হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১৩)
, ২৭ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৩ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ০১ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১৬ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
একটি সূক্ষ্ম ধোঁকা:
যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে সত্যের মাপকাঠি মানে না। তাদেরকে যখন বলা হয় তোমরা ছাহাবী বিদ্বেষী তখন তারা বলে, আমরাতো উনাদেরকে অনেক মুহব্বত করি, উনাদের ছানা-ছিফত করি ইত্যাদি ইত্যাদি। বিষয়টা হচ্ছে এমন যে, কোন ব্যক্তি কাউকে বললো আমি আপনার বাবাকে অনেক মুহব্বত করি, তবে আপনার বাবা এই খারাপ কাজ করতো, ঐ খারাপ কাজ করতো ইত্যাদি ইত্যাদি। বিষয়টা ঐ ছেলের কাছে কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। সে কখনো এটা বিশ্বাস করবে না যে, ঐ ব্যক্তি তার বাবাকে মুহব্বত করে। ঠিক একইভাবে যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে সত্যের মাপকাঠি মানে না, উনাদের সমালোচনা করে। তারা যতোই বলুক তারা উনাদেরকে মুহব্বত করে, এটা কখনোই বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না। তারা যদি এতোই মুহব্বত করে তাহলে উনাদেরকে সত্যের মাপকাঠি মানতে তাদের সমস্যা কোথায়?
মূলত তারা প্রকৃতপক্ষেই উনাদের বিদ্বেষী। মানুষ যাতে তাদেরকে তিরস্কার না করে এই জন্য তারা এই ধোঁকার আশ্রয় নিয়ে থাকে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
উনাদের সমালোচনাকারীদের মূল উদ্দেশ্য:
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হচ্ছেন সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রথম খুটি। তাই প্রথম যুগ থেকেই দেখা গিয়েছে শত্রুরা যখনই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনে দ্বিধা ও সন্দেহের সৃষ্টি করতে চেয়েছে তখনই তারা উনাদেরকে আক্রমণের প্রথম লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। আব্বাসীয় শাসক হারূনুর রশীদের যুগে মুসলিম নামধারী এই ধরণের এক গোষ্ঠীর প্রধান শাকির নামক এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার পর অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে এটাও জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, ‘তোমরা প্রথমেই সাধারণ মানুষকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি বিরূপ এবং সমালোচনা মুখী করে তোলো কেন? উত্তরে সে বলেছিল, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে হেয় ও অসত্য বলে পরিগণিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য। কারণ, বর্ণনাকারীগণ যখন সন্দেহভাজন বলে প্রমাণিত হবেন তখন উনাদের বর্ণিত দ্বীন ব্যবস্থার আর কি-ই-বা নির্ভরযোগ্যতা বাকি থাকবে?
পরস্পরে যত মতপার্থক্যই থাকুক না কেন এই বিষয়ে বাতিল মতাদর্শের সকলকেই এক ও অভিন্ন দেখা গিয়েছে। প্রত্যেক যুগেই এরা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পূতঃপবিত্র চরিত্র মুবারক উনাদেরকে কলুষিত করার এবং উনাদের ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাকে খাটো করে চিত্রিত করার হীন প্রচেষ্টা চালিয়েছে। বর্তমানে তাদেরই উত্তরসূরীরা সেই একই কাজে লিপ্ত রয়েছে। এরাই প্রচার করছে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি নন। না‘ঊযুবিল্লাহ! অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের সম্পর্কে ঘোষণা মুবারক করেছেন-
مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُم مَّن قَضَى نَحْبَهُ وَمِنْهُم مَّن يَنتَظِرُ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا
অর্থ : মু’মিনগণ (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা) মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছেন। উনাদের কেউ কেউ মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় শহীদ হয়েছেন এবং কেউ কেউ শহীদ হওয়ার প্রতীক্ষায় রয়েছেন। উনারা উনাদের সংকল্প এতটুকুও পরিবর্তন করেননি। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
কাজেই উপরোক্ত আলোচনা থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি। আর যারা উনাদেরকে সত্যের মাপকাঠি মানবে না, উনাদের দোষ তালাশ করবে, উনাদেরকে সমালোচনার পাত্র বানাবে অর্থাৎ উনাদের শানের খিলাফ যে কোনো কথা বার্তা বলবে এবং আক্বীদাহ পোষণ করবে। তারা কাট্টা কাফির হবে, মালঊন হবে এবং বেঈমান ও মুরতাদ হিসেবে সাব্যস্ত হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! এদের থেকে সাবধান থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ঈমানী দায়িত্ব।
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)