বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন
, ১৩ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২১ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ১৯ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ০৪ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ব্রিটিশ বেনিয়াদের পৃষ্ঠপোষকতায় ভারতবর্ষের সংস্কৃত ভাষার কথিত প-িত সম্প্রদায় তাদের ‘সংস্কৃত’ কেন্দ্রীক ভাষা, সাহিত্য, ব্যাকরণ এবং পরিভাষা ও শব্দ তৈরি করে বাংলা ভাষাকে সংস্কৃতের মধ্যে ডুবিয়ে শেষ করে দিতে চেয়েছে। বাংলা ভাষা নিষিদ্ধকরণ, ব্রিটিশ আমলে বাংলা ভাষার সংস্কৃতকরণ তথা বিকৃতিকরণসহ বাংলা ভাষার উপর নানান রকম নিপীড়ন তারা চালিয়েছে।
যা একদিকে বাংলা ভাষার উপর আগ্রাসন, অন্যদিকে মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদার জন্য হুমকীস্বরূপ। বহিরাগত সংস্কৃতের আগ্রাসী ও ঈমানবিধ্বংসী সেসব শব্দ ও পরিভাষাগুলোর মধ্যে এখানে কিছু শব্দ ও পরিভাষা তুলে ধরা হয়েছে।
কিছু আগ্রাসী শব্দ ও পরিভাষার ব্যাখ্যা:
‘অঞ্জলি’ সংক্রান্ত শব্দ:
জলাঞ্জলি, পুষ্পাঞ্জলি, শ্রদ্ধাঞ্জলি ইত্যাদি পরিভাষাগুলো ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এই পরিভাষাগুলো হিন্দুয়ানি কালচার থেকে উৎপন্ন।
জলাঞ্জলি শব্দটি অপচয় অর্থে ব্যবহৃত হলেও এটি হিন্দুদের একটি পুজা অনুষ্ঠানের নাম। হিন্দুদের বিশ্বাস অনুযায়ী, হিন্দুরা মারা গেলে চিতায় পুড়ে ফেলার পর প্রেতাত্মার উদ্দেশ্যে আঁজলাপূর্ণ পানি চিতায় ছিটিয়ে দেয়। এটাকেই তারা বলে জলাঞ্জলি।, এর অন্য নাম বিসর্জন। এরকম পুষ্পাঞ্জলি ও শ্রদ্ধাঞ্জলিও হিন্দুদের মৃত ব্যক্তিদের সাথে সম্পৃক্ত যজ্ঞানুষ্ঠান ও পুজানুষ্ঠানের নাম।
মুসলমানগণ কখনও মাইয়্যেত বা মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে জলাঞ্জলী, পুষ্পাঞ্জলি বা শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন না এবং ব্যবহারও করেন না। অতএব মুসলমানদের ক্ষেত্রে এসব হিন্দুয়ানী পরিভাষা ব্যবহার করা কখনই জায়েজ হবে না। মুসলমানগণ মাইয়্যেতের উদ্দেশ্যে দোয়া, জানাযা নামায, মাগফিরাত কামনা এবং ইসালে সওয়াবের অনুষ্ঠান করে থাকেন।
বিশ্বব্রহ্মা-:
সৃষ্টি জগত বা ত্রিভূবন অর্থাৎ পৃথিবী, আকাশ ও পাতাল বুঝাতে বিশ্বব্রহ্মা- শব্দটি অনেকেই ব্যবহার করে থাকে। অথচ বিশ্বব্রহ্মা- অর্থ হচ্ছে ব্রহ্মার অ-কোষ থেকে তৈরি সৃষ্টিজগৎ। নাউযুবিল্লাহ!
ব্রহ্মা, ব্রহ্মা-, বিশ্বব্রহ্মা- ইত্যাদি ব্রাহ্মণদের বানানো শব্দ যা সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে। কাজেই এগুলো মুসলমানদের জন্য কোনভাবেই ব্যবহার করা জায়েজ হবে না।
উৎসর্গ:
এটি সংস্কৃত ভাষার শব্দ। হিন্দুরা তাদের কথিত দেব-দেবীদের ক্ষেত্রে ‘উৎসর্গ’ পরিভাষাটি ব্যবহার করে থাকে। সূতরাং মুসলমানদের জন্য ‘উৎসর্গ’ শব্দটি ব্যবহার করা অনুচিত। মুসলমানকে ব্যবহার করতে হবে- কুরবান, ত্যাগ, নিবেদন, নজরানা, হাদিয়া, তোহফা ইত্যাদি।
উপাস্য, উপাসনা:
উপাস্য ও উপাসনা পরিভাষা দুটি এটি মুশরিকদের ধর্মীয় শব্দ যা সংস্কৃত ভাষা থেকে আগত। অনেকে মহান আল্লাহ পাক উনাকে বুঝাতে ‘উপাস্য’ এবং উনার ইবাদত-বন্দেগী করা বুঝাতে ‘উপাসনা’ পরিভাষা ব্যবহার করে থাকে, যা মারাত্মক ভুল। আবার অনেকে কালিমা তাইয়্যিবার অর্থ করতে গিয়ে ‘উপাস্য’ শব্দটি নিয়ে আসে।
মুসলমানগণকে ব্যবহার করতে হবে ‘ইলাহ, মাবুদ, ইবাদত-বন্দেগী ইত্যাদি। অতএব মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারকে উপাস্য ও উপাসনা পরিভাষা ব্যবহার করা যাবে না।
‘ঈশ্বর’ সংক্রান্ত শব্দ:
একেশ্বরবাদ, ঈশ্বর, ঈশ্বরী, ঐশিবাণী, ঐশীশক্তি, ঐশ্বরিক, ইত্যাদি এই প্রত্যেকটি শব্দই পরিত্যাজ্য। এগুলো ব্যবহার করা হারাম। বলতে হবে তাওহীদ, ওয়াহিদিয়াত, ওয়াহদানিয়াত, একক ও অদ্বিতীয় সত্ত্বা মুবারক, একত্ববাদ ইত্যাদি।
-মুহম্মদ জিয়াউল হক্ব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৯)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক (৪)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (১)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)