পবিত্র শবে মি’রাজ শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী আমল মুবারক
, ২৬শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২০ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي رَجَبٍ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ مَنْ صَامَ ذَلِكَ الْيَوْمَ، وَقَامَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ كَانَ كَمَنْ صَامَ مِنَ الدَّهْرِ مِائَةَ سَنَةٍ، وَقَامَ مِائَةَ سَنَةٍ وَهُوَ ثَلَاثٌ بَقَيْنَ مِنْ رَجَبٍ.
অর্থ: হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “পবিত্র রজবুল হারাম শরীফ মাসে এমন একটি দিন ও একটি রাত রয়েছে, যে এদিন রোযা রাখবে, আর রাত জেগে ইবাদত করবে, তবে সে যেন ১০০ বছর রোযা রাখলো এবং ১০০ বছর রাত জেগে ইবাদত করলো, আর তা হচ্ছে পবিত্র রজবুল হারাম শরীফ মাসের ২৭ তারিখ।” (শুয়ায়বুল ঈমান- তাকছিছু শাহরী রজব বিল যিকরী, ৫ম খন্ড ৩৪৫ পৃষ্ঠা, পবিত্র হাদীছ শরীফ -৩৫৩০, ফাদ্বায়িলুল আওকাত ১/৯৬, জামিউল আহাদীছ ১৪/৪৯৬ : পবিত্র হাদীছ শরীফ ১৪৮১২, কানযুল উম্মাল ১২/৩১২: পবিত্র হাদীছ শরীফ ৩৫১৬৯, জামেউ জাওয়ামে ১ম খ-, নেদায়ে রাইয়ান ফি ফিক্বহিস ছওমে ওয়া ফদলী রমাদ্বান ১/৪২১)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ فِي رَجَبٍ لَيْلَةٌ يُكْتَبُ لِلْعَامِلِ فِيهَا حَسَنَاتُ مِائَةِ سَنَةٍ وَذَلِكَ لِثَلَاثٍ بَقَيْنَ مِنْ رَجَبٍ، فَمَنْ صَلَّى فِيهَا اثْنَتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً يَقْرَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ فَاتِحَةَ الْكِتَابِ وَسُورَةٌ مِنَ الْقُرْآنِ يَتَشَهَّدُ فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ، وَيُسَلِّمُ فِي آخِرِهِنَّ، ثُمَّ يَقُولُ: سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ، وَلَا اِلٰهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ مِائَةَ مَرَّةٍ، وَيَسْتَغْفِرُ اللهَ مِائَةَ مَرَّةٍ، وَيُصَلِّي عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِائَةَ مَرَّةٍ، وَيَدْعُو لِنَفْسِهِ مَا شَاءَ مِنْ أَمْرِ دُنْيَاهُ وَآخِرَتِهِ، وَيُصْبِحُ صَائِمًا فَإِنَّ اللهَ يَسْتَجِيبُ دُعَاءَهُ كُلَّهُ إِلَّا أَنْ يَدْعُو فِي مَعْصِيَةٍ.
অর্থ: পবিত্র রজবুল হারাম শরীফ মাসে একটি রাত আছে ওই রাতের আমলকারীর সমস্ত আমলের ছওয়াব ১০০ গুণ করে লিপিবদ্ধ করা হয়, সে রাতটি হলো ২৭ শে রজবুল হারাম শরীফ। যে ব্যক্তি ওই রাতে ১২ রাকায়াত পবিত্র নামায আদায় করবে যাতে পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফসহ অন্য কোন পবিত্র আয়াত শরীফ পাঠ করবে প্রতি দু’রাকায়াতে পবিত্র তাশাহহুদ শরীফ (পবিত্র দুরূদ শরীফ ও পবিত্র দু“আয়ে মাছুরা শরীফসহ) পাঠ শেষে সালাম ফিরাবে। এবং নিন্মোক্ত দু‘আ মুবারক ১০০ বার পাঠ করবে-
سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَا اِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ.
অতঃপর ১০০ বার ইস্তিগফার পাঠ করবে অতঃপর ১০০ বার পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করবে। ওই ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতের সমস্ত কল্যাণকর যত দু‘আ মুবারক করবে এবং সকালে রোযাদার অবস্থায় অবস্থান করবে তার সকল দু‘আ মুবারক কবুল করা হবে, শুধুমাত্র গুণাহের জন্য দু‘আ ব্যতীত। (শুয়াবুল ঈমান, পবিত্র হাদীছ শরীফ-৩৫৩১, ফাদ্বায়িলুল আওকাত ১/৯৭ : পবিত্র হাদীছ শরীফ - তাবয়িনুল আযাব বিমা উরিদা ফি ফাদলি রজব ১/৩১, জামিউল আহাদীছ ১৪/৪৯৬ : পবিত্র হাদীছ শরীফ -১২, কানযুল উম্মাল ১২/৩১২, পবিত্র হাদীছ শরীফ-৩৫১৭০)
পবিত্র লাইলাতুল মি’রাজ শরীফ পালন করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
প্রথমে সম্মানিত ইশা উনার নামায জামায়াতে আদায় করা হয়।
এরপর পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা ও পবিত্র দু‘আ- মুনাজাত করা।
পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার ফযীলত মুবারক সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, যে ব্যক্তি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করবে তার জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত শাফায়াত মুবারক ওয়াজিব হয়ে যাবে।
অতঃপর পবিত্র শবে মি’রাজ শরীফ উনার ৪, ৬, ৮, ১০ বা ১২ রাকায়াত পবিত্র নামায আদায় করা।
পবিত্র শবে মি’রাজ শরীফ উনার নামাযের নিয়ত মুবারক:
نَوَيْتُ أَنْ اُصَلِّىَ لِلّٰهِ تَعَالٰى رَكْعَتَىْ صَلٰوةِ الْمِعْرَاجِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللّٰهِ تَعَالٰى مُتَوَجِهَا اِلٰى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللهُ أَكْبَرُ.
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছল্লিয়া লিল্লাহি তা‘আলা রাক‘আতাই ছলাতিল মি’রাজি সুন্নাতু রসূলিল্লাহি তা‘আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
এরপর ৪ রাকায়াত পবিত্র ছলাতুত তাসবীহ উনার পবিত্র নামায আদায় করা হয়। যার দ্বারা মানুষের সমস্ত গুনাহখতা ক্ষমা হয়।
অতঃপর ৪,৬ বা ৮ রাকায়াত পবিত্র তাহাজ্জুদ নামায আদায় করা।
অতঃপর পবিত্র বিতির নামায আদায়ের পর বসে দুই রাকায়াত হালকী নফল নামায আদায় করা হয়। যার দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নৈকট্য মুবারক হাছিল হয়।
এরপর পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা,যা নফল ইবাদতের মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত মুবারক।
অতঃপর কিছুক্ষণ সম্মানিত যিকির-আযকার করা। যার দ্বারা দিল ইতমিনান ও ইছলাহ হওয়ার কারণ।
এরপর পুনরায় পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা ও তওবা-ইস্তিগফার করা এবং পবিত্র দু‘আ-মুনাজাত করা।
(প্রত্যেকের দায়িত্ব-কর্তব্য হলো, সাধ্য-সামর্থ অনুযায়ী বেশি বেশি তওবা-ইস্তিগফার, দু‘আ-মুনাজাত ও ইবাদত-বন্দেগী করা)
এরপর পবিত্র শবে মি’রাজ শরীফ উনার রোযা রাখার উদ্দেশ্যে সাহরী খাওয়া।
মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারকে পবিত্র শবে মি’রাজ শরীফ পালন করার ও পবিত্র শবে মি’রাজ শরীফ উনার সকল বারাকাত, নেয়ামত, রহমত, বরকত মুবারক হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘আঙুর’
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার বরকতময় রোগমুক্ত শিফা দানকারী সুন্নতী খাদ্য “ভাত”
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘ডুমুর’
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (১)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘তালবীনা’
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুন্নতী খাবার পরিচিতি ও উপকারিতা : দুধ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খেজুরের রস খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত (২)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)