কারবালার ঘটনার জন্য মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি দায়ী এবং সে কাফির (১)
, ০৭ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৬ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ১৪ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সমাজে একশ্রেনীর মানুষ বের হয়েছে যারা ইবলিছের চাইতেও নিকৃষ্ট। তারা প্রচার করছে হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাহাদাতের ব্যাপারে মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি দায়ী নয়। মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি নাকি এ ব্যাপারে কোন আদেশ দেয়নি। বরং শাহাদাতের সংবাদ শুনে কান্না করেছিলো। নাউযুবিল্লাহ। আমরা বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও ইতিহাসবিদ হযরত ইবনে আসাকীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “তারিখু মাদীনাতু দামেস্ক” থেকে প্রমাণ করবো মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহির নির্দেশে হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শহীদ করা হয় (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। শহীদ করার পর মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি খুশি প্রকাশ করে (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। শুধু তাই নয়, সে মহাসম্মানিত মস্তক মুবারক উনার সাথেও চরম বেয়াদবীমূলক আচরন করে (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। যা ইতিহাসের পাতায় স্পষ্ট লেখা রয়েছে-
دخل بعض بني أمية عَلَى يزيد ، فَقَالَ : أبشر يا أمير المؤمنين ، فقد أمكنك اللَّه من عدو اللَّه وعدوك ؛ يعني : الحسين بْن علي قد قتل ، ووجه برأسه إليك ، فلم يلبث إلا أياما حتى جيء برأس الحسين ، فوضع بين يدي يزيد فِي طشت ، فأمر الغلام فرفع الثوب الَّذِي كَانَ عليه ، فحين رآه خمر وجهه بكمه ، كأنه يشم منه رائحة ، وقال : الحمد لله الَّذِي كفانا المؤنة بغير مؤنة كُلَّمَا أَوْقَدُوا نَارًا لِلْحَرْبِ أَطْفَأَهَا اللَّهُ سورة المائدة آية ৬৪ ، قالت ريا : فدنوت منه ، فنظرت إِلَيْهِ وبه ردع من حناء ، قَالَ حمزة : فقلت لها : اقرع ثناياه بالقضيب كما يقولون ؟ قالت : أي والذي ذهب بنفسه ، وهو قادر عَلَى أن يغفر لَهُ ، لقد رأيته يقرع ثناياه بقضيب فِي يده
অর্থ: বনু উমাইয়ার কিছু লোক মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহির কাছে আসে এবং বলে, হে আমীরুল মু’মিনিন (আসতাগফিরুল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!) সুসংবাদ গ্রহন করো। আল্লাহ পাক তোমাকে বিজয় দান করেছেন আল্লাহর দুশমন আর তোমার দুশমনের বিরুদ্ধে (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক!)। হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শহীদ করা হয়েছে। উনার সম্মানিত ছের মুবারক পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মস্তক মুবরাক এসে পৌঁছালো। তখন একটা প্লেটে মহাসম্মানিত মস্তক মুবারক মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহির সামনে আনা হলো। তখন সে তার গোলামকে সেই প্লেট থেকে কাপড় সরাতে হুকুম করলো, সে তখন কাপড় সরালো। এটা দেখে মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহির চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেলো, সে যেন সুগন্ধি নিচ্ছিলো (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। সে বললো, আলহামদুল্লিাহ! এত সহজেই আল্লাহ পাক আমাকে বিজয় দিয়েছেন (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। এরপর সে কুরআন শরীফ থেকে كُلَّمَا أَوْقَدُوا نَارًا لِلْحَرْبِ أَطْفَأَهَا اللَّهُ (সূরা মায়েদা ৬৪) এ আয়াত শরীফ পড়লো। রাইয়া বলছে, আমি তখন তার দিকে তাকালাম। হামজা রইয়াকে প্রশ্ন করলো মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি কি বেত দিয়ে আঘাত করেছিলো। সে বললো মহান আল্লাহ পাক উনার জাতের কসম। আমি দেখেছি মালউন ইয়াযিদ বেত দিয়ে উনার মহাসম্মানিত দাঁত মুবারকে আঘাত করছে (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক, নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। (তারিখু মাদীনাতু দামেস্ক ৬৯তম খন্ড ১৫৯ পৃষ্ঠা; লেখক: ইমাম ইবনে আসাকীর রহমতুল্লাহি আলাইহি; জন্ম ৪৯৯ হিজরী- ওফাত ৫৭১ হিজরী; প্রকাশনা: দারুল ফিকর, বাইরুত, লেবানন)
একটু অগ্রসর হয়ে ইমাম আসাকীর রহমতুল্লাহি আলাইহি হামজার বরাতে লিখেন-
أنه رأى رأس الحسين مصلوبا بدمشق ثلاثة أيام
হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান মস্তক মুবারক দামেস্কে ৩ দিন ঝুলানো ছিলো। (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক!)
উপরোক্ত ঘটনা থেকে যা প্রমাণ হলো, হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি ভয়ানক বিদ্বেষ পোষন করতো। উনাকে দুশমন মনে করতো। মহাসম্মানিত মস্তক মুবারক দেখে সে খুশি হয় এবং চরম বেয়াদবী করে বেত দিয়ে মহাসম্মানিত দাঁত মুবারকে আঘাত করতে থাকে। এখানেই শেষ নয় বরং এই কাট্টা কাফির, চির জাহান্নামী মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি মহাসম্মানিত মস্তক মুবারক উনাকে ৩ দিন দামেস্কের ফটকে ঝুলিয়ে রাখে। (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক!)
তাহলে কি করে বলা যায় যে কারবালার সেই নির্মম ঘটনার পিছনে সে দায়ী নয়? বরং এটাই প্রমাণ হলো, তার আদেশেই কারবালার সেই নির্মম ঘটনা সংঘটিত হয়। আজ যারা মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহিকে নির্দোষ প্রমাণ বলতে চায়, মালউন ইয়াযিদ লা’নতুল্লাহি আলাইহিকে বিখ্যাত তাবেয়ী বলে প্রচার করতে চায়, বুঝতে হবে এরাই আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পক্ষ ছেড়ে মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহির পক্ষ নিয়েছে। বুঝতে হবে, এরাই বর্তমান মালউন ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহির উত্তরসূরি। ইবলিছের চাইতেও এরা নিকৃষ্ট। অনন্তকালের জন্য এদের প্রতি লানত! লানত! লানত। মহান আল্লাহ পাক তিনি এদের ধ্বংস করুন, লাঞ্ছিত করুন, এদের প্রতি লানত বর্ষন করুন। আমীন।
-খাজা মুহম্মদ নুরুদ্দীন পলাশ
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (৩)
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৩)
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)