সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪১)
, ৩০ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৬ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ০৪ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১৯ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মুরতাদ প্রতিরোধে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ঈমানদীপ্ত দৃঢ়তা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র দীদার মুবারকে তাশরীফ মুবারক নেয়ার পর পবিত্র মদীনাতুল মুনাওয়ারা শরীফের আশেপাশের এলাকা অতিক্রম করে অনেক দূর পর্যন্ত নও মুসলিমদের মাঝে হঠাৎ করেই দাবানলের মত ‘ইরতিদাদ’ তথা ধর্মদ্রোহিতা ছড়িয়ে পড়লো। ইহুদী-মুশরিকদের ইন্ধনে চতুর্দিকে একটা ঘনায়মান বিদ্রোহ মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।
এ কঠিন অবস্থায় দ্বীন ইসলামের অন্যতম ফরয হুকুম যাকাত আদায়ে অনেকেই অস্বীকৃতি জানালো। এ কঠিন অবস্থায় খলীফাতু রসূলিল্লাহ, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি আনছার এবং মুহাজিরীন ছাহাবা আজমাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে পরামর্শের জন্য ডাকলেন।
আশিদ্দাউ আলাল কুফ্ফার হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি এ বিষয়ে প্রস্তাব রাখলেন- বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে দুর্বলমনা মুসলমানদেরকে দ্বীনের কিছু কিছু বিষয়ে আস্তে আস্তে বুঝিয়ে সঠিক পথে আনার কোশেশ করা যেতে পারে। উপস্থিত আকাবিরে ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের প্রায় সকলেই হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সাথে একমত পোষণ করলেন।
ঈমানদীপ্ত দৃঢ়তায় পাহাড় পর্বতের চেয়েও অটল হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সকলের মতামত জেনে মিম্বর শরীফে তাশরীফ নিলেন। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি যথাবিহিত হামদ্ ও ছলাত মুবারক পাঠের পর দৃঢ়তার সাথে বলতে লাগলেন- হে হযরত ছাহাবা আজমাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালাত মুবারক প্রকাশ করেন তখন ইসলাম ছিলেন এক বিতাড়িত পথিকের মত। অতিঅল্প লোকই দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তারপর মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ অনুগ্রহে সমগ্র আরব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য স্বীকার করলেন এবং একটি সাহসী ও মর্যাদাশীল জাতিতে পরিণত হলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! অবশ্যই আমরা দ্বীনের পথে অটল অবিচল থাকবো। তাছাড়া আমি বেঁচে থাকবো আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনিত দ্বীন ইসলাম উনার কোন প্রকার মানহানী ঘটবে, কিছুতেই তা হতে পারে না। মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ করে বলছি- মুসলমানিত্ব দাবি করার পর যদি কেউ যাকাতের একগাছি রশি দিতেও অস্বীকার করে এবং এতে পৃথিবীর তাবৎ গাছপালা, পাথর, জিন-ইনসানও যদি তাদের সহায় হয় তবুও তাদের প্রতিরোধে আমরা জিহাদ করবো। জেনে রাখুন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকাত ও নামাযের মধ্যে কোন পার্থক্য করেননি। তিনি উভয় হুকুমই একসাথে নাযিল করেছেন। এভাবেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতিটি বিষয় নাযিল হয়ে পূর্ণতা লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার এমন ঈমানদীপ্ত দৃঢ়তায় মুরতাদ প্রতিরোধে আমি সঠিক সিদ্ধান্ত খুঁজে পেলাম। সুবহানাল্লাহ!
ঈমানদীপ্ত ইবরত:
মুরতাদ প্রতিরোধে খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ঈমানদীপ্ত দৃঢ়তায় গোটা উম্মাহ’র জন্য রয়েছে বিশাল ইবরত। দ্বীন ইসলাম উনার হুকুম-আহকাম পালনে শিথিলতার প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। ধর্মদ্রোহী মুনাফিক মুরতাদরা যখন যাকাতের ফরয আদায়ে অস্বীকার করলো- তখন আস্তে আস্তে দ্বীনের বিবিধ বিষয়েই তারা অস্বীকার করে কুফরী-শিরিকীতে মগ্ন হবে- এটা খুব ভালভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম।
তাই তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে সাথে নিয়ে গোটা আরব হতে মুরতাদদের প্রতিরোধ করেন- তাদের ধর্মদ্রোহী স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দেন।
বর্তমানেও সেই সমস্ত ধর্মদ্রোহী মুরতাদের প্রেতাত্মারা দ্বীন ইসলামে আগাছা হয়ে শিকড় গেড়ে বসেছে। তারা এ যুগে এত পর্দার দরকার নেই, ছবি তোলা ছাড়া কি করে চলা যায়, যে কোন পোশাক-আশাক পরলেই হয়, দাড়ি রাখার কি দরকার, গান-বাদ্য না শুনলে কি আর চলে ইত্যাদি ইত্যাদি দ্বীন ইসলাম বিরোধী কথা অবলীলাক্রমে বলে যাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!
এ অবস্থায় খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় দুনিয়ার তামাম মুনাফিক মুরতাদ উলামায়ে ‘সূ’দের প্রতিরোধে যবানী-কলমী জিহাদ পরিচালনা করে যাচ্ছেন শুধুমাত্র আওলাদে রসূল, আহলে বাইতে রসূল, মুজাদ্দিদে আ’যম, ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি।
উনার এই মুবারক তাজদীদে প্রত্যেক ঈমানদারকেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ঈমানদীপ্ত জযবার ন্যায় এগিয়ে আসা ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। (সমাপ্ত)
-মুহম্মদ মুহাজিরুল ইসলাম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বদ নযর বা কুদৃষ্টি এবং তার শরয়ী আহকাম (৪)
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিজ থেকে হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল বানানো নিষেধ
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিজ থেকে হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল বানানো নিষেধ
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিজ থেকে হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল বানানো নিষেধ
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
অন্যায়কে ঘৃণা না করলে ঈমানদার থাকা যায় না
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে পবিত্র নামায ক্বছর হওয়ার জন্য সফরের দূরত্বের সঠিক পরিমাপ মাইল হিসেবে সফরের দূরত্ব
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তা’বীয ও ঝাড় ফুঁক সম্পর্কে শরয়ী ফায়সালা (৫)
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)