তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
(পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীরসহ)
, ১৮ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৬ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ২৪ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ০৯ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র সূরা লাহাব শরীফ উনার সংক্ষিপ্ত ছহীহ্ তাফসীর বা ব্যাখ্যা মুবারক
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘পবিত্র সূরা লাহাব শরীফ’ খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা ও খুছূছিয়ত বর্ণনা করেছেন।
অর্থাৎ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যারা বিরোধিতা করবে সে যেই হোক পুরুষ হোক, মহিলা হোক, উচ্চবংশীয় হোক, নিম্নবংশীয় হোক, সমাজের খুব নামী-ধামী ব্যক্তি হোক বা সম্পদশালী হোক অথবা অনেক আল-আওলাদ ও আত্মীয়-স্বজন বিশিষ্ট হোক তার ধ্বংস অনিবার্য। শুধু ধ্বংসই না সে বা তারা কাট্টা কাফির হয়ে চিরজাহান্নামী হবে।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ’ ও ‘পবিত্র সূরা লাহাব শরীফ’ উনাদের মাধ্যম দিয়ে কালিমা ত্বইয়্যিবা শরীফ উনার হাক্বীক্বত প্রকাশ করেছেন। অর্থাৎ ‘পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ’ উনার মধ্যে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তাওহীদ তথা একত্বতার কথা বলেছেন যা কালিমা ত্বইয়্যিবার প্রথম অংশ “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। এটা বিশ্বাস না করা পর্যন্ত তাওহীদে বিশ্বাসী বলে সাব্যস্ত হবে না বরং কাফির-মুশরিক বলে সাব্যস্ত হবে।
আর ‘পবিত্র সূরা লাহাব শরীফ’ উনার মধ্যে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রিসালতের কথা বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ কালিমা ত্বইয়্যিবা শরীফ উনার দ্বিতীয় অংশ “মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” উনার বর্ণনা করা হয়েছে। যা বিশ্বাস না করা পর্যন্ত কেউ ঈমানদার হতে পারবে না। এমনকি ‘পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ’ উনার ৮১ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে, “কোন হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদেরকে নুবুওওয়াত ও রিসালত দেয়ার বিষয় ঘোষণা দেয়া হয়নি যতক্ষণ পর্যন্ত উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রিসালত মুবারক উনার প্রতি ঈমান না এনেছেন।
আবূ লাহাবের আসল নাম আব্দুল উজ্জা। সে দেখতে লাল আগুনের মত ছিলো, সে কারণে তার কুনিয়াত হয়েছে আবূ লাহাব। আবূ লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামিলা বিনতে র্হব্ ইবনে উমাইয়া। সে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে পথে চলতেন সে পথে কাঁটা দিয়ে রাখত কষ্ট দেয়ার জন্য। যার কারণে তার প্রতি এ নির্দেশ মুবারক দেয়া হয়েছে।
উম্মে জামিলা একবার বড় কাঁটার বোঝা বহন করে আনতেছিল। সে পথে ক্লান্ত হয়ে একটা পাথরের উপর বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী একজন হযরত ফেরেশ্তা আলাইহিস সালাম তিনি তার কাঁটাওয়ালা বোঝা পেছন দিকে টান দেন, যার ফলে কাঁটাওয়ালা বোঝাটা তার গলায় ফাসি লেগে যায় এবং সে দম বন্ধ হয়ে মারা যায়।
আবূ লাহাব মৃত্যুর ভয়ে বদর জিহাদে অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু বদরের জিহাদের ৭দিন পর তার পরিবারে কোন্দল সৃষ্টি হয়। তখন তার এক আত্মীয় তার মাথায় আঘাত করে। পরবর্তীতে সেখানে ফোসকা পড়ে তার থেকে সমস্ত শরীরে কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়ে তার সমস্ত শরীর পঁচে-গলে দুর্গন্ধ বের হয়। তখন তার আত্মীয়-স্বজনরা তাকে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে আসে। সেখানে সে পঁচে-গলে মারা যায় এবং কুকুর-শৃগালের খোরাক হয়। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, সে পঁচে-গলে মারা গেলে তার আত্মীয়-স্বজনরা গর্ত করে তাকে মাটিতে পুঁতে রাখে। তার মাল-সম্পদ, আল-আওলাদ এরা তাকে হিফাযত করতে পারেনি। তার ছেলে উতবা লা’নতগ্রস্থ হয়ে বাঘের খোরাকে পরিণত হয়।
অতএব, প্রত্যেক মু’মিন মুসলমানের দায়িত্ব-কর্তব্য হবে, তারা যেন সর্বাবস্থায় অর্থাৎ যাহিরী-বাতিনী, জিসমানী-রূহানী, বাহ্যিক-আভ্যন্তরীণ সর্বদিক থেকে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তা’যীম-তাকরীম ও খিদমত করে। আর এই তা’যীম-তাকরীম ও খিদমত করতে হলে রূহানী কুওওয়াত মুবারক হাছিল করতে হবে। আর রূহানী কুওওয়াত মুবারক হাছিল করতে হলে হক্কানী-রব্বানী শায়খ উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করে ক্বল্বী যিকির ও শায়খ উনার ছোহবত ইখতিয়ার করার মাধ্যমে ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক হাছিল করতে হবে। (তাফসীরে কুরতুবী শরীফ, তাফসীরে তাবারী শরীফ, তাফসীরে ইবনে কাছীর শরীফ, তাফসীরে মুনীর শরীফ, তাফসীরে নিশাপুরী শরীফ, তাফসীরে খাযিন শরীফ, তাফসীরে কবীর শরীফ, তাফসীরে মুয়ালিম শরীফ, তাফসীরে মাযহারী শরীফ, তাফসীরে আমীনিয়া শরীফ, তাফসীরে আযীযী শরীফ, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, ত্বহাবী শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)