সাইয়্যিদাতু নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ্, মালিকুল কায়িনাত, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক
, ২৬ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৫ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ১৪ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ৩০ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ৫ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৪ই রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল আহাদ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ সম্মানিত কুরাইশ বংশে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান হচ্ছেন- খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি। তিনি মহাসম্মানিত পিতা উনার দিক থেকে ১১তম মহাসম্মানিত পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর উনার মহাসম্মানিত মাতা হচ্ছেন- সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব বিনতে মায‘ঊন আলাইহাস সালাম তিনি। যিনি ছিলেন বিশিষ্ট ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান ইবনে মায‘ঊন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার মহাসম্মানিতা বোন। তিনি উনার মহাসম্মানিতা মাতা উনার দিক থেকে ১০তম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক উনার মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম উনাদের এবং উনার সম্মানিত ভাই-বোন উনাদের সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শুরুর দিকে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেয়ার পূর্বে উনার সম্মানিত শাদী মুবারক হয়েছিলেন বিশিষ্ট ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত খুনাইস ইবনে হুযাফাহ্ সাহ্মী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে। সুবহানাল্লাহ! যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন, তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত আহাল সাইয়্যিদুনা হযরত খুনাইস ইবনে হুযাফাহ্ সাহ্মী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনিসহ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
দ্বিতীয় হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল জুমু‘আহ্ শরীফ সম্মানিত বদর জিহাদ মুবারক সংঘটিত হয়। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৮ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। এ দিকে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত যাওজুম মুকাররম সাইয়্যিদুনা হযরত খুনাইস ইবনে হুযাফাহ সাহ্মী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সম্মানিত বদর জিহাদ মুবারক-এ অংশগ্রহণ করেন এবং দেহের একাধিক স্থানে জখম প্রাপ্ত হন। ফলে তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফে ফিরে এসে মহাসম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব মুবারক নিয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের নিকট যান। কিন্তু উনারা প্রস্তাবে সাড়া দেননি। ফলে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বিষয়টি উপস্থাপন করেন। এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন সাইয়্যিদুনা হযরত খুনাইস ইবনে হুযাফাহ সাহ্মী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি মহাসম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন আমি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার বিষয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক পেশ করি, তখন তিনি তা গ্রহণ করেননি। আমি বিষয়টি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পেশ করে বলি যে- ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার বিষয়ে আশ্চর্য হবেন না? উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার বিষয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক পেশ করেছি, কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার মহাসম্মানিত আওলাদ, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার চেয়ে উত্তম ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন মুবারক করবেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার মহাসম্মানিত আওলাদ, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার চেয়ে উত্তম মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন মুবারক করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ ৮/৬৬, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/১৮৪)
এখানে বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বিনতু ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার থেকে উত্তম বলা হয়েছে। কারণ তখনও তিনি উম্মুল মু’মিনীন শান মুবারক প্রকাশ করেননি।
অপর বর্ণনায় রয়েছেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, আমি কি আপনাকে এর চেয়ে উত্তম বিষয় সম্পর্কে অবহিত করবো না? আমি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করবো এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে উনার চেয়ে উত্তম ব্যক্তিত্বা মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ দিবো।” সুবহানাল্লাহ! (সিমতুন নুজূম)
অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে ৩য় হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৪ঠা শা’বান শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ২১ বছর ২০ দিন। সুবহানাল্লাহ! তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন ৭ বছর ৭ মাস ৮ দিন। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বলেন, নিশ্চয়ই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম তিনি
صَوَّامَةٌ قَوَّامَةٌ وَكَانَتِ امْرَاِةً صَالِـحَةً
অর্থ: “অধিক রোযা পালনকারিনী, রাতের বেলায় অধিক ইবাদতকারিনী এবং তিনি হচ্ছেন একজন অত্যন্ত নেককার মহাসম্মানিত মহিলা আলাইহাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছেন,
فَاِنَّـهَا صَوَّامَةٌ قَوَّامَةٌ وَهِىَ زَوْجَتُكَ فِـى الْـجَنَّةِ
অর্থ: “নিশ্চয়ই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন অধিক রোযা পালনকারিণী, রাতের বেলায় অধিক ইবাদতকারিণী এবং তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন হিসেবে আপনার সঙ্গে থাকবেন।” সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, “হযরত নাফে’ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম তিনি রোযা রাখা অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইছাবাহ্, তাহযীবুল কামাল, ইবনে সা’দ)
‘ইযালাতুল খফা’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছেন, “এক রাতে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ঘুরে ঘুরে জনগনের অবস্থা দেখছিলেন। তখন তিনি এক ঘরের ছাদ থেকে একজন মহিলার আওয়াজ শুনতে পান। মহিলা কবিতা পাঠ করছেন, ‘এ রাত দীর্ঘ হয়ে গেছে, আঁধারও ছেয়ে গেছে অথচ আমার পাশে বন্ধু নেই যার সাথে মন দেয়া-নেয়া করব। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! যদি মহান আল্লাহ পাক তিনি না হতেন, তাহলে তিনি ছাড়া আর কেউ ছিল না বাধা দেয়ার। তখন এ খাটের সর্বাংশ অবশ্যই কাঁপতে থাকত। নিজ প্রতিপালকের ভয় ও লজ্জা আমাকে বাধা দিচ্ছে। তা ছাড়া নিজ স্বামীর মর্যাদাবোধ আমার রয়েছে। তাই তার সওয়ারীতে আমি তো অন্য কাউকে আরোহী করতে পারি না।’
সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি এই কবিতা শুনে বলে উঠলেন, লা-হাওলা ওয়া লা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। হে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার নারীদের সাথে কিরূপ আচরণ করতেছেন? অত:পর তিনি গিয়ে নিজের মহাসম্মানিত মেয়ে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার দরজা মুবারক-এ কড়া নাড়লেন। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম তিনি এগিয়ে এসে বললেন, কী কারণে আপনি এই অসময় এখানে উপস্থিত হয়েছেন? তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমাকে সংবাদ দিন, কোনো মহিলার স্বামী বিদেশে থাকা অবস্থায় মহিলা তার স্বামীর জন্য কতদিন ধৈর্য ধারণ করতে পারে? তিনি জবাব দিলেন, খুব বেশী হলে চার মাস। অত:পর সকাল হওয়া মাত্র তিনি সমস্ত গভর্নর বা দায়িত্বশীল উনাদের নিকট লিখিত ফরমান পাঠালেন, কোনো সৈন্যকে যেন বেশী দিন আটকে না রাখা হয়। বিশেষত বিবাহিত সৈনিকদের যেন চার মাস পরপর ছুটি দেয়া হয়।” সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিত মু‘আল্লিমাহ্। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত দয়া-দান, ইহসান মুবারক উনাদের বদৌলতেই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলে ইলিম মুবারকসহ সমস্ত প্রকার নি‘য়ামত মুবারক হাছিল করেছেন, করছেন এবং অনন্তকাল যাবত হাছিল করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে উল্লেখ রয়েছেন,
اَنَّ اُمَّ الْمُؤْمِنِيْـنَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلرَّابِعَةَ اِبْنَةَ اَبِيْهَا عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ حَفْصَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَتَلَتْ جَارِيَةً لَـهَا سَحَرَتْـهَا
অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনাকে উনার এক দাসী জাদু করার কারণে তিনি তাকে ক্বতল করেন।” (মুয়াত্ত্বা শরীফ)
হযরত ইমাম আবূ মুহম্মদ আব্দুল্লাহ ইবেন ওয়াহাব ইবনে মুসলিম মিছরী কুরাইশী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ১৯৭ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল জামি’ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার একজন দাসী ছিলো, সে উনাকে জাদু করে। ফলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম তিনি উক্ত দাসীকে ক্বতল করার নির্দেশ মুবারক দেন। তারপর তাকে ক্বতল করা হয়।” সুবহানাল্লাহ! (আল জামি’ ১/২৮৬)
কাজেই যারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কষ্ট দিবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার পুরো জিন্দেগী মুবারকই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত। কেননা, তিনি যা করেছেন এবং উম্মতদেরকে যা করার জন্য সম্মানিত আদেশ মুবারক করেছেন, প্রত্যেকটাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ীই করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তবে রাবীগণ উনার থেকে মাত্র ৬০ খানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতে সক্ষম হয়েছেন। আর এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ সংগ্রহ করে রাবীগণ নিজেদের জীবন ধন্য করেছেন।
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম তিনি ৪৫ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৩ই শা’বান শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৬৩ বছর ২৯ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম তিনিসহ সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের একমাত্র হাক্বীক্বী পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম হচ্ছেন- উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই কেউ যদি উনাদের হাক্বীক্বী মুহাব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চায়, তাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছেন, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনার সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা। সুবহানা হযরত উম্মুল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে ক্ববূল করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক:
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (২)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শোকরগোযারী দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায় শোকর গোযার না করলে নিয়ামত বন্ধ হয়
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শোকরগোযারী দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায় শোকর গোযার না করলে নিয়ামত বন্ধ হয়
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
“মানুষের পেট কবরের মাটি ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা পূর্ণ হবে না”
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পুরুষদের ন্যায় মহিলাদেরও দ্বীনী তা’লীম গ্রহণ করা ফরযে আইন
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের তৃতীয় মাসে যে বিষয়গুলো লক্ষণীয়
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জমিনে ফিতনা-ফাসাদের বড় একটা কারণ বেপর্দা-বেহায়া নারী
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)