নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ বর্ণিত মওযূ হাদীছ ও তার খণ্ডনমূলক জবাব
গ্বরানীক্ব ও তৎসংশ্লিষ্ট ঘটনা এবং মুসলমানদের সাথে মুশরিকদের সিজদাহ্ বিষয়ে মওযূ হাদীছ ও তার খণ্ডনমূলক জবাব: (১২)
, ২২ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৩ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১২ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ৩০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
‘ক্বিছ্ছাতুল গ্বরানীক্ব বা গ্বরানীক্বের ঘটনা’ হলো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক উনার খিলাফ একটি বাতিল, মওযূ, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন বর্ণনা। মিথ্যাবাদীরা বলে থাকে যে, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন দেখলেন উনাকে উনার সম্প্রদায়ের লোকজন পরিত্যাগ করছে এবং তিনি তাদের নিকট যা নিয়ে এসেছেন, তা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, তখন উনার নিকট বিষয়টি কষ্টকর হয়ে পড়লো। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় সম্প্রদায়ের ঈমানের বিষয়ে দয়াপরবশ হয়ে মনে মনে আকাঙ্খা মুবারক করলেন- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে যাতে এমন কিছু নাযিল হয়, যা উনার মাঝে এবং উনার সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে কাছাকাছি হবে, নিকটবর্তী হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! এমতাবস্থায় একদিন কুরাইশদের অনেক লোকের এক মজলিসে তিনি উপস্থিত ছিলেন। তখন তিনি ইচ্ছা করছিলেন যে, মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে যেন উনার নিকট এমন কিছু না আসেন, যাতে কুরাইশরা উনার থেকে দূরে চলে যায়। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই আকাঙ্খা মুবারক উনার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নজম শরীফ নাযিল করেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা পাঠ করতে করতে যখন এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ পর্যন্ত পৌঁছলেন-
اَفَرَاَيْتُمُ اللّٰتَ وَالْعُزّٰى وَمَنٰوةَ الثَّالِثَةَ الْاُخْرٰى
‘তোমরা কি লাত ও উয্যা সম্পর্কে লক্ষ্য করো না? ফিকির করো না? এবং ৩য় অপর একটি মানাত সম্পর্কে কি লক্ষ্য করো না? ফিকির করো না?’ (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নজম শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯-২০)
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত তিলাওয়াত মুবারক উনার মাঝখানে উনার ন্যায় সুমধুর সূরে শয়তান মুশরিকদের মূর্তির প্রশংসামূলক কিছু বাক্য প্রবেশ করিয়ে দেয়। নাউযূবিল্লাহ! নাউযূবিল্লাহ! নাউযূবিল্লাহ!
আবার কেউ কেউ বলে, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যবান মুবারক-এ) শয়তান নিক্ষেপ করলো,
تِلْكَ الْغَرَانِيْقُ الْعُلٰى وَاِنَّ شَفَاعَتَهُنَّ لَتُرْتَجٰى
‘এগুলো (এই মূর্তিগুলো) খুব সুন্দর, খুব ছূরত পাখির মতো এবং আশা করা যায় যে এগুলো অবশ্যই (মুশরিকদের জন্য) সুপারিশ করবে।’ না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ!
শয়তান এই কুফরীমূলক বাক্য এমনভাবে প্রবেশ করিয়ে দেয় যে, উপস্থিত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা এবং মুশরিকরা সবাই বুঝে যে, এটা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই বাক্য। কোনক্রমেই কেউ তা পার্থক্য করতে সক্ষম হয়নি। না‘ঊযুবিল্লাহ! কুরাইশরা এটা শুনে অত্যন্ত আনন্দিত হয়। না‘ঊযুবিল্লাহ!
অত:পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তিলাওয়াত মুবারক করতে করতে পুরো সম্মানিত ও পবিত্র সূরা শরীফ সম্মানিত তিলাওয়াত মুবারক করেন এবং সম্মানিত ও পবিত্র সূরা শরীফ উনার শেষে সম্মানিত সিজদাহ্ মুবারক করেন। তখন উনার সাথে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারাও সিজদাহ্ করলেন এবং মুশরিকদের মধ্য থেকে যারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে হারাম শরীফ উনার মধ্যে ছিলো তারা সকলেই সিজদাহ্ করলো। ঐ সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে হারাম শরীফ উনার মধ্যে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা এবং মুশরিকরা যারা ছিলো কেউই সিজদাহ্ করা থেকে বিরত থাকেনি। একমাত্র ওলীদ ইবনে মুগীরা এবং আবূ উহাইহাহ্ সাঈদ ইবনে আছ তারা দুইজন সিজদাহ্ করলো না। তারা যমীন থেকে এক মুষ্টি মাটি নিয়ে কপালে ঠেকিয়ে সেটাতে সিজদাহ্ করলো। কারণ তারা দু’জনেই ছিলো অতিবৃদ্ধ, তাই তারা সিজদাহ্ করতে সক্ষম ছিলো না। কুরাইশরা বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের দেব-দেবীদের (প্রশংসামূলক) আলোচনা যা শুনেছে, সে জন্য খুশি প্রকাশ করে বলাবলি করছিলো- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের দেব-দেবীদের (প্রশংসামূলক) সর্বোত্তম আলোচনা করেছেন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন দুঃখ ভারাক্রান্ত হলেন, তখন হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম তিনি এসে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! একি করলেন আপনি? না‘ঊযুবিল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আমি যা নিয়ে আসিনি, আপনি মানুষদের নিকট তা তিলাওয়াত মুবারক করেছেন। আর আপনি যা বলেছেন আমি তো আপনাকে তা বলিনি।’ না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যন্ত চিন্তিত হলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ভয়ে অত্যন্ত ভীতসন্ত্রস্ত হলেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি وَمَآ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করেন।” না‘ঊযুবিল্লাহ!
কেউ কেউ আরো অনেক খারাপভাবে এই ঘটনা বর্ণনা করে থাকে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উপরোক্ত বর্ণনাগুলোসহ অনুরূপ আরো যত বর্ণনা রয়েছে, প্রত্যেকটি বণর্নাই বাতিল, মওযূ, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। এ ধরণের কোন ঘটনাই সংঘটিত হয়নি। কখনও মুশরিকরা মুসলমানদের সাথে সিজদাহ্ করেনি। শয়তান কখনও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক উনার সাথে তার কথা মিলায়নি। এরূপ চিন্তা করাটাও কাট্টা কুফরী ও চির জাহান্নামী হওয়ার কারণ। এগুলো সব বানানো কিচ্ছা-কাহিনী। এগুলো একটাও গ্রহণ করা যাবে না। এগুলো বিশ্বাস করা কাট্টা কুফরী হবে। বর্ণনাকারীরা ইসরাঈলী বর্ণনা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এগুলো বর্ণনা করেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! এরূপ কুফরী আক্বীদাহ্ থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য ফরযে আইন।” সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
নিম্নে এই বাতিল, মওযূ, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন র্ণনাসমূহের দলীলভিত্তিক খণ্ডনমূলক জবাব তুলে ধরা হলো-
দলীলভিত্তিক খণ্ডনমূলক জবাব:
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
গ. ব্যাখ্যা গ্রহণকারীদের দলীল খণ্ডন:
এই সনদের মধ্যে আরেকজন রাবী হচ্ছেন-
(২) হযরত মুয়াবিয়া ইবনে ছালেহ কাযিউল আন্দালুস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি। কেউ কেউ উনাকে যয়ীফ বলেছেন। যেমন- ‘তাহ্যীবুত তাহ্যীব’ কিতাবের ১০ খন্ডের ২০৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে যে,
وَمِنْهُمْ مَّنْ يُّضَعِّفُهٗ
অর্থ: “হাদীছ শরীফ বিশারদগণ উনাদের মধ্যে অনেকেই হযরত মুয়াবিয়া ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে যয়ীফ বলেছেন।” (তাহ্যীবুত তাহ্যীব ১০/২০৯)
হযরত ইমাম ইবনে হাজম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন,
حَضْرَتْ مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَهُوَ ضَعِيْفٌ
অর্থ: “হযরত মুয়াবিয়া ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হচ্ছেন যয়ীফ।” (আল মুহাল্লা বিল আছার ৭/৫২৫)
হাফিযুল হাদীছ আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে হাজার আসক্বালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
صَدُوْقٌ لَهٗ اَوْهَامٌ
অর্থ: “তিনি সত্যবাদী; (কিন্তু) ভুল-ভ্রান্তি রয়েছে।” (তাক্বরীবুত তাহ্যীব ৫৩৮ নং পৃষ্ঠা)
এই সনদের মধ্যে আরেকজন রাবী হচ্ছেন-
(৩) হযরত আবূ ছালেহ আব্দুল্লাহ ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি। কেউ কেউ উনাকে মিথ্যা হাদীছ বর্ণনাকারী বলেছেন, কেউ কেউ যয়ীফ বলেছেন, আবার কেউ কেউ উনাকে সত্যবাদী বলেছেন। ইমামু ইলমিল হাদীছ ওয়াল জারহি ওয়াত তা’দীল, শায়খু খুরাসান, আল মুর্আরিখ, আল মুহাদ্দিছ, হাফিযুল হাদীছ, আল্লামা কাযী হযরত ইমাম আবূ হাতিম মুহম্মদ ইবনে হিব্বান ইবনে আহমদ ইবনে হিব্বান ইবনে মু‘আয ইবনে মা’বাদ আত্ তামীমী আদ দারিমী আল বুস্তী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ২৭০ হিজরী শরীফ : বিছাল শরীফ ৩৫৪ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন,
مُنْكِرُ الْحَدِيْثِ جِدًّا
অর্থ: “(হযরত আবূ ছালেহ আব্দুল্লাহ ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি) মুনকিরুল হাদীছ জিদ্দান অর্থাৎ অনেক মুনকার হাদীছ বর্ণনাকারী।” (আল মাজরূহীন লি ইবনে হিব্বান ২/৪০, তাহ্যীবুত তাহযীব)
হাফিযুল হাদীছ হযরত ইবনে হাজার আসক্বালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
وَقَالَ حَضْرَتْ صَالِحُ بْنُ مُحَمَّدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ كَانَ حَضْرَتْ اِبْنُ مَعِيْنٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يُوَثِّقُهٗ وَعِنْدِىْ اَنَّهٗ كَانَ يَكْذِبُ فِى الْحَدِيْثِ
অর্থ: “হযরত ছালেহ ইবনে মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত ইবনে মাঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আবূ ছালেহ আব্দুল্লাহ ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ছিক্বাহ্ বলতেন। আর আমার মতে হযরত আবূ ছালেহ আব্দুল্লাহ ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মিথ্যা হাদীছ বর্ণনা করতেন।” (তাহ্যীবুত তাহযীব ৫/২৫৮)
ইমামু ইলমিল হাদীছ ওয়াল জারহি ওয়াত তা’দীল, শায়খু খুরাসান, আল মুর্আরিখ, আল মুহাদ্দিছ, হাফিযুল হাদীছ, আল্লামা কাযী হযরত ইমাম আবূ হাতিম মুহম্মদ ইবনে হিব্বান ইবনে আহমদ ইবনে হিব্বান ইবনে মু‘আয ইবনে মা’বাদ আত্ তামীমী আদ দারিমী আল বুস্তী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
سَمِعْتُ حَضْرَتْ اِبْنَ خُزَيْمَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يَقُوْلُ كَانَ لَهٗ جَارٌ بَيْنَهٗ وَبَيْنَهٗ عَدَاوَةً فَكَانَ يَضَعُ الْحَدِيْثَ عَلٰى حَضْرَتْ شَيْخٍ عَبْدِ اللهِ بْنِ صَالِحٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَيَكْتُبُ فِىْ قِرْطَاسٍ بِخَطٍّ يَشْبَهُ خَطَّ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ صَالِحٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَيَطْرَحُ فِىْ دَارِهٖ فِىْ وَسْطِ كُتُبِهٖ فَيَجِدُهٗ حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فَيُحَدِّثُ بِهٖ فَيَتَوَهَّمُ اَنَّهٗ خَطُّهٗ
অর্থ: “আমি আল হুজ্জাহ্, আল ফাক্বীহ্, হাফিযুল হাদীছ, শায়খুল ইসলাম, ইমামুল আইম্মাহ্ আল্লামা হযরত আবূ বকর মুহম্মদ ইবনে ইসহাক্ব ইবনে খুযায়মাহ্ ইবনে মুগীরাহ্ ইবনে ছালিহ্ ইবনে বকর শাফিয়ী আস সুলামী নীশাপূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ২২৩ হিজরী শরীফ : বিছাল শরীফ ৩১১ হিজরী শরীফ) উনাকে বলতে শুনেছি যে, হযরত আবূ ছালেহ আব্দুল্লাহ ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একজন প্রতিবেশী ছিলো। উনার মাঝে এবং উনার প্রতিবেশীর মাঝে শত্রুতা ছিলো। সে নিজে নিজে হাদীছ রচনা করতো হযরত শায়েখ আবূ ছালেহ আব্দুল্লাহ ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উপর। উক্ত প্রতিবেশী কাগজে হযরত আবূ ছালেহ আব্দুল্লাহ ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাতের লেখার ন্যায় অনুরূপভাবে তার রচিত বানানো হাদীছগুলো কাগজে লেখে উনার ঘরে প্রবেশ করে উনার কিতাবসমূহের মাঝখানে রেখে আসতো। তারপর হযরত আবূ ছালেহ আব্দুল্লাহ ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজের লেখা উক্ত প্রতিবেশীর রচিত মওযূ হাদীছগুলো নিজের লেখা মনে করে হাদীছ শরীফ হিসেবে বর্ণনা করতেন।” (আল মাজরূহীন লি ইবনে হিব্বান ২/৪০, তাহ্যীবুত তাহযীব ৫/২৬০)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, যে রাবী নিজের লেখা নিজে যাচাই বাছাই করতে পারেনি এবং অপরের লিখিত মওযূ হাদীছ নিজের লেখা মনে করে বর্ণনা করেছেন, তাহলে এই রাবীর বর্ণিত হাদীছ কিভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে? তাহলে এ সনদের উপর কিভাবে নির্ভর করা যেতে পারে?
এজন্যই হাফিযুল হাদীছ, আল্লামা ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহম্মদ আল মা‘আফিরী ইশবীলী আন্দালুসী মালিকী যিনি কাযী আবূ বকর ইবনে আরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি হিসেবে মশহূর (বিলাদত শরীফ ৪৬৮ হিজরী শরীফ : বিছাল শরীফ ৫৪৩ হিজরী শরীফ) তিনি বলেছেন,
ذَكَرَ حَضْرَتْ اَلطَّبَرِىُّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِىْ ذٰلِك رِوَايَاتٍ كَثِيْرَةً بَاطِلَةً لَا اَصْلَ لَهَا
অর্থ: “ইমাম ত্ববারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ বিষয়ে অনেক বাতিল বর্ণনা উল্লেখ করেছেন, যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।” (উমদাতুল ক্বারী ১৯/৬৬, লুবাবুন নুকূল ফী আসবাবিন নুযূল লিস সুয়ূত্বী ১/১৩৬ ফাতহুল ক্বাদীর লিশ শাওকানী ৫/১২৮ ইত্যাদি)
(পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকুন)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুলি মুবারক করা পানি কূপে পতিত হওয়ার কারণে কুপ থেকে মেশকের চেয়ে অধিক সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুন আলা নূর মুবারক উনার মাঝে দায়িমীভাবে নূর মুবারক চমকানো
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাসি মুবারককালে পাশ্ববর্তী দেয়ালসমূহ আলোকিত হয়ে যাওয়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বুলন্দী শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক বলার সময় নূর মুবারক বিচ্ছুরিত হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত ত্বীব মুবারক থেকে নূর মুবারক সৃষ্টি হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বুলন্দী শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল মুজাসসাম মুবারক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক উনার নূরের আলোতে পুরো পবিত্র হুজরা শরীফ আলোকিত হওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বর্তমান সময়টা হচ্ছে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নির্দিষ্ট সময়
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৫)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)