নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ উনাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ বিষয়ে আপত্তি ও তার খণ্ডনমূলক জবাব (৪)
, ১৪ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৫ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ০৪ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
৬ষ্ঠ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, গাউছুল আ’যম হযরত বড়পীর আব্দুল ক্বাদির জীলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ৪৭০ হিজরী শরীফ : বিছাল শরীফ ৫৬১ হিজরী শরীফ) তিনি উনার কিতাবে উল্লেখ করেন,
اِنَّ رَجُلًا دَخَلَ عَلٰى اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ فِىْ يَوْمِ عِيْدٍ وَهُوَ يَأْكُلُ الْخُبْزَ الْخُشْكَارَ فَقَالَ لَهٗ اَلْيَوْمُ يَوْمُ الْعِيْدِ وَاَنْتَ تَأْكُلُ الْخُبْزَ الْخُشْكَارَ فَقَالَ اَلْيَوْمُ عِيْدٌ لِمَنْ قُبِلَ صَوْمُهٗ وَشُكِرَ سَعْيُهٗ وَغُفِرَ ذَنْۢبُهٗ اَلْيَوْمُ لَنَا عِيْدٌ وَغَدًا لَنَا عِيْدٌ وَكُلُّ يَوْمٍ لَا نَعْصِى اللهَ فِيْهِ فَهُوَ لَنَا عِيْدٌ
অর্থ: “নিশ্চয়ই এক ঈদের দিনে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সাথে এক ব্যক্তি এমতাবস্থায় সাক্ষাৎ করলো যে, তখন তিনি শুকনা রুটি খাচ্ছিলেন। (এটা দেখে) ঐ ব্যক্তি ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন- ‘আজকে ঈদের দিন আর আপনি শুকনা রুটি খাচ্ছেন?’ তখন ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ‘আজকে ঐ ব্যক্তির জন্য ঈদ যার রোযা ক্ববূল করা হয়েছে, যার চেষ্টা-কোশেশের অর্থাৎ ইবাদত-বন্দেগীর বদলা দেয়া হয়েছে এবং যাদের গুনাহ্-খ¦তাহ্ ক্ষমা করা হয়েছে। (তিনি স্পষ্ট ভাষায় আরো বললেন-) আজকেও আমাদের জন্য ঈদ, আগামীকালও আমাদের জন্য ঈদ এবং প্রত্যেক ঐ দিন, যেই দিন আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী করি না, তার প্রত্যেক দিনই আমাদের জন্য ঈদ।” সুবহানাল্লাহ! (আল গুন্ইয়াহ্ লি ত্বালিবী ত্বরীক্বিল হাক্ব ২/৩৪)
হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে আতিয়্যাহ্ হারিছী আবূ ত্বালিব মাক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৩৮৬ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন,
عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنَّهٗ قَالَ كُلُّ يَوْمٍ لَا يُعْصَى اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِيْهِ فَهُوَ لَنَا عِيْدٌ
অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক ঐ দিন, যেই দিন মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী করা হয় না, সেদিন আমাদের জন্য ঈদ।” সুবহানাল্লাহ! (কুওওয়াতুল কুলূব ফী মু‘আমিলাতিল মাহবূব ১/১৫৫)
সেটাই মালিকী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
كُلُّ يَوْمٍ يَمُرُّ عَلَى الْمُؤْمِنِ وَلَا يُكْتَبُ عَلَيْهِ ذَنْۢبٌ فَهُوَ يَوْمُ عِيْدٍ اَلْيَوْمُ الَّذِىْ يَخْرُجُ فِيْهِ مِنَ الدُّنْيَا بِالْاِيْمَانِ فَهُوَ يَوْمُ عِيْدٍ وَالْيَوْمُ الَّذِىْ يُجَاوِزُ فِيْهِ الصِّرَاطَ وَيَأْمَنُ اَهْوَالَ يَوْمِ الْقِيَامَةِ فَهُوَ يَوْمُ عِيْدٍ وَالْيَوْمُ الَّذِىْ يَدْخُلُ فِيْهِ الْجَنَّةَ فَهُوَ يَوْمُ عِيْدٍ وَالْيَوْمُ الَّذِىْ يَنْظُرُ فِيْهِ اِلٰى رَبِّهٖ فَهُوَ يَوْمُ عِيْدٍ
অর্থ: “(১) প্রত্যেক ঐ দিন, যেদিন মু’মিন ব্যক্তি উনার উপর অতিবাহিত হয় এবং সেদিন উনার কোনো গুনাহ লেখা হয় না, সেদিন ঈদের দিন। অর্থাৎ মু’মিন ব্যক্তি যেদিন নাফরমানী বা গুনাহ করেন না, সেদিন উনার জন্য ঈদের দিন। সুবহানাল্লাহ! (২) মু’মিন ব্যক্তি যেদিন দুনিয়া থেকে সম্মানিত ঈমান উনার সাথে বিদায় নেন, সেদিন ঈদের দিন। (৩) মু’মিন ব্যক্তি যেদিন পুলছিরাত অতিক্রম করবেন এবং ক্বিয়ামত দিবসের ভয়-ভীতি থেকে নিরাপত্তা লাভ করবেন, সেদিন ঈদের দিন। (৪) মু’মিন ব্যক্তি যেদিন সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ প্রবেশ করবেন, সেদিন ঈদের দিন। এবং (৫) মু’মিন ব্যক্তি যেদিন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দীদার মুবারক লাভ করবেন, সেদিন ঈদের দিন।” সুবহানাল্লাহ! (ছইদুল ফাওয়াইদ)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে- যেদিন নাফরমানী করা হয় না, গুনাহ লেখা হয় না, সেদিন যদি ঈদের দিন হয়। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি বৎসরে ৩৫৪/৩৫৫ দিনই যদি নাফরমানী থেকে বাঁচতে পারে, তাহলে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার এবং হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অর্থাৎ উনাদের ক্বওল শরীফ অনুযায়ী ঐ ব্যক্তির জন্য ৩৫৪/৩৫৫ দিনই ঈদের দিন। যদি তাই হয়, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থেই তো সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলে ঈমান-আমল, দ্বীন ইসলাম, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ এবং রহমত-বরকত, সাকীনাহ্সহ সমস্ত প্রকার নিয়ামত মুবারক হাছিল করেছে, করছে এবং অনন্তকাল যাবৎ সমস্ত প্রকার নিয়ামত মুবারক হাছিল করতেই থাকবে। উনাকে সৃষ্টি মুবারক না করা হলে, কায়িনাতের কোনো কিছুই সৃষ্টি করা হতো না এবং উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক না আনা পর্যন্ত কোনো হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালাত মুবারক দেয়া হয়নি। অর্থাৎ সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনার পর, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তা’যীম-তাকরীম মুবারক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক করার বিষয়ে সম্মানিত ওয়াদা মুবারক দেয়ার পর মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালাত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার প্রতি যদি কেউ ঈমান না এনে লক্ষ কোটি বছর ভাল আমল করে, কস্মিনকালেও তার এক র্যারা পরিমাণ ভাল আমলও গ্রহণযোগ্য হবে না; রবং সে কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী হবে। তাহলে সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেদিন দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক আনলেন, সেই দিন অর্থাৎ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ) যে রোযার ঈদ, কুরবানীর ঈদ, জুমু‘আর ঈদসহ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে যত বড় বড় ঈদ রয়েছে সমস্ত ঈদের সাইয়্যিদ অর্থাৎ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সেটা আর বলার অপেক্ষাই রাখে না। সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ ইবনে ছিদ্দীকুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৮)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২০)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৭)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৯)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৬)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৮)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)