পবিত্র হজ্জ ও পবিত্র উমরা সম্পর্কে-
ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ পবিত্র হজ্জ ও পবিত্র উমরা সম্পর্কে (১৭)
, ১৩ মে, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এখন বিষয়টা হলো হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার খলীল, উনি নবী, উনি রসূল। উনার সেই ডাকটা মহান আল্লাহ পাক তিনি সারা কায়িনাতে ছড়িয়ে দিলেন, আলমে আরওয়াহ পর্যন্ত। কিন্তু আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত এবং খলীফা। তিনি হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। তিনিও কিন্তু সেইভাবে সম্বোধন করলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার আওয়াজটা শত শত মাইল দূরে পৌঁছিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, যে সমস্ত বদ মাযহাবের লোকেরা, বদ আক্বীদার লোকেরা বলে থাকে তারা নানান মাধ্যমে, চ্যানেলের মাধ্যম দিয়ে সম্মানিত ইসলাম প্রচার করার জন্য কোশেশ করে যাচ্ছে, তারা হালাল হারাম তমীজ করে না। এখন সেটা তারা ভিডিওর মাধ্যমে হোক, টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে হোক সেটা তারা প্রচার করার কোশেশ করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! এরা বলে থাকে, সেটা হচ্ছে ইসলাম প্রচারের একটা মাধ্যম। নাউযুবিল্লাহ! অথচ সেটা সম্মানিত শরীয়তে নিষিদ্ধ। ছবি তোলা আঁকা রাখা এবং টিভি এবং তার চ্যানেল দেখা তার প্রত্যেকটাই নাজায়িয, হারাম ও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। তারপরও তারা ইসলাম প্রচারের নাম দিয়ে সেটা অনুষ্ঠান করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! এখন যদি কেউ খালিছ বান্দা-বান্দি উম্মত হতে পারে, তাহলেতো তার সেই ডাকটা এবং তার সেই বিষয়টা মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবেই উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে পৌঁছিয়ে দিবেন। সুবহানাল্লাহ! এর মাধ্যম দিয়ে বিষয়টা স্পষ্ট করে দেয়া হলো যে, মুসলমানদের জন্য বেদ্বীনি-বদদ্বীনি, কুফরী-শিরকী রসম রেওয়াজের প্রয়োজন নেই।
মুসলমানরা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমা, ক্বিয়াস সম্মতভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশিত পথ অনুযায়ী তারা এই আঞ্জাম দিবে। সেটা মহান আল্লাহ পাক তিনি গায়েবী মদদ করবেন। সুবহানাল্লাহ! কাজেই বিষয়টা ফিকির করতে হবে। এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার আওয়াজটাকে পৌঁছিয়ে দিলেন। সেটাই বলা হচ্ছে যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্বদরে মতলক্ব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহসানে মতলক্ব। উনারা বান্দা-বান্দি উম্মতের বিষয়গুলি কুদরতীভাবেই ফয়সালা করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! এখন যারা উনার আযানে লাব্বায়িক বলেছে তাদের প্রত্যেকেরই হজ্জ নছীব হবে। সেটাই বলা হচ্ছে।
আর সেটা পবিত্র হাদীছ শরীফে বলা হচ্ছে সরাসরি।
عَنْ حَضْرَتْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰـى عَنْهُ قَالَ خَطَبَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهِ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ فُرِضَ عَلَيْكُمُ الْـحَجُّ فَحُجُّوْا
হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খুতবা মুবারক দিলেন, সেই খুতবায় স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, হে মানুষেরা! আপনারা জেনে রাখুন, আপনাদের জন্য হজ্জ ফরয করা হয়েছে। কাজেই যাদের উপর হজ্জ ফরয হবে তারা যেন হজ্জ সম্পাদন করে নেয়। অর্থাৎ সম্পাদন করে নিন। সুবহানাল্লাহ! আর যাদের প্রতি হজ্জ ফরয হয়ে যাবে, তাদের দেরি করা ঠিক হবে না। যেটা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰـى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ أَرَادَ الْـحَجَّ فَلْيَتَعَجَّلْ
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ أَرَادَ الْـحَجَّ فَلْيَتَعَجَّلْ
যে হজ্জের ইরাদা করলো, যার উপর হজ্জ ফরয হয়ে গেল সে যেন তাড়াতাড়ি সেটা সম্পাদন করে নেয়, সে যেন দেরি না করে। হতে পারে তার প্রতি হজ্জ ফরয হলো, যে বৎসর সে পালন করতে পারবে সে বছর সে করলো না, পরবর্তী সময় তার নানান সমস্যা সৃষ্টি হলো, নানাদিক থেকে। হয়ত সে এরপর আর করতে পারবে না, তার ফরযটা সে আদায় করতে না পারার কারণে সে গুনাহগারের অন্তর্ভুক্ত হবে। নাউযুবিল্লাহ! কাজেই বিষয়গুলি খুব গুরুত্ব দিতে হবে। অর্থাৎ এ বিষয়টার মূল বিষয় সেটা হলো, যে বিষয়গুলো মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তরফ থেকে বান্দা-বান্দি, উম্মতের জন্য ফরয ওয়াজিব করা হয়ে থাকে, সেটা ফরয ওয়াজিব হলেই সাথে সাথে সেটা আদায় করে নিতে হবে। সেখানে আর কোন গাফলতি, ক্রটি করা যাবে না। অলসতা করে সেটা ফেলে রাখা যাবে না। যথা সময়, যথাযথভাবে সেটা আদায় করে নিতে হবে। আর বিশেষ করে যারা হজ্জ করবে এদের আলাদা সম্মান দেয়া হয়েছে, ফযীলত দেয়া হয়েছে, খুছূছিয়াত দেয়া হয়েছে। যেটা পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ وَفْدُ اللهِ ثَلَاثَةٌ اَلْغَازِيُ وَالْـحَاجُّ وَالْمُعْتَمِرُ
হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শুনেছি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতিনিধি হচ্ছেন তিন প্রকার লোক। যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতিনিধি হচ্ছেন তিন প্রকার লোক। তারা কারা?
اَلْغَازِيُ وَالْـحَاجُّ وَالْمُعْتَمِرُ
যারা গাজী, জিহাদ করতে বের হয়ে যায়। যারা হজ্জ করতে বের হয় আর যারা উমরাহ করতে বের হয়। এরা হচ্ছে যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতিনিধির অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)