নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ উনাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ বিষয়ে আপত্তি ও তার খণ্ডনমূলক জবাব (১)
, ১১ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০২ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ০১ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ১৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
জাওয়াব: বাতিল ৭২ ফিরক্বার লোকদের জাতিগত স্বভাব হচ্ছে- কিতাবের ইবারত কারচুপি করা এবং হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের উপর ভর করে নিজেদের বাতিল মত ছাবিত করার অপচেষ্টা করা। যারা এরূপ বলে থাকে, তাদের নিকট সুওয়াল হচ্ছে- তাহলে কি হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার বিরুদ্ধে ফতওয়া দিয়েছেন? অথচ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا اِذَا اَفْطَرَ فَرِحَ وَاِذَا لَقِىَ رَبَّهٗ فَرِحَ بِصَوْمِهٖ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি উনার জন্য দুটি খুশি বা ঈদ রয়েছেন, যেই দুটি খুশি বা ঈদ সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি প্রকাশ করে থাকেন। (১) যখন সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি ইফতার করেন, তখন তিনি খুশি বা ঈদ প্রকাশ করেন। আর (২) যখন সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি তিনি উনার রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সাক্ষাৎ করবেন, তখন তিনি খুশি বা ঈদ প্রকাশ করবেন সম্মানিত রোযা উনার কারণে।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, নাসায়ী শরীফ, জুযউ ইবনে জুরাইজ ১/১৬, ফতহুল বারী ৪/১১৮, শরহে ইবনে বাত্ত্বাল ৪/২৪, উমদাতুল ক্বারী ১৬/২৮১, দলীলুল ফালিহীন ৭/২৪, ত্বরহুত তাছরীব ৪/৯৪, আল কাওয়াকিবুদ দুরারী ৯/৮৭, যখীরতুল উক্ববা ২১/৮০, ইরশাদুস সারী ৩/৩৫৪, আল কাওছারুল জারী ৪/২৬১, মাছাবীহুল জামি’ ৪/৩২৯, ই’লামুল হাদীছ ২/৯৪৬, আল লামি‘উছ ছবীহ্ ৬/৩৭০, আত্ তাওশীহ্ ৪/১৪২০ ইত্যাদি)
অন্য বর্ণনায় ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهٖ وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبِّهٖ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি উনার জন্য দুটি খুশি বা ঈদ রয়েছেন। (১) একখানা খুশি বা ঈদ হচ্ছেন সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি যখন ইফতার করেন। আরেকখানা খুশি বা ঈদ হচ্ছেন (২) সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি যখন উনার রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সাক্ষাৎ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, তাফসীরে ছা‘আলাবী ১/১০৭, তাফসীরে খাযিন ১/১১৪, রূহুল বয়ান ১/২৩৮, গ¦রাইবুল কুরআন ১/৫২১, আস সিরাজুল মুনীর ১/১২১, তাফসীরে বাগবী ১/২০৩, তাফসীরে ইবনে রজব ২/২২২, তাফসীরে মাযহারী ১/২০০ ইত্যাদি)
হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাব থেকে দলীল:
স্বয়ং হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজেই বলেছেন, ‘খাছ মু’মিন উনাদের জন্য প্রতিটি দিনই ঈদ।’ সুবহানাল্লাহ! এবং তিনি আরো বলেছেন, ‘খাছ মু’মিন উনাদের জন্য দুনিয়ার যমীনে এবং পরকালে প্রত্যেকটা সময় ঈদ।’ সুবহানাল্লাহ!
যেমন- হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘লাত্বায়িফুল মা‘আরিফ’ কিতাবের ২৭৮ নং পৃষ্ঠায় বলেন,
كُلُّ يَوْمٍ كَانَ لِلْمُسْلِمِيْنَ عِيْدًا فِى الدُّنْيَا فِاِنَّهٗ عِيْدٌ لَّهُمْ فِى الْجَنَّةِ يَجْتَمِعُوْنَ فِيْهِ عَلٰى زِيَارَةِ رَبِّهِمْ وَيَتَجَلّٰى لَهُمْ فِيْهِ وَيَوْمُ الْجُمُعَةِ يُدْعٰى فِى الْجَنَّةِ يَوْمَ الْمَزِيْدِ وَيَوْمُ الْفِطْرِ وَالْاَضْحٰى يُجْتَمَعُ اَهْلُ الْجَنَّةِ فِيْهِمَا لِلزِّيَارَةِ
অর্থ: “সম্মানিত মুসলমান উনাদের জন্য দুনিয়াতে যে দিনগুলি ঈদ, সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যেও উনাদের জন্য সেই দিনগুলি ঈদের দিন হবেন। সুবহানাল্লাহ! কারণ এই সমস্ত দিনে সম্মানিত মুসলমান উনারা উনাদের রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দীদার মুবারক উনার উদ্দেশ্যে একত্রিত হবেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি এই দিনগুলিতে উনাদের জন্য প্রকাশ পাবেন। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জুমু‘আহ্ শরীফ উনার দিন সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে দাওয়াত দেয়া হবে। (এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দিন মুবারক হচ্ছেন-) ইয়াওমুল মাযীদ। সুবহানাল্লাহ! আর সম্মানিত রোযার ঈদ এবং সম্মানিত কুরবানীর ঈদ- এই দুই দিন সম্মানিত জান্নাতবাসী উনাদেরকে পরস্পর সাক্ষাতের জন্য একত্রিত করা হবে।” সুবহানাল্লাহ!
তারপর হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘লাত্বায়িফুল মা‘আরিফ’ কিতাবের ২৭৮ নং পৃষ্ঠায় বলেন,
فَهٰذَا لِعُمُوْمِ اَهْلِ الْجَنَّةِ فَاَمَّا خَوَاصُّهُمْ فَكُلُّ يَوْمٍ لَّهُمْ عِيْدٌ يَزُوْرُوْنَ رَبَّهُمْ كُلَّ يَوْمٍ مَرَّتَيْنِ بُكْرَةً وَّعَشِيًّا اَلْخَوَاصُّ كَانَتْ اَيَّامُ الدُّنْيَا كُلُّهَا لَهُمْ اَعْيَادًا فَصَارَتْ اَيَّامُهُمْ فِى الْاٰخِرَةِ كُلُّهَا اَعْيَادًا قَالَ حَضْرَتْ اَلْحَسَنُ الْبَصْرِىُّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ كُلُّ يَوْمٍ لَا يُعْصَى اللهُ فِيْهِ فَهُوَ عِيْدٌ كُلُّ يَوْمٍ يَقْطَعُهُ الْمُؤْمِنُ فِىْ طَاعَةِ مَوْلَاهُ وَذِكْرِهٖ وَشُكْرِهٖ فَهُوَ لَهٗ عِيْدٌ
অর্থ: “সুতরাং এটা হচ্ছেন সম্মানিত জান্নাতবাসী সাধারণ মানুষের জন্য। সুবহানাল্লাহ! আর সম্মানিত জান্নাতবাসী বিশেষ ব্যক্তিত্ব উনাদের জন্য প্রত্যেক দিনই ঈদ। সুবহানাল্লাহ! উনারা প্রত্যেক দিন সকাল-সন্ধ্যা দুইবার উনাদের রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দীদার মুবারক লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ! বিশেষ ব্যক্তি উনাদের জন্য দুনিয়াতে প্রত্যেক দিনই ঈদ, তাই পরকালেও উনাদের জন্য প্রত্যেক দিনই ঈদ হবেন। সুবহানাল্লাহ! ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত ত্বরীক্বত হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন- ‘প্রত্যেক ঐ দিন, যেই দিনে মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী করা হয় না, সেদিন ঈদ। প্রত্যেক ঐ দিন, যেই দিনে মু’মিন ব্যক্তি তিনি উনার মাওলা তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্যে, উনার যিকিরে বা স্বরণে এবং উনার শুকুরগুজারীতে কাটিয়েছেন, সেদিন উনার জন্য ঈদ’।” সুবহানাল্লাহ! (লাত্বাইফুল মা‘আরিফ ২৭৮ নং পৃষ্ঠা, লাওয়ামি‘উল আনওয়ার ২/২৫০)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ ইবনে ছিদ্দীকুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৮)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২০)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৭)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৯)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৬)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৮)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)