প্রাণীর ছবি তোলা, আঁকা রাখা হারাম, যা লা’নতগ্রস্ত ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৩)
, ০৮ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৪ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৬ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
আঙুলের ছাপ কোন বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য নয়, বরং চামড়ার আভ্যন্তরীণ স্তরের মৌলিক বৈশিষ্ট্য এবং মানুষের জেনেটিক কোডের উপর নির্ভরশীল:
বিগত সংখ্যায় আলোচনা করা হয়েছিল যে, ফিঙ্গারপ্রিন্টের স্থায়িত্ব অত্যন্ত বেশি এবং সে কারণে যে কোন ব্যক্তি বা অপরাধীকে শনাক্ত করতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য একটি মাধ্যম। বিশ্বের বিভিন্ন অপরাধী তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ছুরি দিয়ে কেটে, এসিড দিয়ে ঝলসিয়ে পরিবর্তনের চেষ্টা করেছে, কিন্তু তারা সক্ষম হয়নি। কারণ ফিঙ্গারপ্রিন্ট আঙ্গুলের বাইরের স্তরের কোন বৈশিষ্ট্য নয়, এটি আঙ্গুলের চামড়ার আভ্যন্তরীণ একটি বৈশিষ্ট্য যা মায়ের রেহেমে থাকা অবস্থায়ই মানুষ লাভ করে।
মানুষের চামড়ার মূলত তিনটি অংশ, এপিডার্মিস, ডার্মিস ও হাইপোডার্মিস। এপিডার্মিস হলো চামড়ার সবচেয়ে বাইরের অংশ, যা আমরা খালি চোখে দেখে থাকি। এপিডার্মিসের নীচের অংশটিকে বলা হয় ডার্মিস, যাকে ‘ট্রু স্কিন’ বা সত্যিকারের চামড়া বলা হয়। কারণ সবচেয়ে বাইরের এপিডার্মিস অংশটি এই ডার্মিস অংশের উপর ভিত্তি করেই তৈরী হয়, আর মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট এই ডার্মিস অংশেরই একটি বৈশিষ্ট্য।
চিত্র: ডার্মিসের উঁচুনিচু গঠন বা খাঁজের উপর ভিত্তি করে উপরের এপিডার্মিস অংশে আঙ্গুলের ছাপ তৈরী হয়ে থাকে।
সুতরাং কোন কারণে যদি বাইরের আঙুলের ছাপ ক্ষয়ে যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেক্ষেত্রে ভিতরের ডার্মিস অংশের উপর ভিত্তি করে সেই আঙ্গুলের ছাপ ফের আগের অবস্থায় ফেরত আসে। একারণে চাইলেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরিবর্তন করা যায় না, এসিড বা ক্ষয়কারী বস্তু দিয়ে বাহ্যিক পরিবর্তন আনলেও ডার্মিস অংশ অক্ষত থাকার কারণে সেই পরিবর্তন ক্ষণস্থায়ী হয়।
মানুষের আঙুলের চামড়ার ডার্মিস অংশে আঙ্গুলের ছাপ গঠিত হয় তার ভ্রুণাবস্থার ১০ম থেকে ১৭তম সপ্তাহের মধ্যে। ভ্রুণাবস্থায় হাত ও পায়ের আঙ্গুলের ডগা ও তালুতে এক ধরণের প্যাড গঠিত হয়, যাকে বলা হয় Volar pad (ভোলার প্যাড)। এই ভোলার প্যাড সম্পূর্ণ মসৃণ হয়, কোন প্রকার ছাপ তাতে থাকে না। ভ্রুণাবস্থার ১০ম সপ্তাহে এই ভোলার প্যাডের বৃদ্ধি থেমে যায়, কিন্তু ভ্রুণের হাতের আকার বৃদ্ধি পেতে থাকে।
এই সময়ে দৃশ্যমান ভোলার প্যাডগুলো আস্তে আস্তে হাতের মূল গঠনের মধ্যে মিশে যেতে শুরু করে। এই সময়েই মিলিয়ে যেতে থাকা ভোলার প্যাডগুলোর উপর আঙ্গুলের ছাপ দৃশ্যমান হতে শুরু করে।
ভোলার প্যাডের অবস্থার উপর ভিত্তি করে এরপর আঙ্গুলের primary ridges তৈরী হয়। এই প্রাইমারী রিজ তিন প্রকার- Loop, Whorl, Arch.
চিত্র: মৌলিক তিন প্রকারের ফিঙ্গারপ্রিন্ট। ফিঙ্গারপ্রিন্টের রেখাগুলোকে বলা হয় ‘ফ্রিকশন রিজ’।
ভ্রুণের আঙ্গুলের ছাপের প্রকরণ কি হবে, তা নির্ভর করে ভোলার প্যাড কতটুকু মিশে গিয়েছে তার উপর। যদি ভোলার প্যাড পুরোপুরি দৃশ্যমান থাকা অবস্থায় আঙ্গুলের ছাপ তৈরী হওয়া শুরু হয়, সেক্ষেত্রে whorl প্যাটার্নের আঙ্গুলের ছাপ তৈরী হবে। যদি আঙ্গুলের ছাপ তৈরী হওয়ার সময় ভোলার প্যাড অনেকখানি মিশে যায়, সেক্ষেত্রে ভ্রুণের আঙ্গুলের ছাপের প্যাটার্ন হবে Arch জাতীয়। যদি মাঝামাঝি পর্যায়ে থাকে, সেক্ষেত্রে তৈরী হবে loop জাতীয় প্যাটার্ন। নিম্নে একটি চিত্রের দ্বারা বিষয়টি দেখানো হয়েছে।
চিত্র: ভ্রুণাবস্থায় ভোলার প্যাডের মিশে যাওয়ার উপর ভিত্তি করে আঙ্গুলের ছাপের প্রকরণ। যদি অনেকখানি অংশ মিশে যায় (Low pad) সেক্ষেত্রে আঙ্গুলের ছাপ হবে Arch গঠনের। যদি অনেকখানি অংশ দৃশ্যমান থাকে (High pad) সেক্ষেত্রে হবে whorl প্যাটার্নের ছাপ। যদি মাঝামাঝি পর্যায়ে থাকে (Intermediate pad) সেক্ষেত্রে হবে loop জাতীয় প্যাটার্ন।
আবার ভোলার প্যাডের এই মিশে যাওয়ার ব্যাপারটি নির্ভর করে মানুষের জেনেটিক কোড বা বংশগতির উপর।
-গোলাম মুর্শিদ
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩)
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
গ্রীনিচকে ০ (শূন্য) ডিগ্রি দ্রাঘিমায় ধরে মূল মধ্যরেখা স্থির করার কোন ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই: পবিত্র কা’বা শরীফ উনার অবস্থান ০ (শূন্য) ডিগ্রি ০ (শূন্য) মিনিট ০ (শূন্য) সেকেন্ড ডিগ্রি দ্রাঘিমা ধরে ১৫ ডিগ্রি অন্তর অন্তর সময় অঞ্চলে ভাগ করাই সর্বোত্তম (১)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৯)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (৩)
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)