সুন্নতী মুবারক তা’লীম
ঠান্ডা ও মিঠা পানি পান করা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক
, ২৩ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০১ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ২৯ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ১৪ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শীতল- ঠান্ডা এবং মিঠা পানি যা লবণাক্ত নয় এমন পানি পান মুবারক করতেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট ইহা ছিল উনার অত্যন্ত প্রিয়। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন-
عَنْ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ كَانَ أَحَبُّ الشَّرَابِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْحُلْوَ الْبَارِدَ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট খাবার পানির মধ্যে সর্বাধিক প্রিয় ছিল ঠান্ডা ও সুস্বাদু পানি। ” (তিরমিযী শরীফ : কিতাবুশ শারাবাহ : মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১৮৯৫; আবূ ইয়ালা শরীফ ৪র্থ খ- ২৯৯ পৃষ্ঠা : মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৪৫১৬)
বুয়ূতুস সুক্ইয়া একটি ঝর্ণার নাম। ইহা পবিত্র মদীনা শরীফ উনার পার্শ্ববর্তী “হাররা” নামক স্থানের সন্নিকটেই অবস্থিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে উক্ত ঝর্ণা থেকে সেই সুস্বাদু পানি আনা হতো। কাজেই, সর্বাধিক বিশুদ্ধ ও সুস্বাদু পানির সন্ধান পেলে সেখান থেকে পানি এনে পান করাও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত।
কেননা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে “সুক্ইয়া” নামক স্থান থেকে মিঠা বা সুস্বাদু পানি আনা হতো। সুক্ইয়া হলো হাররা উনার পাশ্ববর্তী অমুক গোত্রের (বনূ যুরায়েক) আবাসস্থলের সন্নিকটেই অবস্থিত। (আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, “হযরত আনসার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের মধ্যে একজন আনসার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে পানি ঠান্ডা করতেন। তিনি পানির মশক কাষ্ঠ নির্মিত তিন কোণ বিশিষ্ট একটি কাঠামোর উপর রেখে এ কাজ করতেন। (আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
উল্লেখ্য যে, পানি ঠান্ডা করার এ কাঠামোটি প্রাচীনকালে চালু ছিলো। খেজুর গাছের তিনটি খন্ড পরস্পর গামলার আকারে বেঁধে তার উপর মশক কিংবা পানির পাত্র রেখে দেয়া হতো। উন্মুক্ত থাকার কারণে চারদিক থেকে বাতাস লেগে পানি দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যেত। আর এর আধুনিক রূপ হচ্ছে ফ্রিজ। এ দৃষ্টিকোন থেকে ফ্রিজে পানি রেখে পানি ঠান্ডা করে; ঠান্ডা পানি পান করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত।
পানি পানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
১. ডান হাতে পানি পান করা।
২. বসে পানি পান করা।
৩. “বিসমিল্লাহ শরীফ” বলে পানি পান শুরু করা।
পানি পান করার পর নিম্নোক্ত দু‘আ মুবারক পড়তে হয়-
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِي سَقَانَا عَذْبًا فُرَاتًا بِرَحْمَتِهِ وَ لَمْ يَجْعَلْهُ مِلْحًا اُجَاجًا بِذُنُوبِنَا.
অর্থ: “সকল প্রশংসা মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য যিনি স্বীয় রহমত মুবারকে আমাদেরকে সুপেয় সুমিষ্ট পানি পান করিয়েছেন। আমাদের গুনাহর কারণে উহাকে অপেয় ও তিক্ত করেননি। ” (তাফসীরে রুহুল মা‘আনী: ২৭ পারা, ১৪৯; হিলইয়াতুল আউলিয়া)
৪. পানি পানের পূর্বে পানির পাত্রে ক্ষতিকারক কিছু আছে কিনা দেখে পান করা।
৫. এক শ্বাসে পানি পান না করে, তিন ঢোকে বা শ্বাসে পানি পান করা।
কেননা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেÑ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا شَرِبَ فَلاَ يَشْرَبْ نَفَسًا وَاحِدًا.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন তোমরা (পানীয়) পান করবে, তখন একশ্বাসে পান করবে না। ”
৬. পানি পান শেষে “আলহামদুলিল্লাহ” পাঠ করা।
৭. কাঠের পেয়ালাতে পানি পান করা।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘আঙুর’
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার বরকতময় রোগমুক্ত শিফা দানকারী সুন্নতী খাদ্য “ভাত”
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘ডুমুর’
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (১)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘তালবীনা’
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুন্নতী খাবার পরিচিতি ও উপকারিতা : দুধ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খেজুরের রস খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত (২)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)