সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পরিপূর্ণ অনুসরণ মুবারক করেই হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক পরিচালনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে তখন পৃথিবীবাসী প্রকৃত সম্মানিত ইনছাফ বা ন্যায়বিচার লাভ করতে পেরেছিলো। সুবহানাল্লাহ! যেমন-
(৩)
হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি খলীফা মনোনীত হওয়ার পর তিনি উনার যামানার সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের নিকট পরামর্শ চাইলেন যে, কিভাবে যথাযথ ইনছাফের সাথে সম্মানিত খিলাফত মুবারক পরিচালনা করা যায়। তখন হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উনাকে জানালেন যে, “হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি সম্পূর্ণ সম্মানিত খিলাফত মুবারক উনাকে একটি পরিবার মনে করবেন। বয়সে আপনার যারা বড় রয়েছেন, উনাদেরকে আপনার পিতা-মাতা মনে করবেন। যারা আপনার সমবয়সী রয়েছেন, উনাদেরকে আপনার ভাই-বোন মনে করবেন। আর বয়সে যারা আপনার ছোট রয়েছেন, উনাদেরকে আপনার ছেলে-মেয়ে মনে করবেন। অতঃপর আপনি সেভাবে সম্মানিত খিলাফত মুবারক পরিচালনা করতে থাকুন। ” সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি চিঠির মাধ্যমে জবাব দেন, “হে আমীরুল মু’মিনীন! স্মরণ রাখবেন যে, সকল বক্র পথানুসারীকে সোজা পথে পরিচালিত করার এবং সকল অত্যাচারীকে অত্যাচার থেকে বিরত রাখার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত খলীফা মনোনীত করেন। সম্মানিত খলীফা উনার জন্য আবশ্যক হচ্ছে- বিশৃঙ্খলাকে সুশৃঙ্খল করা, দুর্বলকে শক্তিশালী করা, উৎপীড়িতের সাহায্য করা ও বিপন্নকে সান্তনা দান করা। সম্মানিত খলীফা তিনি ঐ ¯েœহশীল রাখালের ন্যায়, যে আপন উটগুলোকে উৎকৃষ্ট চারণভূমিতে চরায় এবং বিপদকালে বিপদসঙ্কুল স্থান হতে রক্ষা করে। অধিকন্তু উটগুলোকে বাঘের কাছ থেকে নিরাপদে রাখা ও শীত-গ্রীষ্মের কষ্ট থেকে সংরক্ষণ করাও ঐ রাখালের দায়িত্ব। সুবহানাল্লাহ! হে আমীরুল মু’মিনীন! একজন সম্মানিত খলীফা হচ্ছেন ¯েœহশীল পিতার ন্যায়। সন্তানরা ছোট থাকলে তিনি তাদের লালন-পালনের জন্য পরিশ্রম করেন, বড় হলে তাদের সুশিক্ষা দান করেন। যতক্ষণ জীবিত থাকেন, ততক্ষণ তাদের জন্য রোযগার করেন এবং মৃত্যুকালে তাদের জন্য যথেষ্ট সম্পদ রেখে যান। হে আমীরুল মু’মিনীন! একজন সম্মানিত খলীফা হচ্ছেন ঐ ¯েœহশীল মায়ের মত, যে আপন সন্তানদেরকে জীবন দিয়ে মুহব্বত করেন, কষ্ট সহকারে তাদেরকে গর্ভধারণ করেন, কষ্ট সহকারে তাদের জন্মদান করেন এবং লালন-পালন করেন। সন্তান জেগে উঠলে তিনিও জেগে উঠেন, সন্তান ঘুমালে তিনিও ঘুমান। কোনো সময় সন্তানকে দুধ পান করান, কোনো সময় দুধ পান করানো থেকে বিরত থাকেন। সন্তান সুস্থ থাকলে তিনি আনন্দিত থাকেন, সন্তানের কষ্ট হলে তিনি অত্যন্ত পেরেশান হয়ে যান। হে আমীরুল মু’মিনীন! একজন সম্মানিত খলীফা ইয়াতীমের অভিভাবক ও মিসকীনদের আশ্রয়স্থল। তারা ছোট থাকলে তিনি তাদের লালন-পালন করেন এবং বড় হলে তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। হে আমীরুল মু’মিনীন! অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাথে অন্তরের যেরূপ সম্পর্ক, জনগণের মাঝে সম্মানিত খলীফা উনার স্থানও ঠিক তদ্রƒপ। অন্তর সুস্থ থাকলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও সুস্থ থাকে, অন্তর অসুস্থ হলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও অসুস্থ হয়ে পড়ে। ”
আর সেভাবেই হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত খিলাফত মুবারক পরিচালনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এই ঘটনা মুবারকসমূহ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক বিশ্ববাসী সকলের জন্য কতটুকু রহমত-বরকত ও সাকীনাহ্ মুবারক উনার কারণ। সুবহানাল্লাহ! কাজেই সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা হওয়ার অর্থই হচ্ছে সারা পৃথিবী সম্মানিত ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া। সুবহানাল্লাহ! যখন এদেশ ও সারা পৃথিবীতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন এদেশ ও সারা পৃথিবী হবে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার একখানা অংশ। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং বিশ্বের সমস্ত মুসলমান উনাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে কাফির-মুশরিকদের প্রবর্তিত হারাম গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্রসহ সমস্ত তন্ত্র-মন্ত্র, মতবাদ ছেড়ে দিয়ে হযরত খোলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনুসরণে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার জন্য কোশেশ করা। সুবহানাল্লাহ!
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ১০ম খলীফা, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আস সাফফাহ্ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের দেশসহ বিশ্বের সমস্ত মুসলমান উনাদেরকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ মুঈনুদ্দীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আলোচনায় বা লেখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত বা নাম মুবারক বারবার বলা ও লেখা সম্পূর্ণ আদবের খিলাফ (১)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কাফির মুশরিকদের বিরুদ্ধে যখন আমি বদদো‘আ করি, প্রতিদিন আমি দেখতে পাই যে, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তো আছেনই, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারাও খুব খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। উনারা বলেন যে, ‘এদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের জন্য আরো দো‘আ করা হোক’
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িমী শান মুবারক (২)
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৯)
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত খিলাফত মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া (৪)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িমী শান মুবারক (১)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৮)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত খিলাফত মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া (৩)
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক উনার পরশে ঝর্ণা প্রবাহিত হওয়া
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক উনার পরশে পাথর নরম হয়ে যাওয়া
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৭)
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত খিলাফত মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া (২)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)