বিজ্ঞান
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বিদ্যুৎ চমকানোর বিস্ময়কর বর্ণনা
, ১৬ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ২৩ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ০৯ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
যিনি খ্বালিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَىٰ. إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَىٰ
অর্থ : নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র ওহী মুবারক ব্যতীত নিজ থেকে কোন কথা বলেন না। (পবিত্র সূরা নজম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩-৪)।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যেও রয়েছে অসংখ্য নিদর্শন মুবারক।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
أُعْطِيتُ جَوَامِعَ الْكَلِمِ
অর্থাৎ, আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইলম হাদিয়া করা হয়েছে। ” (মুসলিম শরীফ)
হযরত হুযায়ফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। একটি দীর্ঘ হাদীছ শরীফ উনার এক অংশে বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ، وَأَبُو مَالِكٍ عَنْ رِبْعِيٍّ، عَنْ حَضْرَتْحُذَيْفَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ، قَالاَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " يَجْمَعُ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى النَّاسَ فَيَقُومُ الْمُؤْمِنُونَ حَتَّى تُزْلَفَ لَهُمُ الْجَنَّة............. فَيَأْتُونَ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَيَقُومُ فَيُؤْذَنُ لَهُ وَتُرْسَلُ الأَمَانَةُ وَالرَّحِمُ فَتَقُومَانِ جَنَبَتَىِ الصِّرَاطِ يَمِينًا وَشِمَالاً فَيَمُرُّ أَوَّلُكُمْ كَالْبَرْقِ قَالَ قُلْتُ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي أَىُّ شَىْءٍ كَمَرِّ الْبَرْقِ قَالَ " أَلَمْ تَرَوْا إِلَى الْبَرْقِ كَيْفَ يَمُرُّ وَيَرْجِعُ فِي طَرْفَةِ عَيْـن
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আখিরাত সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন- “মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা মানুষদের জমা করবেন এবং মু’মিন ব্যক্তিগণ দাঁড়িয়ে থাকবেন যতক্ষণ না সম্মানিত জান্নাতকে উনাদের নিকটবর্তী করা হয়। .............. এক পর্যায়ে সবাই আসবেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকটে যিনি জান্নাত উনার দরজা মুবারক খোলার জন্যে অনুমতিপ্রাপ্ত। বিশ্বাসী ও আত্মীয়স্বজনদেরকে বের করা হবে এবং উনারা পথের ডান ও বামদিকে অবস্থান করবেন। (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,) “প্রথমেই আপনারা (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) বিদ্যুৎ গতিতে পার হয়ে যাবেন। ” বর্ণনাকারী বলেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্যে কুরবান! কোন জিনিসটা বিদ্যুতের গতিতে পার হতে পারে?”
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “আপনারা কি বিদ্যুৎ চমকানো দেখেননি? কেমন করে তা প্রবাহিত হয় এবং ফিরে যায় চোখের পলকের মধ্যে। ” (ছহীহ মুসলিম শরীফ প্রথম খ- হাদীছ শরীফ নং ৩৮০ ও ৩৯০)
বিদ্যুৎ চমকানোর সময়:
ক্যাপশন: এভাবে মুহূর্তের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ৩/৪ বার উচ্চ ভোল্টেজে মেঘ থেকে যমীনে এবং যমীন থেকে মেঘে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। যা সাধারণত প্রায় ২০০ মিলি. সেকেন্ডের মধ্যে ঘটে যায়।
বিদ্যুৎ চমকানোর অদৃশ্য ও দৃশ্যমান অংশের মোট সময় নির্ধারণের জন্যে তথাকথিত বিজ্ঞানীরা অত্যাধুনিক দ্রুত ছবি তুলতে সক্ষম স্লো মোশন ক্যামেরা ব্যবহার করছে। অথচ যা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে فِى طَرْفَةَ عَيْنٍ (এক পলকের মধ্যে) শব্দ মুবারক দ্বারা আশ্চর্যজনক ও নির্ভূলভাবে এ সময় বর্ণনা করা হয়েছে। চোখের পলক হচ্ছে প্রায় ৪০০ মিলি. সেকেন্ড। অর্থাৎ এই পুরো ঘটনাটি চোখের পলকের চেয়ে কম সময়ে সংঘটিত হয়। সুবহানাল্লাহ!
যে রাস্তা দিয়ে বিদ্যুৎ চমকায় তা সাধারণত ১ ইঞ্চি চওড়া এবং ১-৫ মাইল লম্বা হতে পারে। অতি উচ্চমানের বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে এই সরু রাস্তার কণাগুলি অত্যধিক গরম হয়ে প্লাজমায় পরিণত হয়। তাপমাত্রা প্রায় ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার ডিগ্রী সেলসিয়াস হতে পারে। যা সূর্যের উপরিপৃষ্ঠ থেকে ৫ গুণ বেশী গরম। এই উত্তপ্ত অংশ আশেপাশের বাতাসকে প্রচ- শক্তিতে ধাক্কা দেয়। ফলে শব্দের চেয়ে বেশী গতি সম্পন্ন শকওয়েভ বিস্ফোরণ সৃষ্টি হয়। যা প্রথম ১০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত প্রভাব ফেলে। আর এই বিস্ফোরণের শব্দই হচ্ছে বর্জ্রধ্বনি। এই বর্জ্রধ্বনি শব্দের গতিতে ৩৪০ মিটার/সেকেন্ড বেগে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য বিদ্যুৎ চমকানো এবং বর্জ্রধ্বনির মাঝে যদি ৩ সেকেন্ড সময় পার্থক্য হয় তাহলে ১ কি.মি. দূরত্বে বর্জ্রপাত হয়েছে।
সস্বাভাবিকভাবে ধারণা করা হয় যে, মেঘ থেকে যমীনে বিদ্যুৎ নেমে আসে। কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতা হচ্ছে যে বিদ্যুৎ চমকানো আমরা দেখতে পাই তা যমীন থেকে মেঘের দিকে বিদ্যুতের প্রত্যাবর্তন পথ। যে বিষয়টি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি يَرْجِعُ এই আরবী শব্দ মুবারক দিয়ে উল্লেখ করেছেন। যার অর্থ মুবারক হচ্ছে প্রত্যাবর্তন করা।
আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে- বিজ্ঞানীরা এতোদিনে যমীন থেকে মেঘের দিকে বিদ্যুৎ প্রত্যাবর্তন এর ঘটনাটিকে প্রত্যাবর্তন স্ট্রোক নামকরণ করে প্রচার করতেছে। অথচ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিদ্যুৎ চমকানোর প্রবাহ, প্রত্যাবর্তন ও সময়কাল- এ বিষয়গুলি ১৪ শত বছর আগেই নিখুঁত ও সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা মুবারক করেছেন। যা উল্লেখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে। যা তৎকালীন যামানায় একেবারে কল্পনাতীত অর্থাৎ বিষয়টি উনার ইলমে গ¦ইব উনার বহিঃপ্রকাশ এবং একটি সুমহান মু’জিযা শরীফ। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!! সুবহানাল্লাহ!!!
(বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান কিতাব থেকে সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (৩)
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৩)
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)