মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার কালোজিরা (হাব্বাতুস সাওদা)
, ১৪ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৬ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২৫ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১১ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
عَنْ حَضْرَتْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ دَاءٍ إِلَّا فِي الْحَبَّةِ السَّوْدَاءِ مِنْهُ شِفَاءٌ إِلَّا السَّامَ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মৃত্যু ছাড়া এমন কোন রোগ নেই কালোজিরায় যার আরোগ্য নেই। ” (মুসলিম শরীফ : কিতাবুস সালাম : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৫৬৬১)
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ عَلَيْكُمْ بِهٰذِهِ الْحَبَّةِ السَّوْدَاءِ فَإِنَّ فِيْهَا شِفَاءً مِنْ كُلِّ دَاءٍ إِلَّا السَّامَ " . وَالسَّامُ الْمَوْتُ .
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা এই কালো বীজ (কালোজিরা) নিজেদের জন্য ব্যবহারকে বাধ্যতামূলক করে নাও। কেননা, মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের নিরাময় এর মধ্যে রয়েছে। ‘আস-সাম’ অর্থ ‘ মৃত্যু’। (ইবনে মাজাহ শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ: ৩৪৪৭, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
অন্য বর্ণনায় বর্ণিত রয়েছে- “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন রোগ-যন্ত্রণা খুব বেশী কষ্টদায়ক হয় তখন এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা নিয়ে খাবে তারপর পানি ও মধু সেবন করবে। ” (মু’জামুল আওসাত লিত ত্ববারানী)
মহাসম্মানি মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে- “হযরত ক্বতাদাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত আছে, প্রতিদিন ২১টি কালোজিরার ১টি পুটলি তৈরী করে পানিতে ভিজাবে এবং পুটলির পানির ফোঁটা এ নিয়মে নাসারন্দ্রে (নাসিকা, নাক) ব্যবহার করবে- প্রথমবার ডান নাকের ছিদ্রে ২ ফোঁটা এবং বাম নাকের ছিদ্রে ১ ফোঁটা। দ্বিতীয়বার বাম নাকের ছিদ্রে ২ ফোঁটা এবং ডান নাকের ছিদ্রে ১ ফোঁটা। তৃতীয়বার ডান নাকের ছিদ্রে ২ ফোঁটা ও বাম নাকের ছিদ্রে ১ ফোঁটা। ”
কালোজিরার গুণাগুণ:
হজমের সমস্যায় এক-দুই চা-চামচ কালোজিরা বেটে পানির সঙ্গে প্রতিদিন দু-তিনবার খেলে এক মাসের মধ্যে হজম শক্তি বেড়ে যাবে। পাশাপাশি পেট ফাঁপাভাবও দূর হবে। জ্বর, ব্যথা, সর্দি-কাশিতে এক চা-চামচ কালোজিরার সঙ্গে তিন চা-চামচ মধু ও দুই চা-চামচ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে প্রতিদিন একবার সেবন করুন। কালোজিরা বেটে কপালে প্রলেপ দিন যদি সর্দি বসে যায়। একই সঙ্গে পাতলা পরিষ্কার কাপড়ে কালোজিরা বেঁধে শুকতে থাকুন, শ্লেষ্মা তরল হয়ে ঝরে যাবে। মায়েদের বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন রাত্রে শোবার আগে ৫-১০ গ্রাম কালোজিরা মিহি করে গরুর দুধের সঙ্গে খেতে হবে। ইনশাআল্লাহ্ মাত্র ১০-১৫ দিনে দুধের প্রবাহ বেড়ে যাবে।
এছাড়া কালোজিরা ভর্তা করে ভাতের সঙ্গে খেলেও এ সমস্যা সমাধান হতে পারে। নিয়মিত কালোজিরা খেলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি প্রাণশক্তি বাড়ায় ও ক্লান্তি দূর করে। কালোজিরা লিভার ক্যান্সারের জন্য দায়ী আলফা টক্সিন নামক বিষ ধ্বংস করে। তাই লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এটি মহাঔষধ। ডায়বেটিকস্ রোগীরা এক চিমটি পরিমাণ কালো জিরা এক গ্লাস পানির সঙ্গে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে; একসময় ডায়বেটিকস কমে যাবে ইনশাআল্লাহ।
কালোজিরা যৌন ব্যাধি ও স্নায়ুবিক দুর্বলতায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য অতি উৎকৃষ্ট ঔষধ। শুলবেদনা ও প্রসূতি রোগে কালোজিরা অত্যধিক উপকারী। ব্রণের জন্যও এটি উত্তম ঔষধ। মুত্রথলির পাথর ও জন্ডিস থেকে আরোগ্য লাভ করতে কালোজিরা খান নিয়মিত যতবার পারেন। অধিক ঋতুস্রাব, মাত্রাতিরিক্ত ছোট ইস্তিঞ্জা প্রতিরোধ করতে কালোজিরার উপকারিতা অপরিসীম।
এটি কৃমিনাশক। কালোজিরা রিউমেটিক এবং পিঠে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত কালোজিরা সেবন শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সতেজ করে ও সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করে। ভাত, তরকারী ইত্যাদির সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খান, রোগ-শোক থেকে দূরে থাকুন।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘নাবীয’
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হিজামা বা শিঙ্গা লাগানো খাছ সুন্নত মুবারক (৩)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘মাশরুম’
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিজামা বা শিঙ্গা লাগানো খাছ সুন্নত মুবারক (২)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন- “সুন্নতী চামড়ার মোজা”
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হিজামা বা শিঙ্গা লাগানো খাছ সুন্নত মুবারক (২)
৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী চামড়ার মশক
৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৮)
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন দাঁত ও মুখ পরিষ্কার করার ‘সুন্নতী মিসওয়াক’
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী খাদ্য ও পানীয় ‘দুধ’
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)