মাইয়্যিতের জানাযা নামাযের গুরুত্ব-ফযীলত ও মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক-২
, ২৪ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০২ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ৩১ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ১৬ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
পবিত্র জানাযার নামাযের নিয়ম
জানাযার নামায পড়ার পূর্বে মাইয়্যিতের ওলী বা অভিভাবককে জিজ্ঞাসা করতে হবে যে, মাইয়্যিতের কোন ঋণ আছে কি-না? যদি থাকে তাহলে সেগুলো কে এবং কিভাবে পরিশোধ করবে তা জানতে হবে। নামায ও রোযা কাযা আছে কি-না? যদি থাকে তাহলে তার কাফফারা দিতে হবে। সেটা কে বা কিভাবে আদায় করবে তা জানতে হবে।
(বিতিরসহ দৈনিক ছয় ওয়াক্ত নামাযের কাফ্ফারা দিতে হবে। যত ওয়াক্ত নামায কাযা থাকবে তার প্রতি ওয়াক্তের জন্য এক ফিতরা পরিমাণ কাফফারা দিতে হবে। একইভাবে প্রতিটি রোযার জন্য এক ফিতরা। তবে প্রতি রোযা বা নামাযের জন্য ২ কেজি আটা বা ময়দা কিংবা তার সমপরিমাণ মূল্য দেওয়া আফদ্বল বা উত্তম)
অতঃপর বিজোড় সংখ্যায় কাতার করতে হবে। লোকসংখ্যা বেশি হলে মুকাব্বির থাকবে।
মাইয়্যিত পুরুষ না মহিলা, ছেলে না মেয়ে তা উপস্থিত মুছল্লীদেরকে জানিয়ে দিতে হবে। এভাবে বলতে পারে, মাইয়্যিত বয়স্ক পুরুষ/বয়স্কা মহিলা/নাবালিগ ছেলে/নাবালিগা মেয়ে।
যারা আরবীতে নিয়ত করতে পারেন তারা আরবীতে নিয়ত করবেন। যারা আরবীতে নিয়ত করতে পারেন না তারা বাংলাতে এভাবে নিয়ত করবেন- “ফরযে কিফায়া জানাযার নামায, চার তাকবীরের সাথে উক্ত ইমাম ছাহেবের পিছনে আদায় করার নিয়ত করছি। ” আল্লাহু আকবার।
তারপর ছানা পড়তে হবে। যাদের জানাযার নামাযের জন্য নির্ধারিত পবিত্র ছানা জানা আছে তারা সেই ছানাই পড়বেন। যদি জানা না থাকে তাহলে নামাযের মধ্যে পঠিত পবিত্র ছানা পড়লেও চলবে।
অতঃপর দ্বিতীয় তাকবীর হবে। সেই তাকবীরে কান পর্যন্ত হাত তুলতে হবে না। তারপর পবিত্র দরূদ শরীফ পড়বেন। যাদের জানাযার নামাযের জন্য নির্ধারিত পবিত্র দরূদ শরীফ জানা আছে তারা সেই পবিত্র দরূদ শরীফই পড়বেন। আর যাদের জানা নেই তারা নামাযের মধ্যে যে পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করেন সেই পবিত্র দরূদ শরীফ পড়বেন। তারপর তৃতীয় তাকবীর হবে। সেই তাকবীরেও হাত উঠাতে হবে না।
অতঃপর দোয়া পাঠ করবেন। যারা দোয়া জানেন তারা সেই দোয়াই পাঠ করবেন। আর যারা জানে না তারা পড়বেন-
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ وَلَهٗ
আর মহিলা হলে,
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ وَلَهَا
তারপর চতুর্থ তাকবীর হবে। সেই তাকবীরেও হাত তুলতে হবে না। এরপর সালাম ফিরানো হবে। ডান দিকে সালাম ফিরানোর সময় ডান হাত, বাম দিকে সালাম ফিরানোর সময় বাম হাত ছেড়ে দিবেন। তারপর কাতার ভঙ্গ করে সামনে আসবেন। ছওয়াব রেসানী করে মুনাজাত করা হবে।
পবিত্র জানাজা নামায সংক্রান্ত দু‘আ সমূহ:-
পবিত্র জানাযার নামাযের নিয়ত (পুরুষের)
نَوَيْتُ أَنْ أُوَدِّيَ لِلّٰهِ تَعَالٰى اَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتِ صَلٰوةِ الْجَنَازَةِ فَرْضُ الْكِفَايَةِ الثَّنَاءُ لِلّٰهِ تَعَالٰى وَالصَّلٰوةُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالدُّعَاءُ لِهٰذَا الْمَيِّتِ مُتَوَجِّهًا اِلٰى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللهُ أَكْبَرُ.
মহিলা বা মেয়েদের বেলায় لِهٰذَا الْمَيِّتِ -এর স্থলে
لِهٰذِهِ الْمَيِّتِ বলতে হবে।
(১ম তাকবীর)
পবিত্র জানাযার নামাযের ছানা শরীফ:-
سُبْحَانَكَ اللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالٰى جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلَا اِلٰهَ غَيْرُكَ-
(২য় তাকবীর)
পবিত্র জানাযার নামাযের পবিত্র দরূদ শরীফ:-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى سَيِّدِنَا مَوْلٰنَا مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلٰنَا مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ وَسَلَّمْتَ وَبَارَكْتَ وَرَحِمْتَ وَتَرَحَّمْتَ عَلٰى سَيِّدِنَا اِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ سَيِّدِنَا اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.
অথবা পবিত্র দরূদে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম অর্থাৎ নামাযের পবিত্র দরূদ শরীফও পাঠ করা যায়।
(৩য় তাকবীর)
পবিত্র জানাযার নামাযের দু‘আ (বালিগ / বালিগাদের জন্য) :
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثٰنَا اَللّٰهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهٗ مِنَّا فَاَحْيِهٖ عَلَى الْاِسْلَامِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهٗ مِنَّا فَتَوَفَّهٗ عَلَى الْاِيْمَانِ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرّٰحِمِيْنَ.
পবিত্র জানাযার নামাযের দু‘আ নাবালিগ ছেলের জন্য
اَللّٰهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرَطًا وَّاجْعَلْهُ لَنَا اَجْرًا وَّذُخْرًا وَاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَّمُشَفَّعًا.
জানাযার নামাযের দু‘আ নাবালিগা মেয়ের জন্য
اَللّٰهُمَّ اجْعَلْهَا لَنَا فَرَطًا وَّاجْعَلْهَا لَنَا اَجْرًا وَّذُخْرًا وَاجْعَلْهَا لَنَا شَافِعَةً وَّمُشفَّعَةً.
(৪র্থ তাকবীর)
اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ.
অর্থাৎ ডান দিকে সালাম ফিরানোর সময় ডান হাত, বাম দিকে সালাম ফিরানোর সময় বাম হাত ছেড়ে দিয়ে কাতার ভঙ্গ করে একত্রিত হয়ে ছওয়াব রেসানী করার পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করবে কেননা পবিত্র জানাযা নামাযের পর কাতার ভঙ্গ করে সকলে একত্রিত হয়ে হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা খাছ সুন্নত মুবারক। দাফনের আগে ও পরে মুনাজাত করাও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক।
এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে, পাঠ করুন:- মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ : ১০১-১১১তম সংখ্যা)
পবিত্র ছওয়াব রেসানীর নিয়ম:
১. ইস্তিগফার (৩ বার),
২. পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ (১ বার)
৩. পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ (৩ বার)
৪. যে কোন পবিত্র দরূদ শরীফ (৫ বার)
অতঃপর মুনাজাত করতে হবে।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)