ইমামুল আউলিয়া, হাবীবে রহীম, মাহবূবে রহমান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার পরিচিতি মুবারক
, ১১ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০২ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ০১ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ১৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ ইয়াওমুল আহাদ ১৪৮ হিজরী সনে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর এটাই হচ্ছে মু’তাবার বা নির্ভরযোগ্য মত। সুবহানাল্লাহ!
ইমামুল আউলিয়া, হাবীব ওয়া মাহবুবে রহমান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার পিতা, ইমামুল মুসলিমীন, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ আলাইহিস সালাম। উনার সম্মানিত মাতা উনার অনেক নাম মুবারক রয়েছে- ওরভী, নাজমা, শাম্মানা ও উম্মুল বানীন আলাইহাস সালাম। (শাওয়াহিদুন নুবুওয়াত-২৬১, মিরায়াতুল আসরার-২১৫, ইকতিরাসূল আনওয়ার-১৪৮, সাফীনাতুন আউলিয়া-৪০)
ইমামুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাথে সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনাকে মুবারক স্বপ্নে দেখেছি। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আপনার আওলাদ ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রহস্যবলী বর্ণনা করবেন। উনার অভিমত সঠিক হবে। এতে ভুলত্রুটি থাকবে না। তিনি হাকিম বা বিজ্ঞ হবেন। উনার মজলিশে ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরামসহ দার্শনিক উপস্থিত থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
আশিকে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুর রহমান মোল্লা জামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, কিতাবসমূহে যা লেখা হয়েছে এবং মুখে মুখে যা প্রচলিত আছে, তা সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার সীমাহীন ফযীলত ও গুণাবলীর সামান্য অংশ মাত্র। বলতে পারেন যে, মহা-সমুদ্র থেকে একটি বিন্দুমাত্র। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬১, ইক্বতিরাসুল আনওয়ার-১৪৮, মিরায়াতুল আনওয়ার-২১৫, সাফীনাতুল আউলিয়া-৪০)
১। আব্বাসী শাসক মামুনুর রশীদ যখন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে নিজের উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন, তখন থেকে যখনই তিনি মামুনুর রশিদ-এর শাহী দরবারে যেতেন, খাদিমরা উনাকে অভ্যর্থনা জানাতেন এবং মামুনের দরজায় ঝুলন্ত পর্দা উঠিয়ে দিতেন, যাতে তিনি সহসাই অন্দর মহলে প্রবেশ করতে পারেন। এক পর্যায়ে কিছু ক্ষমতালিপ্সু, লালসা পূজারী ব্যক্তির মনে হিংসার সৃষ্টি হল। একদিন যখন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা, হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি আগমন করলেন, তখন সেই ব্যক্তিরা বসাবস্থায় ছিল। তারা উনাকে দেখে স্বতঃস্ফূর্তভাবে দাঁড়াল এবং অভ্যর্থনার জন্যে পর্দা উঠালো। তিনি যখন ভিতরে চলে গেলেন, তখন তারা পরস্পরে বলাবলি করতে লাগলো, আমরা এরূপ কেন করলাম? এখন থেকে এরূপ করবো না।
হযরত দা’বল ইবনে আলী খুযায়ী তৎকালীন বিশিষ্ট কবিদের অন্যতম ছিলেন। তিনি বললেন, আমি একটি প্রশংসামূলক কবিতা রচনা করে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার মুবারক খিদমতে পেশ করলাম। তখন খোরাসানে মামুনুর রশীদের উত্তরাধিকারীও উপস্থিত ছিল। আমি তাকেও শুনালাম। সে খুব পছন্দ করল এবং বলল এই প্রশংসামূলক কবিতাটি কারও কাছে পাঠ করবেন না। কেবল আমি যাকে চাই তার কাছেই পাঠ করবেন। এ সংবাদ মামুন জানতে পেরে আমাকে দরবারে তলব করলেন। কুশলাদি জিজ্ঞাসা করার পর তিনি বললেন, তোমার রচিত প্রশংসামূলক কাব্যটি পাঠ করে শুনাও। আমি ইতস্তত করলে তিনি আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম আরজী করে বললেন, হে আবুল হাসান আলাইহিস সালাম! আমি দা’বলকে তার প্রশংসামূলক কাব্য শুনাতে বলেছিলাম। কিন্তু সে শুনায়নি। তখন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম আমাকে পড়তে বললে আমি পড়ে শুনালাম। খলিফা খুব পছন্দ করলেন। তিনি আমাকে পঞ্চাশ হাজার দীনার বখশিশ দিলেন এবং এই পরিমাণ অর্থই আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে পেশ করলেন।
আমি আরজ করলাম, আমি চাই আপনি আমাকে নিজের কোন কাপড় মুবারক দান করেন যা দ্বারা আমি আমার কাফন করব। তিনি আমাকে একটি মুবারক কোর্তা ও একটি তোয়ালে দিলেন। এগুলো অত্যান্ত উৎকৃষ্ট ছিল। অতঃপর বললেন, এগুলো খুব সামলিয়ে রাখবেন। এগুলো স্বয়ং নিজেই হিফাযত করবেন। এরপর আমি ইরাক অভিমুখে রওয়ানা হলাম। পথিমধ্যে ডাকাতরা আমাদের সর্বস্ব লুট করে নিল। আমার কাছে কেবল একটি পুরাতন জামা অবশিষ্ট রইল। আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার প্রদত্ত মুবারক কোর্তা ও তোয়ালের জন্য আমার আফসোসের অন্ত ছিল না। তিনি এগুলো সামলে রাখতে বলেছিলেন এবং এগুলো বিশেষভাবে হিফাযত করতে বলেছিলেন। উনার এসব মুবারক উক্তির ব্যাপারেও আমি গভীরভাবে চিন্তিত ছিলাম। হঠাৎ জনৈক ডাকাতকে ঘোড়ায় চড়ে ছুটে আসতে দেখলাম। সে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেল এবং সঙ্গীদের জন্যে অপেক্ষা করতে লাগল। সঙ্গীরা সকলেই এসে গেল। সে আমার প্রশংসামূলক কাব্যটি পাঠ করতে শুরু করল এবং সাথে সাথে কাঁদতে লাগল। আমি মনে মনে বললাম, অদ্ভুদ ব্যাপার, এই ডাকাতরাও দেখছি আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বতে বিভোর। সুবহানাল্লাহ!
এ কারণে আমার মধ্যে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার প্রদত্ত মুবারক কোর্তা ও তোয়ালে ফেরত পাওয়ার বাসনা প্রবল হয়ে গেল। আমি বললাম, হে সরদার! এই প্রশংসামূলক কাব্য কে রচনা করেছেন, জান? সে বললো, এতে তোমার কি? আমি বললাম, তার সম্পর্কে কিছু গোপন কথা আছে, যা বলব। সে বলল এই কাব্যের রচয়িতা এই কাব্যের চেয়েও সুখ্যাত। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সে কে? সে বলল, দা’বল ইবনে আলী, যিনি রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিবার আলাইহিমুস সালাম উনাদের কবি। আমি বললাম, হে সরদার! আমি দা’বল। এই কাব্য আমিই রচনা করেছি। অতঃপর সরদার আমাকে অনেক প্রশ্ন করল এবং কাফেলার লোকদেরকে ডেকে আমার বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করল। সকলেই সাক্ষ্য দিল যে, ইনিই দা’বল। এরপর ডাকাতরা কাফেলার কাছ থেকে যা যা ছিনিয়ে নিয়েছিল, সবই ফেরত দিল এবং কোন কিছুই নিজেদের কাছে রাখল না। শুধু তাই নয়, তারা আমাদের রক্ষক হয়ে সকল বিপদজনক স্থান অতিক্রম করতে সাহায্য করল। এভাবে আমরা সকলেই মুবারক কোর্তা ও তোয়ালের বরকতে এই বালা মুছিবত থেকে রেহাই পেলাম। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬৩)
জনৈক কুফাবাসী বর্ণনা করেন, আমি যখন খোরাসানের উদ্দেশ্যে কূফা থেকে রওয়ানা হই, তখন আমার কন্যা আমাকে একটি উৎকৃষ্ট মানের কাপড় দিয়ে বলল, আব্বাজান! এটি বিক্রি করে আমার জন্যে ফিরোজা পাথর কিনে আনবেন। আমি মার্ভ পৌঁছলে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার মুহব্বতকারীদের মধ্যে একজন এসে আমাকে বললেন, আমাদের একজন সাথী মারা গেছেন। তার কাফনের জন্য এই কাপড় আমাদের কাছে বিক্রি করুন। আমি বললাম, আমার কাছে কোন কাপড় নেই। একথা শুনে সে চলে গেল কিন্তু পুনরায় এসে বলতে লাগল, আমাদের মনিব আপনাকে সালাম পাঠিয়েছেন এবং বলেছেন যে, আপনার কাছে একটি কাপড় আছে, যা আপনার কন্যা বিক্রি করে ফিরোজা পাথর কিনে নেয়ার জন্য বলেছে। আমি এর মূল্য নিয়ে এসেছি। আমি কাপড় তাকে দিয়ে দিলাম এবং আমি মনে মনে বললাম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে কয়েকটি মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করব। সে মতে আমি কয়েকটি মাসয়ালা কাগজে লিখে অতি প্রত্যুষে উনার দরবার শরীফ-এ পৌঁছে গেলাম। সেখানে অনেক জনসমাগম ছিল। এই ভিড় ঠেলে সহজে দেখা করার সাধ্য কারো ছিল না। আমি বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। এমন সময় উনার এক খাদিম বাইরে এল এবং আমার নাম নিয়ে একটি লিখিত কাগজ আমাকে দিয়ে বললেন- এগুলো আপনার প্রশ্নের জাওয়াব। আমি দেখলাম যে, তাতে হুবহু আমার প্রশ্নগুলোরই জাওয়াব লিখিত ছিল। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬৪)
নাব্বাখ বাসীদের একজন বর্ণনা করেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখলাম যে, তিনি নাব্বাখে এসেছেন এবং হজ্জযাত্রীগণ যে মসজিদে অবস্থান করেন, সেখানে তিনি মুবারক অবস্থানরত আছেন। আমি উনার মুবারক খিদমতে উপস্থিত হয়ে সালাম আরজ করলাম। উনার সামনে একটি খাঞ্চা মুবারক ছিল, যাতে ছায়হানী খেজুর রাখা ছিল। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা থেকে এক মুঠি খেজুর মুবারক আমাকে দিলেন। আমি গণনা করে সতেরটি খেজুর পেলাম। আমি এই স্বপ্নের তা’বীর বা ব্যাখ্যা করেছি যে, আমার বয়ঃক্রম আর সতের বছর বাকি আছে। এ ঘটনার বিশ দিন পরে আমি শুনতে পেলাম যে, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম সেই মসজিদে মুবারক আগমন করেছেন। আমি তৎক্ষণাৎ উনার মুবারক খিদমতে হাযির হলাম। আমি উনাকে সেই স্থানেই দেখলাম, যেখানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখেছি। উনার কাছেও তেমনি খেজুর ভর্তি খাঞ্চা রাখা ছিল। আমি এগিয়ে গিয়ে সালাম আরজ করলে তিনি জাওয়াব দিলেন এবং আমাকে কাছে ডেকে এক মুঠি খেজুর দিলেন। আমি গণনা করে দেখলাম সতেরটি খেজুর আছে। আমি বললাম, হে ইবনে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার তো আরও বেশি খেজুর দরকার। তিনি বললেন, যদি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাকে আরো বেশি দিতেন, তবে আমিও দিতাম। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬৪, ইক্বতিরাসুল আনওয়ার-১৪৯)
এক ডাকাত কোন ব্যবসায়ীকে কিরমানের পথে শীতকালে ধরে ফেলল। অতঃপর তার মুখ বরফের মধ্যে চেপে তাকে শুইয়ে দিল। ফলে, তার জিহ্বা বিকল হয়ে গেল। সে অনায়াসে কথা বলতে পারত না। সে খোরাসানে পৌঁছে জানতে পারল যে, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি নিশাপুর গমন করেছেন। সে মনে মনে বলল, উনি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সদস্য। উনার খিদমতে হাযির হলে সম্ভবত আমার চিকিৎসা সম্ভব হবে। ব্যবসায়ী রাতে স্বপ্নে দেখলো যে, সে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে উপস্থিত হয়ে আরোগ্য প্রার্থনা করছে। তিনি বললেন, কমুনী, মরু এলাকার পুদিনা ও লবণ নিয়ে এগুলো পানিতে ভিজিয়ে দু’তিন বার মুখে রাখ। এতে আরোগ্য লাভ করবে। জাগ্রত হওয়ার পর এ স্বপ্নের প্রতি তার তেমন বিশ্বাস হল না। সে নিশাপুর পৌঁছে জানতে পারল যে, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি বাইরে কোন সরাইখানায় অবস্থান করছেন। ব্যবসায়ী উনার খিদমতে হাযির হয়ে নিজের অবস্থা বর্ণনা করলো; কিন্তু স্বপ্নের উল্লেখ করলো না। হযরত ইমামুছ ছামিন তিনি বললেন, তোমার ঔষধ তাই, যা আমি স্বপ্নে তোমাকে বলেছিলাম। সে বললো, ইয়া ইবনা রসূলিল্লাহ! অনুগ্রহপূর্বক সেটি পুনরায় বলুন। অতঃপর তিনি পূর্বের ব্যবস্থাপত্রই বলে দিলেন। ব্যবসায়ী তদনুযায়ী আমল করে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করল। (সুবহানাল্লাহ)
অন্য একজন বর্ণনা করেন, আমি একদিন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার সাথে এক বাগানে আলাপ করছিলাম। হঠাৎ একটি পাখি এসে মাটিতে পড়ে গেল এবং অস্তির অবস্থায় চিঁচিঁ করতে লাগল। আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তুমি জান সে কি বলছে? আমি বললাম, না জানিনা। তিনি বললেন, সে বলছে, এই ঘরে একটি সাপ প্রবেশ করেছে সে আমার বাচ্চাগুলোকে খেয়ে ফেলতে চায়। তিনি আমাকে বললেন, উঠ, এই ঘরে গিয়ে সাপটি মেরে ফেল। আমি গিয়ে সেটি মেরে ফেললাম। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬৮, ইকতিরাসূল আনওয়ার-১৫০)
একজন রাবী বর্ণনা করেন, আমি আমার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী সম্পর্কে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে নিয়ে গেলাম এবং আরজ করলাম, হুযূর! দোয়া করুন। মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন তাকে আওলাদ সন্তান দান করেন। তিনি বললেন, তোমার আহলিয়া রেহেমে দু’টি সন্তান রয়েছে। ফিরে আসার সময় মনে মনে সাব্যস্ত করলাম এক সন্তানের নাম রাখব মুহম্মদ এবং অপরটি আলী। তিনি আমাকে ডেকে বললেন, এক সন্তানের নাম আলী রাখবে এবং অন্যজনের নাম ওমর। দুটি সন্তানই ভুমিষ্ট হওয়ার পর দেখা গেল, একটি আওলাদ এবং অপরটি কন্যাসন্তান। তাদের নাম যথাক্রমে আলী ও উম্মে ওমর রাখা হলো। একদিন আমি মাকে জিজ্ঞাসা করলাম, উম্মে ওমর কেমন নাম? মা জাওয়াব দিলেন, আমার মায়ের নাম উম্মে উমর ছিল।
‘ইকতিবাসুল আনওয়ার’ কিতাবে আছে- ইমামুল আউলিয়া, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার পাঁচজন ছেলে এবং একজন মেয়ে ছিলেন। অন্য বর্ণনায় রয়েছে- চারজন ছেলে এবং একজন মেয়ে ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- ইমামুল আউলিয়া, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহি তিনি ২০৮ হিজরী সনের ২১শে রমাদ্বান শরীফ জুমুয়াহ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি ৫৯ বছর ১০ মাস ১০ দিন দুনিয়াবী হায়াত মুবারক লাভ করেছেন। আর এটাই হচ্ছে বিশুদ্ধ মত। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মালিকাতুল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র জীবনী মুবারক
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মালিকাতুল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র জীবনী মুবারক
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বায়াহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সীরত মুবারক
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বায়াহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সীরত মুবারক
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বায়াহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সীরত মুবারক
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বায়াহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সীরত মুবারক (৩)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বায়াহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সীরত মুবারক (২)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বায়াহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সীরত মুবারক (১)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক
০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টির জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদী বা হিদায়াতদানকারী (২)
২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টির জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদী বা হিদায়াতদানকারী (১)
২৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক
০৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)