত বারাকাহ্ আলাইহাস সালাম। ” সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اِسْـمُهَا سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ بَرَكَةُ بِنْتُ ثَعْلَبَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত বারাকাহ্ বিনতে ছা’লাবাহ্ আলাইহাস সালাম। ” সুবহানাল্লাহ! (ইমতা’ ৯/১৬৬)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আইমান আলাইহাস সালাম’। তিনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারকেই সকলের মাঝে মশহূর হন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ بَرَكَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَتُكَنّٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত বারকাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আইমান আলাইহাস সালাম’ এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক-এ অবহিত হন। ” সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) غُلِبَتْ عَلَيْهَا كُنْيَتُهَا كُنِّيَتْ بِاِبْنِهَا حَضْرَتْ اَيْـمَنَ بْنِ عُبَيْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক উনার মাধ্যমে প্রাধান্য লাভ করেন। উনার সম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আইমান ইবনে ‘উবাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার কারণে উনাকে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আইমান আলাইহাস সালাম’ এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক-এ অবহিত করা হয়। ” সুবহানাল্লাহ!
আরো বর্ণিত রয়েছে-
كُنْيَتُهَا الَّتِـىْ اِشْتَهَرَتْ بِـهَا هِىَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক-এ প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন, তা হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আইমান আলাইহাস সালাম’। ” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার আরেকখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু উসামাহ্ আলাইহাস সালাম।
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) هِىَ اُمُّ اُسَامَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: “হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনিই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু উসামাহ্ আলাইহাস সালাম। ” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর লিত্ ত্ববারনী ২৬/৮৬, মাজমা‘উয যাওয়াইদ ৯/২৫৮)
এছাড়াও উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক ছিলেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুয যিবা আলাইহাস সালাম।
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
يُقَالُ لَـهَا سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ الظِّبَاءِ عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুয যিবা আলাইহাস সালাম বলা হতো। ” সুবহানাল্লাহ! (আর রওদ্বুল উন্ফ ৬/৫৭৭)
অপর বর্ণনায় রয়েছে-
وَتُكَنّٰى اَيْضًا بِـحَضْرَتْ اُمِّ الظِّبَاءِ عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুয যিবা’ আলাইহাস সালাম’ হিসেবেও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক গ্রহণ করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (জামিউল উছূল ১২/২২২)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার অসংখ্য-অগণিত লক্বব মুবারক রয়েছেন। তন্মধ্যে উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা’দা উম্মিহী, হাদ্বিনাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, খাদিমাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, খাদিমাতু ওয়ালিদাই রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যাতুল হিজরাতাইন, বাক্বিয়্যাতু আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছহিবাতুল ইয্যাহ্ ইত্যাদি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত শৈশবকাল:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি উনার প্রাথমিক জীবন মুবারক হাবশায় অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত খাদিমাহ্ হিসেবে তাশরীফ মুবারক:
জাহিলী যুগে ডাকাতরা কাফেলা থেকে ছোট ছেলে-মেয়েদেরকে ধরে এনে দাস-দাসী হিসেবে বিক্রি করে দিতো। না‘ঊযুবিল্লাহ! এমনি এক ডাকাতদল সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে শিশু বয়সে ধরে এনে দাসী হিসেবে বিক্রি করে দেয়। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে ক্রয় করে এনে উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খেদমত মুবারক-এ পেশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ১২ বছর। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক:
আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ‘আযীমুশ শান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ পেশ করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সবসময় নানাভাবে সন্তুষ্ট মুবারক করার জন্য এবং ইতমিনান দানের জন্য কোশেশ:
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ৬ মাস দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। তার মধ্যে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ এবং সম্মানিত শা’বান শরীফ এই দুই মাস সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর তিনি সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ মাসে সম্মানিত তিজারত তথা ব্যবসার উদ্দেশ্যে শাম দেশে সফর মুবারক-এ যান। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে অবস্থান মুবারক করতেছিলেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নিজে বলেছেন যে, “যেহেতু সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মাত্র দুই মাস অবস্থান করার পর ব্যবসা-বাণিজ্য করার জন্য সফরে গিয়েছেন, সেহেতু সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় চিন্তিত থাকতেন। আমি সবসময় উনাকে নানাভাবে সন্তুষ্ট করার জন্য, ইতমিনান মুবারক দান করার জন্য কোশেশ করতাম। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অপেক্ষমান ছিলেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি কবে সফর থেকে ফিরে আসবেন। এদিকে আমিও সবসময় বিষয়টা খোঁজ নিতাম। আমি জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে যেয়ে সংবাদ নিতাম; কিন্তু কখন আসবেন এই বিষয়টা তাহক্বীক্ব না থাকার কারণে আমি কখনো এটা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে জানাতে পারতাম না, ফলে তিনি চিন্তিত থাকতেন। ”
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশের সংবাদ মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পেশ করা:
দীর্ঘ একমাস শাম দেশে সম্মানিত তিজারত তথা ব্যবসা-বাণিজ্য করার পর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি কুরাইশদের নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। প্রায় এক মাস পর উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার কাছাকাছি এসে পৌঁছেন। অতঃপর উনারা যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তাই তিনি কুরাইশদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন-
اَتَـخَلَّفُ عِنْدَ اَخْوَالِـىْ بَنِـىْ عَدِىِّ بْنِ النَّجَّارِ.
অর্থ: “আমি সম্মানিত বনী আদী ইবনে নাজ্জার গোত্রের আমার সম্মানিত মামা উনাদের নিকট থেকে যাবো। ” (ইবনে সা’দ ১/৯৯, বিদায়াহ-নিহায়াহ ৩/৩৮২, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৭৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৩৩১, ‘উয়ূনুল আছার ১/৩৮ ইত্যাদি)
অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ থেকে যান। আর উনার সাথে যাঁরা ছিলেন উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ চলে যান।
অতঃপর যখন কুরাইশরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ পৌঁছেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই সম্মানিত কাফেলায় সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহি সালাম উনাকে দেখতে না পেয়ে অত্যন্ত চিন্তিত হলেন। তিনি এ বিষয়ে সবাইকে জিজ্ঞাসা করলেন। উনারা বললেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। ফলে তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ বনী আদী ইবনে নাজ্জার গোত্রে উনার সম্মানিত মামা উনাদের নিকট রয়ে গেছেন।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নিজে বলেছেন, “আমি সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে সংবাদ নিলাম। লোকজন যারা এসেছেন উনারা বলেছেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, যার জন্য তিনি আসতে পারেননি। এই সংবাদ যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পৌঁছানো হলো, তখন তিনি এটা শুনে নিজেও মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করলেন। ”
এদিকে যখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত বড় আওলাদ হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম উনাকে সংবাদ নেওয়ার জন্য, খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ পাঠালেন। তিনি এমতাবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ পৌঁছলেন যে, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যেও তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
এদিকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি বলতেছিলেন যে, “আমি প্রতিদিন সংবাদ নিতে থাকলাম যে, হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি কবে সংবাদ মুবারক নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ তাশরীফ মুবারক আনবেন। আর এদিকে তো সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় চিন্তিত ছিলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি কখন তাশরীফ মুবারক আনবেন। ”
সরাসরি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যমীনে তাশরীফ মুবারক নেয়ার সময় নিকবর্তী হওয়ার বিষয়ে সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক শ্রবণ:
আর এদিকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ মুবারক নেয়ার সময় নিকবর্তী হচ্ছিলেন পর্যায়ক্রমে। এই সংবাদ মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার কাছে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই দিয়েছিলেন এবং তিনি অত্যন্ত খুশি মুবারকও প্রকাশ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ প্রায় ৯ মাস অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! এ সময় মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে প্রতি মাসে প্রেরণ করেছেন এবং বিভিন্ন সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, প্রথম মাস সম্মানিত রজবুল আছাম শরীফ-এ সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি, দ্বিতীয় মাস সম্মানিত শা’বান শরীফ-এ সাইয়্যিদুনা হযরত শীছ আলাইহিস সালাম তিনি, তৃতীয় মাস সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ-এ হযরত ইদ্রীস আলাইহিস সালাম তিনি, চতুর্থ মাস সম্মানিত শাওয়াল শরীফ-এ হযরত নূহ আলাইহিস সালাম তিনি, পঞ্চম মাস সম্মানিত যিলক্বদ শরীফ-এ হযরত হুদ আলাইহিস সালাম তিনি, ষষ্ঠ মাস সম্মানিত যিলহজ্জ শরীফ-এ হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি, সপ্তম মাস সম্মানিত মুহররমুল হারাম শরীফ-এ হযরত যাবীহুল্লাহ্ আলাইহিস সালাম তিনি, অষ্টম মাস সম্মানিত ছফর শরীফ-এ হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি, নবম মাস সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ-এ) হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বিভিন্ন সুসংবাদ মুবারক নিয়ে তাশরীফ মুবারক রাখেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ সকল সুসংবাদ মুবারকসমূহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার নিকট বর্ণনা মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সংবাদ মুবারক পেশ:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, “হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ থেকে সংবাদ মুবারক নিয়ে আসলেন, তখন আমি গেলাম সংবাদ নেওয়ার জন্য। যখন সংবাদ শুনা গেলো যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, দীদার মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। তখন সকলে চিন্তিত হলেন এবং তিনি বলেন যে, উনি নিজেও সংবাদ শুনে হুঁশ মুবারক হারিয়ে ফেললেন, বেহুঁশ হয়ে গেলেন। ” সুবহানাল্লাহ!
কারণ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি চিন্তিত ছিলেন, তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কি সংবাদ পৌঁছাবেন? আর এই সংবাদ পৌঁছালে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কী শান মুবারক প্রকাশ করবেন? সে জন্য সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি চিন্তিত হয়ে তিনি নিজেই বলেন যে, “আমি বিলাপ করতে করতে অর্থাৎ এজন্য আফসোস করতে করতে আমি আমার নিজের হুঁশ হারিয়ে ফেলি। অনেক্ষণ পর্যন্ত আমি বেহুঁশ ছিলাম। যখন হুঁশ মুবারক ফিরে আসলো, তখন আমি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে এসে যখন বিষয়টা বললাম, আমার ভাষা দিয়ে আমি প্রকাশ করতে পারছিলাম না যে, কি করে এটা প্রকাশ করবো। তিনি বুঝতে পারলেন। তিনি বুঝতে পেরে নিজেও বেহুঁশী শান মুবারক প্রকাশ করলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি অনেকক্ষণ সেই শান মুবারক-এ ছিলেন। আমি উনার সেই শান মুবারক থেকে অর্থাৎ হুঁশ মুবারক আনার জন্য সার্বিকভাবে কোশেশ করতে থাকলাম যে, কোনো ব্যতিক্রম কিছু হয়ে যায় কিনা! অনেক কোশেশ করার পর তিনি উনার সম্মানিত ছিহ্হাতী শান মুবারক প্রকাশ করলেন এবং তিনি এজন্য অনেক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রকাশ করলেন অর্থাৎ অনেক রোনাজারী করলেন। ”
হস্তি বাহিনীর ঘটনার সময়েও সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান মুবারক করা এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া:
কাট্টা যালিম আবরাহা যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ আসলো, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সোপর্দ করে দিয়ে কাট্টা যালিম আবরাহার ধ্বংসের জন্য বদদোয়া মুবারক করেন। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার সম্মানিত অধিবাসী উনাদেরকে পাহাড়ে আরহণ করার জন্য নির্দেশ মুবারক দেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেও পাহাড়ে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য বলেন। কিন্তু সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পাহাড়ে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন এবং তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ উনার মধ্যেই সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। তিনি সেখানে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেই কাট্টা যালিম আবরাহার ধ্বংসের জন্য বদদোয়া মুবারক করেন। আর তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে ইরশাদ মুবারক করেন যে, কাট্টা যালিম আবরাহা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, বরং সে নিজেই ধ্বংস হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ! এ সময়েও সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান মুবারক করেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
ওয়ারিসসত্ত্ব হিসেবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেয়া:
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ওয়ারিসসত্ত্ব হিসেবে অনেক সম্পদ মুবারক রেখে যান। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন- সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
تَرَكَ اَبُوْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ ذَبِـيْحُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ) سَيِّدَتَنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَـا حَضْرَتْ اُمَّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَخَـمْسَةَ اَجْـمَالٍ وَقِطْعَةً مِّنْ غَنَمٍ وَفِـىْ رِوَايَةٍ وَسَيْفًا وَهُوَ مَاْثُوْرٌ فَوَرِثَ ذٰلِكَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ اَبِيْهِ وَكَانَتْ سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) تَـحْضُنُهٗ وَاسْـمُهَا سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ بَرَكَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ: “আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানীত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পূর্বে, দীদার মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেয়ার পূর্বে- সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে, ৫টি উট এবং একটি বকরীর পাল ওয়ারিসসত্ত্ব হিসেবে রেখে যান। অপর বর্ণনায় রয়েছে, আর তিনি ঐতিহ্যসূত্রে প্রাপ্ত একটি তরবারী মুবারকও রেখে যান। সুবহানাল্লাহ! ফলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার কাছ থেকে এই সমস্ত বিষয়গুলো ওয়ারিসসত্ত্ব হিসেবে লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত কোল মুবারক-এ নিতেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত বারাকাহ্ আলাইহাস সালাম’। ” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৩৩২, আল মুখতাছারুল কাবীর ১/২১, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৭৭, নিহায়াতুল ঈজায ১/৫৮, তালক্বীহ ১/১৪, ইবনে সা’দ ১/৮০ ইত্যাদি)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের পর থেকেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ সফর মুবারক:
দুনিয়াবী দৃষ্টিতে যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছয় বছর, তখন উনার মহাসম্মানিত হযরত আম্মাজান, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেন। উনাদের সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনিও ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
لَمَّا بَلَغَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سِتَّ سِنِيْنَ خَرَجَتْ بِهٖ اُمُّهٗ اِلـٰى اَخْوَالِهٖ بَنِىْ عَدِىِّ بْنِ النَّجَّارِ بِالْمَدِيْنَةِ تَزُوْرُهُمْ وَمَعَهٗ سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ)
অর্থ: “দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক যখন ছয় বছর, তখন উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মাজান, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ বনী নায্যার গোত্রে উনার মামা উনাদের সাথে সাক্ষাৎ মুবারক করার জন্য বের হন। তখন উনাদের সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনিও ছিলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আল মুখতাছারুল কাবীর ফী সীরাতির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/২৬)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
اَنَّ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمَّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) خَرَجَتْ بِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ اِبْنُ سِتِّ سِنِيْنَ اِلـٰى اَخْوَالِهٖ بَنِىْ عَدِىِّ بْنِ النَّجَّارِ بِالْمَدِيْنَةِ تَزُوْرُهُمْ بِهٖ وَمَعَهَا سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) تَـحْضُنُهٗ وَهُمْ عَلـٰى بَعِيْرَيْنِ.
অর্থ: “দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক যখন ছয় বছর, তখন সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ বনী নাজ্জার গোত্রে উনার মামা উনাদের সাথে সাক্ষাৎ মুবারক করার উদ্দেশ্যে বের হন। তখন উনাদের সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনিও ছিলেন, যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা দুইটি উট মুবারক-এ আরোহণ মুবারক করে রওয়ানা হয়েছিলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (খছাইছুল কুবরা, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ, শরহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ অবস্থান মুবারক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অসংখ্য মু’জিযা শরীফ উনার বহিঃপ্রকাশ:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ এক মাস অবস্থান মুবারক করেন। সেখানেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অসংখ্য মু’জিযা শরীফ প্রকাশিত হন। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
قَالَتْ سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ( فَجَاءَنِـىْ ذَاتَ يَوْمٍ رَجُلَانِ مِنْ يَّهُوْدِ الْمَدِيْنَةِ فَقَالَا لِــىْ اَخْرِجِىْ اِلَيْنَا سَيِّدَنَا حَضْرَتْ اَحْمَدَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَنْظُرُ اِلَيْهِ فَنَظَرَ اِلَيْهِ وَقَلَّبَاهُ فَقَالَ اَحَدُهُـمَا لِصَاحِبِهٖ هٰذَا نَبِـىُّ هٰذِهِ الْاُمَّةِ وَهٰذِهٖ دَارُ هِجْرَتِهٖ وَسَيَكُوْنُ بِـهَا مِنَ الْقَتْلِ وَالسَّبْـىِ اَمْرٌ عَظِيمٌ فَلَمَّا سَـمِعَتْ اُمُّهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَافَتْ وَانْصَرَفَتْ بِهٖ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, যখন আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ অবস্থান করছিলাম, তখন দুজন ইহুদী একদা আমার নিকট এসে বললো, সাইয়্যিদুনা হযরত আহমদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে আসুন, আমরা উনাকে দেখতে চাই। তারপর তারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখে ফিরে গেলো অর্থাৎ চলে গেলো। অতঃপর তাদের একজন আরেকজনকে বললো, তিনি হচ্ছেন এই উম্মতের মহাসম্মানিত নবী-রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ হচ্ছেন উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হিজরত মুবারক উনার স্থান মুবারক। আর অতিশীঘ্রই এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শহর মুবারক-এ হত্যাকা- ও মানুষ বন্দী হওয়ার মত অনেক বড় বড় ঘটনা সংঘটিত হবে। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের এরূপ কথা শুনে চিন্তিত হলেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার দিকে রওয়ানা মুবারক হলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২/৩৪০)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
قَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَظَرْتُ اِلـٰى رَجُلٍ مِّنَ الْيَهُوْدِ يَـخْتَلِفُ اِلَـىَّ يَنْظُرُ اِلَـىَّ ثُـمَّ يَنْصَرِفُ عَنِّـىْ فَلَقِيَنِـىْ يَوْمًا خَالِيًا فَقَالَ يَا غُلَامُ مَا اسْـمُكَ قُلْتُ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَحْمَدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَظَرَ اِلـٰى ظَهْرِىْ فَاَسْـمَعُهٗ يَقُوْلُ هٰذَا نَـبِّـىُّ هٰذِهِ الْاُمَّةِ ثُـمَّ رَاحَ اِلـٰى اَخْوَالِـىْ فَخَبَّرَهُمُ الْـخَبَرَ فَاَخْبَرُوْا اُمِّىْ فَخَافَتْ عَلَىَّ فَخَرَجْنَا مِنَ الْمَدِيْنَةِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি এক ইহুদীকে আমার দিকে তাকিয়ে বিভিন্ন কথা বলতে দেখলাম। তারপর আমার নিকট থেকে সে চলে গেলো। অতঃপর একদিন নিরিবিলি সময়ে আমার সাথে সাক্ষাৎ করে সে বললো, হে মহাসম্মানিত বালক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসম বা নাম মুবারক কী? আমি বললাম- সাইয়্যিদুনা হযরত আহমদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আত্বহার মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিঠ মুবারক) উনার দিকে তাকালো। তারপর আমি শুনলাম, সে বলছে- তিনি হচ্ছেন এই উম্মতের মহাসম্মানিত নবী-রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! তারপর সে আমার মহাসম্মানিত মামা উনাদের নিকট গিয়ে উনাদেরকে এই সংবাদ মুবারক দিলো। উনারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনাকে সংবাদ মুবারক দিলেন। তখন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম তিনি আমার ব্যাপারে অত্যন্ত চিন্তিত হলেন। তারপর আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ থেকে বের হই। ” (পবিত্র মক্কা শরীফ উনার দিকে রওয়ানা মুবারক হই) সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ২/১২০, দালায়িলুন নুবুওওয়াহ্ লিআবী নাঈম ১/১৬৩, খছাইছুল কুবরা ১/১৩৫ ইত্যাদি)
উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ওছীয়ত মুবারক:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার ইহুদীরা যখন উনাকে চিনে ফেলে যে তিনিই হচ্ছেন আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তারা যখন ফিতনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে, এমতাবস্থায় সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, মালিকুল জান্নাহ, মালিকুল কায়িনাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ) ফজরের পর (সকালে) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা মুবারক হন। সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনিও ছিলেন। উনারা দুইটি উট মুবারকের উপর আরোহন করে রওয়ানা মুবারক হন। পথিমধ্যে উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবওয়া শরীফ নামক স্থানে যান। সেখানে যেয়ে উনারা মালিকুল জান্নাহ, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, মাহবূবে এলাহী, আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত মুবারক করেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের, দীদার মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেয়ার সময় নিকটবর্তী হন। ফলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যথাযথভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য সম্মানিত ওছীয়ত মুবারক করেন এবং তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি অতিশীঘ্রই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করতে যাচ্ছি। আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন এবং যিনি খ্বালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! কাজেই আপনি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যথাযথ সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। ” সুবহানাল্লাহ!
উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার অবিরত ধারায় কান্না মুবারক করা:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত ওছীয়ত মুবারক করার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বসা থাকা অবস্থায় উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহ্মাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চেহারা মুবারক) উনার দিকে তাকিয়ে উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ‘সুমহান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’ত শরীফ’ পাঠ করতে করতে সাইয়্যিদাতুল উম্মাহাত, মালিকুল জান্নাহ, মালিকুল কায়িনাত, হাবীবাতুল্লাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত বক্ষ মুবারক-এ নিয়ে শুয়ে পড়েন এবং এমতাবস্থায় মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আহ্বান মুবারক-এ সাড়া দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সময়টি ছিলো সকাল ৯-১০টার দিকে। অর্থাৎ ইশরাক উনার ওয়াক্ত শেষ এবং চাশত বা দ্বোহা উনার ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর। সুবহানাল্লাহ! তখন কায়িনাতের মাঝে কিরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিলো তা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে অবিরত ধারায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করতে থাকেন। উনার সাথে সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনিও অবিরত ধারায় কান্না মুবারক করতে থাকেন। শুধু তাই নয়, সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, জিন, গাছ-পালা, তরু-লতা, চন্দ্র-সূর্য, আকাশ-বাতাস এক কথায় সমস্ত কায়িনাত কান্না করতে থাকেন। জিনেরা উনার শান মুবারক-এ শোকগাঁথা তথা সম্মানিত না’ত শরীফ পাঠ করেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ রওয়ানা:
মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মাধ্যমে কুদরতময়ভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত গোসল মুবারক এবং সম্মানিত কাফন মুবারক সুসম্পন্ন করা হয়। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবওয়া শরীফ নামক স্থানে সাইয়্যিদুল বাশার, মালিকুল জান্নাহ, আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার পাশে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ খনন করেন। অতঃপর কুদরতময়ভাবে অত্যন্ত আদব ও তা’যীম-তাকরীমের সাথে উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা হয় অর্থাৎ তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ প্রত্যাবর্তন করেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَمَاتَتْ فَقَدِمَتْ بِهٖ سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) بَعْدَ مَوْتِ اُمِّهٖ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِـخَمْسَةِ اَيَّـامٍ.
অর্থ: “অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার ৫ দিন পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ) তাশরীফ মুবারক নেন। ” সুবহানাল্লাহ! (যাখাইরুল ‘উক্ববা ফী মানাক্বিবি যাওইল কুরবা ১/২৫৮, জামি‘উল উছূল ১২/৯১, ইস্তী‘য়াব ১/৩০, তারীখুল খমীস ১/২৩০ ইত্যাদি)
আল্লামা হযরত ইবনে আছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
فَمَاتَتْ فَقَدِمَتْ بِهٖ سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) بَعْدَ مَوْتِ اُمِّهٖ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِـخَمْسَةِ اَيَّـامٍ فَقَبَضَهٗ مِنْهَا جَدُّهٗ سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ بْنُ هَاشِمٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَكَفَلَهٗ.
অর্থ: “অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার ৫ দিন পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ) তাশরীফ মুবারক নেন। তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার নিকট হতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গ্রহণ করেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়ার দায়িত্ব মুবারক নেন। ” সুবহানাল্লাহ! (জামি‘উল উছূল ১২/৯১)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্বায়িম মাক্বাম হয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া:
ছিহাহ সিত্তার অন্যতম কিতাব ‘মুসলিম শরীফ’-এ বর্ণিত রয়েছে,
فَلَمَّا وَلَدَتْ اُمُّهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ) رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ مَا تُوُفِّـىَ اَبُوْهُ فَكَانَتْ سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) تَـحْضُنُهٗ حَتّٰـى كَبُرَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী দৃষ্টিতে বেড়ে উঠা পর্যন্ত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেন। ” সুবহানাল্লাহ!
বিশেষ করে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর উনার ক্বায়িম মাক্বাম হয়ে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার এই বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক-এ এতো অধিক সন্তুষ্টি মুবারক প্রকাশ করেছিলেন যে, তিনি উনাকে ‘উম্মী বা’দা উম্মী’ অর্থাৎ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার পরে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে ‘উম্মী বা আমার মা’ বলে সম্বোধন মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন আমার মহাসম্মানিত মাতা আলাইহাস সালাম। ” সুবহানাল্লাহ! (‘উমদাতুল ক্বারী ১৬/২৩৪, ইমতা‘উল আসমা’ ৯/১৬৬)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ لِسَيِّدَتِنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَـا حَضْرَتْ اُمِّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) يَا اُمَّهْ وَكَانَ اِذَا نَظَرَ اِلَيْهَا قَالَ هٰذِهٖ بَقِيَّةُ اَهْلِ بَيْتِـىْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, হে আমার মহাসম্মানিত আম্মা আলাইহাস সালাম! সুবহানাল্লাহ! আর তিনি যখনই উনার দিকে দৃষ্টি মুবারক দিতেন, তখনই ইরশাদ মুবারক করতেন- তিনি হচ্ছেন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে অবশিষ্ট ব্যক্তিত্ব মুবারক। ” সুবহানাল্লাহ! (আল মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৬৩, আল ইছাবাহ্ ৮/১৭০, আত্ ত্ববাক্বাতুল কুবরা ৮/২২৩, আস সীরতুন নববী লি ইবনে কাছীর ৪/৬৪২, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৫/৩৪৭, মুখতাছারু তারীখে দিমাশক্ব ১/২৫৫, তারীখুত্ ত্ববারী ১১/৬১৬, ইমতা‘উল আসমা’ ৯/১৬৬)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
وَكَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ لِسَيِّدَتِنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَـا حَضْرَتْ اُمِّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) اَنْتِ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ وَيَقُوْلُ حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার পর আপনি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করতেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন আমার মহাসম্মানিত মাতা আলাইহাস সালাম। ” সুবহানাল্লাহ! (আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ্ ১/১৭২)
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَلَقَدْ عَاشَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا زَالَ يُنَادِيْهَا يَا اُمَّهْ يَا اُمَّهْ كُلَّمَا رَاٰهَا وَتَـحَدَّثَ اِلَيْهَا.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়ার যমীনে যতোদিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছেন, ততোদিন যখনই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে দেখেছেন এবং উনার সাথে আলোচনা মুবারক করেছেন, তখনই উনাকে হে আমার মহাসম্মানিত আম্মা আলাইহাস সালাম! হে আমার মহাসম্মানিত আম্মা আলাইহাস সালাম! বলে সম্বোধন মুবারক করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ!
আরো বর্ণিত রয়েছে,
كَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ وَكَانَ يَزُوْرُهَا فِـىْ بَيْتِهَا.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত যিয়ারত মুবারক করার জন্য, উনাকে দেখাশুনা করার জন্য, উনাকে সম্মানিত ছোহবত মুবারক হাদিয়া মুবারক করার জন্য উনার মহাসম্মানিত হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিতেন। ” সুবহানাল্লাহ! (উস্দুল গবাহ্)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ব্যাপারে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে ওয়াছীয়ত মুবারক:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ سَيِّدَتِنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَـا حَضْرَتْ اُمِّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَالَتْ كُنْتُ اَحْضُنُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَغَفَلْتُ عَنْهُ يَوْمًا فَلَمْ اَدْرِ اِلَّا بِـسَيِّدِنَا حَضْرَتْ جَدِّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدِنَـا حَضْرَتْ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) قَائِمًا عَلـٰى رَأْسِهٖ يَقُوْلُ يَا حَضْرَتْ بَرَكَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ قُلْتُ لَبَّيْكَ قَالَ اَتَدْرِيْنَ اَيْنَ وَجَدْتُّ اِبْنِـىْ قُلْتُ لَا اَدْرِىْ قَالَ وَجَدْتُّهٗ مَعَ غِلْمَانٍ قَرِيْبًا مِّنَ السِّدْرَةِ لَا تَغْفُلِىْ عَنْهُ فَاِنَّ اَهْلَ الْكِتَابِ يَزْعَمُوْنَ اَنَّهٗ نَبِـىُّ هٰذِهِ الْاُمَّةِ وَاَنَا لَا اٰمَنُهُمْ عَلَيْهِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতাম। একদিন আমি উনার থেকে অন্যমনস্ক ছিলাম। আমি জানতাম না যে, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হুদা মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাথা মুবারক) উনার নিকট অবস্থান মুবারক করছেন। তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম! আমি বললাম, লাব্বাইক! (আমি উপস্থিত। ) সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আপনি কি জানেন আমি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কোথায় পেয়েছি? আমি বললাম, আমি জানি না। তিনি বললেন, আমি উনাকে সিদরাতের নিকবর্তী বালকদের কাছে পেয়েছি। আপনি উনার থেকে অন্যমনস্ক হবেন না। কেননা, অবশ্যই আহলে কিতাব তথা ইয়াহূদী এবং খৃষ্টানরা ধারণা করে যে, নিশ্চয়ই তিনি হচ্ছেন এই উম্মাহ্র মহাসম্মানিত নবী-রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যাপারে আমি আহলে কিতাব তথা ইয়াহূদী এবং খৃষ্টানদেরকে বিশ্বস্ত মনে করি না। ” (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ২/১৩০)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শৈশবকাল মুবারক উনার স্মৃতিচারণ মুবারক করা:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَحَضَنَتْهُ بَعْدَ اُمِّهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) حَضْرَتْ بَرَكَةُ الْـحَـبَشِيَّةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ مَوْلَاةُ اَبِيْهِ حَتّٰـى مَاتَ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ جَدُّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) وَلَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْعُمْرِ ثَـمَانِـىْ سِنِيْنَ وَقَدْ اَوْصٰى بِهٖ اِلـٰى اِبْنِهٖ اَبِـىْ طَالِبٍ لِاَنَّهٗ كَانَ اَخَا اَبِـىْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) لِاُمِّهٖ فَكَفَلَهٗ عَمُّهٗ اَبُوْ طَالِبِ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَاطَهٗ اَتَـمَّ حِيَاطَةً.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! এমতাবস্থায় সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৮ বছর অর্থাৎ ৮ বছর ২ মাস ১০দিন। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার) ব্যাপারে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার আওলাদ (সন্তান) আবূ ত্বালিব উনাকে সম্মানিত ওছিয়াত মুবারক করে যান। সুবহানাল্লাহ! কেননা, আবূ ত্বালিব ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার আপন ভাই। তখন আবূ ত্বালিব তিনি পরিপূর্ণ যতœসহকারে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখাশুনা করেন, উনার সম্মানিত খেদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। ” সুবহানাল্লাহ! (ইমতা‘উল আসমা’ ১/১৪)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
قَالَتْ سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) رَاَيْتُهٗ يَبْكِىْ خَلْفَ سَرِيْرِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ جَدِّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ)
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খাটিয়া মুবারক উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কান্না মুবারক) করতে করতে চলতে দেখেছি। ” সুবহানাল্লাহ! (আল ক্বওলুল মুবীন ৯৭ পৃষ্ঠা)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক করা:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
كَانَتْ تُرَبِّـىْ اَوْلَادَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ خَدِيْـجَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَلَمَّا وَلَدَتْ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ اَلنُّوْرَ الْاَوَّلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدَنَا حَضْرَتْ اَلْقَاسِمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ) خَدَمَتْهٗ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ بَرَكَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ)
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মধ্যস্থতায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! যখন সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক করেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আল ইছাবাহ্ ৭/৫৪২)
আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈমান মুবারক প্রকাশ:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَلَمَّا بُعِثَ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَتْ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) مِنْ اَوَائِلَ مَنْ اٰمَنَ بِهٖ.
অর্থ: “যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালাত মুবারক আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হন, তখন প্রথম দিকে যাঁরা সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি উনাদের অন্যতম। ” সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালাত মুবারক প্রকাশের কয়েক দিন পর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। তারপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি খাদিমা হিসেবে প্রথম সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ ইবনে হারিছাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যে উনারা সকলে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। ” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত গোসল মুবারক করানো:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক ও সম্মানিত রিসালাত মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসর ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪৯ বছর ৬ মাস ৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
غَسَّلَتْهَا سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَحَضْرَتْ اُمُّ الْفَضْلِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهَا.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত গোসল মুবারক করান- সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি অর্থাৎ উনারা। ” সুবহানাল্লাহ! (আনসাবুল আশরাফ ১/৪০৬)
একখানা বিশেষ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মু’জিযা শরীফ:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اَنَّـهَا عَطِشَتْ فِـىْ سَفَرٍ فَلَمْ تَـجِدْ مَاءً اِلَّا عِنْدَ يَهُوْدِىٍّ وَاَبٰـى اَنْ يَّسْقِيَهَا اِلَّا اَنْ تَدِيْنَ بِدِيْنِهٖ فَاَبَتْ اِلَّا اَنْ تَـمُوْتَ عَطَشًا فَدُلِيَتْ لَـهَا دَلْو ٌ مِنَ السَّمَاءِ فَشَرِبَتْ ثُـمّ رُفِعَتِ الدَّلْوُ وَهِىَ تَنْطُرُ .
অর্থ: “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি এক সফরে পিপাসার্ত হয়েছিলেন। কিন্তু কোনো পানি পেলেন না। একজন ইয়াহূদীর নিকট পানি থাকলেও সে তার ধর্ম গ্রহণ না করার কারণে উনাকে পানি দিতে অস্বীকার করে। না‘ঊযুবিল্লাহ! তিনি তার ধর্ম গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান; এমনকি এ সময় উনার অবস্থা এমন হয় যে তিনি বিছাল শরীফ গ্রহণ করবেন। তখন উনার জন্য আসমান থেকে একটি বালতি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তিনি (সেখান থেকে) পানি পান করেন। অতঃপর তিনি দেখতে দেখতে বালতি তুলে নেওয়া হয়। ” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
وَلَيْسَ مَعَهَا مَاءٌ وَهِـىَ صَائِمَةٌ وَجَهَدَتْ فَدَلّٰـى عَلَيْهَا مِنَ السَّمَاءِ دَلْوٌ مِّنْ مَّاءٍ بِرِشَاءٍ اَبْيَضَ فَشَرِبَتْ وَكَانَتْ تَقُوْلُ مَا اَصَابَنِـىْ بَعْدَ ذٰلِكَ عَطَشٌ
অর্থ: “তখন উনার কাছে কোন পানি ছিলনা। এমন অবস্থায় তিনি পিপাসা অনুভব করলেন। তখন আসমান হতে সাদা রশিতে বাধা বালতি ভরতি পানি উনার নিকট প্রেরণ করা হয়। আর তিনি বলতেন, আসমানী সেই কুদরতী পানি পান করার পর আমি কখনো পিপাসা অনুভব করিনি। ” সুবহানাল্লাহ! (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা)
সম্মানিত উহুদের জিহাদ মুবারক-এ:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র উহুদ জিহাদ মুবারক-এ সৈনিকদের পানি পান করানো ও আহতদের চিকিৎসার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
قَالَ الْوَاقِدِىُّ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) اُحُدًا وَكَانَتْ تَسْقِى الْمَاءَ وَتُدَاوِى الْـجَرْحٰى
অর্থ: “হযরত ইমাম ওয়াক্বিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি উহুদের সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি পানি পান করাতেন এবং আহতদের চিকিৎসা মুবারক করতেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আল ফাজরুস সাত্বি’ ৩/২৯)
আরো বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَتْ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) حَاضِنَةُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَسْقِى الْمُسْلِمِيْنَ الْمَاءَ فِـىْ نِسْوَةٍ مِّنْ نِّسَاءِ الْاَنْصَارِ فَرَمَاهَا حِبَّانُ بْنُ الْعَرَقَةِ بِسَهْمٍ فَاَصَابَ ذَيْلَهَا (فَانْكَشَفَ عَنْهَا) فَاسْتَغْرَبَ ضَحْكًا فَدَفَعَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلـٰى حَضْرَتْ سَعْدِ ابْنِ اَبِـىْ وَقَّاصٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ سَهْمًا وَقَالَ اِرْمِهٖ فَاَصَابَهٗ فَسَقَطَ مُسْتَلْقِيًا مَيِّتًا. فَضَحِكَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حتّٰى بَدَتْ نَوَاجِذُهٗ
অর্থ: “হাদ্বিনাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র উহুদ জিহাদ মুবারক-এ আনসার মহিলা ছাহাবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্না উনাদের সাথে সম্মানিত মুসলমান মুজাহিদ উনাদেরকে পানি পান করাচ্ছিলেন। উনাকে লক্ষ্য করে হিব্বান ইবনে ‘আরাকা একটি তীর নিক্ষেপ করে। না‘ঊযুবিল্লাহ! তীরটি উনার আঁচলে লাগে এবং উনার সম্মানিত জিসিম মুবারক উনার কিছু অংশ বেরিয়ে পড়ে। তা দেখে তীর নিক্ষেপকারী অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত হাতে একটি তীর ধরিয়ে দিয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, এটি নিক্ষেপ করুন। হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি তীরটি নিক্ষেপ করলেন এবং তা হিব্বান ইবনে ‘আরাকার গায়ে আঘাত হানে। সাথে সাথে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তা দেখে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এমনভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শাহাদাত মুবারক (মুচকি হাসি থেকে একটু বেশি হাসি মুবারক) দেন যে, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল্লাহ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দাঁত মুবারক) দেখা যায়। ” সুবহানাল্লাহ! (আনসাবুল আশরাফ ১/৩২০)
আরো বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَ مِـمَّنْ وَلّٰـى يَوْمَ اُحُدٍ اَلْـحَارِثُ بْنُ حَاطِبٍ وَثَعْلَبَةُ بْنُ حَاطِبٍ وَسَوَادُ بْنُ غَزِيَّةَ وَسَعْدُ بْنُ عُثْمَانَ وَعُقْبَةُ بْنُ عُثْمَانَ وَخَارِجَةُ ابْنُ عَامِرٍ وَاَوْسُ بْنُ قَيْظِىٍّ فِـىْ نَفَرٍ مِّنْ بَنِـىْ حَارِثَةَ فَلَقِيَتْهُمْ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَجَعَلَتْ تَـحْثُو التُّرَابَ فِـىْ وُجُوْهِهِمْ وَتَقُوْلُ لِبَعْضِهِمْ هَاكَ الْمِغْزَلَ فَاغْزِلْ بِهٖ.
অর্থ: “সম্মানিত ও পবিত্র উহুদ জিহাদ মুবারক উনার দিন আল হারিছ ইবনে হাতিব, ছা’লাবা ইবনে হাতিব, সাওয়াদ ইবনে গাযিয়্যা, সা’দ ইবনে ‘উছমান, উক্ববাহ ইবনে উছমান, খরিজাহ ইবনে আমির, আউস ইবনে ক্বইজী এবং বনী হারিছ গোত্রের আরো কয়েক ব্যক্তি (ময়দান থেকে) পালিয়ে আসে। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি তাদেরকে ভীষণ তিরস্কার করেন। তিনি তাদর মুখে ধুলি-বালি নিক্ষেপ করে তাদেরকে লক্ষ্য করে বলতে থাকেন- চরকা লও, (মহিলাদের মতো ঘরে বসে বসে) সুতা কাটো। ” (আনসাবুল আশরাফ ১/৩২৬)
আরো বর্ণিত রয়েছে,
وَلَمَّا صَاحَ اِبْلِيْسُ اَنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ قُتِلَ تَفَرَّقَ النَّاسُ فَمِنْهُمْ مِنْ وَرْدِ الْمَدِيْنَةِ فَكَانَ اَوَّلُ مَنْ دَخَلَهَا بِـهٰذَا الْـخَبَرِ اَبُوْ عُبَادَةَ سَعْدُ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ خَلْدَةَ بْنِ مَـخْلَدِ بْنِ عَامِرِ ابْنِ زُرَيْقِ الْاَنْصَارِىُّ ثُـمَّ وَرَدَ بَعْدَهٗ رِجَال ٌ فَجَعَلَ النِّسَاءُ يَقُلْنَ عَنْ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَفِرُّوْنَ وَجَعَلَ اِبْنُ اُمِّ مَكْتُوْمٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ يَقُوْلُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَفِرُّوْنَ وَحَثَّتْ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فِـىْ وُجُوْهِ بَعْضِهِمِ التُّرَابَ وَتَقُوْلُ هَاكَ الْمِغْزَلَ اِغْزِلْ بِهٖ
অর্থ: “যখন মাল‘ঊন ইবলিস চিৎকার দিয়ে বললো যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন লোকজন বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে লাগলেন। উনাদের মধ্যে (অনেকেই ছিলেন) যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ এসে পৌঁছে গিয়েছিলেন। যিনি প্রথম এই সংবাদ নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ প্রবেশ করেছিলেন, তিনি হচ্ছেন আবূ ‘উবাদাহ্ সা’দ ইবনে ‘উছমান ইবনে খালদাহ্ ইবনে মাখলাদ ইবনে ‘আমের ইবনে যুরাইক্ব আল আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। উনার পর আরো অনেক পুরুষ এসে পৌঁছলেন। তখন হযরত মহিলা ছাহাবিয়াহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্না উনারা বললেন, আপনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে পলায়ন করেছেন? হযরত ইবনে উম্মে মাকতূম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, আপনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে পলায়ন করছেন? আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি উনাদের কারো কারো চেহারায় ধুলি-বালি নিক্ষেপ করে বলতেছিলেন, চরকা লও, (মহিলাদের মতো ঘরে বসে বসে) সুতা কাটো। ” সুবহানাল্লাহ! (ইমতা‘উল আসমা’ ১/১৬৪)
আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ:
আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয় ২য় হিজরী শরীফ উনার ২রা যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ রাত)। তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মু আবীহা, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহ্রা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ১৭ বছর ৫ মাস ১২ দিন অর্থাৎ সাড়ে ১৭ বছর। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ২৪ বছর ৪ মাস ১৯ দিন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফও বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত লাইলাতুয যুফাফ শরীফ-এ সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার ঘর মুবারক-এ অবস্থান করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
اَنَّ حَضْرَتْ اَسْـمَاءَ بِنْتَ عُمَيْسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهَا قَالَتْ لَمَّا اُهْدِيَتِ النُّوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ الزَّهْرَاءُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ) اِلـٰى اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ (حَضْرَتْ عَلِىٍّ بْنِ اَبِـىْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ) لَـمْ نَـجِدْ فِـىْ بَيْتِهٖ اِلَّا رَمَلًا مَبْسُوْطًا وَوِسَادَةً حَشَوْهَا وَجَرَّةً وَكُوْزًا فَاَرْسَلَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلـٰى اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ (حَضْرَتْ عَلِىِّ بْنِ اَبِـىْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ) لَا تُـحْدِثَنَّ حَدِيْثًا اَوْ قَالَ لَا تَقْرَبَنَّ اَهْلَكَ حَتّٰى اٰتِيَكَ فَجَاءَ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ اَثَـمَّ اَخِىْ فَقَالَتْ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَهِىَ اُمُّ اُسَامَةَ بْنُ زَيْدٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَكَانَتْ حَبَشِيَّةً وَكَانَتْ اِمْرَاَةً صَالِـحَةً يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هٰذَا اَخُوْكَ وَزَوَّجْتَهٗ اِبْنَتَكَ وَكَانَ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اٰخٰى بَيـْنَ اَصْحَابِهٖ وَاٰخٰى بَيـْنَ حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ (حَضْرَتْ عَلِىٍّ بْنِ اَبِـىْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ) وَنَفْسِهٖ قَالَ اِنَّ ذٰلِكَ يَكُوْنُ يَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (حَضْرَتْ اُمَّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَالَتْ فَدَعَا النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِاِنَاءٍ فِيْهِ مَاء ٌ فَقَالَ فِيْهِ مَا شَاءَ اللهُ اَنْ يَّقُوْلَ ثُـمَّ مَسَحَ بِهٖ صَدْرَ حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ (حَضْرَتْ عَلِىٍّ بْنِ اَبِـىْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ) وَوَجْهَهٗ ثُـمَّ دَعَا النُّوْرَ الرَّابِعَةَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ الزَّهْرَاءَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَقَامَتْ اِلَيْهِ تَعْثُرُ فِـىْ مِرْطِهَا مِنَ الْـحَيَاءِ فَنَضَحَ عَلَيْهَا مِنْ ذٰلِكَ، وَقَالَ لَـهَا مَا شَاءَ اللهُ اَنْ يَّقُوْلَ ثُـمَّ قَالَ لَـهَا اِنِّـىْ لَـمْ اٰلُكِ اَنْ اَنْكَحْتُكِ اَحَبَّ اَهْلِىْ اِلَـىَّ ثُـمَّ رَاٰى سَوَادًا مِنْ وَرَاءِ السِّتْرِ اَوْ مِنْ وَرَاءِ الْبَابِ فَقَالَ مَنْ هٰذَا قَالَتْ اَسْـمَاءُ قَالَ اَسْـمَاءُ بِنْتُ عُمَيْسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهَا قَالَتْ نَعَمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ جِئْتِ كَرَامَةً لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَ اِبْنَتِهٖ قَالَتْ نَعَمْ اِنَّ الْفَتَاةَ لَيْلَةَ يُبْنٰى بِـهَا لَا بُدَّ لَـهَا مِنِ امْرَاةٍ تَكُوْنُ قَرِيْبًا مِنْهَا اِنْ عَرَضَتْ لَـهَا حَاجَةً اَفَضَتْ بِذٰلِكَ اِلَيْهَا قَالَتْ فَدَعَا لِـىْ بِدُعَاءٍ
অর্থ: “নিশ্চয়ই হযরত আসমা বিনতে ‘উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি বলেন, আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে যখন ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়, তখন আমরা উনার মহাসম্মানিত হুজরা শরীফ উনার মধ্যে একটি মেঝের মাদুর, একটি বালিশ, একটি পানির কলসী এবং একটি ছোট জগ বা মগ ছাড়া কিছুই পাইনি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে একটি বার্তা মুবারক পাঠালেন যে, অবশ্যই অবশ্যই কোনো নতুন কাজ শুরু করবেন না অথবা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার পূর্বে আপনি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যাওজাতুম মুর্কারামাহ্ উনার নিকটবর্তী হবেন না। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে ইরশাদ মুবারক করলেন, ‘আমার মহাসম্মানিত ভাই (ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম) তিনি কি (মহাসম্মানিত হুজরা শরীফ উনার মধ্যে) আছেন?’ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত উসামাহ্ ইবনে যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার মহাসম্মানিত আম্মাজান আলাইহাস সালাম। তিনি ছিলেন অত্যন্ত নেককার-পরহেযগার একজন আবিসিনীয় মহাসম্মানিত মহিলা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা মুবারক করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি আপনার মহাসম্মানিত ভাই অথচ আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত, আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহ্রা আলাইহাস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন করেছেন? (মুয়াখ্খাতের দিন) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে ভ্রাতৃবন্ধনে আবদ্ধ করে দিয়েছিলেন। আর তিনি স্বয়ং নিজে ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার মহাসম্মানিত ভ্রাতৃবন্ধনে আবদ্ধ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম! নিশ্চয়ই এমন কখনো কখনো ঘটতে পারে। হযরত আসমা বিনতে ‘উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি বলেন, তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পানিসহ একটি পাত্র মুবারক আনার জন্য বললেন। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমনটা চান তেমন কিছু ইরশাদ মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি তা দ্বারা ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বক্ষ মুবারক এবং সম্মানিত চেহারা মুবারক মাসেহ করলেন। অতঃপর তিনি আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহ্রা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত আহ্বান মুবারক করলেন। তখন আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহ্রা আলাইহাস সালাম তিনি লজ্জার কারণে উনার সম্মানিত চাদর মুবারক দ্বারা আবৃত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে দাঁড়ালেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহ্রা আলাইহাস সালাম উনার দিকে পানি ছিটিয়ে দিলেন এবং উনাকে (অল্প আওয়াজ মুবারক-এ) মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমনটা চান, তেমন কিছু ইরশাদ মুবারক করলেন। তারপর তিনি উনাকে (আরো) ইরশাদ মুবারক করলেন, ‘(আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাত আলাইহাস সালাম!) নিশ্চয়ই আমি আপনাকে আমার পরিবারের সর্বোত্তম ব্যক্তিত্ব উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ দিয়েছি। ’ সুবহানাল্লাহ! তারপর (যখন তিনি আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে কথা মুবারক বলছিলেন, তখন) পেছনে তাকালেন এবং পর্দার পেছনের দিকে কাউকে দেখলেন এবং জিজ্ঞাসা মুবারক করলেন, তিনি কে? হযরত আসমা বিনতে ‘উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি বলেন, (ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি) হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা মুবারক করলেন, হযরত আসমা বিনতে উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা? তিনি বললেন, জী; হ্যাঁ, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি কি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত, আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে আমার সুখের জন্য এসেছেন? তিনি জবাব দিলেন, ‘জী; হ্যাঁ, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই লাইলাতুল বিনা বা লাইলাতুয যুফাফ-এ নতুন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার সাথে একজন নিকট আত্মীয় (পরিচিত মহিলা) আসা আবশ্যক, যিনি উনাকে প্রয়োজনে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতে পারেন। ’ হযরত আসমা বিনতে ‘উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সম্মানিত দোয়া মুবারক করলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর ২৪/১৩৭, মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ৫/৪৮৫)
অপর বর্ণনায় এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَسْـمَاءَ بِنْتِ عُمَيْسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهَا قَالَتْ كُنْتُ فِـىْ زِفَافِ النُّوْرِ الرَّابِعَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) بِنْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا اَصْبَحَتْ جَاءَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَضَرَبَ الْبَابَ فَقَامَتْ اِلَيْهِ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَفَتَحَتْ لَهُ الْبَابَ فَقَالَ لَـهَا يَا سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمَّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) اُدْعِىْ لـِىْ اَخِىْ فَقَالَتْ اَخُوْكَ هُوَ وَتُنْكِحُهٗ اِبْنَتَكَ.
অর্থ: “হযরত আসমা’ বিনতে ‘উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত লাইলাতুয যুফাফ শরীফ-এ ছিলাম। যখন সকাল হলো, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে সম্মানিত দরজা মুবারক-এ কড়া নাড়লেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি উঠে গিয়ে সম্মানিত দরজা মুবারক খুলে দিলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম! আপনি আমার মহাসম্মানিত ভাই উনাকে আমার নিকট ডেকে আনুন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি আপনার মহাসম্মানিত ভাই এবং আপনি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত, আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ দিয়েছেন?”
সম্মানিত খায়বরের জিহাদ মুবারক-এ :
৭ম হিজরী শরীফ উনার মুহররমুল হারাম শরীফ মাসে খায়বরের জিহাদ সংঘটিত হয়। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ উপস্থিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
قَالَ الْوَاقِدِىُّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) اُحُدًا وَكَانَتْ تَسْقِى الْمَاءَ وَتُدَاوِى الْـجَرْحٰى وَشَهِدَتْ خَيْبَرَ وَكَانَتْ تَبْكِىْ بَعْدَ الْوَفَاةِ النُّبُوِيَّةِ وَتَقُوْلُ اَبْكِىْ عَلَى الْوَحْىِ الَّذِىْ رُفِعَ عَنَّا.
অর্থ: “হযরত ইমাম ওয়াক্বিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত উহুদের জিহাদ মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি পানি পান করাতেন এবং আহতদের চিকিৎসা মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি খায়বারের সম্মানিত জিহাদ মুবারকেও তাশরীফ মুবারক নিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন তিনি কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন- আমি সম্মানিত ওহী মুবারক উনার ব্যাপারে কান্না মুবারক করছি, যা আমাদের থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। ” সুবহানাল্লাহ! (আল ফজরুস সাত্বি’ ৩/২৯)
খাইরু ওয়া আফদ্বালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর উনাকে সম্মানিত গোসল মুবারক করানো:
খাইরু ওয়া আফদ্বালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি ৮ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৮ই মুহাররমুল হারাম শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ) ইশরাকের ওয়াক্তে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৩০ বছর ৬ মাস ১৭ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সকলের মধ্যে তিনিই সর্বাধিক সময় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর উনাকে সম্মানিত গোসল মুবারক করান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَتُوُفِّيَتْ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلنُّوْرُ الْاُوْلـٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ زَيْنَبُ عَلَيْهَا السَّلَامُ) بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـىْ سَنَةِ ثَـمَانٍ مِّنَ الْـهِجْرَةِ بِالْمَدِيْنَةِ. فَغَسَّلَتْهَا سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَاُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلثَّانِيَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَاُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلسَّادِسَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ سَلَمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ)
অর্থ: “আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ৮ম হিজরী শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনাকে সম্মানিত গোসল মুবারক করান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা। ” সুবহানাল্লাহ! (আনসাবুল আশরাফ ১/৪০০)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
غَسَّلَتْهَا سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَاُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلثَّانِيَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَاُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلسَّادِسَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ سَلَمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَصَلّٰى عَلَيْهَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَزَلَ فِـىْ قَبْـرِهَا وَمَعَهٗ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ ذُو النُّوْرِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَبُوْ الْعَاصِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) وَكَانَ جَعَلَ لَـهَا نَعْش ٌ فَكَانَتْ اَوَّلَ مَنِ اتَّـخَذَ لَـهَا ذٰلِكَ.
অর্থ: “আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর) উনাকে সম্মানিত গোসল মুবারক করান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত জানাযা নামায মুবারক পড়ান। সুবহানাল্লাহ! আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফদ্বালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি অবতরণ মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফদ্বালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য কফিন মুবারক উনার ব্যবস্থা মুবারক করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফদ্বালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই হচ্ছেন সেই মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুবারক যে, সর্বপ্রথম উনার সম্মানার্থেই এই ব্যবস্থা মুবারক গ্রহণ করা হয়। ” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৩১)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আপ্যায়ন মুবারক করানো:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ ذَهَبَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلـٰى سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ اَيـْمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) زَائِرًا وَذَهَبْتُ مَعَهٗ فَقَرَّبَتْ اِلَيْهِ شَرَابًا.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে দেখার উদ্দেশ্যে উনার নিকট সম্মাতিন তাশরীফ মুবারক নেন। (হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন,) আমিও উনার সাথে গেলাম। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ শরবত মুবারক পেশ করলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ্ ৪/৫৪৬)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ হাদিয়া মুবারক প্রেরণ:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ اَهْدَتْ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيـْمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) اِلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَيْرًا مَشْوِيًّا فَقَالَ اللّٰهُمَّ ائْتِنِـىْ بِـمَنْ تُـحِبُّهٗ يَاْكُلُ مَعِىْ مِنْ هٰذَا الطَّيْرِ قَالَ حَضْرَتْ اَنَسٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ فَجَاءَ حَضْرَتْ اِمَامُ الْاَوَّلِ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدُنَا حَضْرَتْ عَلـىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ)
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পাখির ভুনা গোশত হাদিয়া মুবারক করেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আয় বারে এলাহী! আপনার কাছে সর্বাধিক প্রিয় ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাকে আমার নিকট এনে দিন, যাতে তিনি এই পাখির গোশত খেতে পারেন। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, তারপর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন। ” (বিদায়া-নিহায়াহ)
ইফকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুনাফিক্বদের মিথ্যাচারিতার সমুচিত জবাব:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَخَلَا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِـحَضْرَتْ بَرِيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهَا وَسَاَلَـهَا فَقَالَتْ هِىَ اَطْيَبُ مِنْ طِيْبِ الذَّهَبِ وَاللهِ مَا اَعْلَمُ عَلَيْهَا اِلَّا خَيْرًا وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَئِنْ كَانَتْ عَلـٰى غَيْرِ ذٰلِكَ لَيُخْبِرَنَّكَ اللهُ بِذٰلِكَ اَلَا اِنَّـهَا جَارِيَةٌ تَرْقُدُ عَنِ الْعَجِيْنِ حَتّٰى تَاْتِىَ الشَّاةُ فَتَاْكُلُ عَجِيْنَهَا وَسَاَلَ اُمَّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلسَّابِعَةَ اَطْوَلَ يَدًا عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ زَيْنَبَ بِنْتَ جَحَشٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَقَالَتْ حَاشٰى سَـمْعِىْ وَبَصَرِىْ مَا عَلِمْتُ اِلَّا خَيْرًا وَاللهِ مَا اُكَلِّمُهَا وَاِنِّـىْ لَمُهَاجِرَتُـهَا وَمَا كُنْتُ اَقُوْلُ اِلَّا الْـحَقَّ وَسَاَلَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمَّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَقَالَتْ حَاشٰى سَـمْعِىْ وَبَصَرِىْ اَنْ اَكُوْنَ عَلِمْتُ اَوْ ظَنَنْتُ بِـهَا قَطُّ اِلَّا خَيْرًا.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত বারীরাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনাকে (উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কে যে অপবাদ দেয়া হয়েছিলো সে ব্যাপারে) জিজ্ঞাসা মুবারক করেন, তখন তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি স্বর্ণের পবিত্রতা থেকেও অত্যধিক পবিত্র। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! অবশ্যই আমি উনার ব্যাপারে শুধু ভালোই জানি। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ উনার ক্বসম! ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! অবশ্যই তিনি পূতঃপবিত্র। ব্যতিক্রম কোনো কিছু হলে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই আপনাকে অবশ্যই অবশ্যই সেই বিষয়ে সংবাদ মুবারক দিতেন। (এরপর তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীকে উদ্দেশ্য করে বললেন) সাবধান! নিশ্চয়ই উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এমন একজন মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুবারক, যিনি রুটির খামির রেখে ঘুমিয়ে যেতেন, বকরী এসে উনার রুটির খামির খেয়ে যেতো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত্বয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম উনাকে (উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কে যে অপবাদ দেওয়া হয়েছিলো সে ব্যাপারে) জিজ্ঞাসা মুবারক করেন, তখন তিনি বলেন, আমার দেখা ও শুনা মতে অবশ্যই আমি উনার ব্যাপারে শুধু ভালোই জানি। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি উনার সাথে কথা বলিনি। নিশ্চয়ই আমি উনার সাথে সফর মুবারক করেছি; আমি যা বলছি, সঠিকই বলছি। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে (উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মর্কে যে অপবাদ দেয়া হয়েছিলো সে ব্যাপারে) জিজ্ঞাসা মুবারক করেন, তখন তিনি বলেন, আমার দেখা ও শুনা মতে উনার ব্যাপারে আমি কস্মিনকালেও ভালো ব্যতীত অন্যকিছু জানিনা এবং ধারণাও করি না। ” সুবহানাল্লাহ! (ইমতা‘উল আসমা ১/২১৪)
পর্দা মুবারক করা:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ غَطِّىْ قِنَاعَكِ يَا سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمَّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ).
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম! আপনি (নিজেকে) আপনার বোরকা মুবারক (উনার মধ্যে) নিমজ্জিত করুন অর্থাৎ আপনি পর্দা মুবারক করুন। ” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববাক্বাতুল কুবরা)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দীদার মুবারক-এ তাশরীফ নেয়া:
১১ হিজরী শরীফ উনার ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, সম্মানিত দীদার মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছিলেন।
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَبَكَتْ حِيْنَ قُبِضَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, সম্মানিত দীদার মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেন, তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি কান্না মুবারক করেন। ” (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৩/২০০)
আরো বর্ণিত রয়েছে,
رَجَعَ النَّاسُ حِيْنَ فَرَغَ اَبُوْ بَكْرٍ مِنْ خُطْبَتِهٖ وَسَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيـْمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَاعِدَةٌ تَبْكِىْ فَقِيْلَ لَـهَا مَا يُبْكِيْكِ يَا سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمَّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَدْ اَكْرَمَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ نَبِيَّهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاَدْخَلَهٗ جَنَّتَهٗ وَاَرَاحَهٗ مِنْ نَصَبِ الدُّنْيَا فَقَالَتْ اِنَّـمَا اَبْكِىْ عَلـٰى خَبَرِ السَّمَاءِ كَانَ يَاتِيْنَا غَضًّا جَدِيْدًا كُلَّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ فَقَدْ اِنْقَطَعَ وَرُفِعَ وَعَلَيْهِ اَبْكِىْ فَعَجِبَ النَّاسُ مِنْ قَوْلِـهَا.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি যখন খুত্ববা মুবারক শেষ করলেন, তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা চলে গেলেন। আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি বসে বসে কান্না মুবারক করছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনাকে বলা হলো- ‘হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম! কোন্ বিষয় আপনাকে কাঁদাচ্ছে? খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত করেছেন এবং উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মালিক করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দুনিয়ার কষ্ট থেকে বিশ্রাম দিয়েছেন। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই আমি সম্মানিত আসমানী সংবাদের ব্যাপারে কাঁদছি, যে সম্মানিত আসমানী সংবাদ মুবারক প্রত্যহ দিনে-রাত্রে নতুনভাবে আসতেন, এখন তা বন্ধ হয়ে গেছেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দীদার মুবারক-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এজন্যই আমি কান্না করছি। সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার কথা মুবারক শুনে অত্যন্ত আশ্চর্য হলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াত লিল বাইহাক্বী ৭/২৬৬)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আদদ মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ سَيِّدَتنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ اَيـْمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَالَتْ مَا رَاَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَكَا جُوْعًا قَطُّ وَلَا عَطَشًا وَكَانَ يَغْدُوْ اِذَا اَصْبَحَ فَيَشْرَبُ مِنْ مَّاءِ زَمْزَمَ شَرْبَةً فَرُبَـمَا عَرَضْنَا عَلَيْهِ الْغَدَاءَ فَيَقُوْلُ لَا اُرِيْدُ اَنَا شَبْعَانُ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খাদ্য-পানীয় ইত্যাদি বিষয়ে অভিযোগ পেশ করতে কখনো দেখিনি। যখন সকাল হতো, তখন তিনি সম্মানিত যমযম কুপ মুবারক উনার পানি পান করতেন। কখনো আমরা উনার নিকট সকালের নাস্তা পেশ করতাম, তখন তিনি ইরশাদ মুবারক করতেন- আমি (এগুলি) চাইনা, আমি পরিতৃপ্ত। ” সুবহানাল্লাহ! (ইমতা‘উল ইসমা’ ৪/১০০)
মানুষকে যেভাবে পরিমাপ করতেন:
বর্ণিত রয়েছে,
اَنَّـهَا كَانَتْ تَزِنُ الرِّجَالَ بِـمِيْزَانِ الْـحَقِّ وَالْعَدْلِ وَالشُّجَاعَةِ وَالْاِيْـمَانِ
অর্থ: “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি মানুষদেরকে হক্ব মত-পথ, ইনসাফ, সাহসিকতা এবং ঈমানের ভিত্তিতে পরিমাপ করতেন। ” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে:
সাইয়্যিদুনা হযরত হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি ইয়ামামার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশকালে:
বর্ণিত রয়েছে,
وَلَمَّا بَلَغَهَا مَوْتُهٗ بَكَتْ فَقِيْلَ لَـهَا مَا يُبْكِيْكِ قَالَتِ الْاٰنَ وَهِىَ الْاِسْلَامُ.
অর্থ: “যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার নিকট সংবাদ পৌঁছলো যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি কান্না মুবারক করতেছিলেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে বলা হলো, কোন্ বিষয় আপনাকে কাঁদাচ্ছে? সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, এখন সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম দুর্বল হয়ে গেলো। ”
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
لَمَّا قُتِلَ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلفَارُوْقُ الْاَعْظَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ (حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ) بَكَتْ حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَقَالَتِ الْيَوْمَ وَهِىَ الْاِسْلَامُ.
অর্থ: “যখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি কান্না মুবারক করেন এবং বলেন, আজ সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম দুর্বল হয়ে গেলো। ” (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৩/২০০, আল ইছাবাহ্ ৮/১৬৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
পৃথিবীর কোনো কিতাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক উল্লেখ নেই। আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন একমাত্র যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে উনার রয়েছেন বেমেছাল হাক্বীক্বী দায়িমী তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত এবং যিয়ারত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে একমাত্র উনার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, আখাছ্ছুল খাছভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারকসমূহ প্রকাশ করা। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ২৮শে যিলক্বদ শরীফ ১৪৪১ হিজরী শরীফ লাইলাতুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি ২৮ হিজরী শরীফ উনার ২৯শে যিলহজ্জ শরীফ ইয়াওমুল আহাদ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। ” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক:
বর্ণিত রয়েছে,
تُوُفِّيَتْ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) مَوْلَاةُ رَسُوْلِ اللهِ وَحَاضِنَتُهٗ فِـىْ اَوَّلِ خِلَافَةِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ ذِى النُّوْرَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (حَضْرَتْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ) وَصَلّٰى عَلَيْهَا.
অর্থ: “মাওলাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাদ্বিনাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত জানযা নামায মুবারক পড়ান। ” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত রওযা শরীফ মহাসম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে,
وَدُفِنَتْ بِالْبَقِيْعِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত রওযা শরীফ মহাসম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত। ” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
رَوَتْ عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَوٰى عَنْهَا حَضْرَتْ اَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَحَنَشُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الصَّنْعَانِـىُّ وَاَبُوْ يَزِيْدَ الْمَدِيْنِـىُّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمَا.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর উনার থেকে হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত হানাশ ইবনে ‘আব্দুল্লাহ ছনা‘আনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত আবূ ইয়াযীদ মুদীনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করে ধন্য হয়েছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (তাহযীবুল কামাল ৩৫/৩২৯)
চোরের শাস্তির বিধান বর্ণনা:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُقْطَعُ السَّارِقُ اِلَّا فِـىْ حَجَفَةٍ وَقُوِّمَتْ عَلـٰى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دِينَارًا اَوْ عَشَرَةَ دَرَاهِمَ.
অর্থ: “ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, চোরের (হাত) কাটা হবে না কাঠমুক্ত চামড়ার ঢালের মূল্য ছাড়া। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় কাঠমুক্ত চামড়ার ঢালের মূল্য ছিলো এক দীনার অথবা দশ দিরহাম। ” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর লিত্ ত্ববারনী ১৮/২৫৬, মা’রিফাতুছ ছাহাবা লি আবী নাঈম ২৪/৭৫)
(উপসংহার)
কায়িনাতের বুকে হাদ্বিনাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনিই একমাত্র ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের পূর্ব থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত দীদার মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়া পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَكَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ اَيـْمـَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার পর আমার মহাসম্মানিত মাতা আলাইহাস সালাম। ” সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (‘উমদাতুল ক্বারী ১৬/২৩৪, ইমতা‘উল আসমা’ ৯/১৬৬)
অতএব, সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আলাইহাস সালাম উনাকে মুহব্বত মুবারক করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক, উনার ছানা-ছিফত মুবারক করা, খাছ করে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক জানা, জেনে সে অনুযায়ী আমল করে ইহকাল-পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করার কোশেশ করা। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মবুারক, ছহীহ সমঝ, ইলম-আমল, ইখলাছ মুবারক দান করুন। আমীন!
-মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বায়াহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সীরত মুবারক (৩)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বায়াহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সীরত মুবারক (২)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বায়াহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সীরত মুবারক (১)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক
০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টির জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদী বা হিদায়াতদানকারী (২)
২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টির জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদী বা হিদায়াতদানকারী (১)
২৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ আশার আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
০১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন ঘুম বা বিশ্রামের জন্য সুন্নতী চকি
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছানিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল হাদিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল হাদিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)