সচেতন নাগরিক সমাজ-এর দাবি:
‘পাঠ্যসূচিতে আরবী ভাষাশিক্ষা অতিরিক্ত নয়, বাধ্যতামূলক করতে হবে’
, ১২ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৮ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৫ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) তাজা খবর
পাঠ্যসূচিতে আরবী ভাষা শিক্ষা অতিরিক্ত নয়, বাধ্যতামূলক করার দাবী জানিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজ। গতকাল ইয়াওমুল খামীস (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর মালিবাগ মোড় ফালইয়াফরাহু চত্বরে এক সমাবেশে তারা এই দাবী জানান।
সচেতন নাগরিক সমাজের বক্তাগণ বলেন, সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যম মারফত আমরা জানতে পেরেছি, মাধ্যমিকের নতুন পাঠ্যসূচিতে আরবী ভাষা শিক্ষাকে অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। এটা আরবী ভাষার প্রতি এক ধরনের অবমাননা। কারণ হাদীস শরীফে এসেছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেছেন, তোমরা আরবী ভাষাকে মুহব্বত করো তিন কারণে; আমার ভাষা আরবী, কুরআন শরীফের ভাষা আরবী, জান্নাতের ভাষা আরবী। এ হাদীস শরীফ অনুসারে আরবী ভাষা চর্চা মুসলমানদের জন্য ফরজ হয়ে যায়। তাই ৯৮% মুসলমান জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশে আরবী ভাষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে, অতিরিক্ত বিষয় ভাবার কোন সুযোগই নেই। সচেতন নাগরিক সমাজের বক্তাগণ আরো বলেন, শুধু মাধ্যমিকে আরবী ভাষা কেন থাকবে ? সব শ্রেণী অর্থাৎ প্রাক প্রাথমিক থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ শ্রেণী পর্যন্ত সকল শ্রেণীতে আরবী ভাষার চর্চা রাখতে হবে।
বক্তাগণ বলেন, আমাদের দেশে বৈদেশিক মূদ্রার সিংহভাগ আসে আরবদেশগুলো থেকে, যাদের ভাষা আরবী। সাধারণত, আমরা আরব দেশগুলোতে শ্রমিক রফতানি করি। কিন্তু আমাদের পাঠ্যসূচিতে যদি আরবী ভাষা বাধ্যতামূলক থাকতো, তবে আরবে শ্রমিক নয়, বরং ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার সহ শিক্ষিত শ্রেণীকে পাঠাতে পারতাম, যে পেশাগুলোর চাহিদা আরব দেশে ব্যাপক। এর মাধ্যমে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ বহুগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব।
সচেতন নাগরিক সমাজের বক্তাগণ আরো বলেন, ভারতের হিন্দুরা কিংবা চীনের নাস্তিক-বৌদ্ধরা পর্যন্ত আরবী শিখে আরব দেশগুলো থেকে উচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। সেখানে আমরা মুসলমান হওয়ার পরও সেটা পারছি না, শুধুমাত্র পাঠসূচিতে আরবী ভাষা বাধ্যতামূলক না থাকার কারণে। তাই সরকার ও নীতি নির্ধারকদের বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
সমাবেশে সচেতন নাগরিক সমাজ দেশ ও জাতির কল্যাণে মোট ১৭টি দাবী উত্থাপন করেন। দাবীগুলো হলো-
১ম দফা : নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক শানে কোন কুলাঙ্গার মানহানী করলে তার শরঈ শাস্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।
২য় দফা : পাঠ্যক্রমে নূরে মুসজাসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র জীবনী মুবারক অন্তর্ভূক্তকরণ এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম নির্ভর শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে হবে। সকল শ্রেনীতে আরবী ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৩য় দফা : রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা’ একটি নিষিদ্ধ গান, এটি কোন প্রতিষ্ঠানে পাঠ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাই এটি কোথাও পাঠ করা যাবে না। সংবিধানে জাতীয় সংগীতের অংশ হতে গানটিকে বাদ দিতে হবে। এবং তার বদলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আম্মাজান হযরত উম্মু রসুলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নাত শরীফকে জাতীয় নাত শরীফ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
৪র্থ দফা : পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোন কুফরী আইন পাশ করা যাবে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন-১৯৭৩ সংশোধনের খসড়ায় সমকামীতার বিরুদ্ধাচারণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করায়, খসড়াটি বাতিল করতে হবে। কোন আইন বা সংবিধানের ধারা সংস্কার করতে হলে অবশ্যই তা পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের ভিত্তিতেই করতে হবে, এর ব্যতিক্রম করা যাবে না। তবে অবশ্যই হযরত খোলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের আদলে দেশ পরিচালনা করতে হবে। যা করলে সর্বোত্তমভাবে দেশ পরিচালিত হবে।
৫ম দফা : বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কোন অফিস স্থাপন করা যাবে না।
৬ষ্ঠ দফা : দ্রব্যমূল্য ও চিকিৎসা সেবার উর্ধ্বগতি হ্রাস করতে হবে।
৭ম দফা : পাহাড়ে উপজাতিদের আদিবাসী বলা যাবে না। তাদেরকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বলতে হবে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা পৃথক রাষ্ট্র গঠনের ষড়যন্ত্র করতেছে, তাদেরকে দমন করতে হবে। পাহাড়ে কথিত রাজার শাসনের অবসান ঘটাতে হবে। সারা দেশে একই আইনে শাসন চলবে, পার্বত্য এলাকায় ভিন্ন আইন চলবে না।
৮ম দফা : নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপ ভ্রমণে সর্বপ্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। সারা দেশে যেভাবে মানুষ প্রয়োজন মাফিক ভ্রমণ করতে পারে, নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপেও একইভাবে সারাবছর ভ্রমণ করতে পারবে। পরিবেশ দূষণের অজুহাতে যদি নারিকেল জিঞ্জিরা খালি করতে হয়, তবে সর্ব প্রথম রাজধানী ঢাকাকে খালী করতে হবে, কারণ রাজধানী ঢাকা বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহর। যে সমস্ত এনজিও (যেমন- বেলা, পবা ইত্যাদি) পরিবেশের নাম দিয়ে মানুষের রুটি-রুজি বন্ধ করতে চায়, মানুষকে বাস্তুচ্যূত করতে চায়, তারা বিদেশীদের দালাল, তাদেরকে নিষিদ্ধ করে, গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। বর্তমান পরিবেশ উপদেষ্টার বাবা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় বিরোধীতা করেছিলো। এখন তার মেয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা হয়ে পরিবেশবাদের বাংলাদেশের অর্থনীতি ও গণমানুষের বিরোধীতা করছে। তাকেও বরখাস্ত ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
৯ম দফা : হিন্দুত্ববাদ ও ভারতসহ বিদেশী রাষ্ট্র তোষণ বন্ধ করতে হবে। ফিলিস্তিন, ভারতসহ পৃথিবীর যে প্রান্তেই মুসলিম নির্যাতন হবে সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে তার প্রতিবাদ করতে হবে। হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষে আমেরিকার ট্রাম্প যে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে তার প্রতিবাদ করতে হবে। পাশাপাশি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। এই সংগঠনসমূহের সকল সদস্যদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে।
১০ম দফা : জরায়ু ক্যানসার প্রতিরোধের টিকার নামে মেয়েদের বন্ধাত্ব তৈরী করা যাবে না। টিকা দিয়ে যে ছাত্রীরা অসুস্থ হয়েছে বা মারা গেছে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। দেখা যাচ্ছে, এ টিকা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরেও কিছু বিদেশী দালালরা মিথ্যা গুজব রটনা করছে। তাদের এ মিথ্যা রটনার জন্য তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। জনসংখ্যা জনসম্পদ এবং জনশক্তি। তাই জন্মনিয়ন্ত্রণের যাবতীয় পদ্ধতি বাতিল করতে হবে।
১১ম দফা : বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ দিতে হবে। অবৈধ সংযোগগুলোকে বৈধ ভাবে সংযুক্ত করলে রাষ্ট্রীয় আয়ও বাড়বে।
১২তম দফা : পলিথিন নিষিদ্ধ নয় রিসাইক্লিং পদ্ধতি চালু করতে হবে। পলিথিন ব্যবসার সাথে জড়িত কোটি কোটি মানুষের আর্থিক ক্ষতি করা চলবে না।
১৩তম দফা : নদী ও সাগরে মাছধরার উপর কোন রূপ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জেলেদের রুটি-রুজির উপর আঘাত দেয়া চলবে না। সারা বছর মাছ ধরতে দিতে হবে।
১৪তম দফা : ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ করতে হবে। দেশের প্রয়োজনীয় বালি-পাথর দেশের উৎস থেকেই উত্তোলন করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশের পাথর ও বালি উত্তোলনে কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়া যাবে না। সর্ব প্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। এই কাজে জড়িত কোটি কোটি বেকার লোককে কর্মে ফিরিয়ে আনতে হবে। পরিবেশ দূষণের অজুহাতে ইট ভাটা বন্ধ করা যাবে না। কনক্রিট ব্লক কখনই ইটের বিকল্প নয়। কনক্রিট ব্লক বানাতে যে সিমেন্ট প্রয়োজন সেই সিমেন্ট তৈরীতেও প্রচুর পরিমাণে কার্বন নির্গত হয়। তাই যে অজুহাতে ইট ভাটা বন্ধ করা হবে, সে একই অজুহাতে কনক্রিট ইট তৈরীও বন্ধ করতে হবে।
১৫তম দফা : দেশীয় শিল্প ধ্বংস করে দেশের অর্থনীতিকে আমদানি নির্ভর করা হচ্ছে। চাল, পিয়াজ, ডিমসহ সবকিছু বিদেশ থেকে আমদানি করার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করা হচ্ছে। এগুলো টাকা পাচার করার উপলক্ষ। অর্থনীতিকে আমদানি নির্ভর করার ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।
১৬ তম দফা : সারা দেশের বেওয়ারিশ কুকুরের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ট। অবিলম্বে দেশের সকল বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করতে হবে।
১৭ তম দফা : মুসলমানদের বাক স্বাধীনতা হরণ করা চলবে না। সবাই নিজেদের অধিকারের কথা বলতে পারলে মুসলমানরা কেন বলতে পারবে না? মুসলমানদেরকেও নিজেদের অধিকারের কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। কিছুতেই মুসলমানদের বাক স্বাধীনতা হরণ করা চলবে না। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বাংলাদেশ থেকে কমেছে, বেড়েছে ভিয়েতনাম ও ভারত থেকে
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার মালিক সিমিনের ভয়াবহ জালিয়াতি
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
দু-এক মাসের মধ্যে ছাত্র-জনতার নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সৌদিপ্রবাসীদের জন্য সতর্ক বার্তা দিল দূতাবাস
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ উদ্বোধনের ফটোসেশন, তারপর হাওয়া
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রান্তিক খামারে ডিম-মুরগির উৎপাদন জানুয়ারি থেকে বন্ধ ঘোষণা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নারিকেল দ্বীপ ভ্রমণে বিধিনিষেধ কেন অবৈধ নয়, জানতে চেয়ে আদালতের রুল
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দখলদারদের সেনাভর্তি ট্রাকে এম্বুশ চালিয়েছেন মুজাহিদ বাহিনী
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ ১২ই শরীফ উনার সম্মানার্থে- -কোটি কোটি কণ্ঠে বিশ্বজুড়ে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ভেঙে দেয়া হচ্ছে মুসলমানদের ঘর-বাড়ি
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সিরিয়ার ভূখণ্ড দখল, ইসরাইলের নিন্দায় আরব লীগ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জরিপ আতঙ্কে চরবাসী!
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)