পুরুষের জন্য দাড়ি ও গোফ রাখার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক
, ২৫ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৭ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرتْ أَبي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ اَلْفِطْرَةُ خَمْسٌ أَوْ خَمْسٌ مِنَ الْفِطْرَةِ ـ الْخِتَانُ، وَالاِسْتِحْدَادُ، وَنَتْفُ الإِبْطِ، وَتَقْلِيمُ الأَظْفَارِ، وَقَصُّ الشَّارِبِ
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফিতরাত অর্থাৎ মানুষের জন্মগত স্বভাব পাঁচটি- (পুরুষের জন্য) খাৎনা করা, (নাভীর নিচের পশম কাটার জন্য) ক্ষুর ব্যবহার করা, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নখ কাটা ও গোঁফ খাটো করা। (মুসলিম শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ)
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
قَالَ حَضْرَتْ أَنَسٌ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ وُقِّتَ لَنَا فِي قَصِّ الشَّارِبِ وَتَقْلِيمِ الأَظْفَارِ وَنَتْفِ الإِبْطِ وَحَلْقِ الْعَانَةِ أَنْ لَا نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً .
অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন- গোঁফ ছাঁটা, নখ কাটা এবং বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলা এবং নাভীর নীচের লোম ছেঁচে ফেলার জন্যে আমাদেরকে সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছিল যে, আমরা যেন তা চল্লিশ দিনের অধিক দেরি না করি। (মুসলিম শরীফ)
গোঁফ খাটো করার নিয়ম:
গোঁফ রাখা খাছ সুন্নত মুবারক। উপরের ঠোটের দাগ বা রেখা বরাবর গোফ রাখতে হবে। গোঁফ ভ্রু পরিমান লম্বা রাখতে হয়। এর চেয়ে বড় রাখা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার খিলাফ। আর গোঁফ চেছে ফেলা বা চেছে ফেলার ন্যায় ছোট করা কোনক্রমেই উচিত নয়। এটা খারেজীদের লক্ষণ।
দাড়ি লম্বা করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক:
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয। এক মুষ্টি হওয়ার পূর্বে দাড়ি কাটা বা ছাটা সকলের ঐকমত্যে হারাম ও কবীরা গুনাহ। আর দাড়ি কাটাকে জায়িয মনে করা কুফরী।
সুতরাং দাড়ি কেটে বেদ্বীন-বদদ্বীনদের ছূরত ধারণ করা কোনো মতেই জায়িয হবে না। বরং হারাম ও কবীরা গুনাহ হবে।
মানুষের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার দেয়া আকৃতি বিকৃত করা সম্পূর্ণ হারাম। আর দাড়ি ও গোঁফ কেটে ফেলার কারণে যেহেতু পুরুষের আকৃতির বিকৃতি ঘটে, সেহেতু পুরুষের জন্য তার দাড়ি এক মুষ্টি হওয়ার পূর্বে কাটা সম্পূর্ণ হারাম।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “দশটি অপকর্মের কারণে সাইয়্যিদুনা হযরত লূত্ব আলাইহিস সালাম উনার ক্বওম ধ্বংস হয়েছে, তন্মধ্যে দাড়ি কর্তন করা ও গোঁফ লম্বা করাও ছিল।”
হাফিজুল হাদীছ শাহ সূফী হযরত মাওলানা রুহুল আমীন বশিরহাটী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্ববিখ্যাত কিতাব ফতওয়ায়ে আমীনিয়াতে লিখেন- “এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয। কেননা ফরয তরক করা হারাম।”
হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনারা যেহেতু দাড়ি মুবারক রেখেছেন তাই আমভাবে তা খাছ সুন্নত মুবারক, কিন্তু আহকামের দিক দিয়ে পুরুষের জন্য কমপক্ষে এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয। কেউ কেউ ওয়াজিবও বলেছেন। তবে যাঁরা ওয়াজিব বলেছেন, উনারা ফরয অর্থেই ওয়াজিব বলেছেন।
ফিক্বাহ শাস্ত্রবিদগণ এ মর্মে একমত যে, এক মুষ্টির কমে দাড়ি কাটা বা ছাঁটা জায়িয নয় বরং হারাম।
নীমদাড়ি:
নিচের ঠোঁট ও থুতনীর মধ্যবর্তী ছোট ছোট দাড়িকে নীমদাড়ি বলে। অনেকে বলে থাকে, নীমদাড়ি কেটে ফেললে কোন গুণাহ হবেনা। সম্মানিত শরীয়ত উনার হুকুম মুতাবিক উক্ত নীমদাড়ি কাটাও বিদয়াত ও মাকরূহ তাহরীমী। নীমদাড়ি কেটে ফেলাকে জায়িজ মনে করা কুফরী।
বুখারী শরীফ উনার শরাহ ‘ফয়জুল বারী’ কিতাবে রয়েছে, ঠোঁট ও থুতনীর মধ্যবর্তী কেশ নীম দাড়ির অন্তর্ভুক্ত। তা কাটা ও ছাঁটা নিষেধ অর্থাৎ হারাম।
মূলকথা হলো- সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে পুরুষের জন্য কমপক্ষে এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয। এক মুষ্টি হওয়ার পূর্বে দাড়ি কাটা বা ছাঁটা হারাম ও কবীরা গুনাহ। আর দাড়ি কাটাকে জায়িয মনে করা কুফরী।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)