সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৯)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
আজমীর শরীফে আগমন:
এসময়ে আজমীর শরীফ ও উনার চারপার্শ্বের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের শাসনকর্তা ছিলো পৃথ্বীরাজ। হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি শহরের অদূরবর্তী এক ময়দানের একটি গাছে নীচে বিশ্রাম করতে লাগলেন। কথিত আছে, মাযার শরীফ উনার সীমানার মধ্যে সেই উচ্চ স্থান আউলিয়া মসজিদ নামে পরিচিত। এটাই হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সর্বপ্রথম বিশ্রাম মুবারক উনার স্থান, যেখানে তিনি প্রথমে এসে বসেছিলেন। এ স্থানটি পৃথ্বীরাজের উটের বাথান ছিল। উট পালকরা এসে যখন দেখলো যে, উটের বাথানে একদল মুসলমান দরবেশ অবস্থান গ্রহণ করছেন, তখন তারা দরবেশ উনাদের বললো, এটা তো পৃথ্বীরাজের উট বসার স্থান। হযরত খাজা সাইয়্যিদুনা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, সমস্যা কোথায়? বিশাল মাঠ, উটগুলো এসে এক পার্শ্বে বসে পড়বে। আমাদেরকে বিশ্রাম নিতে দাও। কিন্তু উট পালকরা উনার কথা মুবারকে কর্ণপাত করলো না। তারা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে কর্কশ ব্যবহার করতে লাগলো। তিনি বললেন, আচ্ছা, আমরা চলে যাচ্ছি, পৃথ্বিরাজের উটই এখানে বসে থাকবে। একথা বলেই তিনি এখান থেকে উঠে আনা সাগরের দিকে চলে গেলেন। সন্ধ্যাকালে রাজার উটের পাল চারণভূমি থেকে এসে সেই মাঠে নিত্য অভ্যাস অনুযায়ী বসে পড়লো। রাত তো স্বাভাবিকভাবে কাটলো। কিন্তু সকাল বেলা যখন উটপালকরা এসে উটগুলোকে চারণভূমিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য উঠাতে চাইলো, তখন একটি উটও উঠতে পারলো না। তখন তারা বুঝতে পারলো যে, এটা নিশ্চয়ই দরবেশ, বুযূর্গ ব্যক্তি উনাদেরকে অসন্তুষ্ট করার ফল। সুতরাং তারা সকলেই পৃথ্বিরাজের নিকট উপস্থিত হয়ে সমুদয় অবস্থা জানালো। পৃথ্বিরাজ বললো, যাঁর বদদোয়ার ফলে উটের উত্থান শক্তি রহিত হয়েছে উনার দোয়াই আবার তাদের শক্তি ফিরে আসবে। অন্য কোনো উপায় নাই। যাও উনাদের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো। দরবেশগণ উনারা দয়ালু হয়ে থাকেন। অবশ্যই উনারা ক্ষমা করে দিবেন এবং উটগুলো উঠতে পারবে। সুবহানাল্লাহ!
পৃথ্বিরাজের নির্দেশ পেয়ে উট পালকরা সুলত্বানুল হিন্দ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে খুঁজতে লাগলো। আনা সাগর হতে সামান্য একটু দূরে একটি টিলার উপরে দেখতে পেলো। এ স্থানটি আজও উনার প্রাথমিক খানকা শরীফরূপে চিহ্নিত আছে।
উট পালকেরা সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট এসে করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলো। সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু। তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আওলাদ। কাজেই তিনি সদয় হয়ে বললেন, যাও, যাঁর আদেশে উটগুলো বসে রয়েছে, উনার আদেশ মুবারকেই তারা উঠে দাঁড়াবে। উট চালকেরা ফিরে এসে দেখলো, উটগুলো সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। সুবহানাল্লাহ! হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এ কারামত মুবারক দেখে হিন্দুরা আতঙ্কিত ও বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে পড়লো। সুবহানাল্লাহ!
পৃথ্বীরাজের উট পালকেরা উটের বাথানে অবস্থান মুবারক করতে না দেয়ায় সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সেখান থেকে চলে আসেন। আনা সাগর নামক নদীর তীরে একটি উচু স্থানে অবস্থান মুবারক করছিলেন। এ আনা সাগরের উভয় তীরে হিন্দুদের বহু মন্দির ছিল। এর মধ্যে একটি মন্দির ছিল অনেক বড় ও তাদের দৃষ্টিতে জাঁকজমকপূর্ণ। স্বয়ং পৃথ্বিরাজ নিজে এ মন্দিরে আসতো। তাদের এ মন্দিরটির ব্যয় নির্বাহের জন্য কয়েকটি গ্রামও ওয়াকফ করা ছিল। কথিত আছে যে, আনা সাগরের উভয় তীরের মন্দিরগুলোতে প্রতি রাতে ১৬০০ মন তেল খরচ হতো এবং কয়েক হাজার পূজারী সবসময় এ মন্দিরগুলোর সেবায় নিয়োজিত থাকতো। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় সম্মানিত মশহূর লক্বব মুবারক এবং এই সম্পর্কে কিছু আলোচনা
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় বেমেছাল খুছূছিয়ত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
উম্মু আবীহা, খাইরু ওয়া আফদ্বালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাইরু ওয়া আফদ্বালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩০)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)