পবিত্র আশূরা শরীফ উনার মহাসম্মানিত সুন্নতী আমল মুবারক (৩)
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
, ০৮ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৭ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ১৫ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ৩১ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
ওই রাতে কাজী ছাহেব স্বপ্ন দেখলো, স্বপ্নে কাজী ছাহেবকে বলা হচ্ছে, হে কাজী ছাহেব! তুমি মাথা উত্তোলন করো। মাথা তুলে কাজী ছাহেব দেখতে পেলো যে, তার সামনে দুটি বেহেশ্তী বালাখানা। একটি স্বর্ণের তৈরী আরেকটি রৌপ্যের তৈরী। কাজী ছাহেব বললো, ‘আয় মহান আল্লাহ পাক! এটা কি?’ গায়িবী আওয়াজ হলো, ‘এ বালাখানা দু’টি হচ্ছে বেহেশতী বালাখানা। এ বালাখানা দু’টি তোমার ছিল। কিন্তু এখন আর তোমার নেই। কারণ তোমার কাছে যে গরিব আলিম লোকটি আশূরা শরীফ উপলক্ষে সাহায্যের জন্য এসেছিলেন উনাকে তুমি সাহায্য করনি। এজন্য এ বালাখানা দু’টি এখন ওমুক খ্রিস্টান লোকের হয়েছে। ’ কারণ সে খ্রিস্টান লোকটা আশূরা শরীফ উনার সম্মানার্থে গরিব আলিমকে সাহায্য করেছে। অতঃপর কাজী ছাহেবের ঘুম ভেঙে গেলো। ঘুম থেকে উঠে ওযূ ও নামায আদায় করে সেই খ্রিস্টানের বাড়িতে গেলো। খ্রিস্টান ব্যক্তি কাজী ছাহেবকে দেখে বিস্ময়াভূত হলো। কারণ কাজী ছাহেব খ্রিস্টানের পড়শি বা প্রতিবেশী হওয়া সত্ত্বেও জন্মের পর থেকে এ পর্যন্ত কোন সময় তার বাড়িতে আসতে দেখেনি।
অতঃপর খ্রিস্টান ব্যক্তি কাজী ছাহেবকে বললো, ‘আপনি এত সকালে কি জন্য এলেন?’ কাজী ছাহেব বললো, ‘হে খ্রিস্টান ব্যক্তি! তুমি গত রাতে যে নেক কাজ করেছ সেটা আমার কাছে এক লাখ দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দাও। ’ খ্রিস্টান ব্যক্তি বললো, ‘হে কাজী ছাহেব! আপনি কি বলতে চাচ্ছেন আমি বুঝতে পারছি না। আপনি স্পষ্ট করে বলুন। ’ তখন কাজী ছাহেব তার স্বপ্নের কথা জানালো এবং বললো, ‘তুমি নিশ্চয়ই সেই গরিব আলিম লোকটিকে সাহায্য করেছ। ’ তখন খ্রিস্টান ব্যক্তি তা স্বীকার করলো। কাজী ছাহেব বললো যে, ‘তুমি তো খ্রিস্টান, তুমি তো এই বালাখানা পাবেনা। তোমার এটা নিয়ে কি ফায়দা হবে? তুমি তোমার এই নেক কাজ এক লাখ দিরহামের বিনিময়ে আমার নিকট বিক্রি করে দাও এবং তুমি উনার কাছে প্রত্যেক মাসে যে ওয়াদা করেছ আমি উনাকে তা দিয়ে দিব। ’ খ্রিস্টান ব্যক্তি বললো, ‘হে কাজী ছাহেব! আমি যদি মুসলমান হয়ে যাই তাহলে কি সেই বালাখানা পাবো?’ তখন কাজী ছাহেব বললো: ‘হ্যাঁ, তুমি যদি মুসলমান হও তবে বালাখানা পাবে। ’ তখন খ্রিস্টান ব্যক্তি বললো, ‘হে কাজী ছাহেব! আপনি সাক্ষী থাকুন, আমি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কালিমা শরীফ পড়ে মুসলমান হয়ে গেলাম। ’ অতঃপর সত্যি সে খ্রিস্টান ব্যক্তি মুসলমান হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ!
অতএব এটা ফিকিরের বিষয় যে, পবিত্র মুহররম শরীফ মাস অর্থাৎ পবিত্র আশূরা শরীফ উনাকে সম্মান করার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি খ্রিস্টান ব্যক্তিকে ঈমান দিয়ে দিলেন। এমনকি জান্নাত নছীব করলেন। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই সকলের উচিত পবিত্র আশূরা শরীফ উনার যথাযথ হক্ব আদায় করা।
৪ ) গরিবদের পানাহার করানো ও ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলানো খাছ সুন্নত মুবারক ও বেমেছাল ফযীলত মুবারক লাভের উছীলা : গরিবদের পানাহার করানো ও ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলানো সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
مَنْ مَّسَحَ فِيْهِ عَلٰى رَأْسِ يَتِيْمَ وَاَطْعَمَ جَائِعًا وَسَقٰى شَرْبَةً مِّنْ مَّاءٍ أَطْعَمَهُ اللهُ مِنْ مَّوَائِدِ الْـجَنَّةِ وَسَقَاهُ مِنَ الرَّحِيْقِ السَّلْسَبِيْلِ
অর্থ : “পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন কোন মুসলমান যদি কোন ইয়াতীমের মাথায় হাত স্পর্শ করে, কোন ক্ষুধার্তকে খাদ্য খাওয়ায় এবং কোন পিপাসার্তকে পানি পান করায় তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে সম্মানিত জান্নাত উনার দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়াবেন এবং ‘সালসাবীল’ ঝর্ণা থেকে পানীয় (শরবত) পান করাবেন। ”
৫) চোখে (ইছমিদ) সুরমা দেয়া খাছ সুন্নত মুবারক ও বেমেছাল ফযীলত মুবারক লাভের উছীলা : চোখে সুরমা দেয়া সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
مَنْ اكْتَحَلَ يَوْمَ عَاشُوْرَاءَ بِكُحْلٍ فِيْهِ مِسْكٌ لَـمْ يَشْكِ عَيْنُهٗ إِلٰى قَبِيْلٍ مِّنْ ذٰلِكَ الْيَوْمِ
অর্থ : “যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন মিশক মিশ্রিত সুরমা চোখে দিবে, সেদিন হতে পরবর্তী এক বৎসর তার চোখে কোন প্রকার রোগ হবেনা। ” (মাক্বাছিদে হাসানাহ, শুয়াবুল ঈমান, দায়লামী, মা ছাবাতা বিস্সুন্নাহ্)
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, তোমাদের সুরমার মধ্যে ইছমিদ সুরমা সর্বোত্তম, যা চোখের দৃষ্টিশক্তি সতেজ করে এবং চোখের পাতা উৎপন্ন করে। সুবহানাল্লাহ! (অসমাপ্ত)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)