পবিত্র হজ্জ ও পবিত্র উমরা সম্পর্কে-
ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ পবিত্র হজ্জ ও পবিত্র উমরা সম্পর্কে (১২)
, ০৭ মে, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এখন সেটা যদি সঠিকভাবে কেউ তাহক্বীক্ব না করে, তাহলে তার হজ্জের ফযীলত থেকে মাহরুম হবে। আর আমভাবে কিন্তু বলা হয়ে থাকে কিতাবে, সেটা হচ্ছে- শা’বান, রমাদ্বান শরীফ, শাওওয়াল ও যিলহজ্জ এই চার মাসের চাঁদ দেখা হচ্ছে, ওয়াজিবে কিফায়া। এটা হচ্ছে, আম ফতওয়া। আসলে কিন্তু খাছ যে ফতওয়া সেটা হচ্ছে, বারো মাসেই চাঁদ দেখাটা ওয়াজিবে কিফায়া। কারণ এক মাস যদি সে হেরফের করে তাহলে পরবর্তী মাসগুলোতে তার চাঁদের মাসগুলিতে হিসাব মিলাতে কষ্ট হবে। এক মাস ২৯ শে হলো, পরের মাস ২৯ অথবা ৩০ শে হবে। প্রতি মাসে ২৯ তারিখে চাঁদ তালাশ করতে হবে। এটা ওয়াজিবে কিফায়া। তবে আলাদাভাবে শা’বান শরীফ, রমাদ্বান শরীফ, শাওওয়াল শরীফ (যেহেতু ঈদুল ফিতর রয়েছে) যিলক্বদ, যিলহজ্জ শরীফ। যিলহজ্জ শরীফে যেহেতু হজ্জ রয়েছে, সেজন্য এটা গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। কাজেই প্রত্যেক মাসেরই আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।
আর বিশেষ করে যেটা মূল, সমস্ত মাসের যে সাইয়্যিদ, সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরুল আ’যম শরীফ অর্থাৎ পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস। সে মাসের চাঁদকেও গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। দেখে মাসটাকে যথাযথভাবে তা’যীম-তাকরীমের সহিত পালন করতে হবে। মহাসম্মানিত ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বিলাদত শরীফ উনার মাস এবং মহাসম্মানিত বিছাল শরীফ উনার মাস, তারিখ। এই ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ উনাকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য। হাক্বীক্বত সেই দিন সেই রাত্রিতে যে রহমত, বরকত, সাকীনা, মাগফিরাত, দয়া-দান, ইহসান ইত্যাদি নাযিল হয়ে থাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোন দিনই সেরকম নাযিল হয় না। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই সেই তারিখ এবং সেই মাস উভয় সময়কে তাহক্বীক্ব করে সেই দিন উনাকে গুরুত্ব দিয়ে আমল করতে হবে। কাজেই সেদিক থেকে প্রতি মাসেই চাঁদ তালাশ করা ওয়াজিবে কিফায়া। আর বিশেষ বিশেষ মাস ও বিশেষ বিশেষ তারিখগুলোকে আরো তাহক্বীক্ব করে তা পালন করতে হবে। যার মধ্যে আলাদা ফযীলত খুছূছিয়ত রয়েছে।
কাজেই মনে রাখতে হবে, পবিত্র হজ্জ ও উমরার ফযীলত। এখন আমভাবে হজ্জ আর উমরার যে ফযীলত রয়েছে, গুরুত্ব রয়েছে এটা মানুষ বুঝলে সে আমল করবে। এখন আমলতো ঠিকই করবে তবে আমলটা করবে কবে? এই সমস্ত আমল কিন্তু চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট। চাঁদ যদি হেরফের করে তাহলে আমলসমূহ শুদ্ধ হবেনা। প্রতি বৎসরেই আমরা বলে থাকি, আমাদের পত্রিকায় দেয়া হচ্ছে, সৌদি আরবে গিয়ে হজ্জটা করতে হবে। পবিত্র মক্কা শরীফে ও পবিত্র মদীনা শরীফে। সেই উকূফে আরাফা হোক, মীনা হোক, মুজদালিফা হোক সব সেখানে করতে হবে। তাহলে সেই দেশের যে চাঁদটা উদিত হবে দেখা যাবে সেটা অনেক ফিকিরের বিষয়, তাহক্বীক্বের বিষয়। পৃথিবীর সমস্ত লোকের সেটা খেয়াল রাখা উচিত। যে কোন দিন সেখানে চাঁদটা দেখা গেলো। প্রতি বছর মানুষ সেখানে হজ্জ করতে যায়। কাফির মুশরিকগুলো মিথ্যা সংখ্যা বলে থাকে। তবে আমরা যেটা তাহক্বীক্ব করেছি, দেড় কোটি থেকে দু’কোটি লোক অর্থাৎ গত বছর যেটা দেখা গেছে প্রায় এক কোটি আশি লক্ষ লোক হজ্জ করেছে। এখন এতো লোক হজ্জ করতে যায় লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা তারা খরচ করে। দেখা গেল উকূফে আরাফা ৯ তারিখে না হয়ে ৮ তারিখে হলো। নাউযূবিল্লাহ! তাহলে এতো লোকের হজ্জটা কোথায় গেল।
আর যদি এরা বলে থাকে, সৌদি আরবে এটা ফায়সালা হবে, সৌদি আরব দায়ি থাকবে। তাহলে সৌদি আরব একা খেলে কি সকলের পেট ভরবে। তারা নামায-কালাম পরলে কি সকলের নামায-কালাম আদায় হয়ে যাবে? এটা প্রত্যেকের আলাদা দায়িত্ব রয়েছে। পৃথিবীর সমস্ত লোকদের দায়িত্ব রয়েছে, পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফে হজ্জ করতে যাবে সেখানে কবে চাঁদ দেখা যায় সেটা তাহক্বীক্ব করা এবং উকূফে আরাফা কবে হয় সেটা তাহক্বীক্ব করা। সে অনুযায়ী উকূফে আরাফাহ করা। এখন সৌদি আরব সরকার করবে এটা তার একার দায়িত্ব, সেটা না। এখনতো সৌদি ওহাবী সরকার, এদের পূর্বপূরুষ হচ্ছে ইহুদী। তারাতো মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে থাকে। এখন এই বিষয়টা যদি সারা পৃথিবীর মানুষকে প্রশ্ন করা হয়, তাহলে দেখা যাবে হাজারে, লক্ষ কোটিতে দু’ একজন হয়তো জানে। কোটিতে দু’ একজন। আমাদের দেশে কয়জন জানে? আমাদের পত্রিকাতে সব সময় দেয়া হচ্ছে।
কাজেই বিষয়টা ফিকির করতে হবে। বিশেষ করে হজ্জের তারিখটা তাহক্বীক্বের জন্য। পৃথিবীর সমস্ত লোকদের দায়িত্ব-কর্তব্য এটা তাহক্বীক্ব করা। এটা জেনে সেই অনুযায়ী হজ্জ করা। আর সৌদি আরব যদি হেরফের করে শক্ত প্রতিবাদ করা যে, তুমি তারিখটা ঠিক করে নাও। তোমার হজ্জের তারিখ ঠিক হচ্ছে না। এটাতো আমাদের পত্রিকায় আমরা লিখে থাকি। দেখা যাচ্ছে পৃথিবীর আর কোন দেশ থেকেই কেউ সেটা প্রতিবাদ করে না। একমাত্র আমাদের দৈনিক আল ইহসান শরীফ ব্যতীত। আমাদের লেখা-লেখির কারণে দেখা যাচ্ছে প্রতি দু’ তিন মাস পরপরই তারা তাদের চাঁদ কমিটিকে পরিবর্তন করে। ধোকা দেয়ার জন্য, প্রতারণা করার জন্য। তারপরও তারা ধরা পরে যায়। আমাদের পত্রিকায় সেটা প্রকাশ করা হয়। তারা সেটাকে আবার মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে আবার তাদের প্রতারণাকে ঢাকার চেষ্টা করে। এ বৎসর যেমন হলো যে তারা শাওওয়াল মাসের চাঁদতো দেখেনি। যখন বলা হলো, আমাদের পত্রিকার কারণে এবং অন্যান্য দেশেও প্রতিবাদ করেছিল যার কারণে তারা মিথ্যা কিছু সাক্ষী দাঁড় করিয়ে বলল, তারা চাঁদ দেখেছে। নাউযুবিল্লাহ! অথচ চাঁদ দেখার কোন প্রশ্নই হয় না।
শাওওয়াল মাসের পহেলা তারিখ ঈদুল ফিতরের চাঁদটা সৌদি আরব আমাদের পরে দেখার কথা। আমাদের আগে তাদের দেখার কোন প্রশ্নেই হয় না। আমাদের পরে তাদের দেখার কথা ছিল। অথচ তারা আমাদের একদিন আগেই ঈদ করেছে। এ বিষয়টাতো প্রত্যেক মুসলমানকেই ফিকির করা উচিত। এখন যদি বলে যে, যারা আম লোক যারা আওয়ামুন নাস তারা এটা জানে না। তাহলে যারা আলিম উলামা ছূফী দরবেশ দাবি করে তারা কি করে, তাদেরতো সেটা ফিকির করা উচিত ছিলো। তাদের সে বিষয় তাহক্বীক্ব করা উচিত ছিলো। আসল হচ্ছে, চাঁদের মাসয়ালা বা এর ইলিম মাদরাসায় কিন্তু শিক্ষকরা পড়ায় না। স্কুল কলেজেতো প্রশ্নই হয়না। মাদরাসায় সেটা পড়ানো হয় না। যার কারণে তারাও সে মাসয়ালাটা জানে না। এটা কিন্তু খুব ফিকির করতে হবে। এই চাঁদের মাসয়ালা আমরা কিন্তু অনেক বৎসর ধরে তাহক্বীক্ব করতেছি। কমও যদি হয় তাহলে প্রায় ৪৫ থেকে ৪৭ বছর ধরে আমরা এটা তাহক্বীক্ব করতেছি। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)