ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি
, ১৮ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৫ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০৭ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
(বিলাদত শরীফ ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ ১৫০ হিজরী)
সম্মানিত নামায ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত:
ইমামুল মুহাদ্দিসীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আখিরাত বা পরকালের জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতেন। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি-রেযামন্দি, তায়াল্লুক-নিসবত, কুরবত মুবারক হাছিলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতেন। শ্রেষ্ঠতম সুফীও তিনি ছিলেন। তিনি রিয়াজত-মাশাক্কাত তথা কোশেশের জগতে সকলের আদর্শ বটে। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণে সম্মানিত নামায আদায় এবং মহাসম্মানিত কুরআন শরীফ তিলাওয়াতে সবচেয়ে বেশী ইতমিনান লাভ করতেন। সুবহানাল্লাহ! কাজেই, অতীব গুরুত্ব ও অত্যন্ত আদব-মুহব্বত এবং ভয়-ভীতির সাথে তিনি নামায আদায় করতেন, মহাসম্মানিত কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করতেন। কখনো এক আয়াত শরীফ বার বার তিলাওয়াত করতেন। উনার ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকিরের দৃঢ়তা ও ইস্তিক্বামত সর্বমহলে মিছাল বা দৃষ্টান্তরূপে প্রতিষ্ঠিত ছিল। আল্লামা ইমাম যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকিরে আত্মনিয়োগের মান সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল।
সম্মানিত নামায এবং মহাসম্মানিত কুরআন শরীফ তিলাওয়াতে প্রায় সময়ই তিনি এমনই বেকারার হয়ে পড়তেন যে, বার বার উনার পবিত্র শরীর মুবারক শিউরে উঠতো। আর ঘন্টার পর ঘন্টা তিনি কাঁদতে থাকতেন। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে (মিছালী ছুরত মুবারক) দেখে দেখে নামায আদায় করতেন। সমস্ত ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকিরে একই অবস্থা বিরাজ করতো। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ
اَنْ تَـعْبُدَ اللهَ كَاَنَّكَ تَـرَاهُ
(এমনভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করবে, যেন মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখতে পাচ্ছ) এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক-হকদার ছিলেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
আল্লামা ইমাম ছাইমারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
سَـمِعْتُ اَبَا الْاَحْوَصِ يَـحْلِفُ اَنَّهٗ لَوْ قِيْلَ لِاَبِـىْ حَنِيْـفَةَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَنَّكَ تَـمُوْتُ اِلٰى ثَلَاثَةِ اَيَّامٍ مَاكَانَ فَضْلُ شَىْءٍ يَّـقْدِرُ اَنْ يَّزِيْدَهٗ عَلٰى عَمَلِهِ الَّذِىْ كَانَ يَعْمَلُ
অর্থ: হযরত আবুল আহওয়াস রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে শপথ করে বলতে শুনেছি যে, “যদি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বলা হতো যে, আপনি তিন দিনের মধ্যে ইন্তিকাল করবেন, তবুও উনার ইবাদত বন্দেগী, যিকির-ফিকিরে কোনরূপ পরিবর্ধন সাধিত হওয়ার সুযোগ ছিলো না। অর্থাৎ ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকিরে তিনি চূড়ান্ত পর্যায়ের আমল করতেন। হেতু কোন সময়ই অবশিষ্ট ছিল না। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি একবার সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে ফজরের জামায়াতে শামিল হলাম। তিনি ক্বিরায়াতের এক পর্যায়ে যখন পড়লেন-
وَلَا تَـحْسَبَنَّ اللهَ غَافِلًا عَمَّا يَعْمَلُ الظَّالِمُوْنَ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি যালিমদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বেখবর রয়েছেন, এমন ধারণা করো না। এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করার সাথে সাথে থর থর করে দীর্ঘক্ষণ কাঁপতে ছিলেন। (ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জীবন ও কর্ম-৮২৯)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৯)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক (৪)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (১)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)