সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৪২)
, ০৩ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ১০ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২৭ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য যেহেতু মান্য করা ফরয, সেহেতু বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করা ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরা দাজ্জাল ও কায্যাব, তাদের থেকে দূরে থাকা ফরয-ওয়াজিব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوْا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ্ করতে পারবে না এবং ফেৎনায় ফেলতে পারবে না। ” (মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম)
দাজ্জালে কাযযাবের অর্থ-
خَلَّاطُوْنَ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ مُمَوِّهُوْنَ
অর্থ: যারা সত্যের সাথে সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাবের প্রকৃত অর্থ হলো- যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিভ্রান্তিকর অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে সর্বদা মুসলমানদের মাঝে ফেৎনা করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায় তাদেরকে বলা হয় দাজ্জালে কাযযাব। মূলতঃ তারা মুনাফিক। তাই সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরাও পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জাল ও কাযযাবের অন্তর্ভুক্ত।
ধারাবাহিক আলোচনা.........
এ কে এম মাহবুব সে তার বইয়ের ৭ ও ৮ পৃষ্ঠায় লিখেছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَسأَلُوْنَكَ عَنِ الأَهِلَّةِ قُل هِيَ مَوَاقِيْتُ لِلنَّاسِ وَالْحَجِّ
অর্থ: আপনার নিকট তারা নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলে দিন যে, এটি মানুষের এবং হজ্জের জন্য সময় নির্ধারণকারী। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১৮৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ
অর্থ: সুতরাং তোমাদের মধ্যে থেকে যে ব্যক্তি উক্ত মাস পাবে সে যেন পবিত্র রোযা রাখে। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১৮৫)
পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখিত مَنْ (যে কেউ) শব্দটি দেশ মহাদেশ নির্বিশেষে عَامْ বা ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ।
অতএব আয়াতে مَنْ (যে কেউ) শব্দটির মাধ্যমে ব্যাপকার্থে গোটা পৃথিবীর যে কোন মুসলিম সম্বোধিত। .... তারপর সে লিখেছে-
উল্লেখিত আয়াতদ্বয় দ্বারা স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছে যে, চন্দ্র মাসের তারিখ গণনার ক্ষেত্রে নতুন চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার ভিন্নতা ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।
জাওয়াব: প্রথমত: মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম মুবারক-
يَسأَلُوْنَكَ عَنِ الأَهِلَّةِ قُل هِيَ مَوَاقِيْتُ لِلنَّاسِ وَالْحَجِّ
“এটি (নতুন চাঁদ) মানুষের এবং হজ্জের জন্য সময় নির্ধারণকারী” এবং
فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ
অর্থ: সুতরাং যে ব্যক্তি উক্ত মাস পাবে সে যেন রোযা রাখে।
উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ দুটি দ্বারা স্পষ্ট তো দূরের কথা, অস্পষ্টভাবেও এ কথা প্রমাণিত হয় না যে, চন্দ্র মাসের তারিখ গণনার ক্ষেত্রে নতুন চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার ভিন্নতা দ্বীন ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।
মূলত: এটা মাহবুব নামের ব্যক্তিটির অনুমানভিত্তিক মনগড়া ও বানোয়াট দাবি এবং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অপব্যাখ্যা। যা নিঃসন্দেহে তাফসীর বির রায় বা মনগড়া ব্যাখ্যা। আর এ ধরনের মনগড়া ব্যাখ্যা করা কুফরী।
দ্বিতীয়ত: “(যে কেউ) مَنْ শব্দটির অর্থ মাধ্যমে ব্যাপকার্থে গোটা পৃথিবীর যে কোন মুসলিম সম্বোধিত”
এ কথা বলে সে যে, আশাদ্দুদ দরজার জাহিল এটা আবারও প্রমাণ করেছে। কারণ مَنْ শব্দটির পরে مِنكُمُ শব্দের দ্বারা مَنْ শব্দের অর্থ খাছ হয়ে গেছে। পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ হলো: যে ব্যক্তি তোমাদের মধ্যে থেকে উক্ত মাস পাবে সে যেন পবিত্র রোযা রাখে। (তাহলে যে বা যারা উক্ত মাস পাবে না তারা পবিত্র রোযা রাখবে না। )
অর্থাৎ উদয়স্থলের ভিন্নতার কারণে যে অঞ্চলে যে বা যারা নতুন চাঁদ দেখবে তারা পবিত্র রোযা রাখবে। আর দূরবর্তী অঞ্চলে যে বা যারা নতুন চাঁদ দেখবে না, তারা ঐদিন পবিত্র রোযা রাখবে না বরং পরদিন রোযা রাখবে।
মোটকথা: উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা উদয়স্থলের ভিন্নতাকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। চলবে....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৪)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় সম্মানিত মশহূর লক্বব মুবারক এবং এই সম্পর্কে কিছু আলোচনা
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)