আফদ্বালুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম
, ১৩ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৪ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ০৩ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) বরকতময় জিবনী মুবারক
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهٗ اُمَّهٰتُهُمْ.
অর্থ: মহাসম্মানিত ও মহপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মু’মিনদের নিকট তাঁদের জানের চেয়েও অধিক প্রিয় এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” (সুরা আহযাব শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
এই পবিত্র আয়াত শরীফে দু’টি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। প্রথমত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বাধিক প্রিয়। উনাকে সমস্ত কিছু হতে সবচেয়ে বেশি মুহব্বত করতে হবে। মনে প্রাণে উনাকে মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে মেনে নিতে হবে। উনার মুবারক শানে বিন্দু হতে বিন্দুতম মুহব্বত ও আদবের ঘাটতি হলে ঈমানদার থাকা সম্ভব হবেনা। দ্বিতীয়ত, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকেও সমস্ত কিছু হতে সবচেয়ে বেশি মুহব্বত করতে হবে। উনাদেরকে মহাসম্মানিতা মাতা হিসেবে মেনে নিতে হবে। উনাদের মুবারক শানেও বিন্দু পরিমাণ বেয়াদবী করলে ঈমানহারা ও লা’নতগ্রস্ত হয়ে চির জাহান্নামী হতে হবে। কাজেই, কথাবার্তা, চাল-চলন, আচার-ব্যবহার, বলাবলি, লেখা-লেখিসহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমগ্র জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের জীবনী মুবারক জানা, মুবারক শানে সর্বোচ্চ আদব রক্ষা করা এবং প্রকাশ করা সকলের জন্যই ফরযে আইন বা অত্যাবশকীয়।
উল্লেখ্য যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১৩ জন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন অষ্টম।
পরিচিতি মুবারক
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার পূর্বে পবিত্র নাম মুবারক ছিল হযরত র্বারা আলাইহাস সালাম। নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই নাম মুবারক পরিবর্তন করে হযরত জুওয়ায়রিয়া আলাইহাস সালাম রাখেন।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার পিতা হযরত হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন বনু মুস্তালিক গোত্রের সাইয়্যিদ। পরবর্তীতে তিনি একজন ছাহাবী হন। উনার নসবনামা মুবারক এইরূপ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত জুওয়াইরিয়া আলাইহাস সালাম বিনতে হযরত হারিছ ইবনে আবী দ্বিরার আলাইহিমুস সালাম। বনু মুস্তালিক গোত্র খুযা‘য়া গোত্রের শাখা। উনারা ছিলেন আহলে কিতাবের অন্তর্ভুক্ত হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার সম্প্রদায়ের লোক অর্থাৎ ইনজিল শরীফ উনার অনুসারী। খুযায়া গোত্রের অবস্থান পবিত্র মক্কা শরীফ উনার কাছাকাছি হওয়ার কারণে উনারা কুরাইশ গোত্রের দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন।
পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আল ক্বউইউল আউওয়াল, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বইয়ূমুযযামান, সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নবুয়ত মুবারক প্রকাশের ২ বছর পূর্বে পবিত্র ১৩ই যিলক্বদ শরীফ ইয়াওমুল খামীস পবিত্র বিলাদতি শান মুবারক প্রকাশ করেন।
প্রথম শাদী মুবারক
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার অল্প বয়স মুবারকে প্রথম শাদি মুবারক অনুষ্ঠিত হয় উনার চাচাতো ভাই মুসাফি’ ইবনে ছাফওয়ান আল-মুস্তালাকীর সাথে। মুসাফি’ ইবনে ছাফওয়ান বনু মুস্তালিক জিহাদে নিহত হয়।
বিশেষ স্বপ্ন মুবারক
হযরত আল-ওয়াকিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত উরওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে বর্ণনা করেছেন। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাশরীফ আনয়নের তিন দিন পূর্বে আমি স্বপ্নে দেখলাম, যেন ইয়াছরিব অর্থাৎ পবিত্র মদীনা শরীফ উনার দিক থেকে চাঁদ ছুটে এসে আমার মুবারক কোলে পড়লেন। কোন মানুষকে এ কথা বলা আমি ভাল মনে করিনি। অতঃপর নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক আনয়ন করলেন। নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে তাশরীফ মুবারক আনয়ন করেছেন, সেকথা আমার এক চাচাতো বোন আমাকে না বলা পর্যন্ত আমার কিছুই জানা ছিল না। বনু মুস্তালিক জিহাদে পরাজয়ের পর আমি যখন মুসলমানদের জিম্মায় আসলাম, তখন আমার দেখা স্বপ্নের বাস্তব রূপ লাভের আশা পোষণ করলাম। আমি আমার এ স্বপ্নের কথা আমার গোত্রের কাউকে বলিনি। অতঃপর যখন নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার পবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়, আমি খ¦ালিক, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা করলাম এবং শুকরিয়া আদায় করলাম। (যারক্বানী)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল¬াল¬াহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ
হিজরী ৫ম সালে অনুষ্ঠিত বনু মুস্তালিক জিহাদে তাদের পরাজয়ের পর নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বনু মুস্তালিক গোত্রের গণিমত মুসলমানদের মধ্যে বিতরণ সমাপ্ত করেন।
জিহাদের নিয়ম অনুযায়ী পরাজিত অঞ্চলের পুরুষদেরকে যুদ্ধবন্দী হিসাবে একত্রিত করা হতো এবং মহিলগণকেও পৃথকভাবে যুদ্ধবন্দিনী হিসাবে একত্রিত করা হতো। শরয়ী বিধান অনুযায়ী বনু মুস্তালিক গোত্রের মহিলাগণকেও একত্রিত করে মুসলমানদের জিম্মায় রাখা হয়।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি প্রখ্যাত ছাহাবী হযরত ছাবিত বিন কায়েস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জিম্মায় পড়েন। তিনি হযরত ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাথে এই মর্মে মুকাতাবা চুক্তি করেন যে, তিনি মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত হবেন। অতঃপর তিনি স্বয়ং নিজেই নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে এসে তিনি বললেন: ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি বনু মুস্তালিক গোত্রের সাইয়্যিদ হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম উনার মেয়ে। আমি এখন এমন অবস্থায় রয়েছি যে, আপনি ছাড়া কেউ দূর করতে পারবে না। আমি মুক্ত হওয়ার শর্তে মুক্তিপণ দিব বলে মুকাতাবা চুক্তি করেছি। আমার এ চুক্তিতে আপনি আমাকে মদদ করুন, সাহায্য ও সহযোগীতা করুন।
নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এটা কি ভাল হয় না যে আমি আপনার মুক্তিপণ দিয়ে দিব এবং আমার সাথে আপনার নিসবাতুল আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হবে? সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন: হ্যাঁ, এটা খুবই ভাল হবে। অতঃপর নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ!
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আল ক্বউইউল আউওয়াল, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বইয়ূমুযযামান, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হিজরী ৫ম সনের পবিত্র ২৮শে যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতুল জুমুয়া শরীফ নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় উনার বয়স মুবারক হয়েছিলেন ২০ বছর ১ মাস ১৫ দিন।
বনু মুস্তালিক গোত্রের যুদ্ধবন্দী ও যুদ্ধবন্দীনীদের মুক্তি
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যখন শুনলেন যে, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছে, তখন উনারা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে বনু মুস্তালিক গোত্রের সমস্ত যুদ্ধবন্দী ও বন্দিনীদেরকে বিনা পণে মুক্ত করে দেন। উনাদের এক শত পরিবারের লোক সংখ্যা ছিলেন প্রায় সাত শত। (আছাহহুস সিয়ার)
পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ
সাইয়্যিদুনা হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খিলাফত মুবারককালে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হিজরী ৫০ সালের পবিত্র ১৭ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! জান্নাতুল বাকীতে উনার পবিত্র রওজা শরীফ স্থাপন করা হয়। এ সময় উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক হয় ৬৪ বছর ৪ মাস ৪ দিন।
মহাসম্মানিত ফযীলত ও মর্যাদা মুবারক
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল ফাযায়েল-ফযীলত মুবারক সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফে উল্লেখ রয়েছে। তদুপরি উনাদের প্রত্যেকের বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গুণাবলী রয়েছেন।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি অত্যন্ত ইবাদত গুজার ছিলেন। তিনি খুব বেশী নফল নামায পড়তেন। একবার নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট এসে দেখেন তিনি নামায পড়ছেন। অতঃপর তিনি ফিরে গেলেন। দ্বিপ্রহরে পূণরায় তিনি দেখেন তখনও সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নামায পড়ছেন।
নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি অনবরত নামায পড়ছেন ? তিনি উত্তরে বললেন, জী। তা শুনে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খুশী হয়ে উনাকে কিছু বিশেষ ধরণের নামায শিক্ষা দিলেন, যার ছওয়াব সাধারণ নফল নামায অপেক্ষা অনেক বেশী। (উসুদুল গাবা)
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট থেকে সাতটি হাদীছ শরীফ সংকলিত হয়েছে। ইহা মুহাদ্দিছীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের হিসাব মতে রাবীদের বর্ণনা অনুযায়ী উনার বর্ণিত হাদীছ শরীফ উনার সংখ্যা। প্রকৃতপক্ষে সকল হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ কায়িম মাকাম। কাজেই উনাদের মুবারক কাজ-কর্ম, কথা-বার্তা, আচার ব্যবহার সবই হাদীছ শরীফ উনার অন্তর্ভূক্ত।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ৪৫ বছর ২ মাস ১৯ দিন উম্মতের হিদায়েতের কাজে ব্যাপৃত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, আফদ্বালুন নাস ওয়া নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের আলোচনা মুবারক শুরু হবে কিন্তু শেষ করার সীমানা কারোরই জানা নেই। তথাপি উনাদের শান মুবারকে সর্বোচ্চ আদব প্রকাশ ও সর্বাধিক হুসনে যন পোষণ করতে হবে। উনাদেরকে নিজের মাল, জানসহ সমস্ত কিছু হতে বেশি মুহব্বত করতে হবে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনভাবেই উনাদের শান মুবারকে বিন্দু হতে বিন্দুতম আদব ও হুসনে যনের খিলাফ করা যাবেনা। আর উনাদের পবিত্র সাওয়ানেহে উমরী মুবারক জেনে ইবরত-নসীহত হাসিল করত উনাদের মুবারক শানে বিশুদ্ধ আক্বীদাহ পোষণ করে উনাদের মুবারক ফায়িয-তাওয়াজ্জুহ এবং নেক দৃষ্টি ও নিসবত মুবারক হাসিল করতে হলে সুলত্বানুন নাছীর, আল ক্বউইউল আউওয়াল, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বইয়ূমুযযামান, ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মহাসম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার ছোহবত মুবারকে সকলকে অবশ্যই আসতে হবে এবং উনার মুবারক পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত রাজারবাগ শরীফ সুন্নতী জামে মসজিদে প্রতিদিন বাদ মাগরিব অনুষ্ঠিত অনন্তকালব্যাপী জারীকৃত পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল শুনতে হবে। একইভাবে ছহিবাতু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার ছোহবত মুবারকে মহিলাদেরকে অবশ্যই আসতে হবে এবং উনার মুবারক পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ঢাকা রাজারবাগ শরীফস্থ মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ বালিকা মাদরাসায় প্রতিদিন বাদ যুহর অনুষ্ঠিত ফালইয়াফরহূ তা’লীমী মাহফিল শুনতে হবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি মুসলিম উম্মাহকে এ ব্যাপারে তাওফীক্ব দান করুন। আমীন। (সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ আশার আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
২০ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি (২)
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১)
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল কাওনাইন, ছাহিবু ক্বাবা ক্বাওসাইনি আও আদনা, ফখরুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত মুসলমান উনাদের ইহকালীন ও পরকালীন নাজাত লাভের সর্বোচ্চ মাধ্যম মুবারক (৩)
২৫ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে, উনারই সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কায়িনাত সৃষ্টি করেছেন
২১ মে, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
এক নযরে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ্, মালিকুল কায়িনাত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক
১২ মে, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র মু’জিযা শরীফ”
০৩ মে, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ বর্ণিত মওযূ হাদীছ ও তার খণ্ডনমূলক জবাব (১)
২৯ এপ্রিল, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
২৮ এপ্রিল, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বেমেছাল মহাসম্মানিত বুলন্দী শান মুবারক এবং উনাদের শানের খিলাফ বর্ণিত মওযূ হাদীছ ও তার খণ্ডনমূলক জবাব (১১)
০৬ মার্চ, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৫ মার্চ, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অবশ্যই হাযির ও নাযির
০৫ মার্চ, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)