সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৩৭)
, ১৫ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ মে, ২০২৪ খ্রি:, ১০ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য যেহেতু মান্য করা ফরয, সেহেতু বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করা ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরা দাজ্জাল ও কায্যাব, তাদের থেকে দূরে থাকা ফরয-ওয়াজিব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوْا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ্ করতে পারবে না এবং ফেৎনায় ফেলতে পারবে না।” (মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম)
দাজ্জালে কাযযাবের অর্থ-
خَلَّاطُوْنَ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ مُمَوِّهُوْنَ
অর্থ: যারা সত্যের সাথে সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে ও ধোকা দেয়।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাবের প্রকৃত অর্থ হলো- যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিভ্রান্তিকর অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে সর্বদা মুসলমানদের মাঝে ফেৎনা করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায় তাদেরকে বলা হয় দাজ্জালে কাযযাব। মূলতঃ তারা মুনাফিক। তাই সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরাও পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জাল ও কাযযাবের অন্তর্ভুক্ত।
ধারাবাহিক আলোচনা.........
আল-মা’রুফ তার “আল-হেলাল” বইয়ের ১৪ পৃষ্ঠায় সে নিজে প্রশ্ন করে নিজেই লিখেছে যে, সারাবিশে^ একই দিনে (ঈদ ও রোযা) পালন করা আদৌ সম্ভব কিনা।
উত্তরে অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলবো। হ্যাঁ, আলবৎ সম্ভব।
জাওয়াব: সারাবিশে^ একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন করা ও পবিত্র রোযা শুরু করা একেবারেই অসম্ভব। তা আমরা ইতিপূর্বেই অকাট্যভাবে প্রমাণ করে দিয়েছি।
বলাবাহুল্য যে, সারাবিশে^ ১৫ থেকে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত সময়ের পার্থক্য রয়েছে। প্রত্যেক অঞ্চলেই ছলাতুল মাগরিব উনার ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে নতুন একটি দিন, বার ও তারিখ শুরু হয়ে যায়। যার কারণে সারাবিশে^ একই দিন মিলানো যেমনি অসম্ভব। তেমনি সারাবিশে^ একই দিনে পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযা শুরু করার কথা বলা আশাদ্দুদ দরজার জিহালতী।
সে তার “আল হেলাল” বইয়ের ১৪ পৃষ্ঠায় আরো লিখেছে, ওজরের কারণে আমাদের অদূরবর্তী পূর্বেকার আলেমরা তা (একই দিনে ঈদ ও রোযা) আমল করতে পারেননি, সে জন্য তাদেরকে আমরা দোষ দিতে পারি না। কিন্তু দোষ না দিয়ে পারি না।
জাওয়াব: উল্লেখিত মন্তব্যটি মা’রুফ ও তার সমগোত্রীয়দের নিজস্ব মনগড়া-বানোয়াট উক্তি। কেননা, “আমাদের অদূরবর্তী পূর্বেকার আলিমগণ উনারা যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যায় ওজরের কারণে সারাবিশে^ একই দিনে পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযা শুরু করতে পারেন নাই” এমন কথা উনারা কোথাও ভুলেও বলেন নাই। বরং উনারা আজীবন নতুন চাঁদের উদয়স্থলের ভিন্নতা অনুযায়ী সারাবিশে^ ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করার ও পবিত্র রোযা শুরু করার ফতওয়া দিয়েছেন ও আমল করেছেন।
আল-মা’রুফ উক্ত বইয়ের ১৪ পৃষ্ঠায় মিথ্যাচার করে লিখেছে যে, আমরা জানলাম চারটি মাযহাবের মধ্যে হানাফীসহ বাকি তিনটি মাযহাব এই ঐক্যমতে পৌঁছেছে যে, সারাবিশে^ একই চাঁদের অনুসরণে ঈদ-রোযা একইদিনে হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
জাওয়াব: এটা তার জঘন্যতম মিথ্যা দাবি। তা আমরা চার মাযহাব উনাদের সিদ্ধান্ত উল্লেখপূর্বক ইতিপূর্বেই প্রমাণ করে দিয়েছি।
উক্ত বইয়ের ১৫ পৃষ্ঠায় সে আরো লিখেছে যে, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ১০ ঘন্টার বেশি সময়ের পার্থক্য নেই। মুসলিম বিশে^ এ পার্থক্য মাত্র ৯ ঘন্টা।
জাওয়াব: তার এই দাবিও মিথ্যা। কেননা, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ১৫ থেকে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত সময়ের পার্থক্য রয়েছে। তার আলোচনা ও প্রমাণও আমরা ইতিপূর্বে পেশ করেছি। সমগ্র পৃথিবীতে সকল দেশেই মুসলমানগণ উনারা অবস্থান করেন ও বসবাস করেন। সকলের উপরেই পবিত্র রোযা রাখা ও পবিত্র ঈদ পালন করা ফরয-ওয়াজিব। অতএব মুসলিম বিশ^ বলে পৃথিবীর অন্য কোন দেশে অবস্থানরত মুসলমানগণ উনাদেরকে চাঁদ দেখার হুকুম ও পবিত্র রোযা রাখা এবং পবিত্র ঈদ পালন করা থেকে বিরত রাখা যাবে না। চলবে....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সকল কাফিররাই মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৫)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৪)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)