মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাই‘আতে আক্বাবাহ্ শরীফ এবং উনার শর্ত মুবারকসমূহ (৩)
, ১৮ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১১ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১১ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ২৫ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
قال كعب بن مالك فلما اجتمعنا فِي الشِّعْبِ نَنْتَظِرُ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى جَاءَنَا وَمَعَهُ الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَهُوَ يَوْمَئِذٍ عَلَى دِينِ قَوْمِهِ إِلَّا أَنَّهُ أَحَبَّ أَنْ يَحْضُرَ أَمْرَ ابْنِ أَخِيهِ وَيَتَوَثَّقَ لَهُ فَلَمَّا جَلَسَ كَانَ أَوَّلَ مُتَكَلِّمٍ الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْخَزْرَجِ قَالَ وَكَانَتِ الْعَرَبُ إِنَّمَا يُسَمُّونَ هَذَا الْحَيَّ مِنَ الْأَنْصَارِ الْخَزْرَجَ خَزْرَجَهَا وَأَوْسَهَا إن محمداً منا حيث قد عَلِمْتُمْ وَقَدْ مَنَعْنَاهُ مِنْ قَوْمِنَا مِمَّنْ هُوَ عَلَى مِثْلِ رَأَيِنَا فِيهِ فَهُوَ فِي عِزَّةٍ منْ قَوْمِهُ وَمَنَعَةٍ فِي بَلَدِهِ وَإِنَّهُ قَدْ أَبَى إِلَّا الِانْحِيَازَ إِلَيْكُمْ وَاللُّحُوقَ بِكُمْ فَإِنْ كنتم ترون أنكم وافون له بما دعوتموه إِلَيْهِ وَمَانِعُوهُ مِمَّنْ خَالَفَهُ فَأَنْتُمْ وَمَا تَحَمَّلْتُمْ مِنْ ذَلِكَ وَإِنْ كُنْتُمْ تَرَوْنَ أَنَّكُمْ مُسْلِمُوهُ وخاذلوه بعد الخروج إليكم فمن الآن فدعوه فإنه في عزة وَمَنَعَةٍ مِنْ قَوْمِهِ وَبَلَدِهِ قَالَ فَقُلْنَا لَهُ قَدْ سَمِعْنَا مَا قلتَ فَتَكَلَّمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَخُذْ لِنَفْسِكَ وَلِرَبِّكَ مَا أَحْبَبْتَ قَالَ فَتَكَلَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَلَا الْقُرْآنَ وَدَعَا إِلَى اللَّهِ وَرَغَّبَ فِي الإسلام قَالَ أُبَايِعُكُمْ عَلَى أَنْ تَمْنَعُونِي مِمَّا تَمْنَعُونَ مِنْهُ نِسَاءَكُمْ وَأَبْنَاءَكُمْ قَال: فَأَخَذَ الْبَرَاءُ بْنُ معرور بيده وقال نعم فوالذي بعثك بالحقّ نبياً لنَمْنَعَنَّكَ مِمَّا نَمْنَعُ مِنْهُ أُزُرَنَا فَبَايِعْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “হযরত কা’ব ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, যখন আমরা (‘আক্বাবায়) গিরিসঙ্কটে একত্রিত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক আনার অপেক্ষায় ছিলাম, তখন এক সময় তিনি দয়া করে তাশরীফ মুবারক আনলেন। উনার সাথে ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦াতিমুল মুহাজিরীন আলাইহি সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম) তিনি। সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦তিমুল মুহাজিরীন আলাইহি সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম) তিনি তখনো সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেননি। তবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে গৃহীতব্য সিদ্ধান্তে উপস্থিত থাকাটা এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষে সুদৃঢ় অঙ্গীকার নেয়াটা তিনি পছন্দ করেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত উপবেশন মুবারক করলেন, তখন সর্বপ্রথম বাক্যালাপকারী ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦াতিমুল মুহাজিরীন আলাইহি সালাম তিনি। তিনি বললেন, হে খাযরাজ গোত্রের লোকজন! বর্ণনাকারী বলেন, আরবগণ হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের খাযরাজ এবং আওস উভয়গোত্রকে খাযরাজ বলে সম্ভোধন করতেন। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের মাঝে সম্মানিত অবস্থায় অবস্থান মুবারক করছেন, যা আপনারা অবশ্যই জানেন। আর অবশ্যই আমরা আমাদের গোত্রের যারা আমাদের মতবাদে বিশ্বাসী তাদের থেকে উনাকে সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিয়েছি। কাজেই তিনি উনার গোত্রের মধ্যে সম্মানিতজনক অবস্থায় রয়েছেন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শহর মুবারক-এ তিনি তাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। নিশ্চয়ই আপনাদের সাথে মিলিত হওয়ার সিদ্ধান্ত মুবারক নিয়েছেন। সুতরাং এখন আপনারা যদি মনে করেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেয়া প্রতিশ্রুতিসমূহ আপনারা পরিপূর্ণভাবে পালন করতে পারবেন এবং বিরোধিতাকারীদের থেকে উনাকে সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিতে পারবেন, তাহলে উনাকে নিতে পারেন। আর যদি আপনারা মনে করেন যে, আপনারা উনাকে সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দেয়ার কথা বলে নিয়ে যাবেন, তারপর আপনাদের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পর উনাকে অপমানিত করবেন, (না‘ঊযুবিল্লাহ!) তাহলে এখানেই উনাকে রেখে যান। কারণ, তিনি উনার গোত্রের মধ্যে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শহর মুবারক-এ সম্মান এবং নিরাপত্তার মধ্যে আছেন। বর্ণনাকারী হযরত কা’ব ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, আমরা সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦তিমুল মুহাজিরীন আলাইহি সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম) উনাকে উদ্দেশ্য করে বললাম- আপনি যা বলেছেন, আমরা তা শুনেছি। ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি কথা মুবারক বলুন এবং আপনার জন্য আর আপনার মহান রব তা‘য়ালা উনার জন্য আপনি যা পছন্দ করেন, তা গ্রহণ করুন। বর্ণনাকারী বলেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কথা মুবারক বললেন। অতঃপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে আহ্বান মুবারক করেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি উৎসাহিত করেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি আপনাদের বাই‘আত মুবারক করাবো এই শর্তে যে, আপনারা নিজেদেরকে এবং আপনাদের আহলিয়া ও সন্তানদেরকে যেভাবে হিফাযত করেন, তার চেয়েও উত্তমভাবে আমাকে (এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে) সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিবেন, সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। বর্ণনাকারী বলেন, হযরত বারা ইবনে মা’রূর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) হাত রেখে বলেন, অবশ্যই; যিনি আপনাকে সত্য (দ্বীন) সহকারে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী-রসূল হিসেবে প্রেরণ মুবারক করেছেন উনার ক্বসম! অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই আমরা আমাদের নিজেদেরকে এবং আমাদের আহলিয়া ও সন্তানদেরকে যেভাবে হিফাযত করি করি, তার চেয়েও উত্তমভাবে উনাকে (এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে) সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিবো, উনাদের সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবো। সুতরাং ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি আমাদেরকে বাই‘আত মুবারক করান।” সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৩/৯৫-৯৬)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৮)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২০)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৭)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৯)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৬)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৮)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)