নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ বর্ণিত মওযূ হাদীছ ও তার খণ্ডনমূলক জবাব
, ১৫ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৬ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ০৫ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
‘ক্বিছ্ছাতুল গ্বরানীক্ব বা গ্বরানীক্বের ঘটনা’ হলো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক উনার খিলাফ একটি বাতিল, মওযূ, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন বর্ণনা। মিথ্যাবাদীরা বলে থাকে যে, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন দেখলেন উনাকে উনার সম্প্রদায়ের লোকজন পরিত্যাগ করছে এবং তিনি তাদের নিকট যা নিয়ে এসেছেন, তা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, তখন উনার নিকট বিষয়টি কষ্টকর হয়ে পড়লো। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় সম্প্রদায়ের ঈমানের বিষয়ে দয়াপরবশ হয়ে মনে মনে আকাঙ্খা মুবারক করলেন- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে যাতে এমন কিছু নাযিল হয়, যা উনার মাঝে এবং উনার সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে কাছাকাছি হবে, নিকটবর্তী হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! এমতাবস্থায় একদিন কুরাইশদের অনেক লোকের এক মজলিসে তিনি উপস্থিত ছিলেন। তখন তিনি ইচ্ছা করছিলেন যে, মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে যেন উনার নিকট এমন কিছু না আসেন, যাতে কুরাইশরা উনার থেকে দূরে চলে যায়। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই আকাঙ্খা মুবারক উনার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নজম শরীফ নাযিল করেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা পাঠ করতে করতে যখন এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ পর্যন্ত পৌঁছলেন-
اَفَرَاَيْتُمُ اللّٰتَ وَالْعُزّٰى وَمَنٰوةَ الثَّالِثَةَ الْاُخْرٰى
‘তোমরা কি লাত ও উয্যা সম্পর্কে লক্ষ্য করো না? ফিকির করো না? এবং ৩য় অপর একটি মানাত সম্পর্কে কি লক্ষ্য করো না? ফিকির করো না?’ (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নজম শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯-২০)
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত তিলাওয়াত মুবারক উনার মাঝখানে উনার ন্যায় সুমধুর সূরে শয়তান মুশরিকদের মূর্তির প্রশংসামূলক কিছু বাক্য প্রবেশ করিয়ে দেয়। নাউযূবিল্লাহ! নাউযূবিল্লাহ! নাউযূবিল্লাহ!
আবার কেউ কেউ বলে, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যবান মুবারক-এ) শয়তান নিক্ষেপ করলো,
تِلْكَ الْغَرَانِيْقُ الْعُلٰى وَاِنَّ شَفَاعَتَهُنَّ لَتُرْتَجٰى
‘এগুলো (এই মূর্তিগুলো) খুব সুন্দর, খুব ছূরত পাখির মতো এবং আশা করা যায় যে এগুলো অবশ্যই (মুশরিকদের জন্য) সুপারিশ করবে।’ না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ!
শয়তান এই কুফরীমূলক বাক্য এমনভাবে প্রবেশ করিয়ে দেয় যে, উপস্থিত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা এবং মুশরিকরা সবাই বুঝে যে, এটা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই বাক্য। কোনক্রমেই কেউ তা পার্থক্য করতে সক্ষম হয়নি। না‘ঊযুবিল্লাহ! কুরাইশরা এটা শুনে অত্যন্ত আনন্দিত হয়। না‘ঊযুবিল্লাহ!
অত:পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তিলাওয়াত মুবারক করতে করতে পুরো সম্মানিত ও পবিত্র সূরা শরীফ সম্মানিত তিলাওয়াত মুবারক করেন এবং সম্মানিত ও পবিত্র সূরা শরীফ উনার শেষে সম্মানিত সিজদাহ্ মুবারক করেন। তখন উনার সাথে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারাও সিজদাহ্ করলেন এবং মুশরিকদের মধ্য থেকে যারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে হারাম শরীফ উনার মধ্যে ছিলো তারা সকলেই সিজদাহ্ করলো। ঐ সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে হারাম শরীফ উনার মধ্যে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা এবং মুশরিকরা যারা ছিলো কেউই সিজদাহ্ করা থেকে বিরত থাকেনি। একমাত্র ওলীদ ইবনে মুগীরা এবং আবূ উহাইহাহ্ সাঈদ ইবনে আছ তারা দুইজন সিজদাহ্ করলো না। তারা যমীন থেকে এক মুষ্টি মাটি নিয়ে কপালে ঠেকিয়ে সেটাতে সিজদাহ্ করলো। কারণ তারা দু’জনেই ছিলো অতিবৃদ্ধ, তাই তারা সিজদাহ্ করতে সক্ষম ছিলো না। কুরাইশরা বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের দেব-দেবীদের (প্রশংসামূলক) আলোচনা যা শুনেছে, সে জন্য খুশি প্রকাশ করে বলাবলি করছিলো- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের দেব-দেবীদের (প্রশংসামূলক) সর্বোত্তম আলোচনা করেছেন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন দুঃখ ভারাক্রান্ত হলেন, তখন হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম তিনি এসে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! একি করলেন আপনি? না‘ঊযুবিল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আমি যা নিয়ে আসিনি, আপনি মানুষদের নিকট তা তিলাওয়াত মুবারক করেছেন। আর আপনি যা বলেছেন আমি তো আপনাকে তা বলিনি।’ না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যন্ত চিন্তিত হলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ভয়ে অত্যন্ত ভীতসন্ত্রস্ত হলেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি وَمَآ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করেন।” না‘ঊযুবিল্লাহ!
কেউ কেউ আরো অনেক খারাপভাবে এই ঘটনা বর্ণনা করে থাকে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উপরোক্ত বর্ণনাগুলোসহ অনুরূপ আরো যত বর্ণনা রয়েছে, প্রত্যেকটি বণর্নাই বাতিল, মওযূ, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। এ ধরণের কোন ঘটনাই সংঘটিত হয়নি। কখনও মুশরিকরা মুসলমানদের সাথে সিজদাহ্ করেনি। শয়তান কখনও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক উনার সাথে তার কথা মিলায়নি। এরূপ চিন্তা করাটাও কাট্টা কুফরী ও চির জাহান্নামী হওয়ার কারণ। এগুলো সব বানানো কিচ্ছা-কাহিনী। এগুলো একটাও গ্রহণ করা যাবে না। এগুলো বিশ্বাস করা কাট্টা কুফরী হবে। বর্ণনাকারীরা ইসরাঈলী বর্ণনা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এগুলো বর্ণনা করেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! এরূপ কুফরী আক্বীদাহ্ থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য ফরযে আইন।” সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
নিম্নে এই বাতিল, মওযূ, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন র্ণনাসমূহের দলীলভিত্তিক খ-নমূলক জবাব তুলে ধরা হলো-
দলীলভিত্তিক খ-নমূলক জবাব:
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
খ. গ্বরানীক্বের ঘটনা মেনে ব্যাখ্যা গ্রহণ প্রসঙ্গে:
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
قَالَ رَبِّ بِمَا اَغْوَيْتَنِىْ لَاُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِى الْاَرْضِ وَلَاُغْوِيَنَّهُمْ اَجْمَعِيْنَ. اِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِيْنَ
অর্থ: “(ইবলীস শয়তান) সে বললো- আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! যেহেতু আমি গোমরাহ্ হয়েছি, কাজেই অবশ্যই অবশ্যই আমি পৃথিবীকে তাদের নিকট সুসজ্জিত করে, সুন্দর করে উপস্থাপন করবো এবং অবশ্যই অবশ্যই তাদের সবাইকে আমি বিভ্রান্ত করবো, গোমরাহ্ করবো। তবে যাঁরা আপনার মুখলাছ বান্দা উনাদেরকে ব্যতীত।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হিজ্র শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৯-৪০)
উল্লেখ্য যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা হচ্ছেন মুখলাছ বান্দা উনাদের অন্তর্ভুক্ত এবং উনারা হচ্ছেন হাক্বীক্বী ঈমানদার ও মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি হাক্বীক্বী তাওয়াক্কুলকারী। উনাদের থেকে শয়তান নিরাশ। উনাদের উপর শয়তানের কোনো ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব চলেনি এবং উনাদেরকে সে কখনও বিভ্রান্ত করতে পারেনি।
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, যদি মহান আল্লাহ পাক উনার একজন খাছ বান্দা, ঈমানদার এবং উনার প্রতি পূর্ণ তাওয়াক্কুলকারী উনার উপর শয়তানের কোনো ক্ষমতা প্রয়োগ বা কর্তৃত্ব না চলে এবং সরাসরি শয়তান নিজে বলেছে, মুখলাছ বান্দা উনাদেরকে সে বিভ্রান্ত করতে পারবে না, সন্দেহের মধ্যে ফেলতে পারবে না। তাহলে যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে সমস্ত কিছু দিয়ে সৃষ্টি মুবারক করে উনাকে উনার সাথে সংযুক্ত করেছেন এবং উনার কুদরত মুবারক অর্থাৎ নিয়ন্ত্রনে রেখেছেন অর্থাৎ উনার হাক্বীক্বী যিয়ারত, ছোহবত, দীদার মুবারক-এ উনি ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন। এর মধ্যে কোনো জুদায়ী নেই। উনার উপর কিভাবে শয়তানের ক্ষমতা প্রয়োগ বা কর্তৃত্ব চলতে পারে? আর কিভাবে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তিলাওয়াত মুবারক বা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক উনার মাঝখানে শয়তান নিজের কথা প্রবেশ করিয়ে উনাকে বিভ্রান্ত করতে পারে? না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! এটা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। এরূপ চিন্তা করা, আক্বীদাহ্ পোষণ করা প্রত্যেকটাই কাট্টা কুফরী। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের ক্ষেত্রেও একই হুকুম।
আর এটা ঐ সকল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদেরও খিলাফ, যেখানে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ سَعِيْدِ ۣ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ سَـمِعَ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ مَنْ رَاٰنِـىْ فَقَدْ رَاَى الْـحَقَّ فَاِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَتَكَوَّنُنِـىْ وَفِـىْ رِوَايَةٍ اُخْرٰى اِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَسْتَطِيْعُ اَنْ يَّتَشَبَّهَ بِـىْ وَفِـىْ رِوَايَةٍ اُخْرٰى اِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَتَمَثَّلُ بِـىْ وَرِجَالُهٗ ثِقَاتٌ
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি স্বপ্নে আমাকে দেখলো, সে সত্যিই আমাকে দেখলো। কেননা নিশ্চয়ই শয়তান আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আকৃতি মুবারক ধারণ করতে পারে না। সুবহানাল্লাহ! অন্য বর্ণনায় এসেছেন, নিশ্চয়ই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাদৃশ্যতা মুবারক ধারণ করার ক্ষমতা শয়তানের নেই। সুবহানাল্লাহ! অন্য বর্ণনায় এসেছেন, নিশ্চয়ই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আকৃতি মুবারক শয়তান ধারণ করতে পারেনা। সুবহানাল্লাহ! আর এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সমস্ত বর্ণনাকারীগণ ছিক্বাহ্ বা নির্ভরযোগ্য।” (বুখারী শরীফ, আল আহকামুশ শরইয়্যাহ্ ৪/২৬১, আল মুখতাছারুন নাছীহ ৩/৩৫৮, মুসনাদে আহমদ ১৫/ ২৯৬, আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত ত্ববারনী ১/১৯২, আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ২২/১১১, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৭/১৮১ ইত্যাদি)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, যদি স্বপ্নে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাদৃশ্যতা মুবারক ধারণ করার ক্ষমতা শয়তানের না থাকে, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হায়াতে জিন্দেগী মুবারক-এ উনার উপস্থিতিতে উনার উপর শয়তান কিভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে? না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! এটা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। এরূপ আক্বীদাহ্ পোষণ করা কাট্টা কুফরী।
কাজেই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার চরম খিলাফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং অনেক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ মারফূ’ মুত্তাছিল হাদীছ শরীফ উনাদের সুস্পষ্ট মুখালিফ এরূপ ব্যাখ্যা ও হাদীছ কস্মিনকালেও গ্রহণযোগ্য নয়; বরং এরূপ ব্যাখ্যা ও হাদীছ সম্পূর্ণরূপে বাতিল, বানোয়াট, মওযূ ও ভিত্তিহীন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে সমস্ত মুসলমান পুরুষ মহিলা জ্বিন-ইনসান ছোট-বড় সবাইকে এবং আমাদের সবাইকে হাক্বীক্বী ছহীহ সমঝ, সর্বোচ্চ বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্ ও হুসনে যন মুবারক নছীব করুন। আমীন!
(পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকুন)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক বলার সময় নূর মুবারক বিচ্ছুরিত হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত ত্বীব মুবারক থেকে নূর মুবারক সৃষ্টি হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বুলন্দী শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল মুজাসসাম মুবারক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক উনার নূরের আলোতে পুরো পবিত্র হুজরা শরীফ আলোকিত হওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বর্তমান সময়টা হচ্ছে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নির্দিষ্ট সময়
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৫)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত যায়িদ বিন হারেছাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বেমেছাল মুহব্বত মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৪)
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার গুরুত্ব এবং আবশ্যকতা
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৩)
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)