দ্বীন ইসলামের ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (২)
দ্বীন ইসলামের প্রথম জিহাদেই হালাক-ধ্বংস হলো কাট্টা কাফির আবূ জাহিল
, ০১ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৮ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ০১ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
অল্প বয়স্ক দুই সহোদর ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনাদের ঈমানদীপ্ত অভিযানে হালাক-ধ্বংস হলো কুফরী, শেরেকী, গুমরাহীর বড়ত্বের দাবিদার কাট্টা কাফির সর্দার আবূ জাহিল
হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদরের জিহাদের দিন দ্বীন ইসলামের বীর সৈনিকদের ব্যুহতে দাঁড়িয়ে আমি এদিক ওদিক চেয়ে দেখলাম আমার ডানে ও বামে দু’জন অল্প বয়স্ক নওজোয়ান দাঁড়িয়ে আছেন। আমার পাশে এত অল্প বয়স্ক নওজোয়ান যুবকদ্বয় থাকার কারণে আমি যেন নিজেকে নিরাপদ মনে করতে পারলাম না। এমন সময় উনাদের একজন অন্যজন থেকে গোপন করে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, চাচাজান! আমাকে দেখিয়ে দেন তো আবূ জাহিল কোন্্টা? আমি তখন বললাম, ভাতিজা! কাট্টা কাফির আবূ জাহিলকে দিয়ে তুমি কি করবে? তখন তিনি (ঈমানদীপ্ত কণ্ঠে) বললেন, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ওয়াদা করেছি যে, কাট্টা কাফির আবূ জাহিলটাকে দেখতে পেলে অবশ্যই তাকে হত্যা করবো, এমনকি প্রয়োজনে নিজেও শহীদ হবো। অতঃপর উনার সঙ্গী অপর নওজোয়ানও ঠিক একইভাবে আমাকে একই কথা জিজ্ঞাসা করলেন। এ অবস্থায় উনাদের দু’জনের প্রতি আমার প্রচ- আগ্রহ সৃষ্টি হলো। মনে হলো, আমি তখন দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের মাঝেই আছি। তখন আমি উনাদের দু’জনকে ইশারায় কাট্টা কাফির আবূ জাহিলকে দেখিয়ে দিলাম। দেখার সাথে সাথে উনারা দু’জন প্রচ- শিকারী বাঘের ন্যায় কাট্টা কাফির আবূ জাহিলের উপর ঝাপিয়ে পড়ে তার কুফরী-শেরেকী বড়ত্বকে চিরতরে মিটিয়ে দিলেন। উক্ত ঈমানদীপ্ত দুই বীর নওজোয়ান ছিলেন আপন সহোদর যথাক্রমে হযরত মু’আজ ইবনে আফরা এবং হযরত মু’আওয়েজ ইবনে আফরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা। (সুবহানাল্লাহ)
বর্তমান যামানায় কাট্টা কাফির আবূ জাহিলের যারা উত্তরসূরি
প্রতি যুগে যারা ইহুদী-মুশরিক-নাছারা তারাতো কাট্টা কাফির আবূ জাহিলের উত্তরসূরী উপরন্তু যারা মুসলমান দাবি করে, আলিম-উলামা, মুফতী, মুহাদ্দিছ, শায়খুল হাদীছ, পীর দাবি করেও সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোৎকৃষ্ট দ্বীন ইসলামের রীতি-নীতিকে উপেক্ষা করে অবহেলা করে এবং বলে থাকে যে, এই যুগে ইসলামের সবকিছু মেনে চলা সম্ভব নয়। (নাঊযুবিল্লাহ) সুন্নতকে ব্যাকডেটেড বলে পরিত্যাগ করে ‘মডারেট’ মুসলিম সেজে তন্ত্রমন্ত্রের শাসন কায়িমে যারা রত থাকে আবার যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ তথা মুজাদ্দিদে আ’যম উনার বিরোধিতায় সদা লিপ্ত থাকে তারাও মূলতঃ বর্তমান যামানায় কাট্টা কাফির আবূ জাহিলের উত্তরসূরি।
কাট্টা কাফির আবূ জাহিলের উত্তরসূরীদের দমন করতে এখনি জেগে উঠতে হবে ঈমানদীপ্ত মুসলিম নওজোয়ানদের
মহান আল্লাহ পাক তিনি মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহিম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে কষ্ট দানকারী, অস্বীকারকারী, বিদ্বেষ পোষণকারী, কাট্টা কাফির আবূ জাহিলের পূর্বসূরী গুমরাহ শাসক নমরূদকে ধ্বংস করতে সামান্য একটা ল্যাংড়া মশাকে ব্যবহার করেছিলেন; যার মাধ্যমে নমরূদের ১৭০০ বছরের রাজত্বের বিলুপ্তি ঘটলো। অপরদিকে এমন কোন কষ্ট নেই যা কাট্টা কাফির আবূ জাহিল কর্তৃক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেয়া হয়নি। এজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি দ্বীন ইসলামের প্রথম জিহাদেই কাট্টা কাফির আবূ জাহিলকে ধ্বংস করে দিলেন। উপরন্তু তার উপর রয়েছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চূড়ান্ত অসন্তুষ্টি। এই সমস্ত কিছু জেনে শুনে উপলব্ধি করেই দু’সহোদর ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন, যে করেই হোক কাট্টা কাফির আবূ জাহিলকে উনারা ধ্বংস করবেনই। প্রয়োজনে নিজেরা শহীদ হয়ে যাবেন তবুও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অস্বীকারকারী, কষ্টদানকারী, বিদ্বেষপোষণকারী, কাট্টা কাফির আবূ জাহিলের কুফরী শেরেকী, অহংকার-দাম্ভিকতাকে চিরতরে মিটিয়ে দিতে হবে। যেমন প্রতিজ্ঞা তেমনি কাজ সংঘটিত করে বাস্তবে দেখিয়ে দিলেন হযরত মু’আজ ইবনে আফরা এবং হযরত মু’আওয়েজ ইবনে আফরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা। (সুবহানাল্লাহ) উনাদের ঈমানদীপ্ত পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান বিশ্বে আমাদের মুসলিম শিশু-কিশোর এবং নওজোয়ানদেরকে এখনি এগিয়ে আসতে হবে এবং এখনিই প্রস্তুতি নিতে হবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রদর্শিত চূড়ান্ত সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত দ্বীন ইসলামকে যমীনে প্রতিষ্ঠিত করতে। আমাদের মুসলিম শিশু-কিশোর, নওজোয়ান এবং তামাম মুসলমানের মাঝে এমন ঈমানদীপ্ত জযবা প্রতিজ্ঞা অন্তরে তখনই সৃষ্টি হবে যখন শিশু-কিশোর, নওজোয়ান মুসলমানরা বর্তমান যামানায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একমাত্র লক্ষ্যস্থল কায়িম মাক্বাম হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মুবারক ছোহবতে দলে দলে ঈমানদীপ্ত চিত্তে দাখিল হবে।
-মুহাজিরুল ইসলাম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন (৭)
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৬)
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মী-কাফেরদের সাথে সাদৃশ্যতা রাখা জায়েজ নেই
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৫)
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র মিরাজ শরীফ উনার সঠিক তারিখ ২৭শে রজব; মুসলমানদেরকে বিশেষ দিবসের ফযীলত থেকে বঞ্চিত করতেই একটি গোষ্ঠী তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় (৩)
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)