ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
[পবিত্র হাদীছ শরীফ জাল বানানো নিয়ে ওহাবী, সালাফী, দেওবন্দীদের হাক্বীকত ফাঁস]
, ১২ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৮ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৫ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মুক্বদ্দিমা
বর্তমান সময়ে ইহুদী ফান্ড দ্বারা পরিচালিত ওহাবী, সালাফী, লা’মাযহাবী ফিরকার লোকেরা সমাজে ইচ্ছামত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে জাল, মওজু, দ্বয়ীফ বলে অপপ্রচার করছে। নাঊযুবিল্লাহ! তাদের মতবাদের বিপক্ষে মনে হলেই সেটাকে তারা জাল বলছে। আর এ জন্য তারা উছুলে হাদীছ শরীফ উনার বিভিন্ন অপব্যাখ্যার আশ্রয়ও গ্রহণ করতে কার্পণ্য করছে না। শত শত বছর ধরে উম্মত যে হাদীছ শরীফ উনার উপর আমল করে আসছে কেউ কোন আপত্তি করেননি অথচ হাল যামানায় এসব ওহাবীরা হঠাৎ আবির্ভূত হয়ে জাল! জাল! বলে চিৎকার শুরু করেছে।
তাদের ধারণা পবিত্র বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ ছাড়া পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্যান্য কিতাবে অনেক জাল বর্ণনা রয়ে গেছে। নাঊযুবিল্লাহ! তাদের জানা দরকার একজন মুহাদ্দিছ রহমতুল্লাহি আলাইহি যখন উনার কিতাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন তিনি সবসময় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন যাতে কিতাব খানা নির্ভরযোগ্য ও বিশুদ্ধ থাকে।
এ প্রসঙ্গে একটা ঘটনা বর্ণিত আছে, ‘খলীফা হারুনুর রশিদ (১৪৮-১৯৩ হিজরী) উনার দরবারে একজন মুরতাদকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছিলো সে বদকার তখন বললো-
اَيْنَ اَنْتَ مِنْ اَلْفِ حَدِيْثٍ وَضَعْتُهَا؟
অর্থ: “আমাকে মেরে ফেলবেন ভালো কথা, কিন্তু যে এক হাজার জাল হাদীছ লোক সমাজে ছড়িয়ে দিয়েছি সেগুলো কি করবেন?”
তখন খলীফা হারুনুর রশিদ বললেন-
فَاَيْنَ اَنْتَ يَا عَدُوَّ اللهِ مِنْ اَبِـي اِسْحَاقَ الْفَزَارِيِّ وَابْنِ الـمُبَارَكِ يَتَخَلَّلَانِـهَا فَيُخْرِجَانِـهَا حَرْفاً حَرْفًا
অর্থ: “হে মহান আল্লাহ পাক উনার দুশমন! আমাদের নিকট হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত আবু ইসহাক ফাযারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা কি জন্য আছেন? উনারা প্রতিটি জাল শব্দকে ছাকনী দিয়ে ছেঁকে বেছে আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবেন। ” সুবহানাল্লাহ! (সিয়ারু আলামিন নুবালা ১৬/৭১, মা’রিফাতু উলুমিল হাদীছ ৩৬ পৃষ্ঠা)
এ ঘটনা থেকেই বোঝা গেলো পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার হযরত ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে যাচাই বাছাই করে অনুপ্রবেশকৃত মিথ্যা বর্ণনা কর্তন করে বিশুদ্ধ বর্ণনা আমাদের জন্য কিতাব আকারে সাজিয়ে রেখে গেছেন এবং কিতাবের ভূমিকায় লিখে গেছেন, এই কিতাবে কোন মওজু বর্ণনা নেই। এরপরও সনদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে, বিচার বিশ্লেষণ হয়েছে, গবেষণা হয়েছে।
আর তার উদ্দেশ্য সম্পর্কেও হযরত মুহাদ্দিছীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন-
كان الاسناد لئلا يدخل في الدين ما ليس منه، لا ليخرج ما ثبت من عمل اهل الاسناد
অর্থ: “সনদ তো এজন্য যে, শরীয়ত-বহির্ভূত জিনিস যেন সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে অনুপ্রবেশ না করে। হযরত ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মাধ্যমে প্রমাণিত জিনিসকে সম্মানিত শরীয়ত হতে বের করার জন্যে সনদ নয়। ” (আজভিবাহ, ২৩৮ পৃষ্ঠা)
আর বিনা ইলমে তাহক্বীক্ব ছাড়া ঢালাওভাবে কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলে দেয়া হচ্ছে মিথ্যাবাদীদের খাছ বৈশিষ্ট্য।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ حَدَّثَ بِـحَدِيْثٍ وَهُوَ يَرَى اَنَّهُ كَذِبٌ فَهُوَ اَحَدُ الْكَاذِبِيْنَ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করে (ছহীহ বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়াই) অভিমত পোষণ করে যে, এই হাদীছ শরীফখানা মওজু বা মিথ্যা। সে ব্যক্তি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত। (মুসনাদে আহমাদ শরীফ ৪/২৫৫, হাদীছ শরীফ নং ১৮২৬৬; শরহুস সুন্নাহ শরীফ ১/২৬৬, হাদীছ শরীফ নং ১২৩; মুসনাদে আবূ যায়িদ শরীফ ১/৩০৬, হাদীছ শরীফ নং ২০৬৭; শু‘য়াবুল ঈমান-মুকাদ্দিমা ১/৮৪; তাফসীরে ইবনে কাছীর ২/৩৬৬)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৬)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
গান-বাজনা অকাট্য দলীল দ্বারা সুস্পষ্টভাবে হারাম
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪২)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে সমস্ত নামধারী আলিমরা শাসকদের দরবারে আসা-যাওয়া করে তারাই উলামায়ে সূ এবং সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব (৩)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
যে সমস্ত নামধারী আলিমরা শাসকদের দরবারে আসা-যাওয়া করে তারাই উলামায়ে সূ এবং সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)