নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ উনাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ বিষয়ে আপত্তি ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
, ০৬ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৪ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২৩ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ ভাদ্র শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
সুওয়াল: বাতিল ৭২ ফিরক্বার কেউ কেউ বলে থাকে যে, “হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘লাত্বায়িফুল মাআরিফ’ নামক কিতাবে রোযার ঈদ, কুরবানীর ঈদ, আইয়্যামে তাশরীক্ব এবং জুমু‘আর দিন ব্যতীত অন্য কোনো দিনকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। কাজেই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে আগমন অর্থাৎ বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের তারীখ ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ উনাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না।” এ বিষয়ে সঠিক জবাব দানে বাধিত করবেন।
জাওয়াব: বাতিল ৭২ ফিরক্বার লোকদের জাতিগত স্বভাব হচ্ছে- কিতাবের ইবারত কারচুপি করা এবং হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের উপর ভর করে নিজেদের বাতিল মত ছাবিত করার অপচেষ্টা করা। যারা এরূপ বলে থাকে, তাদের নিকট সুওয়াল হচ্ছে- তাহলে কি হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার বিরুদ্ধে ফতওয়া দিয়েছেন? অথচ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا اِذَا اَفْطَرَ فَرِحَ وَاِذَا لَقِىَ رَبَّهٗ فَرِحَ بِصَوْمِهٖ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি উনার জন্য দুটি খুশি বা ঈদ রয়েছেন, যেই দুটি খুশি বা ঈদ সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি প্রকাশ করে থাকেন। (১) যখন সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি ইফতার করেন, তখন তিনি খুশি বা ঈদ প্রকাশ করেন। আর (২) যখন সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি তিনি উনার রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সাক্ষাৎ করবেন, তখন তিনি খুশি বা ঈদ প্রকাশ করবেন সম্মানিত রোযা উনার কারণে।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, নাসায়ী শরীফ, জুযউ ইবনে জুরাইজ ১/১৬, ফতহুল বারী ৪/১১৮, শরহে ইবনে বাত্ত্বাল ৪/২৪, উমদাতুল ক্বারী ১৬/২৮১, দলীলুল ফালিহীন ৭/২৪, ত্বরহুত তাছরীব ৪/৯৪, আল কাওয়াকিবুদ দুরারী ৯/৮৭, যখীরতুল উক্ববা ২১/৮০, ইরশাদুস সারী ৩/৩৫৪, আল কাওছারুল জারী ৪/২৬১, মাছাবীহুল জামি’ ৪/৩২৯, ই’লামুল হাদীছ ২/৯৪৬, আল লামি‘উছ ছবীহ্ ৬/৩৭০, আত্ তাওশীহ্ ৪/১৪২০ ইত্যাদি)
অন্য বর্ণনায় ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهٖ وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبِّهٖ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি উনার জন্য দুটি খুশি বা ঈদ রয়েছেন। (১) একখানা খুশি বা ঈদ হচ্ছেন সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি যখন ইফতার করেন। আরেকখানা খুশি বা ঈদ হচ্ছেন (২) সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি যখন উনার রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সাক্ষাৎ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, তাফসীরে ছা‘আলাবী ১/১০৭, তাফসীরে খাযিন ১/১১৪, রূহুল বয়ান ১/২৩৮, গ¦রাইবুল কুরআন ১/৫২১, আস সিরাজুল মুনীর ১/১২১, তাফসীরে বাগবী ১/২০৩, তাফসীরে ইবনে রজব ২/২২২, তাফসীরে মাযহারী ১/২০০ ইত্যাদি)
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
প্রতি সেকেন্ডে কোটি কোটি ঈদ
১. প্রতি দমে দুটি ঈদ ও দুটি ঈদে আকবর হওয়ার দলীল:
বিশ্বখ্যাত মুফাসসির আল্লামা হযরত ইসমাঈল হাক্কী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ১১২৭ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে রূহুল বয়ান’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন-
عاشقان در دمے دو عيد كنند
(বাংলা উচ্চারণ: আশেক্বানে দর দমে দো ঈদ কুনান্দ।)
অর্থ: “আশেক্বীন উনাদের প্রত্যেকটা শ্বাস-প্রশ্বাসেই দুটি ঈদ হয়।” সুবহানাল্লাহ! (রূহুল বয়ান ৬/৪৭১)
অন্যভাবে বলা হয়ে থাকে যে,
عارفان هر دمے دو عید کنند
(বাংলা উচ্চারণ: আরেফানে হর দমে দো ঈদ কুনান্দ।)
অর্থ: “সম্মানিত আরিফগণ অর্থাৎ আল্লাহওয়ালাগণ উনাদের প্রত্যেকটা শ্বাস-প্রশ্বাসেই দুটি ঈদ হয়।” সুবহানাল্লাহ!
মাওলানা জালালুদ্দীন রূমী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
صوفیان در دمے دو عید کنند
(বাংলা উচ্চারণ: ছূফিয়ানে দর দমে দো ঈদ কুনান্দ।)
অর্থ: “সম্মানিত ছুফীগণ উনাদের প্রত্যেকটা শ্বাস-প্রশ্বাসেই দুটি ঈদ হয়।” সুবহানাল্লাহ! (রূহুল বয়ান ২/৪৬৫, দেওয়ানে শামস)
মাওলানা জালালুদ্দীন রূমী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই বিষয়টা আরো স্পষ্টভাবে বলেন,
سالی دو عید کردن کار عوام باشد
ما صوفیان جان را هر دم دو عید باشد
(বাংলা উচ্চারণ: সালে দো ঈদ করদান কারে আওয়াম বাশদ, মা ছূফিয়ানে জান রা হরদম দো ঈদ বাশদ।)
অর্থ: “বছরে দুই ঈদ করা হচ্ছে সাধারণ লোকদের কাজ। আর আমরা সম্মানিত ছূফীগণ আমাদের সজ্ঞানে প্রত্যেকটা শ্বাস-প্রশ্বাসেই দুটি ঈদ হয়।” সুবহানাল্লাহ! (দেওয়ানে শামস)
বিশ্বখ্যাত মুফাসসির আল্লামা হযরত ইসমাঈল হাক্কী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ১১২৭ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে রূহুল বয়ান’ উনার মধ্যে ‘সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মায়িদাহ্ শরীফ উনার ১১৪ নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ’ উনার তাফসীরে বলেন,
كُلُّ يَوْمٍ كَانَ لِلْمُسْلِمِيْنَ عِيْدًا فِى الدُّنْيَا فَهُوَ عِيْدٌ لَّهُمْ فِى الْجَنَّةِ يَجْتَمِعُوْنَ فِيْهِ عَلٰى زِيَارَةِ رَبِّهِمْ وَيَتَجَلّٰى لَهُمْ فِيْهِ فَيَوْمُ الْجُمُعَةِ فِى الْجَنَّةِ يُدْعٰى يَوْمَ الْمَزِيْدِ وَيَوْمُ الْفِطْرِ وَالْاَضْحٰى يُجْتَمَعُ اَهْلُ الْجَنَّةِ فِيْهِمَا لِلزِّيَارَةِ هٰذَا لِعَوَامِ اَهْلِ الْجَنَّةِ وَاَمَّا خَوَاصُّهُمْ فَكُلُّ يَوْمٍ لَهُمْ عِيْدٌ يَزُوْرُوْنَ رَبَّهُمْ كُلَّ يَوْمٍ مَرَّتَيْنِ بُكْرَةً وَّعَشِيًّا وَالْخَوَاصُّ كَانَتْ اَيَّامُ الدُّنْيَا كُلُّهَا لَهُمْ اَعْيَادًا فَصَارَتْ اَيَّامُهُمْ فِى الْاٰخِرَةِ كُلُّهَا اَعْيَادًا وَاَمَّا اَخَصُّ الْخَوَاصِّ فَكُلُّ نَفَسٍ عِيْدٌ لَّهُمْ قَالَ فِى التَّأْوِيْلَاتِ النَّجْمِيَّةِ رَبَّنَا اَنْزِلْ عَلَيْنَا مَائِدَةً مِّنَ السَّمَاءِ اَىْ مَائِدَةَ الْاَسْرَارِ وَالْحَقَائِقِ الَّتِىْ تُنْزِلُهَا مِنْ سَمَاءِ الْعِنَايَةِ عَلَيْهَا اَطْعِمَةُ الْهِدَايَةِ تَكُوْنُ لَنَا يَعْنِىْ لِاَهْلِ الْحَقِّ وَاَرْبَابِ الصِّدْقِ عِيْدًا نَفْرَحُ بِهَا لِاَوَّلِنَا وَاٰخِرِنَا اَىْ لِاَوَّلِ اَنْفَاسِنَا وَاٰخِرِهَا فَاِنَّ اَرْبَابَ الْحَقِيْقَةِ يُرَاقِبُوْنَ الْاَنْفَاسَ اَوَّلَهَا وَاٰخِرَهَا لِتَصْعَدَ مَعَ اللهِ وَتَهْوِىْ مَعَ اللهِ فَفِىْ صُعُوْدِ النَّفَسِ مَعَ اللهِ يَكُوْنُ عِيْدًا لَهُمْ وَفِىْ هُوِيْهِ مَعَ اللهِ عِيْدًا لَهُمْ كَمَا قَالَ بِالْفَارِسِيَّةِ [صوفيان در دمى دو عيد كنند]
অর্থ: “সম্মানিত মুসলমান উনাদের জন্য দুনিয়াতে যে দিনগুলি ঈদ, সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যেও সেই দিনগুলি উনাদের জন্য ঈদের দিন হবেন। সুবহানাল্লাহ! কারণ এই সমস্ত দিনে সম্মানিত মুসলমান উনারা উনাদের রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দীদার মুবারক উনার উদ্দেশ্যে একত্রিত হবেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি এই দিনগুলিতে উনাদের জন্য প্রকাশ পাবেন। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জুমু‘আহ্ শরীফ উনার দিন সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে দাওয়াত দেয়া হবে, (এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দিন মুবারক হচ্ছেন-) ইয়াওমুল মাযীদ। সুবহানাল্লাহ! আর সম্মানিত রোযার ঈদ এবং সম্মানিত কুরবানীর ঈদ- এই দুই দিন সম্মানিত জান্নাতবাসী উনাদেরকে পরস্পর সাক্ষাতের জন্য একত্রিত করা হবে। এটা আমভাবে সম্মানিত জন্নাতবাসী সকলের জন্য। আর সম্মানিত জান্নাতবাসী খাছ ব্যক্তি উনাদের প্রত্যেক দিনই ঈদ হবেন। উনারা প্রতি দিন সকাল-সন্ধ্যা দুই বার উনাদের রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দীদার মুবারক লাভ করবেন। খাছ ব্যক্তিত্ব উনাদের জন্য দুনিয়াতে উনাদের প্রত্যেক দিনই ঈদ। তাই পরকালেও উনাদের প্রত্যেক দিনই ঈদ হবেন। আর আখাছ্ছুল খাছ ব্যক্তিত্ব উনাদের জন্য প্রত্যেকটা শ্বাস-প্রশ্বাসই ঈদ অর্থাৎ প্রতি দমেই ২টি ঈদ। শ্বাস গ্রহণের সময় ১টি ঈদ আর শ্বাস ছাড়ার সময় ১টি ঈদ। (হযরত ইমাম ফখরুদ্দীন রাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত শায়েখ, বিশিষ্ট বুযূর্গ, ছূফী, মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ মাহূবব ওলী হযরত শায়েখ ইমাম আহমদ ইবনে উমর ইবনে মুহম্মদ নাজমুদ্দীন কুবরা রহমতুল্লাহি আলাইহি- বিছাল শরীফ ৬১৮ হিজরী শরীফ) তিনি ‘তা’ওয়ীলাতুন নাজমিয়্যাহ্ শরীফ’ উনার মধ্যে বলেন-رَبَّنَا اَنْزِلْ عَلَيْنَا مَائِدَةً مِّنَ السَّمَاءِ ‘আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! দয়া করে আপনি আমাদের জন্য আসমান থেকে একটি খাদ্যের খাঞ্চা নাযিল করুন।’ অর্থাৎ মা’রিফাত এবং হাক্বীক্বতসমূহের খাঞ্চা, যা আপনি অনুগ্রহের আসমান থেকে নাযিল করেন, যার মধ্যে রয়েছেন হেদায়াতের খাদ্যসমূহ। সেটা আমাদের জন্য অর্থাৎ আহলে হক্ব এবং আরবাবুছ ছিদ্ক্ব উনাদের জন্য ঈদ হবেন। সেই নিয়ামত মুবারক উনার জন্য আমরা খুশি প্রকাশ করবো। আমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য এবং পরবর্তীদের জন্য অর্থাৎ আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের শুরুতে এবং শেষে অর্থাৎ শ্বাস গ্রহণের সময় এবং শ্বাস ছাড়ার সময় ঈদ হবেন। কেননা নিশ্চয়ই হাক্বীক্বতের অভিভাবকগণ উনারা উনাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের শুরু এবং শেষ সবটাই পর্যবেক্ষণ করেন মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে (নিসবত-সম্পর্ক) বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে মুহব্বত স্থাপনের জন্য। কাজেই, উরূজের সময় উনাদের শ্বাস-প্রশ্বাসসমূহ হয় মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে অর্থাৎ উনার মুহব্বতে, ফলে তখন উনাদের জন্য উনাদের প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসে ঈদ হয় এবং নুযূলের সময়ও উনাদের শ্বাস-প্রশ্বাসসমূহ হয় মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে অর্থাৎ উনার মুহব্বতে, ফলে তখনও উনাদের প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসে ঈদ হয়। যেমন ফার্সীতে বলা হয়- ‘সম্মানিত ছুফীগণ উনাদের প্রত্যেকটা শ্বাস-প্রশ্বাসেই দুটি ঈদ হয়’।” সুবহানাল্লাহ! (রূহুল বয়ান ২/৪৬৫)
বিশ্বখ্যাত মুফাসসির আল্লামা হযরত ইসমাঈল হাক্কী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে রূহুল বয়ান’ উনার মধ্যে আরো বলেন,
يَقُوْلُ الْفَقِيْرُ لَعَلَّ الْعِيْدَيْنِ اِشَارَةٌ اِلَى النَّفَسِ الدَّاخِلِ وَالْخَارِجِ وَلِلْعَارِفِيْنَ فِى كُلٍّ مِّنْهُمَا عِيْدٌ اَكْبَرُ بِاِعْتِبَارِ كَوْنِهِمْ مَعَ الْحَقِّ وَشُهُوْدِهٖ
অর্থ: “এই ফক্বীর (অর্থাৎ আল্লামা হযরত ইসমাঈল হাক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি) বলেন, সম্ভবত (প্রতি দমে) দুই ঈদ দ্বারা শ্বাস গ্রহণ এবং শ্বাস ছাড়ার কথা বলা হয়েছে। আর আরিফগণ উনাদের জন্য এই উভয়ের প্রত্যেকটিই হচ্ছেন ‘ঈদে আকবর’। কারণ উনারা দায়িমীভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার নিসবতে ও (মেছালী) দর্শনে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ! (রূহুল বয়ান ৬/৪৭১)
উপরোক্ত আলোচনা থেকে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, খাছ মু’মিন উনাদের জন্য প্রতিদিন ঈদ অর্থাৎ খাছ মু’মিন উনাদের জন্য বৎসরে ৩৫৪/৩৫৫ দিনই ঈদ। আর আখাছ্ছুল খাছ মু’মিন অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার আশিক্ব, আরিফ বা ওলীআল্লাহ এবং ছূফী উনাদের প্রতিটি দমে বা শ্বাস-প্রশ্বাসে ২টি ঈদ অর্থাৎ আখাছ্ছুল খাছ মু’মিন উনাদের জন্য বৎসরে ৩৫৪/৩৫৫ দিন তো অবশ্যই, শুধু তাই নয়; বরং উনাদের প্রতিটি দমে বা শ্বাস-প্রশ্বাসে ২টি করে ঈদ, আর প্রত্যেকটি হচ্ছেন ‘ঈদে আকবর’। সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (২)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
এক নযরে রবীবাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৮)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২১)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৮)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২০)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৭)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৯)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)