মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার সাওয়ীক্ব (ছাতু)
, ১২ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৬ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন, ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ২১ই মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْلَمَ عَلٰى حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ اَلْعَاشِرَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِسَوِيْقٍ وَتَمْرٍ.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মনীন আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ উনার মধ্যে ওলীমা মুবারক করেছিলেন খুরমা ও ছাতু সহযোগে।” (আবূ দাউদ শরীফ : কিতাবুত ত্বয়ামাহ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৭৭৪; তিরমিযী শরীফ : কিতাবুন নিকাহ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১০৯৫; ইবনে মাজাহ শরীফ : কিতাবুন নিকাহ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১৯৮৪)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ سُوَيْدِ بْنِ النُّعْمَانِ الْأَنْصَارِي رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ أَنَّهُمْ خَرَجُوا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى خَيْبَرَ حَتَّى إِذَا كَانُوا بِالصَّهْبَاءِ صَلَّى الْعَصْرَ ثُمَّ دَعَا بِأَطْعِمَةٍ فَلَمْ يُؤْتَ إِلاَّ بِسَوِيقٍ فَأَكَلُوا وَشَرِبُوا ثُمَّ دَعَا بِمَاءٍ فَمَضْمَضَ فَاهُ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى بِنَا الْمَغْرِبَ .
অর্থ: “হযরত সুওয়াইদ বিন নু’মান আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ছোহবতে তিনি ও অন্যান্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা খায়বারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। উনারা “ছহবা” নামক স্থানে পৌঁছে আছরের নামায আদায় করেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খাবার আনতে বললেন, ছাতু ছাড়া আর কিছুই মুবারক খিদমতে পেশ করা গেলো না। উনারা সকলে পানাহার করলেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পানি আনতে বললেন এবং পানি নিয়ে কুলি মুবারক করলেন, তারপর দাঁড়িয়ে আমাদেরকে সাথে নিয়ে মাগরিবের নামায আদায় করেন।” (ইবনে মাজাহ শরীফ : কিতাবুত ত্বাহারাত ওয়াস সুহাহ : মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৪৯২)
সাওয়ীক্ব তৈরীর পদ্ধতি: গম, যব, চাল বা ছোলা ভেজে ঢেঁকিতে বা মেশিনে গুড়া করে ছাতু তৈরী করা হয়। শুধু গম, যব, চাল বা ছোলার আলাদা আলাদা ছাতু হতে পারে। তবে একসঙ্গে সব উপাদান মিশিয়ে ছাতু বানালে তা বেশ সমৃদ্ধ হয়।
সাওয়ীক্ব / ছাতুর উপকারিতা :
১. ছাতু খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিমেষে উপকারী উপাদানগুলি রক্তে মিশে যায়। ফলে তৎক্ষণাৎ শক্তির মাত্রা বাড়তে শুরু করে।
২. প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে ছাতু নিয়মিত পানিতে গুলিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যার প্রকোপ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হজমশক্তিরও উন্নতি ঘটে।
৩. গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ার কারণে ছাতুতে উপস্থিত শর্করা খুব ধীরে ধীরে রক্তে মিশে থাকে। ফলে এই ধরনের খাবার খেলে হঠাৎ করে শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনাই থাকে না। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
৫. শিশুর শরীরের যথাযথ বৃদ্ধির জন্য যে যে উপাদানগুলির প্রয়োজন তা সবই উপস্থিত রয়েছে ছাতুতে। তাইতো বাজার চলতি হেলথ ড্রিঙ্কের পরিবর্তে বাচ্চাদের নিয়মিত ছাতু খাওয়ানো বেশি উপকারী।
৬. কিডনী সুস্থ রাখে।
৭. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
৮. নিয়মিত খেলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ও মেদ ভুঁড়ি কমায়।
সাওয়ীক্বের উপাদানসমূহ: বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত এ খাবারে রয়েছে ১৯টিরও বেশি পুষ্টিকর উপাদান। যেমন- যব, গম, ভুট্টা, আখরোট, পেস্তা বাদাম, কাঠ বাদাম, কাজু বাদাম, খুরমা, কালোজিরা, ছোলা, তিল, ডাবলি, শুকনা নারিকেল, এলাচ ইত্যাদি।
সাওয়ীক্ব খাওয়ার নিয়ম: এক কাপ কুসুম গরম পানি বা দুধের সাথে ২/৩ চা-চামচ অথবা ১ গ্লাস গরম পানির সাথে ৩ চা-চামচ সাওয়ীক্ব মিশিয়ে পান করা যায়।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঠান্ডা ও মিঠা পানি পান করা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ফল খাওয়া মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক (২)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাঁটি মধুসহ সকল সুন্নতী সামগ্রী
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)