সবজির বদলে আঙুর চাষ, সাত মাসে বাম্পার ফলন
, ১৭ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৮ ছানী ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৮ মে, ২০২৩ খ্রি:, ২৫ বৈশাখ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) তাজা খবর
যশোর সংবাদদাতা:
দুই বছর আগে ৩৩ শতক জমিতে সবজি চাষ করতেন মুনসুর আলী। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে চারা এনে সবজির জমিতে রোপণ করেন। সাত মাসের মাথায় ভালো ফলন আসে। এবার দ্বিতীয়বারের মতো গাছে বাম্পার ফলন এসেছে। প্রতি গাছে দেড়-দুই মণের আশা করছেন।
মুনসুর আলী যশোর সদরের লেবুতলা ইউনিয়নের লেবুতলা দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা। গতবারের চেয়ে এবার তার বাগানে ছয়-সাত গুণ বেশি ফলন হওয়ায় জেলায় আঙুর চাষের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার কথা জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
চয়ন জাতের আঙুর চাষ:
১৮ মাস আগে ১২০টি চয়ন জাতের চারা এনে জমিতে রোপণ করেন মুনসুর। সাত মাসের মাথায় ভালো ফলন আসে। এবার দ্বিতীয়বারের মতো এলো। দেশের বিভিন্ন জেলায় উৎপাদিত আঙুর কিছুটা টক হলেও তার বাগানের ফল মিষ্টি ও সুস্বাদু।
প্রথমবার প্রতি গাছে ১০-১৫ কেজি ফল পেয়েছি উল্লেখ করে এই কৃষক বলেন, ‘চারা রোপণের সময় সংকল্প করেছিলাম, যদি মিষ্টি হয় তাহলে প্রথমবার গাছের সব ফল বিনামূল্যে মানুষকে খাইয়ে দেবো। সে অনুযায়ী সব ফল খাইয়ে দিয়েছি।’
বাগান দেখতে আসছেন কৃষকরা:
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার উজানদিয়া গ্রামের ফল চাষি মুন্সী আতাউর রহমান জুমুয়াবার (৫ মে) বাগান দেখতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘তিন বছর আগে গ্রামের তিন একর জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করেছি। সেখানে প্রায় চার হাজার খুঁটি আছে। প্রতি খুঁটিতে একটি করে গাছ থাকে। মুনসুরের বাগানের কথা শুনে দেখতে এসেছি। ফল দেখে অবাক হয়েছি। থোকায় থোকায় এতো আঙুর। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী বছর এক একর জমিতে আঙুর চাষ করবো। মুনসুর ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে, টেকনিক্যাল দিকগুলো বুঝিয়ে দিয়েছেন। তার কাছ থেকে চারা নিয়ে বাগান করবো।’
সদরের লেবুতলা গ্রামের কৃষক হাসমত আলী এসেছেন বাগান দেখতে। তিনি বলেন, ‘মুনসুর ভাইয়ের বাগান দেখে মুগ্ধ হয়েছি। প্রচুর ফলন। খুব লাভজনক চাষ এটি। আমিও এবার আঙুর চাষ করবো। তার কাছ থেকে চারা নেবো।’
সবজির জমিতে কেন আঙুর?
দুই বছর আগে নিজের ৩৩ শতক জমিতে আলু, পটল ও উচ্ছে চাষ করেছিলেন। এতে লোকসান হয়েছিল। এরপর ইউটিউবে দেখেন, ভারতে ফলেছে প্রচুর আঙুর। তারপর সিদ্ধান্ত নিলেন চাষের। শিখলেন চাষের পদ্ধতি। প্রতিবেশী ভাইয়ের মাধ্যমে ভারত থেকে চারা এনে সবজির জমিতে লাগিয়ে দিলেন।
চারা রোপণের সাত মাসে ফলন আসে উল্লেখ করে মুনসুর বলেন, ‘বাগানের সব ফল মিষ্টি। ১৮ মাস পর দ্বিতীয়বার ফল এসেছে। প্রতি গাছের থোকায় থোকায় ঝুলছে। ফলনের পরিমাণ এত বেশি যে, দুই-তিনটি পাতার পরই ফল দেখা যাচ্ছে।’
প্রতি গাছে দেড়-দুই মণ ফল:
প্রতি গাছে দেড়-দুই মণ ফল পাবো আশা রেখে এই কৃষক বলেন, ‘আগামী একমাস পর ফল খাওয়ার উপযোগী হবে। এটি লাভজনক চাষাবাদ। ভালোই আয় হবে। বসতবাড়ির পাশে যদি প্রত্যেকে চার-পাঁচটি করে গাছ লাগাই তবে আঙুর আমদানি করা লাগবে না। একটি গাছ ৩৫ বছর বাঁচে। ৩০ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যাবে।’
গাছ লাগানোর পদ্ধতি ও জমি তৈরি:
জমিতে গাছ লাগানোর পদ্ধতির কথা জানিয়ে মুনসুর বলেন, ‘৮ ফুট পর পর একটি করে গাছ লাগিয়েছি। গাছ লাগানোর আগে জমি প্রস্তুত করে ইটের গুঁড়া, সিলেট স্যান্ড অর্থাৎ মোটা বালু ও জৈব সারের মিশ্রণ করে দিয়েছি। প্রতিটি উপাদান পাঁচ কেজি করে ১৫ কেজি একটি গর্তের ভেতরে ফেলে মাঝখানে চারা রোপণ করেছি। গাছের গোড়া মাটি দিয়ে উঁচু করেছি; যাতে পানি না জমে। এ ছাড়া লতার জন্য মাচা তৈরি করে দিয়েছি; যাতে ঝড়বৃষ্টিতে গাছ ভেঙে না পড়ে এবং দ্রুত লম্বা হয়। সবমিলিয়ে বাগান করতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।’
আগামী বছর আরও ৪৭ শতক জমিতে চাষ করবো উল্লেখ করে মুনসুর বলেন, ‘এবার ৩৩ শতকে বাম্পার ফলন হয়েছে। এ জন্য আরও ৪৭ শতক জমিতে চাষ করবো। সে জন্য ইতালি থেকে ৪৫টি সিডলেস চারা এনেছি।’
চারা উৎপাদন ও বিক্রি:
আঙুর চাষের পাশাপাশি চারা উৎপাদন ও বিক্রি করেন এই কৃষক। এ জন্য ছোট একটি নার্সারি করেছেন। এতে আঙুর গাছ ছাড়াও ননীফল, থাই পেয়ারা, জলপাই, ডালিম ও আমড়ার চারা রয়েছে। আঙুরের চারা ২০০-৩০০ (ছোট-বড়), ননীফলের চারা ১০০-২০০ এবং অন্যান্য চারা ২০-৫০ টাকায় বিক্রি করেন। এতে ভালোই লাভ হয়।
আশাবাদী কৃষি কর্মকর্তা:
গত জুমুয়াবার মুনসুরের বাগান দেখতে গেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মুহম্মদ মঞ্জুরুল হক। বাগান দেখে মুগ্ধ হয়ে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘এখানে অনেক উদ্ভাবনী কৃষক আছেন। এই জেলা ফল-ফুল ও সবজি চাষের জন্য সমৃদ্ধ।’
দেশে দীর্ঘদিন ধরে আঙুর চাষের চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘সব সময় কিন্তু ভালো ফলন পাওয়া যায় না। ফলন যেমন-তেমন হলেও মিষ্টতা ভালো থাকে না। আবার ভালো বীজ না পাওয়ায় চাষাবাদের আগ্রহী হন না কৃষকরা। তবে মুনসুরের বাগানের আঙুরের মিষ্টতা যথেষ্ট। ফলনও খুব ভালো। আমরা এবার উৎপাদন দেখবো, তারপর সম্প্রসারণ ও চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করবো।’
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ ক্যাম্পগুলোতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন মুজাহিদ ব্রিগেড
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
গত মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জনের মৃত্যু
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওয়াকিটকি-মোবাইল বিস্ফোরণ: কি ঘটছে লেবাননে?
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইউরোপে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ব্যাংকিংখাতের সংস্কারে সহযোগিতা করবে বিশ্বব্যাংক -অর্থ উপদেষ্টা
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সময় থাকতে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠান -ভারতকে দুদু
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মেয়ের সাথে দিল্লিতে শেখ হাসিনা, ঘুরতে দেখা গেছে পার্কে
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কী করবেন প্রেসিডেন্ট
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কী করবেন প্রেসিডেন্ট
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মূল্য শুল্কায়নে দ্বৈত নীতির অবসান চান ব্যবসায়ীরা
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
১০ সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুজাহিদিন বাহিনীর আক্রমণের পর ক্ষয়ক্ষতি লুকাতে মরিয়া ইসরাইলী সন্ত্রাসী বাহিনী
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)