নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে শব্দ ব্যবহারে কতটুকু আদব রক্ষা করা আবশ্যক (৪)
, ১২ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৫ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ২৯ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ قَيْسِ بْنِ مَخْرَمَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ عَنْ اَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ وُلِدْتُ اَنَا وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيْلِ. وَسَاَلَ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ حَضْرَتْ قُبَاثَ بْنَ اَشْيَمَ اَخَا بَنِىْ يَعْمَرَ بْنِ لَيْثٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ اَاَنْتَ اَكْبَرُ اَمْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَكْبَرُ مِنِّىْ وَاَنَا اَقْدَمُ مِنْهُ فِى الْمِيْلَادِ وُلِدَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيْلِ
অর্থ: হযরত ক্বাইস ইবনে মাখরামা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার সম্মানিত পিতা থেকে, তিনি উনার সম্মানিত দাদা থেকে বর্ণনা করেন। উনার দাদা বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং আমি হস্তী বছরে (আবরাহার বাহিনী ধ্বংসের বছর) বিলাদত শরীফ গ্রহণ করি। (তিনি বলেন,) ইয়া’মার ইবনে লাইছ গোত্রীয় হযরত কুবাছ ইবনে আশইয়াম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে তৃতীয় খলীফা সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, (বয়সের দিক থেকে) আপনি বড় নাকি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বড়? তিনি জবাব দিলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার চেয়ে অনেক বড়, তবে আমি বিলাদত শরীফ গ্রহণের দিক থেকে যমীনে আগে এসেছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাতীর বছর মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৩৬১৯)
আরো বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ مُغِيْرَةَ بْنِ اَبِىْ رَزِيْنٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قِيْلَ لِحَضْرَتْ عَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَيُّمَا اَكْبَرُ اَنْتَ اَمْ اَلنَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ هُوَ اَكْبَرُ مِنِّىْ وَ اَنَا وُلِدْتُ قَبْلَهٗ
অর্থ: হযরত মুগীরা ইবনে আবী রযিন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত খাতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম) উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বড় নাকি আপনি? তিনি জবাবে বললেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার চেয়ে অনেক বড় তবে আমি উনার পূর্বে পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহন করেছি। (মুস্তাদরাকে হাকিম ৩/৩৬২)
বিষয়টা অত্যন্ত সূক্ষ্ম উনারা কিন্তু বলতে পারতেন যে আমি বড়। আর বয়সের দিক থেকে উনারাই বড় ছিলেন এটাই সত্য। কিন্তু উনারা সেটা বলেননি। এখানেও উনারা সর্বোচ্চ আদবের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যারা বলে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিতো মেষ চড়িয়েছেন তাহলে উনাকে ‘রাখাল’ বললে সমস্যা কি? তাদের জন্য উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে শিক্ষণীয় ও নছীহত হাছিল করার বিষয় রয়েছে।
এখানে আরেকটা বিষয় রয়ে গেছে সেটা হলো, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তখনই কেউ সর্বোচ্চ সম্মান করতে পারবে, তা’যীম-তাকরীম করতে পারবে, আদব বজায় রাখতে পারবে যখন সে উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হিসেবে, তিনি হাযির-নাযির, তিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব, তিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে মেনে নিবে।
আর যদি কেউ মনে করে তিনি তাদের মতোই তাহলে কস্মিনকালেও তারা উনাকে সম্মান করতে পারবে না, উনার শানে আদব বজায় রাখতে পারবে না, এটা প্রমাণিত। বর্তমান বাজারের যে সমস্ত বক্তারা উনার শানে বেয়াদবী করে এরা এটাই মনে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের মতো। নাঊযুবিল্লাহ।
মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত মুসলমানদেরকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে সর্বোচ্চ আদব বজায় রাখার এবং উনাকে সবচেয়ে বেশি তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার পবিত্রতা রক্ষা করা সকলের জন্যেই ফরয
১৬ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র যাকাত পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার মধ্যে দেয়াই উত্তম
১৬ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জন্য হাত, পা ও চেহারা আবৃত করে ঘর থেকে বের হওয়া ফরজ। খোলা রেখে বের হওয়া হারাম, জায়েয বলা কুফরী (৩)
১৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত মীলাদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক
১৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিষিদ্ধ মহিলা জামায়াত নিয়ে ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ছু’দের বিভ্রান্তিকর ও জিহালতী বক্তব্যের জবাব (৯)
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কোথায় যাকাত দিবেন, তা আগে যাচাই করে দেখতে হবে
১৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রকৃত মুসলমান হতে হলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম উনাদের খুছুছিয়াত তথা বৈশিষ্ট্য মুবারক অর্জন করতে হবে
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বেপর্দা ও লানত
১১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করাই হচ্ছে আধুনিকতা আর বেপর্দা হওয়া জাহিলিয়াত যুগের অনুসরণ
১১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার হক্ব যথাযথ আদায় না করতে পারলে রয়েছে কঠিন পরিণতি
০৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র যাকাত পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার মধ্যে দেয়াই উত্তম
০৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)