সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৫৩)
, ১৯ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৬ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০৮ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য যেহেতু মান্য করা ফরয, সেহেতু বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করা ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরা দাজ্জাল ও কায্যাব, তাদের থেকে দূরে থাকা ফরয-ওয়াজিব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوْا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ করতে পারবে না এবং ফেৎনায় ফেলতে পারবে না। ” (মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম)
দাজ্জালে কাযযাবের অর্থ-
خَلَّاطُوْنَ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ مُمَوِّهُوْنَ.
অর্থ: যারা সত্যের সাথে সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাবের প্রকৃত অর্থ হলো- যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিভ্রান্তিকর অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে সর্বদা মুসলমানদের মাঝে ফেৎনা করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায় তাদেরকে বলা হয় দাজ্জালে কাযযাব। মূলতঃ তারা মুনাফিক। তাই সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরাও পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জাল ও কাযযাবের অন্তর্ভুক্ত।
ধারাবাহিক আলোচনা.........
৩। সে তার বইয়ের ৫৩ পৃষ্ঠায় আরো লিখেছে- হাদীছে কুরাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মধ্যে
لَا هكَذَا اَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم এবং فَلَا نَزَالُ نَصُوْمُ حَتَّى نُكْمِلَ ثَلَاثِيْنَ اَوْ نَرَاهُ
বিশেষ উক্তি দু’টি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উক্তি নয়। বরং অত্র উক্তিদ্বয় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিজস্ব উক্তি। তাই কোন ছাহাবীর নিজস্ব উক্তি কখনো কুরআনের সুস্পষ্ট আয়াত এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ ও আমলের বিপরীতে দলিল হতে পারে না।
জাওয়াব: পৃথিবীতে যত পবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে কোন হাদীছ শরীফই রাবী বা সনদবিহীন বর্ণিত হয় নাই। বরং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাই বর্ণনা করেছেন। আর উনারা বর্ণনা করেছেন قَالَ ,اَمَرَنَا ,اَوْصَاني ইত্যাদি শব্দ মুবারক উনার দ্বারা। কিন্তু পৃথিবীর যমীনে আজ পর্যন্ত এমন একজন লোক পাওয়া যায় নাই যে, কেউ বলেছে قَالَ ,اَمَرَنَا ,اَوْصَاني ইত্যাদি শব্দ যোগে পবিত্র হাদীছ শরীফ করার কারণে বর্ণনাকৃত বিষয়টি মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উক্তি নয় বরং ছাহাবী বা বর্ণনাকারীর নিজস্ব উক্তি বা বর্ণনা। পবিত্র হাদীছে কুরাইবে اَمَرَنَا অর্থাৎ তিনি আমাদেরকে নির্দেশ প্রদান করেছেন। উক্ত বাক্য মুবারক উল্লেখ থাকার পরেও একমাত্র দাজ্জালের পূর্বসূরী, মিথ্যাবাদী ও প্রতারক মাহবুবকেই পাওয়া গেল যে বলেছে হাদীছে কুরাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর মধ্যে,
لَا هكَذَا اَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم এবংفَلَا نَزَالُ نَصُوْمُ حَتَّى نُكْمِلَ ثَلَاثِيْنَ اَوْ نَرَاهُ
বিশেষ উক্তি দু’টি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উক্তি নয়। বরং অত্র উক্তিদ্বয় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিজস্ব উক্তি। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক!
৪। মাহবুব সে তার বইয়ের ৫৩ পৃষ্ঠায় আরো লিখেছে,
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার উক্তিদ্বয় দ্বারা মূলত ইঙ্গিত করেছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বাণী لاتَصوموا حَتَّى تَرَوه ولا تُفطِروا حَتَّى تَرَوه এবং صُومُوا لِرُؤْيَتِهِ، وَأَفْطِرُوا لِرُؤْيَتِهِ এর দিকে।
জাওয়াব: এটাও তার একটা জঘন্য মিথ্যাচার ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা। কেননা, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে-
هكَذَا اَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থাৎ “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এরূপ করতেই আমাদেরকে নির্দেশ প্রদান করেছেন” সুতরাং হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার উক্ত বাণী মুবারক দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় যে, শাম অঞ্চলের চাঁদ দেখা পবিত্র মদীনা শরীফ উনার অধিবাসীদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং উক্ত বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকার পরেও অন্য হাদীছ শরীফ দ্বারা তার বিপরীত ব্যাখ্যা করা এটা উক্ত হাদীছ শরীফ উনার ব্যাপারে জঘন্য মিথ্যাচার ও অপব্যাখ্যা ব্যতিত অন্য কিছুই নয়। যা স্পষ্ট কুফরী কাজ। চলবে....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)