১. নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক উনার খিলাফ বর্ণিত মওযূ হাদীছ ও তার খ-নমূলক জবাব:

গ¦রানীক্ব ও তৎসংশ্লিষ্ট ঘটনা এবং মুসলমানদের সাথে মুশরিকদের সিজদাহ্ বিষয়ে মওযূ হাদীছ ও তার খ-নমূলক জবাব:

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

قَالَ رَبِّ بِمَا أَغْوَيْتَنِي لَأُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِي الْأَرْضِ وَلَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ (৩৯) إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ

অর্থ: “(ইবলীস শয়তান) সে বললো- আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! যেহেতু আমি গোমরাহ্ হয়েছি, কাজেই অবশ্যই অবশ্যই আমি পৃথিবীকে তাদের জন্য সুসজ্জিত করে, সুন্দর করে উপস্থাপন করবো এবং অবশ্যই অবশ্যই তাদের সবাইকে আমি বিভ্রান্ত করে ফেলবো, গোমরাহ্ করে দিবো। না‘ঊযুবিল্লাহ! তবে যাঁরা আপনার মুখলাছ বান্দা উনাদেরকে ব্যতীত।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হিজ্র শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৯-৪০)

এখন বলার বিষয় হচ্ছে, যদি মহান আল্লাহ পাক উনার একজন খাছ বান্দা, ঈমানদার এবং উনার প্রতি পূর্ণ তাওয়াক্কুলকারী উনার উপর শয়তানের কোনো কর্তৃত্ব না চলে এবং সরাসরি শয়তান নিজে বলেছে, মুখলাছ বান্দা উনাকে সে বিভ্রান্ত করতে পারবে না, সন্দেহের মধ্যে ফেলতে পারবে না। তাহলে যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে সমস্ত কিছু দিয়ে সৃষ্টি মুবারক করে উনাকে উনার সাথে সংযুক্ত করেছেন এবং উনার কুদরত মুবারক অর্থাৎ নিয়ন্ত্রনে রেখেছেন অর্থাৎ উনার হাক্বীক্বী যিয়ারত, ছোহবত, দীদার মুবারক-এ উনি ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন। এর মধ্যে কোনো জুদায়ী নেই। উনার উপর কিভাবে শয়তানের কর্তৃত্ব চলতে পারে? আর কিভাবে উনার সম্মানিত তিলাওয়াত মুবারক বা কথা মুবারক উনার মাঝখানে শয়তান নিজের কথা প্রবেশ করিয়ে উনাকে বিভ্রান্ত করতে পারে, উনাকে সন্দেহে ফেলতে পারে? না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। এরূপ আক্বীদাহ্ পোষণ করা কাট্টা কুফরী। না‘ঊযুবিল্লাহ!

তাহলে যেই রাবী হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে না শুনে উনার নামে কথা চালিয়ে দিয়েছে এবং যেই রাবীর ব্যাপারে মওযূ হাদীছ ও মুনকার হাদীছ বর্ণনার অভিযোগ রয়েছে, সে সকল রাবীর বর্ণিত হাদীছ- যেটা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত শান মুবারক উনার চরম খিলাফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ উনাদের সুস্পষ্ট মুখালিফ (বিরোধী), সেটা কিভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে? কাজেই, এই হাদীছ কস্মিনকালেও গ্রহণযোগ্য নয়; বরং সম্পূর্ণরূপে বাতিল, মওযূ, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

আর হাদীছটি মওযূ, বাতিল, ভিত্তিহীন হওয়ার বিষয়ে হযরত ইবনে আরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কথাও দলীল হিসেবে যথেষ্ট। তিনি বলেছেন,

ذكر حَضْرَتْ الطَّبَرِيّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِي ذَلِك رِوَايَات كَثِيرَة بَاطِلَة لَا أصل لَهَا

অর্থ: “ইমাম ত্ববারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ বিষয়ে অনেক বাতিল বর্ণনা উল্লেখ করেছেন, যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।” (উমদাতুল ক্বারী ১৯/৬৬)

এ বিষয়ে যথাস্থানে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ইনশাআল্লাহ!

-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।