মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে মানুষেরা! তোমরা যমীনে হালাল খাদ্য খাও আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ” পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “অন্যান্য ফরযের পর হালাল কামাই করা ফরয। ”
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- প্রত্যেকের জন্য হালাল কামাই করা, হালাল কাপড় ও দ্রব্য সামগ্রী ব্যবহার করা এবং হালাল ও পবিত্র খাদ্য খাওয়া ফরয।
তাই, সকলের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে- খালিছভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক লাভের উদ্দেশ্যে সম্মানিত শরীয়ত কর্তৃক নির্দেশিত তারতীবে নিজে হালাল কামাই করা, হালাল কাপড় ও দ্রব্য সামগ্রী ব্যবহার করা, হালাল ও পবিত্র খাদ্য গ্রহণ করা। একই সাথে অধীনস্তদেরকে হালাল কামাই, হালাল ও পবিত্র খাদ্য গ্রহণে বাধ্য করা।
, ১২ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ১৮ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ০৩ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহাপবিত্র ক্বওল শরীফ-২
আল-ইহসান প্রতিবেদন:
ছাহিবাতু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, ছাহিবায়ে নেয়ামত, রহমাতুল্লিল আলামীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউছূল আ’যম হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন সেই যামানায় মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ লক্ষ্যস্থল। উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস থেকে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস পর্যন্ত পুরো হায়াত মুবারক মুসলমানদের জন্য রয়েছে নছীহত, ইবরত। গাউছুল আ’যম সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত পিতা উনার নাম মুবারক হযরত সাইয়্যিদ আবূ ছালেহ মূসা জঙ্গী দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি। (যেহেতু তিনি জিহাদ প্রিয় ছিলেন, সেহেতু উনাকে জঙ্গী দোস্ত বলা হয়) হযরত সাইয়্যিদ আবূ ছালেহ মূসা জঙ্গী দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যখন যুবক ছিলেন, তখন একদিন তিনি ক্ষুধার্ত অবস্থায় দজলা নদীর তীর দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন দজলা নদীর মধ্যে একটি ছেব বা আপেল ফল ভাসমান অবস্থায় দেখে ক্ষুধার তাড়নায় খেয়ে ফেললেন। তিনি রাত্রে বিছানায় শুয়ে চিন্তা করতে লাগলেন এ ছেব বা আপেল ফল খাওয়া কতটুকু জায়িয হলো? (যদিও পবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার মাসয়ালা হলো কোনো ব্যক্তি যদি তিন দিন না খেয়ে থাকে তখন তার জন্য জরুরত আন্দাজ হারামটা মুবাহ হয়ে যায়)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, অতঃপর হযরত সাইয়্যিদ আবূ ছালেহ মূসা জঙ্গী দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পরদিন সকালে দজলা নদীর তীর দিয়ে হাঁটতে লাগলেন, যেদিক থেকে ছেব বা আপেল ফলটি ভেসে এসেছিলো। কিছুদূর যাবার পর তিনি দেখলেন, নদীর কিনারায় একটি ছেব বা আপেল ফলের বাগান। বাগানের কয়েকটি গাছের কয়েকটি ডালা ফলসহ নদীর উপর ঝুলন্ত অবস্থায়। আর তার কিছু ফল পানিতে ভেসে আছে। তখন তিনি নিশ্চিত হলেন যে, নিশ্চয়ই আমি এই বাগানের গাছের ফলই খেয়েছি। অতঃপর তিনি বাগানের মালিকের বাড়িতে গেলেন। বাড়িতে গিয়ে উনার সাথে বাগানের মালির সাথে দেখা হয়। মালি উনাকে জানায়, বাগানের মালিক তিনি কোথাও গিয়েছেন। তাই আপনি অপেক্ষা করুন। অতঃপর বাগানের মালিক হযরত আব্দুল্লাহ সাওমাই রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বাড়ীতে আসার পর মালি হযরত সাইয়্যিদ আবূ ছালেহ মূসা জঙ্গী দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বাগানের মালিকের সাথে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেন। তখন হযরত জঙ্গী দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, হুযূর! আমি না বলে আপনার বাগানের একটি ছেব বা আপেল ফল ক্ষুধার তাড়নায় নদীতে ভাসমান অবস্থায় পেয়ে খেয়ে ফেলেছি। তাই আমি তার মূল্য পরিশোধ করতে চাই সেজন্য আমি এসেছি। একথা শুনার পর হযরত আব্দুল্লাহ সাওমাই রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আশ্চর্য হলেন এবং মনে মনে ভাবলেন, কত লোকই তো আমার বাগানের কত ফল খেয়েছে কিন্তু কেউই এ পর্যন্ত দাম দিতে আসেনি। নিশ্চয়ই এ যুবক মহান আল্লাহ পাক উনার একজন খালিছ ওলী হবেন। বাগানের মালিক জিজ্ঞেস করলেন, আপনার নিকট কত দেরহাম আছে? উত্তরে হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গী দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, দেরহাম থাকলে তো আপনার ফলই খেতাম না। পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে কি দিয়ে মূল্য পরিশোধ করবেন? হযরত সাইয়্যিদ আবূ ছালেহ মূসা জঙ্গি দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আপনার বাগানে কাজ করে ফলের মূল্য পরিশোধ করতে চাই। বাগানের মালিক হযরত আব্দুল্লাহ সাওমাই রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, বেশ কাজ করতে থাকুন। কিতাবে উল্লেখ আছে, উক্ত ফলের মূল্য পরিশোধ করে খাদ্যকে হালাল করার জন্য তিনি উনার বাগানে একাধারা মুখতালিফ বর্ণনায় কয়েক বৎসর কাজ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, এর থেকে আমাদের সকলকেই ইবরত-নছীহত হাছিল করতে হবে যে, সকলকেই সর্বদা হালাল রিযিক বা পবিত্র খাদ্য কামাই করতে হবে এবং খেতে হবে। কারণ এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে মানুষেরা! তোমরা যমীনে হালাল খাদ্য খাও আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ” আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “অন্যান্য ফরযের পর হালাল কামাই করা ফরয। ” পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “শরীরের যে গোশতের টুকরাটি হারাম খাদ্যের দ্বারা তৈরি হয়েছে, তার জন্য জাহান্নামের আগুনই যথেষ্ট। ”
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, হযরত সাইয়্যিদ আবূ ছালেহ মূসা জঙ্গি দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হালাল রিযিককে গুরুত্ব দেয়ার কারণেই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার ঘরে গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতো ওলীআল্লাহ উনাকে পাঠিয়েছেন। যা সকলের জন্যই ইবরত-নছীহত হাছিল করার কারণ। অর্থাৎ কেউ যদি চায় যে, তার সন্তান নেককার বা আল্লাহওয়ালা-আল্লাহওয়ালী হোক; তবে তার দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, হালাল কামাই করা, হালাল কাপড় ও দ্রব্য সামগ্রী ব্যবহার করা এবং হালাল ও পবিত্র খাদ্য খাওয়া।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো- সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- প্রত্যেকের জন্য হালাল কামাই করা, হালাল কাপড় ও দ্রব্য সামগ্রী ব্যবহার করা এবং হালাল ও পবিত্র খাদ্য খাওয়া ফরয। তাই, সকলের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে খালিছভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক লাভের উদ্দেশ্যে সম্মানিত শরীয়ত কর্তৃক নির্দেশিত তারতীবে নিজে হালাল কামাই করা, হালাল কাপড় ও দ্রব্য সামগ্রী ব্যবহার করা, হালাল ও পবিত্র খাদ্য গ্রহণ করা। একই সাথে অধীনস্তদেরকে হালাল কামাই, হালাল ও পবিত্র খাদ্য গ্রহণে বাধ্য করা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
উত্তম কথা উত্তম গাছরে ন্যায় ফলদায়ক।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আপনি বলুন, দুনিয়াবী সম্পদ সামান্য। আর মুত্তাকীগণ উনাদের জন্য পরকালই উত্তম এবং তোমাদের প্রতি সামান্য অবিচারও করা হবে না। " পরকালরে তুলনায় দুনযি়াবী সম্পদ অতি সামান্য।
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যখন তোমরা কাউকে আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে গালি দিতে দেখবে তখন তোমরা বলবে, তোমাদের এ মন্দ কাজের জন্য তোমাদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে তিরস্কার করা, গালমন্দ করা কঠিন লা’নতের কারণ।
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক বা পবিত্র জীবনী মুবারক জানা ও বেশি বেশি সর্বত্র আলোচনা করা এবং প্রতিক্ষেত্রে উনাকে পরিপূর্ণরূপে অনুসরণ-অনুকরণ করা সকলের জন্যই ফরয।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বর্তমানে মুসলমানরা যে সারাবিশ্বে ইহুদী-নাছারাদের দ্বারা যুলুম ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তার একটাই কারণ- মুসলমানরা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। নাঊযুবিল্লাহ!¬
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা বা বোরকা মুসলমানগণ উনাদের দ্বীনি অধিকার আর খাছ করে মুসলিম মহিলাগণ উনাদের সম্মান এবং ব্যক্তিত্বেরও প্রতীক।
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
অন্তর থেকে বদ খাছলতসমূহ দূর করে দিয়ে পবিত্র নেক খাছলতসমূহ পয়দা করার মাধ্যমেই হাক্বীক্বী ইছলাহ বা পরিশুদ্ধতা লাভ সম্ভব। মুহলিকাতের (বদ খাছলত) কারণে ক্বলব বিনষ্ট হয়। আর মুনজিয়াতের (নেক খাছলত) কারণে ক্বলব পরিশুদ্ধ হয়।
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে সম্মান করবেন, আমি ক্বিয়ামতের দিন উনার জন্য শাফা‘য়াতকারী হবো। ” সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বোচ্চ রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সমুন্নত শান-মান মুবারক নিয়ে সংশয় ও সন্দেহ করা, উনাদের সমালোচনা করা সুস্পষ্ট হারাম, কুফরী ও কবীরাহ গুণাহ এবং কঠিন লা’নতগ্রস্ত হওয়ার কারণ। মূলত, উনারাই হচ্ছেন ঈমান এবং জান্নাতের মালিক। উনাদের প্রতি ঈমান না আনলে ঈমানদার হওয়া যায়না। জান্নাতীও হওয়া যায়না।
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার যিকিরকারী ব্যক্তি জীবিত আর যে মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির করেনা সে ব্যক্তি মৃত।
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- সম্মানিত আইয়্যামুল্লাহ শরীফ বা মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ দিবসসমূহ পালন করা সকলের জন্য আবশ্যক।
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘য়াত উনার বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্ মুবারক হলো- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘নূরে মুজাসসাম’ অর্থাৎ তিনি আপদমস্তক নূর মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)