হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীদের শাস্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাউজে কাওছারের পানি লাভের অনুপম দৃষ্টান্ত
, ১৩ মে, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
কিতাবে উল্লেখ করা হয় যে, এক বুযূর্গ ব্যক্তি একটা স্বপ্ন দেখলেন, ক্বিয়ামত কায়িম হয়ে গেছে, এখন মানুষের হিসাব নিকাশ হবে। হাউজে কাওছার উনার পানি পান করতে হবে। ঐ বুযূর্গ ব্যক্তি তিনি খুব চিন্তিত ছিলেন এবং উনার খুব পিপাসা লাগলো। তিনি চিন্তা করলেন তাহলে হাউজে কাওছার যে রয়েছে সেখান থেকে কিছু পানি পান করা যেতে পারে, তিনি সেই হাউজে কাওছারের কাছে গেলেন। সেখানে যেয়ে দেখতে পেলেন সিবতু রসূল আর রবি’, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম এবং সিবতু রসূল আল খমিস, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনারা হাউজে কাওছার উনার পানির দায়িত্বে আছেন। উনাদের নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী পানি দেয়া হচ্ছে সুবহানাল্লাহ!
সেই বুযূর্গ ব্যক্তি তিনি উনাদের কাছে গিয়ে পানি চাইলেন যে আমাকে দয়া করে একটু পানি দান করুন। উনারা ঐ বুযূর্গ ব্যক্তিকে কোন গুরুত্বই দিলেন না। সেই বুযূর্গ ব্যক্তি অনেক সময় সেখানে থেকে চিন্তিত হলেন ব্যাপারটা কি? তখন সেই বুযূর্গ ব্যক্তি চিন্তা করলেন, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে আরজু করলে তিনি হয়ত পানি দান করবেন। যেই কথা সেই কাজ। সেই বুযূর্গ ব্যক্তি সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে যেয়ে আরজু করলেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি দয়া করে আমাকে হাউজে কাওছার উনার পানি দান করুন। সেই বুযূর্গ ব্যক্তি তিনি অনেক কাকুতি মিনতি করতেছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই বুযূর্গ ব্যক্তির কথাগুলো শুনতেছিলেন যখন সেই ব্যক্তি খুব বেশি কাকুতি মিনতি করতেছিলেন তখন তিনি অত্যন্ত জালালী শান মুবারকে ইরশাদ মুবারক করলেন, যে তোমাকে কি করে হাউজে কাওছারের পানি দেয়া যেতে পারে, তুমিতো পানি পাওয়ার উপযুক্ত না। কারণ তোমার একজন প্রতিবেশী রয়েছে, যে ইমামুল আউওয়াল হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার বিরোধী। নাউযুবিল্লাহ! তোমার পাশে সেই প্রতিবেশী ব্যক্তিটি এই কাজ করে তুমিতো কোন প্রতিবাদ করনি। কোন ব্যবস্থাও গ্রহণ করনি। তাহলে কি করে তুমি পানি পেতে পারো? তখন সেই বুযূর্গ ব্যক্তি বললো, “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার ভুল হয়ে গেছে। আমার উচিত ছিল, আমার সামর্থ্য অনুযায়ী তাকে বাধা দেয়ার কোশেশ করা। তবে লোকটা বড়ই জালিম দস্যু প্রকৃতির। তাকে কিছু বললেই সে আমাকে কতল করে ফেলতে পারে। সেই ভয়ে তাকে বাধা দেয়ার সাহস আমার হয়নি।
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজেই সেই বুযূর্গ ব্যক্তিকে একটি ছুরি দিলেন এবং বললেন যে, তুমি এটা নিয়ে যাও এবং এখনি তাকে মৃত্যুদ- দিয়ে দাও এরপর পানি দেয়া হবে। সেই বুযূর্গ ব্যক্তি বললেন যে, মহান আল্লাহ পাক উনার এক কুদরত এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ। যেন মনে হচ্ছে- চোখের পলকে আমি আমার বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। গিয়ে সেই প্রতিবেশীর বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেয়ে ছুরি দিয়ে আমি তাকে হত্যা করে ফেললাম। সুবহানাল্লাহ! হত্যা করার সময় একটু রক্তের ছিটা আমার কাপড়ে লেগেছিল। আমি তাকে খুন করে ফিরে আসলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বিষয়টা জানালাম যে “ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি সেই লোকটাকে হত্যা করে এসেছি। ”
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দয়া করে পানি দেয়ার জন্য অনুমতি মুবারক দিলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনারা সেই বুযূর্গ ব্যক্তিকে পানি দিলেন।
সেই বুযূর্গ ব্যক্তি বলেন, যে আমাকে হাউজে কাওছার উনার পানি দেয়া হয়েছিল কিন্তু আমি সেটা পান করতে পেরেছি কিনা সেটা আমার স্বরণে নেই হঠাৎ আমার ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো। ঘুম থেকে উঠে আমি ইস্তেগফার-তওবা করলাম। এবং বাইরে চিৎকার, হই-হুল্লোর শুনতে পেলাম। আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে সেই প্রতিবেশীর বাড়ির দিকে গেলাম। গিয়ে দেখলাম সেই প্রতিবেশী লোকটা মারা গেছে।
সেই বুযূর্গ ব্যক্তি তিনি বললেন, আমার হঠাৎ স্বরণ হলো স্বপ্নের কথা। যেয়ে দেখতে পেলাম সত্যিই আমিইতো এই লোকটাকে হত্যা করেছি। সেই ছুরিটা সেখানে পড়ে রয়েছে তাকে যবেহ করা হয়েছে। আশেপাশে কিছু লোকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ নিয়ে গেছে। তখন সেই বুযূর্গ ব্যক্তি বলেন- আমি চিন্তা করলাম আসলে এরা কেউ অপরাধী নয়। তখন সেই বুযূর্গ ব্যক্তি সেই শহরের যিনি প্রধান ছিলেন তিনি একজন নেককার আল্লাহওয়ালা ছিলেন উনার কাছে গেলেন। গিয়ে বললেন যে উনার সাথে কিছু কথা আছে। অমুক স্থানে যে একজন লোককে খুন করা হয়েছে। লোকটাকে খুন করার সাথে অন্য কেউ জড়িত নয়। মূলত ঘটনা হচ্ছে এরকম। তখন সেই বুযূর্গ ব্যক্তি উনার স্বপ্নের কথা বললেন। আরো বললেন, এই লোকটা ইমামুল আউওয়াল হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার বিদ্বেষী ছিলো যার জন্য স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তার শাস্তি মৃত্যুদ- দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
আর সেই মৃত্যুদ- আমি নিজে সম্পন্ন করেছি। কাজেই অন্যান্য যারা গ্রেফতার হয়েছে তারা কেউ অপরাধী নয়। সেটা শুনে শহরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি অনেক সন্তুষ্ট হলেন। এবং বললেন, আপনি অতি উত্তম কাজ করেছেন। আপনি চলে যান আর যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ!
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)