জীবনী মুবারক
বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত উওয়াইস বিন ‘আমির আল-ক্বারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি (২)
, ২২ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১০ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৫ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
তাযকিরাতুল আওলিয়া কিতাবে উনার সম্পর্কে এইরূপ উল্লেখ করা হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
التابعين أويس القرنى خير
(উওয়াইস ক্বারানী তাবে‘ঈদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ)।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
إنى لإجد نفس الرحمة من قبل اليمن
(আমি বাস্তবিকই মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতের সুগন্ধযুক্ত হাওয়া ইয়েমেনের দিক থেকে পাচ্ছি)।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, ক্বিয়ামতের দিন খালিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক তিনি সত্তর হাজার ফেরেশতাকে উওয়াইস আল-ক্বারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অনুরূপ চেহারা দিয়ে সৃষ্টি করবেন। উওয়াইস ক্বারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি এ সকল ফেরেশতা দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে হাশরের ময়দানে উপস্থিত হবেন। তিনি দুনিয়াতে নির্জন স্থানে এবং লোকালয় থেকে দূরে থেকে ইবাদত বন্দেগী করতে পছন্দ করতেন এবং নিজেকে গোপন রাখতে চেষ্টা করতেন। তাই ক্বিয়ামতের দিন খালিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক উনাকে ছিদ্ক্ নামক স্থানে (مقعد صدق) রাখবেন। খালিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক তখন বলবেন-
الأولياء تحت قبائى لا يعرفهم غيرى
(আওলিয়াগণ আমার (কুদরতি) জুব্বার নীচে, আমি ব্যতীত উনাদেরকে কেউ চিনতে পারে না)।
একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদেরকে বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি রয়েছেন, যিনি রাবী‘য়া ও মুদ্বার গোত্রের ছাগপালের পশমের পরিমাণ গোনাহগার লোকের জন্য সুপারিশ করবেন। সেকালে এ দু’টি গোত্রের ছাগল সুপ্রসিদ্ধ ছিল। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এমন ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এক বান্দা, নাম উওয়াইস আল-ক্বারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা জিজ্ঞাসা করলেন, আয় মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি কি আপনাকে দেখেছেন? উত্তরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তিনি প্রত্যক্ষভাবে আমাকে দেখেননি বটে, তবে অন্তরের চোখে আমাকে দেখছেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ আরজ করলেন, তিনি আপনার আশিক হলে কেন আপনার খিদমতে আসেন না? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দু’টি কারণে তিনি আসতে অক্ষম। প্রথমত: তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার ইশকে এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বতে মশগুল থাকেন। শরীয়তের হুকুম একমনে পালন করেন। দ্বিতীয়ত: উনার মাতা অন্ধ এবং হাত-পা অচল। মাতার ভরণ পোষণের ভার উনার উপর। উট চরিয়ে তিনি নিজের ও মায়ের ভরণ পোষনের ব্যবস্থা করেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, দুনিয়াবী হায়াতে আমরা উনাকে দেখব না। অতঃপর তিনি হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, আপনিও উনাকে আপনার জীবনকালে দেখবেন না। কিন্তু ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম উওয়াইস ক্বারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দেখবেন। বিছাল শরীফের সময় নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাদেরকে বললেন, আপনারা আমার পবিত্র বিছাল শরীফের পরে আমার খিরকা মুবারক উওয়াইস ক্বারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দিয়ে উনাকে আমার সালাম পৌঁছাবেন। (তাযকিরাতুল আওলিয়া) (চলবে)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে -১১
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০)
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৭)
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)