পবিত্র কালিমা শরীফ নিয়ে সালাফী ওহাবীদের কুফরীমূলক আপত্তির জবাব
, ১৭ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৫ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ২৩ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ০৮ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
অন্তরে মহর পড়ে যাওয়া সালাফী ওহাবীরা পবিত্র কালিমা তাইয়্যিবা শরীফ খুঁজে পায় না, অথচ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এমন ছহীহ হাদীছ শরীফও আছে যেখানে উল্লেখ আছে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে এক হাজার মানুষ পবিত্র কালিমা তাইয়্যিবা শরীফ পাঠ করে ঈমান এনেছেন। যেটা বিখ্যাত ইমাম হযরত বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত “দালায়িলুন নুবুওওয়াত” কিতাবে
باب ما جاء في شهادة الضب لنبينا بالرسالة وما ظهر في ذلك من دلالات النبوة
অধ্যায়ে বর্ণনা করেন। পবিত্র হাদীছ শরীফখানা অনেক দীর্ঘ। সংক্ষেপে মূল ভাবটা বর্ণনা করে পরিশেষে কালিমা তাইয়্যিবা শরীফ পাঠের ঘটনা উল্লেখ করা হবে।
ঘটনাটা হচ্ছে, এক বেদুঈন ব্যক্তি এসে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকের খিলাফ কথা বললো, সে ছিলো লাত ও উজ্জার উপাসক। সেই বেদুঈন লোক বললো সে ঈমান আনবে না এবং তার সাথে ‘দ্বব’ (গুইসাপের মতো প্রাণী) নামক এক প্রাণী ছিলো সেও ঈমান আনবে না। নাউযূবিল্লাহ!
তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই দ্বব নামক প্রাণীকে তাওহীদ ও রিসালাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন।
তখন সেই দ্বব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান আনলো এবং রিসালত উনার সাক্ষ্য দিলো।
এটা দেখে সে বেদুঈন ঈমান আনলো।
অতঃপর সেই বেদুঈন নিজের এলাকায় ফিরে যেতে লাগলো, পথিমধ্যে এক হাজার বেদুঈনের সাথে তার সাক্ষাৎ হলো। যারা এক হাজার ঘোড়া, এক হাজার তলোয়ারে সজ্জিত ছিলো।
সেই বেদুঈন তখন তাদের জিজ্ঞাসা করলো তোমরা কোথায় যাচ্ছো?
তারা বললো আমরা এমন একজনের সাথে যুদ্ধ করতে যাচ্ছি যিনি আমাদের প্রতিমাদের বিরুদ্ধে বলেন। তখন সেই বেদুঈন বললো, তোমরা এ কাজ করো না।
এরপর সে দ্বব নামক প্রাণীর ঈমান আনার ঘটনা বর্ণনা করলো এবং নিজে ঈমান এনেছে সে কথাও জনালো।
فقالوا بأجمعهم لا إله إلا الله محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم.
অতঃপর তারা একসাথে সবাই বললো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
ثم دخلوا فقيل للنبي فتلقاهم بلا رداء فنزلوا عن ركابهم يقبلون حيث وافوا منه وهم يقولون لا إله إلا الله محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم.
অতঃপর তারা (পবিত্র মদীনা শরীফে) প্রবেশ করলো তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তাদের সম্পর্কে বলা হলো।
তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদেরকে সাক্ষাত মুবারক দিলেন এমতাবস্থায় যে, উনার পবিত্র জিসিম মুবারকে চাঁদর মুবারক ছিলেন না।
তখন তারা তাদের সওয়ারী থেকে নেমে এই কথা বলতে বলতে আসতে লাগলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’। (দলীল: দালায়িলুন নুবুওওয়াত লি বায়হাক্বী ৪র্থ খন্ড ৩৬-৩৮ পৃষ্ঠা। প্রকাশনা: দারু কুতুবুল ইলমিয়া, বৈরুত- লেবানন, মুখতাছার তারিখু দিমাস্ক ১ খন্ড ১৮২ পৃষ্ঠা, দালায়িলুন নুবুওওয়াত লি আবু নুয়াঈম )
পরিশেষে ইমাম বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম ও হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের থেকেও বর্ণিত আছে। আর তিনি যে সনদে বর্ণনা করেছেন সে প্রসঙ্গে বলেন وما ذكرناه هو أمثل الاسناد فيه
আমি যেটা বর্ণনা করেছি সেটা উত্তম সনদ।
সুতরাং প্রমাণিত হলো উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ আরো একাধিক সনদে বর্ণিত আছে। হযরত ইমাম বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি যেটা বর্ণনা করেছেন সেটা ছহীহ সনদে। আরো অন্য সনদের সমর্থনে এই সনদ নিয়ে আপত্তির সকল পথও বন্ধ হলো।
উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার থেকে আমারা জানতে পারলাম সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনেই এক হাজার মানুষ এক সাথে কালিমা তাইয়্যিবা শরীফ পাঠ করে ঈমান এনেছেন। আর বর্তমান ওহাবী সালাফীরা সেই কালিমা তাইয়্যিবা শরীফের বিরোধিতা করে ঈমান হারাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
-খাজা মুহম্মদ নূরউদ্দীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৯)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক (৪)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (১)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)